হৃদয় জুড়ে তাঁদের জখমিত রক্তের ধারা আজও ঝরে

নুরুন্নাহার শিরীন
Published : 14 Dec 2012, 12:01 PM
Updated : 14 Dec 2012, 12:01 PM

আজ সেই সে বেদনার্ত সেই সে জখমিত অজস্র গুণীজনের আত্মার ফিরে আসার দিন। তাইতো আজ সকল বন্ধ জানালা খুলে রাখার দিন। কেননা –

"ওরা আসবে
চুপিচুপি
যারা এই দেশটাকে ভালোবেসে দিয়ে গেছে প্রাণ –
সবক'টা জানালা খুলে দাও না ………………"

এই গানের ভাষায় তাঁদের জন্য জানালা খুলে রাখার আহবান জানাই আজ বাংলা আর সকল বাঙালীর কাছেই।

কেবল ঘৃণিত সেইসব ঘাতকদল যারা কীটের অধিক জাহান্নামের কীট তারাই বন্ধ থাকুক বাংলাদেশের সবক'টি জানালা হতে হাজার মাইল ব্যবধানের ঘেরাটোপে। তাদের মুখের অযথা আস্ফালনে ভীত না হয় যেন কোনও বাঙালীর হৃদয় আজ। কেননা, তারা অযথা আস্ফালনে উন্মত্ত দল। তাদের কথায় মোটেও কান দেবার প্রয়োজন দেখিনা। এখন শুধু একটি সমুচিত রায়ের অপেক্ষায় আমরা। এবঙ বঙ্গজননী আজ সঠিক বিচারিক উচিত রায়টি শুনুক বহু কালের অপেক্ষার পরেও। এতে রাষ্ট্রীয় সামান্যতম ভুলও যেন না ঘটে আর। আজকে এর অধিক আর কোনও প্রিয় চাওয়া নাই।

অনেক কাল বঙ্গজননী তাঁর অজস্র প্রিয় সন্তানহারা জখমিত বেদনাভারে, রক্তক্ষরণে, আকুল আর্তনাদ সয়েছে সর্বংসহ মাতৃত্বের দায়েই। অসংখ্য মেধাবী সন্তানের দুচোখ বাঁধা স্বপ্নার্ত চিতকার সইতে হয়েছে এতোটা কাল ধরেই। বাংলার আকাশ-বাতাস-নদী ও নীলিমায় তাঁদের ফরিয়াদ ফিরেছে কেঁদে রক্তাক্ত সূর্যোদয় হতে সূর্যাস্তে। তাঁদের আত্মিক ডাক শুনতে পাই বাংলাদেশের প্রপ্ত্যন্ত বধ্যভূমি হতেও। সে কোন পাষাণ এজিদ-সীমার-এর দলের মানুষ নামের কুলাঙ্গার যাদের হৃদয় কাঁদে না সেই ডাকেও !!! তারা নিপাত যাক। আমরা কবিগুরুর বাণী-ই শিরোধার্য করবো আজ –

"মুহূর্তে তুলিয়া শির একত্র দাঁড়াও দেখি সবে,
যার ভয়ে তুমি ভীত সে অন্যায় ভীরু তোমা-চেয়ে,
যখনি জাগিবে তুমি তখনি সে পালাইবে ধেয়ে।
যখনি দাঁড়াবে তুমি সন্মুখে তাহার তখনি সে
পথকুক্কুরের মতো সংকোচে সত্রাসে যাবে মিশে।
দেবতা বিমুখ তারে, কেহ নাহি সহায় তাহার,
মুখে করে আস্ফালন, জানে সে হীনতা আপনার
মনে-মনে।"

তো, এই হীন কুক্কুরদের ভয় করার প্রশ্নই ওঠেনা আজ।

আজ বঙ্গজননী যেন পাহাড়সম ভারমুক্ত হবার নিশ্চয়তাটুকু পায় বাংলাদেশ নামের রাষ্ট্রের কাছে – তারই সনির্বন্ধ দাবীটি জানাতে চেয়েই এই লেখাটি নিবেদন করছি। সেইসঙ্গে বধ্যভূমিতে জাগ্রত অজস্র গুণীজনের আত্মার তরে আমার নিবেদন –

আপনারাই চিরজাগ্রত বিবেক আমাদের।
আপনারাই চিরনমস্য অগ্রপথিক আমাদের।
যারা আপনাদের রক্তধারায় উল্লাসে মেতেছিলো –
যারা আপনাদের দুচোখ বেঁধে হত্যা করেছিলো –
আমরা তাদের উচিত বিচার না হওয়া পর্যন্ত যাবোনা
যাবোনা কোথাও যাবোনা, যাবোনা।

এবঙ ভুলেও দাবী ছেড়ে তিলমাত্র নড়বোনা।
এখন অনড় আমরা চুল পরিমাণ সরবোনা।
আমরা বিচারে সন্তুষ্ট না হয়ে সরবোনা, নড়বোনা।
উচিত রায়টি না শুনে ভুলেও কোথাও যাবোনা।

১৪ ডিসেম্বর ২০১২ ইং