পুরুষ-নারীর সমান অধিকার চাই!!

আহমেদ নুর
Published : 25 March 2012, 12:10 PM
Updated : 25 March 2012, 12:10 PM

শিরোনাম টা যে কেউ পড়ে হয়তো ভাবছেন যে লেখাটা ভূল হয়েছে। আসলে তা নয়, আমার লেখার পরের অংশটুকু পড়লে বিষয়টা পরিষ্কার হয়ে যাবে। সাধারনত নারী শব্দটিকে আগে ও পুরুষ শব্দটিকে পরে লেখা হয় এবং উভয়ের সমঅধিকার চাওয়ার ক্ষেত্রেও বলা হয়, নারী-পুরুষের সমঅধিকার চাই। যেহেতু আমাদের সমাজে পুরুষদের চেয়ে নারীরা অধিকার পাওয়ার ক্ষেত্রে পিছিয়ে তাই হয়তো এইভাবে লেখা বা বলা হয়ে থাকে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে পুরুষরা অধিকার পাওয়ার ক্ষেত্রে নারীদের চেয়ে পিছিয়ে। তাই আমি আমার শিরোনামে পুরুষ শব্দটিকে আগে এবং নারী শব্দটিকে পরে ব্যবহার করেছি।

সরকারী যে কোন (শুধু একটা ব্যতিত) চাকুরী পাওয়ার ক্ষেত্রে নারী এবং পুরুষ উভয়ের একই যোগ্যতার প্রয়োজন হয়। শুধু মাত্র প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষের যোগ্যতার ক্ষেত্রে বিস্তর পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। এখানে নারীদের জন্য এস.এস.সি/এইচ.এস.সি/স্নাতক বা সমমানের শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং পুরুষদের জন্য স্নাতক বা সমমানের শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রয়োজন হয়। কেন এই বৈষম্য এটা সকলেরই অজানা। একজন এস.এস.সি পাশ করা নারী বা পুরুষ কখনও একজন স্নাতক পাশ করা নারী বা পুরুষের সমকক্ষ হতে পারে না। আর যদি তাই হয় তাহলে এইচ.এস.সি বা স্নাতক পাশ লেভেল চালু রেখে সরকার অযথা এই খাতে লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যায় করছে কেন?

একজন পুরুষ একটি পরিবারের ক্ষেত্রে যে অর্থনৈতিক দায়িত্ব পালন করে, একজন নারী তা কখনই করে না। যেহেতু আমাদের সমাজ পিতৃতান্ত্রিক তাই একটি পরিবারের সার্বিক দায়িত্ব একজন পুরুষকেই নিতে হয়। একজন বিবাহিত নারী যতটুকু তার পরিবারকে অর্থনৈতিকভাবে সাহায্য করে, একজন অবিবাহিত নারীর ক্ষেত্রে তা হয় না। একজন অবিবাহিত নারী চাকুরী করলেও সে তার পরিবারে অর্থনৈতিকভাবে তেমন কোন ভূমিকা রাখে না। সে তার উপার্জনের বেশীরভাগ অংশই খরচ করে তার ব্যক্তিগত কাজে বিশেষ করে ফ্যাশন বা রূপচর্চার কাজে। অন্যদিকে একজন চাকুরীজীবি পুরুষ তার উপার্জনের সবটুকু খরচ করে তার পরিবারের পিছনে। সুতরাং একজন পুরুষের চাকুরির প্রয়োজনীয়তা একজন নারীর তুলনায় অনেক অনেক গুন বেশী। আমি যদি একজন নারীর পক্ষে বলি তাহলে বলব, একজন এস.এস.সি পাশ করা নারী প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক পদে আবেদন করার সুযোগ পাওয়ায় একজন স্নাতক পাশ করা নারী চাকুরী পাওয়ার ক্ষেত্রে সুবিধা বঞ্চিত হচ্ছে। এতে করে একদিকে যেমন সে তার বয়স হারাচ্ছে তেমনি সে হতাশায় ভুগেছে।

হয়তো এস.এস.সি পাশ করা একজন নারীর চাকুরীর পরীক্ষাটা ভাল হয়ে যাওয়ার সুবাদে সে চাকুরী পাচ্ছে ঠিকই কিন্তু এস.এস.সি পাশ করা একজন নারী কখনই স্নাতক পাশ করা একজন নারীর সমান জ্ঞান অজর্ন করতে পারে না। আর একারণেই আমাদের সন্তানেরা ভালভাবে কিছু শিখতে পারছে না।সুতরাং নারী ও পুরুষের জন্য প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে স্নাতক পাশই যুক্তিযুক্ত।

সবশেষে আমি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয়কে ধন্যবাদ জানাই যে তারা এই বিষয়টি দেরিতে হলেও বুঝতে পেরেছেন। আশা করি এই বিষয়ে দ্রুত ও কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করে পুরুষের অধিকারকে নারীর অধিকারের সম মর্যাদা দান করবেন।