কাদের ক্রসফায়ার মানবাধিকার বিরুদ্ধ নয়?

মুহাম্মদ আজিজুর রহমান
Published : 21 June 2012, 10:00 AM
Updated : 21 June 2012, 10:00 AM

আমার উপরের হেডলাইন দেখে অনেক আমার সমালোচনা করতে শুরু করবেন। সুশীল সমাজ থেকে শুরু করে মানবাধিকার কমিশন সহ যখন দেশের প্রায় সব সচেতন নাগরিক বিনা বিচারে মানুষ হত্যার বিপক্ষে সেখানে আমি কিছু লোকের ক্রসফায়ার চাচ্ছি। আমার বিশ্বাস আমি যাদের ক্রসফায়ার বা বিনা বিচারে হত্যার কথা বলছি আপনি যদি সচেতন নাগরিক হন তাহলে আমার সাথে আপনি একই কথা বলবেন। মাত্র কিছুদিন আগে যশোরের এক সাংবাদিক কে হত্যা করা হল এমন অনেক সাংবাদিকেই শুধু হত্যা করা হচ্ছে না বরং হাজারো মায়ের বুক খালি হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এদের কারনে সমগ্র যুব সমাজ আজ অন্ধকার নীল সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছে। বর্তমান বাংলাদেশে এমন কোন পরিবার খুজে পাবেন না যারা এদের নীল দংশনের স্বীকার হচ্ছে না। বিশেষ করে আমাদের কোমলমতি ছাত্ররা যারা মাত্র কলেজের পাঠ চুকিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করছে তাদের জীবন কে ধংস করে দিচ্ছে। এখন হয়ত আপনারা অবশ্যই বুঝতে পারছেন আমি কাদের কথা বলছি। যারা প্রতিনয়ত মানবাধিকার লংঘন করছে যারা প্রতিটা পরিবারে কান্নার রোল বাজিয়ে দিয়েছে আমি সেই মাদক ব্যবসায়ীদের কথা বলছি। যারা মাদক গ্রহন করে তারা বুঝে না বুঝে বিভন্ন ঘটনা প্রবাহের কারনে মাদক গ্রহন করে তারা অবশ্যই দোষী তার চেয়ে হাজার গুন বেশী দোষী তারা যারা আমাদের যুব সমাজের হাতে এই মরন নেশা তুলে দিচ্ছে। যারা একটু খোজ রাখেন তারা অবশ্যই আমার সাথে একমত হবেন প্রতিটা পাবলিক এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে কি হারে মাদক আগ্রাসন শুরু হয়েছ তা আপনি বা আমরা কল্পনা করতে পারব না । হলে হলে মাদক বানিজ্য আর এর সাথে এক শ্রেনীর ছাত্ররা জড়িত। মাদক মহামারির আকার ধারন করেছে। এর কোন প্রতিকার নেই। আমরা মাঝে মধ্যে দেখি কিছু মাদক সম্রাজ্ঞী বা সম্রাট ধরা পরে আবার কিছুদিন পর জামিনে ছাড়া পেয়ে একই কাজ করে তাই আমি মনে করি এদের বেচে থাকার কোন অধিকার নেই। যারা একটি দেশকে ধংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে তাদের এই দেশের পানি ,বাতাস ,বায়ূ গ্রহন করার অধিকার আছে কি?

মাঝে মধ্যে পত্রিকায় দেখি মাদক সম্রাজ্ঞী ধরা পরেছে তখন আমার কাছে খারাপ লাগে। মেয়েরা হল মায়ের জাতি তারা কিভাবে এই জঘন্য কাজের সাথে জড়িত হয়। বাংলাদেশে কত হাজার মা যে প্রতিদিন তার চোখের পানি শেষ করে দিচ্ছে মাদক আক্রান্ত ছেলে বা মেয়ের জন্য তার খোজ কেউ রাখে না । কত স্বপ্ন যে প্রতিনিয়ত বিলীন হয়ে যাচ্ছে তার খোজ কেউ রাখে না। একজন মাদক সেবী যে কিভাবে তার পরিবার ,পরিজনকে হেনস্থা করে , অপমান করে তা ভুক্তভোগী ছাড়া কেউ উপলব্ধি করতে পারবেন না । মাদক সেবীদের হাতে কত মা , বাবা , ভাই , বোন , চাচা , মামারা নিহত হচ্ছে তার হিসাব কেউ রাখে না । কোন মা ,বাবা বা বড় ভাই বা বড় বোন অনেক কষ্ট করে একটি ছেলেকে ডাক্টার , ইঞ্জিনিয়ার বা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠায় আর সেই ছেলে যখন মদকাসক্ত হয়ে পড়ে তখন সেই পরিবারের কি অবস্থা হয় ।

এখনই সময় যদি আমরা এই সমস্যার একটা সমাধান করতে না পারি তাহলে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ যে কোথায় গিয়ে দাড়াবে তা কেউ জানে না । তাই শুধু সরকারের দিকে না তাকিয়ে আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে মাদক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে জেহাদ করতে হবে । বর্তমান বাংলাদেশে গাজা , হেরোইন , ফেনসিডিল এবং ইয়াবার যে আগ্রাসন চলছে তার প্রতিরোধের একমাত্র উপায় যারা এর সঙ্গে জড়িত সে যেই হউক হয় তাকে বা তাদেরকে কঠোর বিচারের আয়তায় আনা অথবা ক্রসফায়ারে দেয়া এখানে মনে রাখতে হবে ছোট খাটো কোন মাদক ব্যবসায়ী নয় উপরের থেকে মাত্র বিশ পচিশজনকে সাইজ করতে পারলে হাজার হাজার পরিবার যেমন বেচে যাবে তেমনি বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্র বেচে যাবে ।আমরা কি মানবাধিকারের দোহাই দিয়ে বাংলাদেশকে ধংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাব না সবাই এই একটা ইস্যুতে এক প্লাটফর্মে দাড়াতে পারব আর চিৎকার করে বলতে পারব এই জাতিকে আমরা অবশ্যই রক্ষা করব যে কোন কিছুর বিনিময়ে।