হাসিনা বনাম খালেদা: দুজনকে এক পাল্লায় মাপা অসম্ভব

অলস মন
Published : 11 May 2011, 08:48 AM
Updated : 11 May 2011, 08:48 AM

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়াজেদ এক বক্তৃতাতে জাতিকে নির্দেশ দিয়েছেন তাকে যেন খালেদা জিয়ার সাথে এক পাল্লায় না মাপা হয়।

তার এ বক্তব্যটি নিয়ে আমি চিন্তা করে দেখেছি, আসলেই খালেদা জিয়ার সাথে শেখ হাসিনাকে এক পাল্লায় মাপা উচিত নয়। দুই জনের ব্যক্তিগত চরিত্র, আচার-আচরণ সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরণের। আসুন, আমরা অল্প কয়েকটি পয়েন্ট নিয়ে আলোচনা করি।

১. হাসিনা বেশী কথা বলেন। কখনো কখনো তিনি যা বলেন, তার খেই ঠিক রাখতে পারেন না। তাই বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের দৃষ্টিতে তিনি রং হেডেড। খালেদা বাকসংযমী। তিনি কখনোই অপ্রয়োজনীয় বা বাড়তি কথা বলেন না।

২. হাসিনা নোংরা কথা বলতে পছন্দ করেন। সংসদে দাঁড়িয়ে তিনি খালেদাকে ইংগিত করে বিভিন্ন নোংরা কথা বলেছেন। অপরদিকে খালেদা নোংরা কথা সব সময় পরিহার করে চলেন। সংসদে দাঁড়িয়ে তিনি হাসিনার নোংরা কথাগুলোর জবাব দিতে পারতেন। কিন্তু তিনি সব সময়ই নিজেকে এর উর্ধ্বে রেখেছেন।

৩. হাসিনা দারুণ প্রতিহিংসা পরায়না। তার আগের সরকারের আমলে এক বক্তৃতায় তিনি বলেছিলেন, "আমাদের একটা লাশ পড়লে তাদের দশটা লাশ ফেলা হবে।" সেই আমলে তিনি মন্ত্রী পরিষদে সিদ্ধান্ত নিয়ে গণভবনকে নিজের নামে লিখিয়ে নিয়েছিলেন। পরে তত্ত্বাবধাযক সরকারের আমলে তা বাতিল হয়ে যায়। উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপিয়ে তিনি খালেদার স্বামীর সেনাবাহিনীর উপপ্রধান থাকার সময় থেকে বসবাস করে আসা এবং পরবর্তীকালে জাতীয় সংসদ কর্তৃক প্রস্তাব পাশ করে তাকে দান করা বাড়ীটি ছিনিয়ে নেন। পক্ষান্তরে খালেদা প্রতিহিংসা পরায়না নন। তিনি প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এমন প্রমাণ আওয়ামী লীগ কখনো পেশ করতে পারেনি।

৪. হাসিনা দেশের চাইতে বিদেশকে বেশী ভালো বাসেন। তিনি বিদেশ সফরকে বেশী উপভোগ করেন। তিনি নিজের সন্তানদের বিদেশে রেখে বড় করেছেন, বিদেশে লেখাপড়া করিয়েছেন। বিগত তত্ত্বাবধাযক সরকারের আমলে তিনি প্যারোলে জেল থেকে বের হয়ে চিকিৎসার নামে বিভিন্ন দেশে ঘুরে বেরিয়েছেন। অপরদিকে খালেদা জিয়া দেশকে বেশী ভালো বাসেন। তিনি নিজের সন্তানদেরকে দেশেই লেখাপড়া করিয়েছেন। তত্ত্বাবধাযক সরকারের আমলে তিনি বলেছেন যে, মরতে হলেও তিনি দেশেই মরবেন। তবুও দেশের বাইরে যাবেন না।

