যে জীবন অসীমানন্দে শুদ্ধ বাতাস খোঁজে

নুরুন্নাহার শিরীন
Published : 12 Dec 2014, 06:10 AM
Updated : 12 Dec 2014, 06:10 AM

অাজকের বাংলাদেশের বাতাস বায়ু দূষণ জনিত কারণে পরীক্ষিত ভাবেই অচিন্ত্যনীয় অস্বাস্থ্যকর। রাজধানী ঢাকার বায়ু দূষণ সব চাইতে বেশি। বাংলাদেশের সকল জেলার মানুষ ঢাকামুখী – রাজধানীর সুযোগ-সুবিধা পেতে , লেখাপড়া বা ভালো একটি কাজের অাশায়। ফলে ঢাকার উপর জনসংখ্যার চাপ বেড়েই চলেছে , ঢাকা তো অার বাড়েনি। যত্রতত্র চরম মানবেতর বস্তিবাসীর জীবন যাপন বায়ু দূষণ বাড়িয়েছে যতটা , তার অধিক বাড়িয়েছে কলকারখানার, হাসপাতালের, ইটভাটার বর্জ্যভার। লোকজনের রোগবালাইয়ের প্রকোপ বেড়েছে অাশঙ্কাজনক হারেই। শুদ্ধ বাতাস বুঝি কোথাও নেই। কি হবে তবে অাসছে দিনে? নতুন শিশুরা কি অসুস্থ্য হয়ে পড়বে জন্ম নিয়েই? এই ভাবনা অস্বাভিক না।

অাশার কথাটি এই যে – লোকজন অাগের চাইতে অনেক স্বাস্থ্য সচেতনতা অর্জন করছে বলে বিস্তর মানুষ বাড়ির অাশপাশে "মর্নিং ওয়াক" – অর্থাৎ প্রাতঃভ্রমণপ্রিয় হয়ে উঠছে। অামি নিজেও অসুখ জনিত কারণেই প্রতিনিয়ত বুঝতে পারছি – বেঁচে থাকাটা কত না সুন্দর। সুন্দরের জীবন ধরে রাখার অাশায় তাইতো ডাক্তারের কথানুযায়ী "মর্নিং ওয়াক" শুরু করেছি। রোজ সকালে বেরিয়ে পড়ছি অালসেমী, ঝিমুনি ত্যাগ করেই বাড়ির কাছের পার্কে। সেথায় কত না অমল অানন্দন দেখি – বিভিন্ন বয়েসি লোকজনের প্রাতঃভ্রমণের হাঁটার ছন্দে। দেখেছি চুরানব্বুই বয়েসী বৃদ্ধ লাঠিতে ভর দিয়েই কাজের ছেলেকে নিয়ে হাঁটতে এসেছেন। দেখে জীবন কত না অাশার – ভাবি। অসীমানন্দ ঝরে গাছের গন্ধে – অালোমেঘের দোলাচলে ধূলোমাটির সনে বাতাসে ভেসে অামিও হাঁটি তিরিশ মিনিট কি চল্লিশ মিনিটে তিন কি চার চক্কর। হাঁপ ধরলে বসি বেঞ্চিতে। খানিক জিরিয়ে প্রায় নতুন প্রাপ্ত স্বভাবদোষে মোবাইলে ধারণ করি গাছের ছবি, চারপাশের ছবি। সত্যিই বেঁচে থাকাটা দারুণ – সেই যে কথায় অাছে না – "যতক্ষণ শ্বাস ততক্ষণ অাশ"-এ বড়ো বাস্তব অনুভব। অাচমকা যে কোনও মুহূর্তে – "দম ফুরাইলে ঠুস"-সে কঠিন দৃশ্যটা মনে পড়িয়ে দেয় মনের চোখে চিত্রকলার মতো। তো, দম ফুরানোর অাগেই যে জীবন অসীমানন্দের তারেই শুদ্ধ বাতাস খাওয়া বঞ্চিত করা উচিত নয় কারও। অামাদের সবার সচেতনতায় রোগবালাই দূরে হটুক। মানুষ বাঁচুক – প্রকৃতির সহজ স্পর্শে অারও অায়ুষ্মান মানুষ রূপে।

অারও দুটি ছবিও যুক্ত করছি ফটো জার্নালিজম এর সুযোগে – ছবিগুলো দেখতে গিয়ে কোনও একজনেরও অলস মনে মর্নিং ওয়াক -এ বেড়িয়ে অাসতে প্রাণিত করতে পারলে ছবি উঠানো সার্থক অামার। বেঁচে থাকাও সার্থক ভাববো।

ডিসেম্বর। ২০১৪ ইং।
ঢাকা। বাংলাদেশ।