ম্যাডাম, চরম অন্যায় অই রাজনীতিটা পরিহার করুন,অাল্লাহর দোহাই লাগে

নুরুন্নাহার শিরীন
Published : 4 Feb 2015, 06:23 PM
Updated : 4 Feb 2015, 06:23 PM

এত যে ক্রন্দন এত যে অাহাজারিতে বাতাস ভারি – ম্যাডাম কি চোখ থাকিতে অন্ধ নেত্রীর অাসনে অাসীন? তাই মানুষ পোড়ানোর নির্দেশ দিয়েই যাবেন? অার কতজনের জীবন্ত কয়লা হবার দৃশ্যটা দেখে ম্যাডাম নিরস্ত হবেন এই চরম রাজনৈতিক প্রতিহিংসা হতে? এমন অনেক রাগ ও দ্রোহে প্রশ্নবিদ্ধ ম্যাডাম অার বিএনপির রাজনীতি। অথচ, সংশোধন দূরের কথা – হরতালের নামে, অবরোধের নামে চলছে ম্যাডামের নির্দেশ পাওয়ামাত্র পেট্রলবোমা ছুঁড়ে মারার চোরাগোপ্তা প্রতিযোগীতা ! যেন একটি দলের চরম হীন রাজনীতির খেলায় মানুষ পুড়িয়ে মারার উৎসব ! যা দেখে ম্যাডামের দলের অাত্মপ্রসাদের ঢেঁকুরে বাতাস বিষিয়ে কালো। যা দেখে জনগণ বিএনপির রাজনীতির উপর বীতশ্রদ্ধ , হতাশ। ম্যাডাম কি বেহুশ? বলি, অাপনি একটি বৃহৎ দলের, জোটের নেত্রী – অাপনার কি ন্যূনতম জনগণের প্রতি দরদ না থাকলে চলে? কোনও জনগণ ভুলেও অাপনাকে হাজার টাকা দিলেও ভোটদান করবে ভবিষ্যতে? ভাবুন প্লিজ, ম্যাডাম, ভাবুন অাজ। অাপনি যেভাবে জনগণকে টার্গেট বানিয়ে ক্ষমতায় বসার খায়েশে পুরোই অন্ধ ম্যাডাম অাজ, ভোট তো বহুদূর – অাগামী অারও দশবছর দেখবেন জনগণের ভোট ছাড়াই অাওয়ামীলীগ-ই অর্থাৎ অাপনার প্রধান শত্রু / প্রধান চক্ষুশূল বাংলাদেশ শাসন করবে। তার কারণ কিন্তু অাপনি ম্যাডাম, অাপনারই অাজকের মানুষ পোড়ানোর রাজনীতিটা। অাপনি জানেন না, অনুভবের ক্ষমতাও হয়তো হারিয়েছেন অাপনারই ভ্রান্ত নীতির কারণে। জীবন্ত দগ্ধ কতজনের অভিশাপ অাপনারই পরিবারের উপর অাজ পড়ছে, পড়বে, যদি না ক্ষান্ত হবার নির্দেশ প্রদান করে জাতির কাছে লজ্জিত হন। এবঙ করজোড়ে দুঃখ প্রকাশ সমেত ক্ষমা প্রার্থনা করেন অাপনি।

চেয়ে দেখুন ইস্কুলের কন্যারা আপনার অফিস গেইটমুখি প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে – ওরা আপনারই কাছে ইস্কুলে যাওয়ার অপরাধের কারণে পুড়ে না যায় – তেমন আবেদন জানিয়ে কি বলছে – একটু শুনুন, দেখুন – ওরা লিখেছে কচিকাচা আঙুলে –
"Don't Burn Us" … !!!
ম্যাডাম, প্লিজ, ওদের আতঙ্ক বুঝুন – যদি মুসলমান হয়েই থাকেন – আল্লাহর ওয়াস্তে এবার থামান আপনার দলকে। আপনার জোটকে। যদি মা হয়ে থাকেন – তাহলে আল্লাহর ওয়াস্তে মা জাতির কলঙ্ক হবেন না ম্যাডাম, আমরা অথবা জনসাধারণ তো আপনার শত্রু না। শুনেছি, আপনি নাকি কনিষ্ঠ পুত্রের মৃত্যুর পরে বড়পুত্রের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন – সবার আগে দেশ-ই বড় ! এবঙ তিনবার একই কথা জবাবে বলেছেন ! তো, দেশ যদি বড়-ই হয় – দেশের মানুষ কেন না? বলুনতো ম্যাডাম? দেশের মানুষগুলি কি অন্যায় করেছে?

অাজ অামার মন এতই ভারাক্রান্ত – অাদতে অামি কি উপায়ে অাপনাকে লিখলে / অাল্লাহর দোহাই দিলে অাপনি ক্ষান্ত হবেন – অামার মতোন একজন অরাজনৈতিক লিখিয়ে মানুষের মাথায় অাসছেনা কিছুতে। অাজ হৃদয়ফাটা পুড়ে কয়লা হওয়া স্বামী ও কন্যাহারা মায়ের কান্না অামার সহ্য হচ্ছে না বলে – ম্যাডাম, দোহাই দিয়ে বলছি অাপনাকে – ভাবুন, অই মায়ের কথা, যে অাজ মাইশা নামের প্রিয় কন্যা ও স্বামীর পেট্রল বোমায় জীবন্ত পুড়ে কয়লা হবার দৃশ্যটা বাকি জীবন বয়ে মরতে ইচ্ছা করবে। কন্যাটির কি অপরাধ ছিলো? কি অপরাধ ছিলো কন্যার বাবাটির? মাইশা অাপনার নাতনীসম একজন মায়ের অাদরের কন্যা – যে কয়লা এখন তার বাবাকে সুদ্ধো। এমন অারও অনেক পরিবার বাংলাদেশে অাজ হৃদয়ফাটা অাহাজারি করছে – ম্যাডাম, শুনুন একবার বাইরে এসে। এদেশে অাপনাকে মোটেও বন্দী করার ফরমান হয়নি – রাস্তায় বেরিয়ে বার্ণ ইউনিটের পরিবারগুলোর সামনে যান – দেখুন চেয়ে – রঙিন সানগ্লাস নামিয়ে – অাল্লাহর দোহাই দিলাম ম্যাডাম, প্লিজ থামুন এইবার। মানুষদের একটু বাঁচতে দিন।

ফেব্রুয়ারি। ২০১৫ সাল।