একটি চিঠি একটি স্মৃতির দলিল আজ

নুরুন্নাহার শিরীন
Published : 30 August 2015, 06:43 PM
Updated : 30 August 2015, 06:43 PM


ছবি: এ চিঠি কেবল চিঠি তো নয় সে আজ একটি স্মৃতির দলিল

এক নাগাড়ে পঁচিশ বছরের অধিক কাল জনগণের ভোটে কারও ক্ষমতাসীন থাকার উদাহরণ আমার জানামতে জগতে নাই। অথচ, সেটি ঘটেছে আমাদের পড়শি রাজ্যে , সেখানকার ত্রিপুরা রাজ্যের প্রয়াত কবি ও শিক্ষা-সংস্কৃতিমন্ত্রী অনিল সরকারের বেলায়। ত্রিপুরার দলিত সমাজের পুরোধা ব্যাক্তিত্ব অনিল সরকার সবার প্রিয় একটি মানুষ হিসেবে "অনিলদা" নামেই পরিচিত আজও। ত্রিপুরায় আমার প্রথম যাওয়া ভারতের সংবিধান প্রণেতা ডঃ আম্বেদকর এর একশোতম জন্ম-জয়ন্তী পালন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ হতে আমন্ত্রিত অতিথি হবার সুবাদে। সেই হতেই আমারও "অনিলদা"-ই তিনি। তো, তিনি আমায় দিয়েছিলেন দায়ভার – বাংলাদেশ-ত্রিপুরার একটি কাব্য-সংকলন সম্পাদনার গুরুভার। নামকরণ তিনিই করেন – "সেতু"। তাঁরই প্রকাশনা উৎসবের আয়োজনকারী কুমিল্লা আবৃত্তি সংসদ । ২০০৪ সালে কুমিল্লা নগর মিলনায়তনের হলে আমি ও কবি বেলাল চৌধুরী একসঙ্গে গিয়েছিলাম। ত্রিপুরার কবি ও সাংস্কৃতিক প্রতিনিধিবৃন্দ এসেছিলেন কুমিল্লায়। অনিল সরকার আসতে পারেন নি সেদিন রাষ্ট্রীয় বিশেষ কাজ থাকায়। তিনি সেদিন প্রতিনিধিবৃন্দের হাতেই পত্র পাঠিয়েছিলেন। অনুষ্ঠানে পঠিত হয়েছিলো সেদিন তাঁর সে পত্র। সম্পাদনার কাজ মোটেও সুখপ্রদ কাজ না হাড়ে-হাড়ে বুঝেছিলাম। কার কবিতা নির্বাচিত কবিতা হলো, কারও কেন হলোনা, কেন কবিতা সম্পাদনা করার ছলে লাইন কাটা পড়লো ইত্যাকার অনেক অভিযোগে সেদিন অভিযুক্ত আমার সম্পাদনা।

তবুও কাজটি সুখপ্রদ স্মৃতির বটে। অনিলদা'র মতোন বিরলপ্রজ মানুষের অন্তর্ধানের পর "সেতু"-র প্রকাশনা উৎসবে পাঠানো পত্রটি এখন একখানা দলিলসম পত্র বলতে পারি। মাঝেমাঝেই পড়ি এবঙ একজন অনেক বড় মাপের মানুষ অনিল সরকারের কাজ এবঙ তাঁর মতোন মানুষের অভাব আজকের জগতে খুব করেই অনুভব করতে থাকি … এমন মানুষের প্রিয়ভাজন হতে পারাও গর্বের বিষয় আজ। আমাকে আর আমার অনুজ আবৃত্তিকার কুমিল্লা আবৃত্তি সংসদের কাজী মাহতাব সুমন কে সম্বোধন করে লিখিত অনিল সরকারের চিঠিখানা।

এ চিঠি বিষয়ক ছবি ও লেখাটি প্রয়াত অনিলদা'র স্মৃতির স্মরণে আমার শ্রদ্ধাঞ্জলি।

আগস্ট। ২০১৫ সাল।
ঢাকা। বাংলাদেশ।