আমরা কি জানিনা কারা আজও যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে চায়?

নুরুন্নাহার শিরীন
Published : 2 Nov 2014, 04:35 PM
Updated : 2 Nov 2014, 04:35 PM

অত্যন্ত ভারাক্রান্ত চিত্তেই আজও দেখতে হয় বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষেও কোন দলের আন্দোলন ! এবঙ হরতাল পালন ! তখন কি দ্রোহ ও ঘৃণায় হৃদয় পোড়েনা? আজ যখন তেতাল্লিশটি বর্ষ পরেই বর্তমান সরকারের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ওয়াদা পূরণের মাহেন্দ্রক্ষণ – দীর্ঘসূত্রীতার আইনি প্রতিবন্ধকতা, জটিলতার স্তর পেরিয়ে – চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের রায় প্রদান করবার কাঙ্ক্ষিত সময় – তখন যেসব দল প্রতিবাদের হরতাল ডাকছে – সে কি ঘৃণিত নয়? আমরা কেন তাদের প্রতিহত করতে আওয়াজ তোলার পরিবর্তে – একরকম নির্বিকার থাকবো? কেন থাকবো? কোনও কোনও দলের নেতাদের যখন জনপ্রিয়তা শূণ্যের কোঠায় বলতে পারি, তাদের কন্ঠে সরকারের হিটলারি পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সরব হওয়ার ডাকের জবাব কি জনগণের দেওয়া উচিত নয়? অনেক বিদ্বজনদের পর্যন্ত এই বিষয়ে প্রায় নিরব দেখে অর্বাচীনের আজ হৃদয় জুড়ে দ্রোহ ও কান্নার অাগুনে পোড়া এসব প্রশ্ন দহনসম দাউদাউ।

আমরা জানি – আজ যে মীর কাসেম এর রায়টি ঘোষিত হয়েছে সেই কুখ্যাত মীর কাসেম নামের ব্যাক্তির পক্ষে কি করে বাংলাদেশের কেউ একটি আওয়াজও উঠাতে চায় ! যে চায়, সে কি আদতে বাংলাদেশের কেউ? না, সে তো সেই একাত্তুরের বাংলাদেশের স্বাধীনতা চায়নি যারা – তাদের সপক্ষের মানুষ। তাকে আমরা বাংলাদেশের কেউ ভাবতে পারি? সরকারের বহুবিধ অন্যায় / অবিচারের বিরুদ্ধে দাঁড়াবার অধিকারটি আছে জনগণের। কিন্তু, সরকারের সঠিক কাজের বিরোধীতাকারীদের কিছুতে সমর্থন দেবার সময় না এখন। আজ আমাদের তো দীর্ঘ কালের বিচারবিহীন আমাদের স্বাধীনতার চরম ঘৃণিত ব্যক্তিদের বিচার হচ্ছে। যে বিচারের বাণী বাংলার বাতাসে-বাতাসে কেঁদে ফিরেছে এতোকাল। এখন আমাদের কারোর এতটুকু ভুলের মাশুল গুণতে হবে আগামী কালের আমাদেরই শিশুদের। তাহলে আজ আমরা সরকারের একটি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ কাজের সাফল্যের বিরুদ্ধে যাবার মতোন হঠকারী একচুলও পদক্ষেপ নিতে কি পারি কিছুতে?

ইতোমধ্যে বিচার কাজ বিঘ্নিত করার অনেক অন্যায় চক্রান্ত এইসব চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের টাকায় পরিচালিত হবার সংবাদ প্রকাশ পাওয়ায় ভন্ডুল হয়েছে – আমরা জানি। আরও অনেক চক্রান্ত হবে এদের সপক্ষের দলের সহায়তায় – সেওতো সন্দেহাতীত বিষয় বলেই ধারণা। সুতরাং এখন আমাদের অযথা সরকারের সমালোচনা / বিরুদ্ধাচারণ এর কারণে যদি যুদ্ধাপরাধীরাই পার পাবার সুযোগ / উছিলা তৈরী হবার পথ আমরা করি – সে ভুল করা উচিত? এই কথাটি মাথায় রাখতে বলি সতীর্থ, ভাই-বোন, অনুজ, বন্ধু, সন্তানতুল্য সহযোদ্ধাদের।

তেসরা নভেম্বর আগামীকাল। আমাদের বাংলাদেশের ইতিহাসের আরেকটি চরম অন্যায়ের অধ্যায়। এইদিন জেলখানায় আমাদের স্বাধীনতার ঐতিহাসিক নেতৃত্বদানকারী চারজন নেতাকে স্বাধীনতার বিরোধীতাকারীরা হত্যা করেছে নৃশংসতমভাবে। আজও অইসব অন্যায়কারীদের সমর্থক দলের নেতানেতৃদের প্রকাশ্যে আরেকটি পনের আগস্ট / তেসরা নভেম্বর ঘটার হুমকি-ধমকি শুনি আমরা ! সে কি ভুলেও ঘটতে দেওয়া যায়? সুযোগ দেওয়ার অন্যায় পথ তৈরীর একচুলও সহায়তার কথা কল্পনাযোগ্য! অইসব অন্যায় পরিকল্পনার পরীরা ভূত-পেত্নী হয়েই হাওয়ায় উড়ুক। বাস্তবে তাদের ডানাভাঙা হতেই হবে বাংলাদেশের মাটিতে – এই চাওয়া আজ।

২ রা নভেম্বর। ২০১৪ ইং।
ঢাকা। বাংলাদেশ।