বিশ্বকবি হিসেবে খ্যাতির শিখর ছোঁয়া কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর – যাঁকে জগতে – ‘কবিগুরু’ সম্বোধনে আজও নিবেদিত করা হয় ভক্তি সমাকুল অজস্র পংক্তিমালা। তারই এক অভিনব সংযোজন সদ্য আমার হাতে এসেছে – শিরোনাম –
“তোমারি নাম বলব”।
কোলকাতা থেকে প্রকাশিত। সম্পাদনা করেছেন অঞ্জলি ভট্টাচার্য। সহ-সম্পাদনায় রয়েছেন ঢাকার ঝর্ণা রহমান এবঙ কোলকাতার রিনা গিরি ও বল্লরী সেন। ভূমিকা লিপিতে প্রখ্যাত সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় লিখেছেন –
“দুর্ভাগ্যবশত আমি পুরুষ হয়ে জন্মেছি, ক্রোমোজোমের খামখেয়ালিতে, এই সংকলনের কবিরা উচ্চতর প্রাণী, মানুষের মধ্যে মানবী। আমার কবিতা বিবেচ্য নয় বলেই আমাকে ভূমিকা-লেখক করা হয়েছে। ”
এতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে ঠিক দেড়শো জন, যাঁদের কারুর বয়স ছিয়াশি, কারুর সবেমাত্র চৌদ্দ-পনেরো। আমিও ইমেইলে একটি আমন্ত্রণ বার্তা পেয়েছিলাম কবিতা পাঠানোর। তাতে সম্পাদকীয় কমিটির দিক নির্দেশনাটি ছিলো এরকম – যে –
কবিতাটি যেন হয় কবির সৃষ্ট কোনও নারীর হৃদয়গত কথা। কবির সৃষ্ট নারী চরিত্র শুভা, হৈমন্তী, লাবণ্য, চন্দরা, নন্দিনী, মৃন্ময়ী কত নামেই না ছড়িয়ে আছে জীবন নামার বিচিত্র উপাখ্যানে। অনেক ভেবে আমি তাঁর ‘কৃষ্ণকলি’ হতে চেয়েই চিঠি দিলাম। আর সেটিই এই লেখায় লিপিবদ্ধ করছি –
কবিগুরুর জন্য সুদূরের চিঠি
~ নুরুন্নাহারশিরীন
প্রিয় কবিগুরু,
সেই দেশ বিভাগের আগে
এক বাইশে শ্রাবণদিনে
আপনি সমস্ত প্রেম পৃথিবীতে ফেলে
গেলেন অনন্তলোকে —
সেই থেকেই যেন বা এই
বঙ্গোপসাগরকূলে জেগে আছি বাংলার মেয়ে।
যেন আমিই — আমিই সেই কৃষ্ণকলি — ! আপনি জেনেছিলেন —
আর জেনেছিলাম সুদূর আমি !
আজও আমার না আছে দ্বিতীয় প্রেম –
না ফরসা রঙ — সেই শ্যামলা-ময়লা —
লোকে যারে কালো বলে।
কেবল আপনি গান বাঁধলেন, ডাকলেন ‘কৃষ্ণকলি’ বলে।
তার জন্যই হয়তো আর কারও নজর পড়েইনি এই কালো পানে।
যদি বা পড়েও থাকে আমার দেখার
লোভ নেই , দুচোখ ডুবেছে গানে।
যে গান আপনি জ্বেলে গেছেন মাঠের
পারের দিগন্ত ভাগে –
বাংলার কালো মেয়ের হরিণ চোখে।
আজ পৃথিবী বলুক তারপরে
আর কি কোনও প্রশ্ন থাকে !
প্রশ্নাতীত গান হয়ে আপনার কৃষ্ণকলির দুচোখ ভেসে যাচ্ছে হৃদয়ের এ কূল ও কূল
দুকূল ভাসিয়ে চিরহৃদিমূলে —
কেউ কি দেখছে !
কৃষ্ণকলি আপনারই একান্ত সৃষ্টিজালে
বাঁধা বলেই আজও বেজে ওঠে
এপার-ওপার এক করা সুরতালে।
বেজে ওঠে জলেস্থলে
বাংলার উত্তাল কলরোলে।
প্রিয় কবিগুরু,
আমার এ চিঠি আর কেউ
পড়ছে ভেবেই –
হৃত হৃদিমূল দুরুদুরু !