৫. হাসিনার দূর্নীতি আর স্বজনপ্রীতি অতুলনীয়। অচল মিগ, অকেজো ডেষ্ট্রয়ার সহ আরো কতো কি তিনি কিনেছিলেন আগের সরকারের আমলে। লক্ষ্য ছিলো একটাই: কিকব্যাক অর্থাৎ পরিশোধ করা মূল্যের একটি অংশ তার নিজের অথবা তার পছন্দের কোনো লোকের ব্যাংক একাউন্টে ফেরত পাওয়া (ভুলে যাবেন না, তার ছেলে জয় এখন আমেরিকার বড় মাপের একজন তরুণ ব্যবসায়ী)। এসব দূর্নীতি নিয়ে খালেদার সরকারের আমলে মামলা হয়েছিলো। হাসিনা ক্ষমতায় ফিরে এসে সবগুলো মামলাকে বাতিল করে দিয়েছেন। তিনি মিগ দূর্নীতিতে তার সহযোগী জামাল উদ্দীনকে বিমান কর্পোরেশনের প্রধান বানিয়েছেন। জামাল উদ্দীনের ক্ষমতা এতো বেশী যে, তিনি বিমানমন্ত্রীকেও বুড়ো আঙ্গুল দেখান। হাসিনাকে সন্তুষ্ট করতে পারায় গ্যাস পাইপলাইনের যেখানে প্রয়োজন নেই সেখানেও চাপ বৃদ্ধি করার যন্ত্র বসানো যায়। আর তাকে যথাযথ পর্যায়ের সালামী না দেয়ায় শেরাটনকে ব্যবসা গুটিয়ে বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যেতে হয়। তার আত্মীয় স্বজন আর দলের নেতাদেরকে আরো বড় লোক বানানোর লক্ষ্যে পিকিং, কুইক রেন্টাল, আরো কতো নিত্যনতুন নামের বিদ্যুৎ ষ্টেশন হচ্ছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন অবশ্য তাতে মোটেও বাড়ছেনা। পরবর্তীকালে যাতে তার চুরি নিয়ে আদালতে না যাওয়া যায়, সে উদ্দেশ্যে বিদ্যুৎ বিভাগে সংঘটিত সকল দূর্নীতির জন্য ইনডেমনিটি আইন করা হয়েছে। খালেদা জিয়ার সরকারের সময়ে দূর্নীতি হলেও বর্তমানের তুলনায় তা ছিলো খুবই যৎসামান্য। অবশ্য আওয়ামী ও ভারতপন্থীরা তার প্রচার করেছে অনেক বেশী। এমনকি খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরে বিদ্যুৎ বিভাগের মোট বাজেট অনেক কম থাকলেও সে সময়ে ২০ হাজার কোটি টাকার দূর্নীতি হয়েছে বলে জেনারেল মইন প্রচার চালিয়েছিলো, যা মিথ্যা জেনে এবং মিথ্যা স্বীকার করে নেয়ার পরও এখনো পুণরাবৃত্তি করা হয়। মনে রাখতে হবে, সে সময়ে কোনো দুর্নীতিকে ইনডেমনিটি দেয়া হয়নি।

৬. হাসিনা তার দলের লোকদের অন্যায়কে অন্যায় বলেই বিবেচনা করেন না। আগের সরকারের আমলে তিনি বলেছিলেন, ২১ বছর ধরে অন্যরা খেয়েছে আর এখন তার লোকেরা খাবে। খালেদার সময়ে কখনো ঘোষণা দিয়ে কাউকে খাওয়ার সুযোগ দেয়া হয়নি।

৭. হাসিনা ছাত্রলীগ আর যুবলীগের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা তো নেনই না। বরং পুলিশ যাতে ব্যবস্থা নিতে না পারে, সেজন্য নতুন নতুন প্রশাসনিক হুকুম জারি করেন। ফলে পুলিশ কাকে ধরবে আর কাকে ধরবেনা বুঝতে না পেরে হাত গুটিয়ে থাকে। আর তার সহযোগীরা নির্বিবাদে অন্যদের বাড়ী, জমি, দোকানপাট এমনকি মন্দিরের জায়গা পর্যন্ত দখল করে নিচ্ছে। খালেদার সময়ে দলীয় নেতাদেরকেও (যেমন আমানকে) জেলে পুরা হয়েছে।

