বেসামাল জাবি ছাত্রলীগ!

নাজমুজ্জামান নোমান
Published : 17 May 2011, 11:56 AM
Updated : 17 May 2011, 11:56 AM

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ দু'গ্রুপে বিভক্ত হয়ে মুখোমুখী অবস্থান নিয়েছে। স্থগিত কমিটির সহ সভাপতি পারভেজ-যুগ্ম সম্পাদক আজগর গ্রুপ ভিসিপন্থি ছাত্রলীগ গঠন করে ক্যাম্পাসে ইভটিজিং, সাধারণ শিক্ষার্থীদের হয়রানি নানা ধরনের চাঁদাবাজির সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। আর সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের দীর্ঘদিন বাইরে অবস্থান করায় তারা ক্যাম্পাসে প্রত্যাবর্তনের ঘোষণায় নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে ছাত্রলীগের হামলার ভয়ে ছাত্রদলের নতুন কমিটির নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাসে না আসতে পারায় তাদের শিক্ষাজীবন হুমকির মুখে পড়েছে।

জানা যায়, ২০০৯ সালে ৫ জুলাই ছাত্রলীগের সভাপতি রাশেদুল ইসলাম শাফিন ও সাধারণ সম্পাদক নির্ঝর আলম সাম্য গ্রুপের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনায় জাবি প্রশাসন সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ ২৩ নেতাকর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করে। এ ঘটনায় জাবিতে ছাত্রলীগের সকল ধরনের কর্মকান্ড নিষিদ্ধ করে যা এখনো বলবৎ রয়েছে। কিন্তু ওই কমিটির সহসভাপতি নিয়ামুল পারভেজ, যুগ্ম সম্পাদক আজগর আলী পদবঞ্চিত নেতা শামিমকে নিয়ে বিশেষ অঞ্চলের নেতাকর্মীদের নিয়ে ভিসি পন্থী ছাত্রলীগ গঠন করে। ক্যাম্পাসে অবস্থানকারী গ্রুপের নেতাকর্মীদের কোন সাংগঠনিক কাজ না থাকায় তারা গত ৬ মাসে ৫/৬টি ইভটিজিংয়ের ঘটনা ঘটিয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের মাশিম গ্রুপের কর্মীরা ৪/৫ টি ইভটিজিংয়ের সাথে সরাসরি জড়িত। এছাড়া তারা সন্ধ্যার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার ভবন, ট্রান্সপোর্ট এলাকায় শিক্ষার্থীদের উপর ঝটিকা হামলা চালিয়ে মোবাইল ম্যানিব্যাগ ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনা প্রায়ই ঘটিয়ে থাকে। সম্প্রতি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হলে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করে। তারা বাইরের বিভিন্ন ব্যক্তিদের কাছ থেকে এ উপলক্ষে টাকা আদায় করে নিজেদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছে। মওলানা ভাসানী হলের অনুষ্ঠান উপলক্ষে ৪০ লিটার মদ আমদানি করে নেতাকর্মীরা উৎসব করে বলে জানা গেছে। ছাত্রলীগের স্থগিত কমিটি চালু হতে পারে এমন আশায় সভাপতি শাফিন ও সাধারণ সম্পাদক সাম্য গ্রুপের নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হয়ে ওঠে। তারা ক্যাম্পাসে ফেরার ঘোষণা দিলে প্রশাসন ক্যাম্পাসের প্রবেশমুখ ও হলের সামনে পুলিশ মোতায়েন করে। ছাত্রলীগের ভিসি পন্থী গ্রুপের নেতাকর্মীরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের জোরপূর্বক হলগুলোতে স্বশস্ত্র মহড়া দিতে বাধ্য করে। হলের গেটে তালা দিয়ে মানববন্ধন, মিছিল সমাবেশসহ নানা কর্মসূচিতে সাধারণ শিক্ষার্থী অংশ নিতে বাধ্য করে। বড় ধরণের সংঘর্ষের মোকাবেলা করার জন্য বঙ্গবন্ধু ও শহীদ সালাম বরকত হলে ৪০টি আগ্নেয়াস্ত্র মজুদ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। কয়েকদিনে ছাত্রদলের জাবি শাখার নতুন কমিটি হলেও তারা ছাত্রলীগের হামলার ভয়ে ক্যাম্পাসে নিয়মিত ক্লাস –পরীক্ষা অংশ নেয়ার জন্য আসতে পারছে না। ছাত্রদলের এক সহসভাপতি আব্দুল্লাহ আল আলামিন ছাত্রলীগের বাধার কারণে মাস্টার্স পরীক্ষা অংশ নিতে পারেনি। ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল¬াহ আল মামুন রাহাত বলেন, আমাদের ৭৮ নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাসে যেতে পারছে না। ছাত্রলীগের সভাপতি রাশেদুল ইসলাম শাফিন বলেন, মূল ধারা ছাত্রলীগকে বিতাড়িত করে ক্যাম্পাসে ভিসি লীগ গঠন করা হয়েছে। তারা মুরগী চুরি, চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মের সাথে জড়িত থেকে ছাত্রলীগকে কলঙ্কিত করেছে।