রোহিঙ্গা সমস্যার মানবিক দিক

মুহাম্মদ আজিজুর রহমান
Published : 13 June 2012, 08:33 AM
Updated : 13 June 2012, 08:33 AM

রোহিঙ্গাদের যাবার কোন জায়গা নেই। গত চারদিনে আরাকানের রাখাইন প্রদেশে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের সাথে সংখ্যাগুরু বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এতে প্রায় বিশজন মুসলিম রোহিঙ্গা মারা যায়। অনেকের বাড়ী ঘড়ে আগুন জালিয়ে দেয়া হয়। মায়ানমারের আরাকানে মুসলিম দের উপর কয়েক যুগ ধরে নির্যাতন চালানো হচ্ছে। এক সময় আরাকান স্বাধীন দেশ ছিল , এখন আর আরাকান স্বাধীন দেশ নাই তাই মায়ানমারে তারা সব ধরনের সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। এর আগে নব্বই দশকে ব্যাপক হারে রোহিঙ্গা হত্যা করা হলে বাংলাদেশ প্রায় কয়েক লক্ষ রোহিঙ্গা কে আশ্রয় দেয় । পরে মায়ানমার তাদের ফিরিয়ে নিতে অস্বীকার করে এবং অনেক দেন দরবার করে কিছু রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠানো হয়। রোহিঙ্গাদের প্রতি আমাদের সহানুভূতি আছে যেহেতু তারা মুসলিম এবং নির্যাতিত তবে আমাদের সামর্থ নেই তাদেরকে আশ্রয় দেয়া। আর মায়ানমার ইচ্ছাকৃত ভাবে বাংলাদেশকে চাপে ফেলতে রোহিঙ্গাদের উপর অত্যাচার নির্যাতন করে। মায়ানমারের একটি ব্লুপ্রিন্ট আছে আর তা হল আরাকান থেকে মুসলিমদের বের করে দেয়া । তাই তারা বিভিন্ন অজুহাতে রোহিঙ্গা নিধনে মেতে উঠে।

এবার সেই একই উদ্দেশে আবার রোহিঙ্গা নিধন শুরু হয়েছে। গত কয়েক দিনে অনেক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করার চেষ্টা করেছে তবে আমাদের সরকার তাদেরকে আশ্রয় দিচ্ছে না এখন তারা কোথায় যাবে ? নিজেদের দেশে ফিরে গেলে হয় হত্যা করা হবে অথবা তাদেরকে নির্যাতন করা হবে । বাংলাদেশ সরকার যেহেতু তাদের কোন সাহায্য করতে পারছে না তাই তাদের উচিত রোহিঙ্গা সমস্যা আন্তর্জাতিক ফোরামে তুলে ধরা । আমাদের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় প্রায় এক কোটি লোক ভারতে আশ্রয় নিয়েছিল সেই বিবেচনায় আমাদেরকে অবশ্যই অসহায় মানুষের পাশে দাড়াতে হবে, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়া আমাদের জন্য সুখের নয় কারন তাদের আশ্রয় দিয়ে আমরা বিভিন্ন জটিলতার মধ্যে পরেছি এবং সেই সমস্যার সমাধান আজ অবধি করা সম্ভব হয়নি। তাদের অতীত কর্মকান্ড এবং আমাদের অসুবিধা সব কিছুর উপর অসহায় , বিপন্ন মানুষের পাশে আমাদের দাড়ানো উচিৎ না তাদের কে নিশ্চিত মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া কতটা যুক্তিসঙ্গত তা সবাইকে ভেবে দেখার অনুরোধ করছি ।