৮. হাসিনা ক্ষমতায় এলেই নারী নির্যাতন বেড়ে যায়। সোনার ছেলেরা ধর্ষণে সেঞ্চুরী করে। ইডেন আর বদরুন্নেছার ছাত্রীদেরকে নেতাদের বাড়ীতে আর হোটেলে পাঠানো হয়। খালেদার সময়ে তা হয়না। ইডেন আর বদরুন্নেছার ছাত্রীদের মধ্যে যারা হোটেলে আর নেতাদের বাড়ীতে যেতে রাজী হয়নি, তাদেরকে শিবির আখ্যা দিয়ে মারপিট করে হোষ্টেল থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। ছাত্রলীগের নেত্রীরাই এমন অভিযোগ করেছেন। কিন্তু তারপরও কোনো প্রতিকার হয়নি। প্রতিদিন আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ আর যুবলীগের নেতাকর্মীদের হাতে অসংখ্য নারী নির্যাতিত হচ্ছে।

৯. হাসিনা ক্ষমতায় এলেই শেয়ার বাজারে লুটপাট হয় আর সাধারণ লোক সর্বশান্ত হয়। ১৯৯৬ সালে একবার ঘটেছিলো। এখন আবার ঘটলো। খালেদার সময়ে কখনো এমন হয়না। লুঠেরাদেরকে ধরাছোঁয়ার বাইরে রাখার জন্য অর্থমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, আরো তদন্ত না করে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবেনা (আল্লাহ ভালো জানেন, সেই তদন্ত কখন হবে এবং কারা করবে)। তিনি একথাও বলেছেন যে, এরা খুব ক্ষমতাশালী (তারা অর্থমন্ত্রীর চেয়ে বেশী ক্ষমতাশালী বলে বুঝা গেলো। কিন্তু তারা কি প্রধানমন্ত্রীর চেয়েও বেশী ক্ষমতাশালী?) এবং এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া কঠিন হবে। অর্থাৎ লুঠেরারা সিগন্যাল পেয়ে গেলো, তোমাদের কোনো ভয় নেই।

১০. হাসিনার সময়ে পুলিশ, আর্মি আর সিভিল প্রশাসন, সর্বত্র নির্বিচারে দলীয়করণ হয়। কেউ চাকুরী থেকে বরখাস্ত, কেউ ওএসডি। খালেদার সময়ে তা খুব সামান্যই হয়েছে। হাসিনার সময়ে আওয়ামী লীগ ছাড়া আর কেউ চাকুরী পাওয়ার অধিকার পর্যন্ত রাখেনা। সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেয়া হয় যে, শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের লোকদেরকে চাকুরী দেয়া হবে। অতিসম্প্রতি ঘোষণা করা হয়েছে যে, কোনো হেলথ কমপ্লেক্স প্রজেক্টে বিএনপিপন্থী কাউকে চাকুরী দেয় হলে সেই প্রজেক্ট বন্ধ করে দেয়া হবে।

১১. হাসিনার সময়ে দেশে আর্থসামাজিক উন্নতির মাপকাঠির সূচক নিচের দিকে যায় আর মুদ্রাস্ফীতি অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। দেশ আবার ৭২-৭৪-এর মতো তলাবিহীন ঝুড়ির খেতাব ফিরিয়ে আনার দিকে যাত্রা করে। খালেদার সময়ে দেশ এশিয়ার একটি ইমার্জিং টাইগারে পরিণত হয় আর সহসাই একটি মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার স্বপ্ন দেখে।