(* ‘তোমারি নাম বলব’ গ্রন্থ থেকে,
পৃষ্ঠাঃ৯০। *)
*২৫ শে বৈশাখে কবির দেড়শোতম বার্ষিকীর জন্য আমার কবিকে লেখা আরও একখানা চিঠি কবিতাকারে দৈনিক জনকণ্ঠে প্রকাশিত, সেটিও সংযোজন করছি –
সার্ধশত জন্মবার্ষিকী স্মরণে প্রণতি
~ নুরুন্নাহারশিরীন
প্রিয় কবিগুরু,
কীবোর্ডে লিখছি আপনাকে চিঠি —
আত্মা দুরু-দুরু।
জানি আপনি বসত করছেন
মান্ধাতার সেই পরলোকেই বহুবর্ষ।
আপনার হয়তো জানাই নেই
কত দিন বদলের হাওয়ায় কম্পমান
আজকের মহাবিশ্ব —
পরিবর্তিত নতুন চালচিত্র —
অভূত ও অবিশ্বাস্য।
জানি আপনার কালে
চিঠি আসতো অপেক্ষমান হাতে
খুলতেই নদীময় ভাষায় কইতো কথা
গভীর চিঠির ভাষা হৃদয়ের সাথে।
কত কি খবরভর্তি চিত্রকলায় হৃদয়
ভেসে যেতো রঙিন পাতার ভাঁজে।
জলের মতোন ঝর্ঝর খেয়ালি কাব্যে
বেলা যেতো ভেসে।
তাকে পড়তে-পড়তে চোখ অতন্দ্র প্রহর —
যেন সুদূরের চোখল ধীবর !
জানি এরকমই ছিলো আপনার
কালের চিঠিপত্তর।
আপনার কৃষ্ণকলি কি মৃন্ময়ী কি হৈমন্তী
আজও ভাস্বর শত পড়ুয়ার মনে —
পড়তে-পড়তে তারা ঈর্ষাকাতর —
এমন কি কেউ-কেউ
হদ্দকাঙাল — হা ঈশ্বর !
এরকম প্রেম আজ আর নেই পৃথিবীতে।
এখন চিঠিপত্তর যন্ত্রস্থ এমন সবকিছু ই-তে। ইমেল-সাইন-ইন-চেক-নিউ-রাইট-মেসেজ এন্ড সেন্ড !
অথবা আপনি দিনদুনিয়া ভুলেই
চ্যাটে যান এন্ড — এন্ডলেস স্বর্গসুধাপান !
ওহ আপনিতো আহা এসবের
কিছুই জানেনও না — স্যরি কবিগুরু !
কিন্তু আজ আপনাকে আমার আত্মিক
সত্য করি নিবেদন ওগো কবিগুরু –
সেই যে অমল দিন ছিলো অপেক্ষার —
সে আমার প্রিয় খুব
দেড়শো বর্ষেও অমলিন সেতো জ্বালিয়েছে ধূপ – আমি ও হৃদয় আজ একদম চুপ !
যেন বা সকল ঈর্ষা আজ ব্লকড পেইজ খুলে পড়ছে-দেখছে পাতাভর্তি – ‘শুভ জন্মদিন’!
এই বার্তা আজ শুধু আপনার তরে নিবেদিত হৃদিভায়োলিন !
***
ফিচার ছবি: ইন্টারনেট
Anondo বলেছেনঃ
খুব ভালো লাগলো।
Nondita বলেছেনঃ
বাহ !
Biwhwa বলেছেনঃ
অভিনন্দন।
Asha বলেছেনঃ
বিষম সুন্দর। শুভেচ্ছা।
Pritish বলেছেনঃ
খুব ভালো লেগেছে আপা।
Parijat বলেছেনঃ
আপা, অনেক ভালো লাগলো। অভিনন্দন।
Bithi বলেছেনঃ
আমি অভিভূত। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বেঁচে থাকলে কি খুশিই না হতেন !!!
Bijoy বলেছেনঃ
কবিগুরু নিশ্চয় আনন্দে আত্মহারা হয়ে আরও হাজার খানেক গান লিখে ফেলতেন !
