অাজি এ অন্তর্দ্রোহের রক্তজলে …

নুরুন্নাহার শিরীন
Published : 13 May 2015, 06:09 PM
Updated : 13 May 2015, 06:09 PM

অামি জানি না, অাজকাল – "এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো—-ও তুমি " – গানটিরে এতটা রক্তজলভর্তি লাগিছে কেন? লাগিছে বলিয়া কি অামরা অসহ্য হইয়া অার কোনও দেশ / বিদেশ খুঁজিতে যাইবো? কোথায় যাইবো? হায় এইতো একটাই ঠিকানা অামাদের – তাহারে ছাড়িয়া কোথায় যাই? কোথাও অামাদের দ্বিতীয় ঠিকানা নাইতো ! কিন্তু এতটা ক্লেদাক্ত দেশ তো এদেশ ছিলো না অাগে ! এতটা রক্তক্ষরা দেখেছি সেই যখন একাত্তুরে হায়েনা কবলিত এ দেশ। অাজ হায়েনা নয় জালিম উগ্রপন্থী কাদের পদচারণায় অাবার রক্তাক্ত এদেশ? তাই অামরা অন্তর্দ্রোহ লিখিতে কাঁদি। বলিতে কাঁদি। অামরা চুপ হইতে-হইতেও হৃদয়ে চুপ হইতে পারি না বলিয়া কাঁদি। কে শোনে কান্না কাতর চিৎকারগুলি? উচিত কথাও দোষের অাজ। এমন দিনে রাতের কালোথাবা দিনের ঘাড়ে কুড়াল বসাইতে ধাওয়া করে। কারও কথা বলায় / লেখায় হর্তাকর্তাবিধাতার নড়েনা অাজ টনক। কি করি অামরা? অামাদের কোথায় দা-কুড়াল? যদি বা কুড়ালের বদলে হাতে যা কিছু অাছে অাপন ঘরে – হেঁসেল হইতে বটি বা টেবিলের ছুরিটি যাহা পাই তো উহা দিয়াই চাই বাঁচিতে। কোপ মারার কালাকানুন জানি না বলে বসিয়া পড়ি দুয়ার ধরে। এমন বাঁচিয়া থাকিয়া কি লাভ অামাদের? তবে কি অই কুড়ালে ঘাড় পাতাই ভালো?  হৃদয়ে রক্তক্ষয় বিষম। হৃদয়ে বিশাল প্রশ্ন। সরকারের কাছে বিশাল এক প্রশ্নবোধক চিহ্ন গেলাম রেখে অামার এই লেখার মাঝে। জানি যে অামাদের এসব লেখায় নজর নাই সরকারের। তবু অামরা ভোট দিয়াই সরকার বানাই। তাই নাগরিকের অধিকার অাছে সরকারের কাছে নিজের নিরাপত্তা দাবীর।

সেইসঙ্গে নিজের কাছেও অাজিকে প্রশ্ন – কবিতা? কি লাভ লিখে? অনেক লিখিয়াছি। কলাম? লিখিয়াছি কয়েক শত। কি হয় লিখে?
"জীবনপুঁথি" লিখিয়াছি। উহাতে কাহার কি? কেউ কি পড়ে ভাবিত হয়? তবে কি লিখিবো না কিছুই অার? তবে কি সব লেখালিখির পাট চুকিয়ে দিয়ে / ঘুচিয়ে দিয়ে শিখিবো কুড়াল চালনা? নাহ। জীবনভর অামরাতো এদেশে যে যার মতন ধর্ম পালনে ধর্মভীরু মানুষ। অামাদের অধিকারের জন্য লড়াই করিতে হইবে কেন? সরকারের কাছে মিনতি জানাইয়া লিখিতে-লিখিতে এতটা ক্লান্ত … এতটা অনিরাপদ লাগিবে কেন? তবুও অামরা সাহসে বাঁধিয়া হৃদয় লিখি – উহাই বুড়ো নদীর শুকিয়ে যাওয়া জলঘাটে জীবনে শেষবারের মতোন একবার মরণপণ শুভ-অশুভ শক্তির লড়াই বুঝিবো অাজ?

এবঙ লড়াইয়ে জয়টা কাহার কপালে জোটে – তাহা কি না দেখিয়া শূণ্যহাতে কাঁদিয়া চলিয়া যাইতে পারি অচিনপুরে? অন্তর কাঁদিয়া কহে – জীবনে বাঁচিয়া থাকিতে হায় যাবো না, যাবোনা এভাবে রক্তাক্ত … … … অচিনপুরে ! অামাদের উপরঅলা সহায় হউন।।

১৩-ই মে। ২০১৫ সাল।
ঢাকা। বাংলাদেশ।