আওয়ামী লীগ মন্ত্রীরা বিগত আড়াই বছরে যেসব কাজ করলেন!

নাজমুজ্জামান নোমান
Published : 22 Nov 2018, 05:27 PM
Updated : 7 June 2011, 02:55 PM

বাংলাদেশে বেশ কিছুদিন ধরে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে রাজনীতির ময়দান বেশ উত্তপ্ত। বর্তমান সরকার কি এরূপ উত্তপ্ত পরিবেশের কথা বুঝতে পারেনি? অবশ্যই পেরেছে। তাইতো নির্বাচনের আড়াই বছর আগে নিজ দলের নেতা ও মন্ত্রীদের ব্যর্থতা ঢাকতে এ ধরণের হানাহানি-কাটাকাটির পথে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

এবার দৃষ্টি দেয়া যাক বিগত আড়াই বছরে বর্তমান সরকারের নেতা-কর্মীরা কি কি কাজ করলেন। অর্থনৈতিক দিক আগে দেখা যাক, বর্তমান অর্থমন্ত্রী শেয়ার বাজার ধস নিয়ে কিছুই জানেন না। তাই অপরাধীদের নাকি সনাক্ত করা যাচ্ছে না। যাদেরকে করা গেছে তাদের নাম প্রকাশে সমস্যা আছে তাই তাও পারছেন না। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচী (এডিপি) লক্ষ্য মাত্রায় পৌঁছতে পাড়ছে না। ফলে ইরি-বোরোর ভরা মৌসুমে ৪০ টাকা কেজিতে চাল কিনতে হয়েছে। বাজার মূল্যে যেন তাদের বিন্দুমাত্র নিয়ন্ত্রন নেই। বাণিজ্যমন্ত্রী নিজেই ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রন করতে পারছেন না। যার ফলে নিজ দলের ভেতর সিন্ডিকেট লুকিয়ে রয়েছে। পদ্মা সেতুর আশা দেখিয়ে যোগাযোগ মন্ত্রী শেষ করেছেন তার আশা দেখানোর আড়াই বছর। সংসদে দাড়িয়ে পদ্মা সেতু নিয়ে দুই ধরণের বক্তব্য দিয়েছেন। একজনের প্রশ্নের উত্তরে বলেন পদ্মা সেতুর কাজ আগামী ডিসেম্বরে শেষ হবে। অন্যজনকে সান্তনা দেন আগামী দুই মাসের মধ্যে এ সেতুর কাজ শুরু হবে। তার আগে শুনিয়েছেন অন্য আশার বাণী- প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরলেই সেতুর কাজ শুরু হবে। সর্বপ্রথমে জাপান সরকারের এ সেতু নির্মাণে অনুদান দেন তখন বলেছেন এবার আর পদ্মা সেতু তৈরীতে কোন বাধা রইলো না। আসলে পদ্মা সেতু, পদ্মা সেতু করতে করতে যোগাযোগ অন্য কোন যোগাযোগ ব্যবস্থার কথা ভাবার সময় পাননি।
বিদ্যুৎ মন্ত্রীর বিদ্যুৎ নিয়ে ভাবার সময় নেই। গত আড়াই বছরে বিদ্যুতের অবস্থা ভয়ংকর অবস্থায় গিয়ে দাড়িয়েছে। গ্যাসের দাম বৃদ্ধি ও সংকটের কারণে কল কারখানা বন্ধ। নতুন বিদ্যুৎ গ্যাস সংযোগ না দিতে পারায় রিয়েল এস্টেট ব্যবসা এক প্রকার স্থবির।

দেশের জনগন তাদের যে কাজ করতে ভোট দিয়েছে তা বাদ দিয়ে এখন ব্যস্ত যা করতে পারেনি তা ঢাকার কাজে। তারা ব্যস্ত সংবিধান সংশোধন নিয়ে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল নিয়ে, ৭২ এর সংবিধানে ফিরে যাওয়া নিয়ে, তারা ব্যস্ত সংবিধানে বিসমিল্লাহ থাকবে কি থাকবে না তা নিয়ে, এছাড়া রাষ্ট্রে ইসলাম ধর্ম থাকবে না ধর্মনিরপেক্ষ হবে সেদিকেও নজর রয়েছে তাদের। যুদ্ধপরাধ বিচার হাঁটছে দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে।
নির্বাচন পূর্ববর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ বলেছিল ১০ টাকা চাল ও ৫ টাকায় কাঁচা মরিচ খাওয়াবে। কিন্তু এর এক হালি দামেও এসব এখন পাওয়া যাচ্ছে না। প্রত্যেক পরিবারের একজনকে চাকুরির কথাও বলে তখন। আর এখন বিগত ১০ বছরের মধ্যে বেকারত্বের হার সর্বোচ্চ। বিদেশে চাকুরী বাজার ছোট হচ্ছে। আওয়ামী লীগের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী সেই ছোট বাজার বড় করতে পারেননি। পররাষ্ট্র মন্ত্রী বিদেশ সফরের মাঝে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। এলজিআরডি মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তো একরকম ঘোরের মধ্যে কাটিয়ে দিলেন আড়াই টি বছর।

এ অবস্থায় নিজ নেতা কর্মীদের কাজে শঙ্কিত হয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা ধরে রাখতেও পারছে না আবার তা ছাড়তেও পারছে না। তাই আন্দোলন প্রিয় দল হিসেবে আন্দোলনের পথ বেছে নিতে বিরোধী সব দলকে বাধ্য করছে আন্দোলনে শরীক হতে।