Bipob Datta বলেছেনঃ
“আহা কি আনন্দ আকাশে-বাতাসে”
Bivutivushon বলেছেনঃ
কবিগুরুর সার্ধশত জন্মদিনে এরচে’ সুন্দর প্রণামী হয়না।
Ashabori বলেছেনঃ
আশ্চর্য সুন্দর প্রণামী।
Yash বলেছেনঃ
কবিগুরুর জন্য আশ্চর্য সুন্দর অঞ্জলি বলা যায়।
Madhu বলেছেনঃ
বিষম সুন্দর।
Noyona Roy বলেছেনঃ
এতই সুন্দর যে ভাষাহীন আমি কি দিয়ে রচি বাণী ভেবে পাইনে —
Ashish বলেছেনঃ
” মধুর তোমার শেষ যে না পাই –“
Yardan বলেছেনঃ
অঞ্জলি লহ মোর ।।
Ontora বলেছেনঃ
” এ কি অপরূপ রূপে মা তোমায় হেরিনু –“
Keya বলেছেনঃ
” কৃষ্ণকলি আমি তারেই বলি —
আর যা বলে বলুক অন্যলোক — “
Noorjahan বলেছেনঃ
” কালো ? তা সে যতই কালো হোক আমি দেখেছি তার কালো হরিণ চোখ “
Ishita বলেছেনঃ
” আমার পানে দেখলো কি না চেয়ে
আমি জানি আর জানে সেই মেয়ে “
Arth বলেছেনঃ
” আজি যত তারা তব আকশে সবই মোর প্রাণ ভরি প্রকাশে “
Oishi বলেছেনঃ
” আনন্দধারা বহিছে ভূবনে “
Amol বলেছেনঃ
” আগুনের পরশমনি ছোঁয়াও প্রাণে –“
Sayeed বলেছেনঃ
” এইতো ভালো লেগেছিলো আলোর নাচন পাতায়-পাতায় এইতো “
Shams বলেছেনঃ
” ওরে-ওরে-ওরে আমার মন মেতেছে তারে আজ থামায় কে রে “
Shimul বলেছেনঃ
” তাই তোমার আনন্দ আমার পর তুমি তাই এসেছো নিজেই “
Aiman বলেছেনঃ
” কোন আলোকে প্রাণের প্রদীপ জ্বালিয়ে তুমি ধরায় আসো “
Medha বলেছেনঃ
” বধূ কোন আলো লাগলো চোখে “
Abed বলেছেনঃ
” আমি তোমারই সঙ্গে বেঁধেছি আমার প্রাণ সুরের বাঁধনে তুমি জানো নাই “
Shuchi বলেছেনঃ
” — তারার পানে চেয়ে-চেয়ে নাই বা আমায় ডাকলে –“
Oporna বলেছেনঃ
” ডাকবোনা , ডাকবোনা , অমন করে বাইরে থেকে ডাকবোনা , পারি যদি অন্তরে তার ডাক পাঠাবো , আনবো ডেকে “
Shikor বলেছেনঃ
” আমার শেষ পারানির কড়ি কণ্ঠে নিলাম গান কণ্ঠে নিলাম “
Kaisar বলেছেনঃ
” কেন তোমরা আমায় ডাকো আমার মন না মানে –“
abdur rahman chowdhury বলেছেনঃ
Hi real krishnokoli,khobi gurur prothi tumer redoyer taan tumer lekhone te………..Tumake baddho hoe real krishno koli Boli.
ম, সাহিদ বলেছেনঃ
চমৎকার-কৃষ্ণকলির জন্য কৃষ্ণচুরার রক্তিম শুভেচ্ছা।
hafiza বলেছেনঃ
৩০ বার পঠিত অথচ মন্তব্য ৩৫ টি…. হায়রে পাঠক….
নুরুন্নাহার শিরীন বলেছেনঃ
যারা পড়েছেন মন্তব্য করেছেন প্রত্যেকের জন্য হার্দিক শুভেচ্ছা আমার কবিগুরুর ভাষায় ” — ভালোবাসো — অন্তর হতে বিদ্বেষ-বিষ নাশো।”
~ নুরুন্নাহারশিরীন
নাহুয়াল মিথ বলেছেনঃ
নুরুন্নাহার শিরীন বলেছেনঃ
🙂 ” জল পড়ে পাতা নড়ে ” !! ধন্যবাদ, ভাই নাহুয়াল মিথ।
shoshan thakoor বলেছেনঃ
HAHAHAHAH………valo koetuk.
নুরুন্নাহার শিরীন বলেছেনঃ
🙂 🙂 কৌতুক কেন মনে হলো ভাই শ্বশ্মান ঠাকুর !!
মাধবীলতা বলেছেনঃ
অঞ্জলি লহ মোর ।।
(আপু আপনি খুব ভালো লিখেন। )
নুরুন্নাহার শিরীন বলেছেনঃ
🙂 মাধবীলতা, লেখার চেষ্টা করি মাত্র। ভালো হউক আমাদের সবার। ভালো হউক জগতবাংলার। শুভাশিষ।
বুধু বলেছেনঃ
নুরুন্নাহার শিরীন বলেছেনঃ
🙂 🙂 ধন্যবাদ বুধু ভাই। আজ আমার লেখার ইচ্ছে ” আনন্দধারা ঝরুক ভূবনে ” !!
সবুজ তাপস বলেছেনঃ
একটা ভালো কবিতা।
নুরুন্নাহার শিরীন বলেছেনঃ
ভাই সবুজ তাপস, অশেষ শুভেচ্ছা।
আলী কদর পলাশ বলেছেনঃ
আগুনের পরশমনি
নুরুন্নাহার শিরীন বলেছেনঃ
🙂 ভাই পলাশ, শুভেচ্ছা অশেষ।