বাবার স্বপ্নপূরণে গড়ে তুলেছিলেন স্কুল। এখন নিজের স্বপ্ন সেটিকে কলেজে রূপান্তর করা। স্বপ্ন নিয়েই এগিয়ে চলেছেন শাহিদা খানম

নাজমুজ্জামান নোমান
Published : 7 June 2011, 02:47 PM
Updated : 7 June 2011, 02:47 PM

'আমাদের স্যারেরা বন্ধুর মতো। আনন্দের সঙ্গেই আমরা ক্লাস করি।' বললো অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী সুখতারা। তাই বুঝি শামছুদ্দিন মেমোরিয়াল একাডেমি স্কুলের শিক্ষার্থীদের পাশের হারও শতভাগ। স্কুলটি টঙ্গী থানার মরকুনের টেকপাড়ায়। শুরু হয় ১৯৯৮ সালে। তখন পরিসরটাও ছিল ছোট্ট। মাত্র ৫০ জন ছাত্রছাত্রী নিয়ে নিজ উদ্যোগে স্কুলটি শুরু করেছিলেন শাহিদা খানম। আর এখন স্কুলের পরিসর বেড়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩০০ জন। শিক্ষক ২১ জন।

স্কুলটির পাঠদান পদ্ধতি প্রসঙ্গে শাহিদা খানম জানালেন, 'একাডেমিক ক্যালেন্ডারের সঠিক অনুশীলন আমাদের এগিয়ে যাওয়ার হাতিয়ার। বার্ষিক তিনটি সেশনে বিভক্ত করে পরীক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে এখানে। সফলতা রয়েছে একাডেমিক ফলসহ খেলাধুলা ও প্রতিযোগিতামূলক অন্যান্য ক্ষেত্রেও। মাধ্যমিকসহ সব ক্লাসের বার্ষিক ফল সন্তোষজনক। প্রতিবছরই জিপিএ ৫সহ শিক্ষার্থীদের পাসের হার শতভাগ।'
পাঠদানের পাশাপাশি প্রতিবছর শিক্ষাসফর, বনভোজন, বিতর্ক ও কুইজ প্রতিযোগিতা আর দিবসভিত্তিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন হয়।

স্কুল প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য কী ছিল জানতে চাইলে শাহিদা খানম বলেন, 'বাবার স্বপ্নপূরণ ও শিক্ষার্থীদের আনন্দময় পরিবেশে শিক্ষা দেওয়াটাই ছিল উদ্দেশ্য।' এত ক্ষেত্র থাকতে নারী হয়ে এ কাজে আসার কথা বললেন নিজেই, 'আমাদের দেশে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি ব্যক্তিগত ইচ্ছায় অনেক নারী উদ্যোক্তা তৃণমূল পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছেন।'

সহকারী শিক্ষিকা নাহিদা আক্তার পুতুল বলেন, 'শিক্ষাকে সবার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দেওয়া যাঁদের স্বপ্ন, তেমনি একজন নারী উদ্যোক্তা তিনি।'

এর মধ্যেই অত্র অঞ্চলে সুনাম কুড়িয়েছে স্কুলটি। তার কারণ, শাহিদা নানা ধরনের কার্যক্রম পরিচালনার মধ্য দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন স্কুলটিকে। এ কাজে স্বামীও সঙ্গী হয়েছেন তাঁর। স্কুল পরিচালনার দায়িত্ব ভাগ করে নিয়েছেন স্বামী আবু ইমরুল সরকার।

স্কুলে কিছু সীমাবদ্ধতা যে নেই, তা নয়। শিক্ষক ও ক্লাসরুমের সংখ্যা আরো বাড়ানো গেলে সমস্যাগুলো কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। এ জন্য সরকারি সহযোগিতার প্রয়োজন।
স্কুল নিয়ে শাহিদা খানমের অনেক স্বপ্ন। একদিন এই স্কুল কলেজ হবে, এমনই স্বপ্ন দেখেন তিনি।