মানুষসৃষ্ট বিপর্যয়ই এখন বাংলাদেশের সবথেকে বড় সমস্যা

স্বদেশ রায়
Published : 31 Dec 2011, 08:18 AM
Updated : 27 Oct 2019, 10:26 AM

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ন্যাম সম্মেলনে বাংলাদেশের মূল দুটি সমস্যার কথা উল্লেখ করেছেন। একটি রোহিঙ্গা সমস্যা অপরটি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিক্রিয়ার সমস্যা। দৃশ্যত শেষেরটি প্রাকৃতিক সমস্যা মনে হলেও এটাও মূলত যে মানুষসৃষ্ট সে কথা এখন আর কারো অজানা নেই। শিল্পোন্নত দেশগুলোর অতিমাত্রায় কার্বণ নিঃসরণের ফলে যে এটা ঘটছে তা এখন গোটা বিশ্ব মেনে নিয়েছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশের ভুল নীতির কারণে বাংলাদেশের মত দেশগুলো এই সমস্যায় ভুগছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট একের পর এক বিপর্যয় বাংলাদেশকে আঘাত করছে। ঘুর্ণিঝড় বা আইলার মত প্রাকৃতিক বিপর্যয়গুলো আগে যে ধরনের একটা সাইকেল মেনে আঘাত হানতো এখন প্রকৃতির সে সব হিসেব বদলে গেছে। তাছাড়া আইলার মত প্রাকৃতিক বিপর্যয়গুলোর আঘাতের ফল হচ্ছে দীর্ঘস্থায়ী। এখানে একদিকে যেমন মূল ফসলে ফেরা সম্ভব হচ্ছে না, ফসলের প্রকৃতি পরিবর্তন করে কৃষককে টিকে থাকতে হচ্ছে। তেমনি এর ফলে সর্বস্ব হারানো মানুষ বাস্তুচ্যূত হচ্ছে, তারা অভ্যন্তরীণ মাইগ্রেশনকে মেনে নিচ্ছে। কাজের প্রয়োজনে, জীবিকার প্রয়োজনে তারা বিভিন্ন শহরের বস্তিতে এসে আশ্রয় নিচ্ছে। এর ফলে যে শুধু ওইসব মানুষের জীবন যাত্রায় নানান পরিবর্তন হচ্ছে তা নয়, ভেঙ্গে পড়ছে সামাজিক কাঠামো, পরিবর্তিত হচ্ছে সামাজিক কাঠামো। একটি সমাজের কাঠামো যদি স্বাভাবিক নিয়মে পরিবর্তন না হয়ে কোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয় বা মানুষের কোনো কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে জোর করে পরিবর্তিত হয় বা হতে বাধ্য করা হয় তাহলে তার ফল খুবই সুদূরপ্রসারী হয়। সেখানে খারাপ ফলই ভবিষ্যত বয়ে আনে বেশি।