১২. হাসিনা অনেক উচ্চশিক্ষিত। তার কয়েক গন্ডা ডক্টরেট আছে। অবশ্য এগুলো দেখিয়ে তিনি কোনো ইউনিভার্সিটিতে চাকুরী পাবেন না, একথা নিশ্চিত করে বলা যায়। খালেদার একটিও ডক্টরেট ডিগ্রী নেই।

১৩. হাসিনা কখনো গুণীজনদের সম্মান করেন না। তিনি তাদেরকে প্রতিদ্বন্ধী মনে করেন। তাই ডক্টর ইউনুসের নোবেল প্রাইজ পাওয়াকে তিনি সহ্য করতে পারেননি। অপরদিকে খালেদা জিয়া সাধ্যমতো গুণীদের সম্মান প্রদর্শন করেন। তিনি ডক্টর ইউনুস এবং অন্যান্য সকল গুণীজনকে শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেন।

১৪. খালেদা একজন মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী। তার স্বামী ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের ঘোষক, একটি সেক্টরের প্রধান এবং সর্বপ্রথম গঠিত সেনাবাহিনীর ফোর্সের (জেড ফোর্স) কমান্ডার। হাসিনার স্বামী ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তান সরকারের অধীনে চাকুরী গ্রহণ করেছেন। (এটিকে কি রাজাকারী বলা যাবে? হাসিনার প্রয়াতঃ স্বামী জনাব ওয়াজেদ আলী মিয়া কি একজন রাজাকার ছিলেন? মনে রাখবেন, আগে থেকে করতে থাকা চাকুরী চালিয়ে যাওয়াটাও সমর্থনযোগ্য ছিলোনা। আর জনাব ওয়াজেদ আলী মিয়া তো পাকিস্তান সরকারকে সহযোগিতার উদ্দেশ্যে নতুন করে চাকুরী নিয়েছিলেন।) কিছু দিন আগে যুদ্ধ অপরাধী / মানবতাবিরোধী অপরাধী ট্রাইবুনালের চীফ কিছু একটা এক ব্যক্তিকে পদত্যাগ করতে হয়েছিলো। তার অপরাধ ছিলো তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময়ে পাকিস্তান সরকারের চাকুরী নিয়েছিলেন। তাই তিনি প্রমাণিত হয়েছিলেন রাজাকার/আলবদর এবং আরো কতো কিছু।

১৫. হাসিনার বাবা ছিলেন বঙ্গবন্ধু, জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান। দেশের অনেকেই অবশ্য তাকে জাতির পিতা হিসেবে মানতে রাজী নন। আজকাল আওয়ামী লীগার সেজেছেন অথবা আওয়ামী লীগের সাথে মহাজোট গঠন করে এমপি বা মন্ত্রী হয়েছেন এমন অনেকেই এক সময় হাসিনার পিতার পিঠের চামড়া দিয়ে জুতো বানিয়ে পরতে খুব আরাম বোধ করতেন। তাই হাসিনার পিতাকে জাতির পিতা মেনে নিতে সবাইকে বাধ্য করার জন্য সংবিধানে এ বিষয়ে একটি ধারা সংযোজনের প্রক্রিয়া চলছে।

১৬. হাসিনা স্বঘোষিত জাতীয় বেইমান। ১৯৮৬ সালে এরশাদ নিজের স্বৈরশাসনকে বৈধতা দানের উদ্দেশ্যে পার্লামেন্টের নির্বাচন ঘোষণা করলে বিরোধী দলগুলো সেই নির্বাচন বয়কটের সিদ্ধান্ত নেয়। চট্টগ্রামের এক জনসভায় হাসিনা ঘোষণা করেন, যে এই নির্বাচনে অংশ নিবে, সে হবে জাতীয় বেইমান। সেদিনই রাতে ঢাকায় ফিরে এসে মাঝরাতের পর তিনি নির্বাচনে যোগদানের ঘোষনা দেন। পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদে এবং সে সময়ে এরশাদের ঘনিষ্টজন ব্যারিষ্টার মওদুদের লেখা থেকে জানা যায় যে, রাতে এরশাদের সাথে তার গোপনে সাক্ষাৎ হয় এবং এরশাদ নির্বাচন পরিচালনার ব্যয় হিসেবে তাকে কয়েক কোটি টাকা দেন। পক্ষান্তরে খালেদা কখনো জাতির সাথে বেইমানী করেননি।

