জল্লাদ-জবাইকারী দলের সর্বোচ্চ সাজার দাবি জানাই

নুরুন্নাহার শিরীন
Published : 16 Feb 2013, 08:26 PM
Updated : 16 Feb 2013, 08:26 PM

একজন তারুণ্যদীপ্ত ব্লগার রাজীব হায়দার শোভন – কাল সন্ধ্যায় কাপুরুষোচিত চোরাগোপ্তা জল্লাদ-কসাই দলের হামলায় শহীদ। যে বা যারাই এমন জল্লাদ-কসাই দল – তাদের সর্বোচ্চ সাজার দাবী জানাই। তারা ঘাতক কাপুরুষ নিকৃষ্ট জল্লাদ-কসাই। যে কসাই মহান ইসলাম ধর্মের অনুমোদিত-বৈধ হালাল পশু / প্রাণীর বদলে মানুষ কোপায় / জবাই করে।

অবৈধ-অন্ধ হত্যার নীতিতে পরিচালিত জামায়াত-শিবিরের রাজনীতিতে নির্দ্বিধায় জিহাদের নামেই – "আল্লাহু আকবর" ধ্বনিতে পশু না মানুষকে জবাই জবাই করার নীতি। পবিত্র ইসলাম ধর্মকে অপবিত্র করার অধিক অপরাধেই এই দলটি ইসলাম ধর্মের অবমাননাকারী একাত্তুরের জল্লাদ-রাজাকারের ভূমিকাকে আদর্শ মানার নির্দেশ মেনে চলেছে। তাদেরই আবার বর্তমান বিরোধী দল আঠারো দলীয় জোটেও জটাবদ্ধ রেখেছে।

তবু এ এক অভাবিত জয়বার্তা যে – আজকের প্রজন্ম জেগেছে একাত্তুরের চেতনায়। সে চেতনায় লেগেছে গণজাগরণের জোয়ার। জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধের দাবীতে সেখানে সোচ্চার সকলেই। শাহবাগের সুবিশাল গণজাগরণের আজ দ্বাদশ দিন। সেখানে ক্লান্তিহীন দিনরাত্তির। কাল সিদ্ধান্ত হয়েছিলো খানিক বিরতি দিয়েই নতুন কর্মসূচির কথা। কিন্তু না, ব্লগার রাজীব হায়দারের মৃত্যু মুহূর্তে সেই কর্মসূচিকে নতুন করেই দ্রোহের আগুনে উত্তাল লাগাতার আন্দোলনের ঘোষণায় জীবন্ত দাউদাউ শপথে প্রজ্জ্বলিত শিখায় পরিণত করে। সেখানে আজ বিকেলে শহীদ রাজীব হায়দারের জানাযা পড়ে গণজাগরণের লক্ষ মানুষ। লক্ষ হৃদয়ে শপথের আগুনে উচ্চারিত –

"খুন হয়েছে আমার ভাই
খুনী তোদের রক্ষা নাই।।
জামাত-শিবির নিষিদ্ধ চাই
জল্লাদের রক্ষা নাই।।"

আমাদেরও গণজাগরণের সঙ্গেই একাত্ম সংহতি। আমরা আজ তাদের দাবীই জাতীয় দাবী মানছি। আমরা কেউই আমাদের আগামী প্রজন্মের একজনেরও অকাল মৃত্যু চাইনা। একজনকেও কসাই-জল্লাদ দলের হাতে জবাই হতে দিতে রাজী না। আর যাতে কারুর ভাই / সন্তান এই কসাই-জল্লাদ দলের শিকার না হয় সেই লক্ষ্যেই এই মুহূর্তে জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধের একদফা একদাবীতে অনড় থাকা ব্যতীত অন্য কোনও দাবী নাই –

"অন্য কোনও দাবী নাই –
জামাত-শিবির নিষিদ্ধ চাই।
জল্লাদ-কসাই নিষিদ্ধ চাই –
অন্য কোনও দাবী নাই।"

এই মুহূর্তে এটিই জরুরী। অতঃপর আবার –

"একদফা একদাবী –
রাজাকারের ফাঁসি।
অন্য কোনও দাবী নাই –
রাজাকারের ফাঁসি চাই।"

সকল ব্লগার ভাইবোনের নিরাপত্তা রক্ষায় আরও অনেক সচেতন-সদাজাগ্রত-যুথবদ্ধ একাত্মতার অনড় বন্ধন অটুট থাকুক। তাহলেই একাত্তুরের মতো আমরা জয়ী হবোই হবো। একাত্তুরের চেতনাবিরোধী পাকিপ্রেমীদের ষড়যন্ত্রের ভিত্তি কাঁপিয়ে দিবো। প্রজন্ম এবঙ ব্লগার ভাইবোন সহ সবাই আরও অনেক সতর্কতা অবলম্বন করে পথচলতি চোরাগোপ্তা হামলা ঠেকাতে একাকী নয় কয়েকজন মিলে –

"একের আঁটি দশের লাঠি"

প্রাচীন কৌশলে কুশলী পদক্ষেপে হাঁটুন। গণধোলাইয়ের ভয়েই কাপুরুষ চোরাগোপ্তার দল পালিয়ে বাঁচতে চাইবে। পার পাবে না তবু। বাঙালি যখন শপথ নেয় তখন সেই শপথ পূর্ণ করেই জয়ী হয় – এ ইতিহাস একাত্তুরের জয়ের ইতিহাস – প্রজন্ম তার উত্তরসুরী হিসেবেই শাহবাগের বাঘ হয়েছে আজ। আমরা আছি জেগেই তাদের জয়ের তরে —

জয়বাংলা।।

১৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৩