১৭. হাসিনার নিকট বাংলাদেশের সম্মান-মর্যাদা তথা স্বাধীনতা কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। ভারতীয়রা তাকে মূখ্যমন্ত্রী বলে সম্বোধন করলে তিনি মুচকি হাসেন। হয়তো মনে করেন, এতে করে তিনি জাতে উঠেছেন। খালেদার ব্যাপারে এমনটি কল্পনাও করা যায়না।

১৮. হাসিনা রাজনৈতিক স্বার্থে ধর্মকে ব্যবহার করেন। নির্বাচনের আগে হিজাব পরে, তসবী হাতে জায়নামাজে বসে, মুনাজাতের ভঙ্গীতে হাত তুলে ছবি উঠিয়ে পোষ্টারে ছাপান। শ্লোগান দেন, "ভোটের বাক্সে বিসমিল্লাহ। নৌকার মালিক তুই আল্লাহ।" নির্বাচনের আগে তিনি ফতোয়াবিরোধী আইন করা হবেনা বলে ইসলামপন্থী দলগুলোর সাথে চুক্তি করেন। নির্বাচনের পর তিনি সব ভুলে যান। তখন তিনি সিঁথিতে সিঁদুরের তিলক পরেন আর মঙ্গল প্রদীপ জ্বালান। খালেদাকে নিয়ে এমনটি ভাবারও কোনো সুযোগ নেই।

১৯. দেশের স্বার্থ বিকিয়ে হাসিনা ফারাক্কা ও টিপাইমুখের বাঁধ নিয়ে চুক্তি করেন, ভারতকে বিনামূল্যে ট্রানজিট, করিডোর ইত্যাদি সব দিয়ে দেন। এসব বিষয়ে দেশবাসীকে ধোকায় ফেলার জন্য কখনো বলা হলো এসব ট্রানজিটের মাধ্যমে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার উপার্জন করে দেশ অল্পদিনের মধ্যেই বড় লোক হয়ে যাবে। আবার বলা হলো যে, ভাড়া নিলে আমরা অভদ্র হয়ে যাবে। সার কথা হচ্ছে, ভারতের স্বার্থ রক্ষা। খালেদা কখনো দেশের স্বার্থ বিকিয়ে দেননি।

২০. নাইকো আর মাগুরছড়ার গ্যাসকূপের অগ্নিকান্ডের জন্য হাসিনা কোনো ব্যবস্থাই নেননি। তিনি তেল কোম্পানিগুলোকে ইনডেমনিটি দিয়ে চুক্তি করে যান। পরে খালেদা এসে মাগুরছড়ার ব্যাপারে সামান্য কিছু বাড়তি সুবিধা আদায় করতে পারলেও নাইকোর সাথে হাসিনার চুক্তি এতো সুদৃঢ় ও নিশ্ছিদ্র ছিলো যে, তাতে খালেদার পক্ষে কিছুই করা যায়নি। মজাব ব্যাপার হলো, ভারতপন্থী তত্বাবধায়ক সরকার এসে হাসিনা-খালেদা দুইজনের বিরুদ্ধেই মামলা করে। পরবর্তীকালে ক্ষমতায় এসে হাসিনা তার বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। খালেদার বিরুদ্ধে মামলা এখনো আছে (যদিও তিনি কোনো অপরাধ করেননি)।

তাই এ কথা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে কোনোমতেই হাসিনাকে খালেদার সাথে এক পাল্লায় মাপা যাবেনা। আর মাপার চেষ্টা করাও উচিত হবেনা।