বাংলাদেশে আইলার ফলে নদী ভাঙন হচ্ছে। আবার ফারাক্কা বাঁধের ফলে পদ্মাসহ পদ্মার বহু শাখানদীর তলদেশ উঁচু হয়ে গেছে। কোনো কোনো স্থানে পদ্মা ও অনেক স্থানে পদ্মার শাখানদীর অংশবিশেষ শুকিয়ে যাওয়ার ফলে বর্ষাকালে নদী ভাঙন হচ্ছে। কারণ, বর্ষাকালে এই নদীগুলো আর অতিরিক্ত পানি ধারণ করতে পারে না। তলদেশ দিয়ে পানি বয়ে যাবার সুযোগ না থাকায়, নদী উপচে পড়ে স্রোতের ধাক্কা লাগে কূলে। এর ফলে সৃষ্ট হয় নদী ভাঙন। এইসব নানান ধরনের ভাঙনের শিকার হয়ে বহু মানুষ নানান শহরের শহরতলীতে অবস্থান নিচ্ছে। তারা বস্তি জীবন মেনে নিচ্ছে। অর্থাৎ একটি গ্রামীন সুস্থির জীবন থেকে তাদেরকে আশ্রয় নিতে হচ্ছে ভয়াবহ টেনশনের জীবনে। তাছাড়া এই জীবনে তাদের শরীর ছাড়া আর কোনো সম্পদ নেই। শুধু শারিরিক বা কায়িক শ্রমই তাদের সম্পদ। এর ওপর ভর করেই তাদের বাঁচতে হচ্ছে। এ ধরনের একটি শতভাগ অনিশ্চিত জীবনে যেকোনো মুহূর্তে নানারকম উপসর্গ যোগ হয়ে বসে। আর এই সব উপসর্গ সবসময়ই ক্ষতিকারক হয় রাষ্ট্র ও সমাজের জন্যে। শুধু তা নয় এই উপসর্গগুলো একটি মানুষের জীবনের জন্যে তার পরিবারের জন্যে ক্ষতিকারক। যেমন আমরা সাধারণ দৃষ্টিতে দেখি- শহরের কোনো একটি এলাকায় বস্তি গড়ে ওঠাতে সেখানে ছিনতাই, চুরি, মাদক ব্যবসাসহ নানান খারাপ উপসর্গ বেড়েছে। সাধারণ দৃষ্টিতে দেখি ওই বস্তির মানুষগুলো শহরের আইন শৃঙ্খলা ও সামাজিক শৃঙ্খলা নষ্ট করছে। মুদ্রার এই পিঠটি সাধারণত ঠিক করার কাজে নেমে পড়া হয়। তবে ওই মুদ্রার অপর একটি পিঠও আছে। আর সে পিঠটিও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। কারণ, সমাজের একটি বিশাল জনগোষ্ঠীর বিশেষ করে ওই জনগোষ্ঠীর তরুণ ও শিশু শ্রেণি প্রয়োজনীয় খাদ্য পাচ্ছে না, তারপরে তাদের বেড়ে ওঠার মত আলো হাওয়ার পরিবেশ পাচ্ছে না। এরপরে তারা শিক্ষা বঞ্চিত হচ্ছে, তারা শুধু কায়িক শ্রমে নয় শিশুশ্রমে যেতে বাধ্য হচ্ছে- নানামুখী অপরাধ জগতে তারা জড়িয়ে পড়ছে। তার অর্থ দাড়াচ্ছে, একটি জনগোষ্ঠী যথেষ্ট অপুষ্টি নিয়ে, শিক্ষা বঞ্চিত শুধু নয় অসামাজিক অনেক কাজে জড়িয়ে বড় হয়ে উঠছে। এখানে একটি পরিবর্তন খুব বেশি করে লক্ষ্য করা প্রয়োজন, যদি এই শিশুগুলো গ্রামে বেড়ে উঠতো, তাতে তারা যদি প্রয়োজনীয় শিক্ষা ও খাদ্য না পেতো তাহলেও তাদের অবস্থা এতটা খারাপ হতো না। কারণ, গ্রামে প্রয়োজনীয় একাডেমিক শিক্ষা না পেলেও তারা পারিবারিক, পারিপার্শ্বিক ও সামাজিক শিক্ষা পেতো ও আচরণ জানতো। তার ভেতর দিয়ে তাদের ভালো মানুষ হওয়াটাই স্বাভাবিক ছিলো। হাজার হাজার বছর ধরে গ্রামের অনেক মানুষ প্রয়োজনীয় শিক্ষা ও প্রয়োজনীয় সকল খাদ্য পাচ্ছে না। তাবলে গ্রামে ভালো মানুষ হয়ে বেড়ে উঠতে তাদের কোন অসুবিধা হচ্ছে না। কারণ, সেখানে হাজার বছরের পারিবারিক, পারিপার্শ্বিক ও সামাজিক শিক্ষার যে শেকড়টি আছে সেটা অনেক গভীরে। তাই ওই শেকড়ের রসে তারা সহজে পরিপূষ্ট হয়ে বেড়ে উঠতে পারে। কিন্তু নদী ভাঙন বা আইলার আঘাতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে তারা শুধু তাদের সম্পত্তি হারিয়ে ছিন্নমূল হচ্ছে না মূলত শহরের বস্তিতে এসে পরগাছা হয়ে যাচ্ছে, যার নিজস্ব কোনো মূল নেই। সে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে হাজার বছরের একটি ধারাবাহিকতা থেকে। একটা মানব সমাজে এ এক অপূরণীয় ক্ষতি এবং একটি ভয়াবহ দিক। কোনো রাষ্ট্রে যখন অনেক দরিদ্র থাকে, অনেক সমস্যা সংকুল থাকে তখন ওই রাষ্ট্র বা রাষ্ট্রনায়ক তার রাষ্ট্রের এই সমস্যাগুলোকে চিহ্নিত করে তা সমাধান করার কাজে এগুতে পারে না। তাছাড়া নেতা যদি সেই মানের দূরদৃষ্টি সম্পন্ন না হন তাহলেও তার পক্ষে সম্ভব হয় না এগুলো উপলব্দি করা ও চিহ্নিত করা। শেখ হাসিনা তার প্রায় টানা এগারো বছরের শাসনে রাষ্ট্রকে সেই সুস্থির অবস্থানে নিয়ে এসেছেন, তারপরে তিনি সেই মাপের দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতা, তাই তিনি জলবায়ুর পরিবর্তনের ক্ষতির শেকড় অবধি চিহ্নিত করতে পেরেছেন। আর এখন তিনি তার রাষ্ট্রের বড় দু'টি সমস্যার ভেতর জলবায়ু পরিবর্তনের ফলের সমস্যাকে চিহিন্ত করেছেন।

জলবায়ু পরিবর্তনে শুধু যে অভ্যন্তরীণ মাইগ্রেশনে মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে তা নয়, দেশে প্রাকৃতিক পরিবর্তনও হচ্ছে। অর্থাৎ ষড়ঋতুর বাংলাদেশে যে প্রাকৃতিক ধারাবাহিকতা ছিলো, যার ফলে আমাদের প্রাকৃতিক গঠন ও প্রকৃতির অন্যান্য উপাদানও হাজার হাজার বছর ধরে গড়ে উঠেছে, আর তার সঙ্গে আমাদের শারিরিক ও মানসিক সকল কিছু নির্ভর করে গড়ে উঠেছে। এর পরিবর্তনের ফলে আমাদের শারিরিক যেমন অনেক সমস্যা হবে বা হচ্ছে তেমনি একটা মানসিক বিপর্যয়ও ঘটবে। তাছাড়া, প্রাকৃতিক এই পরিবেশের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে অর্থনৈতিক প্রয়োজনে ভেঙ্গে যাচ্ছে দেশের কৃষিনির্ভর সমাজ ও জীবন ব্যবস্থা। এখানেও তাই আসছে পরিবর্তন। রাষ্ট্র ও সমাজের এ ধরনের পরিবর্তনগুলো নানানভাবে নানান প্রতিক্রিয়া তৈরি করে সমাজে। সমাজে ও রাষ্ট্রে যখন অনেক অভাব থাকে, রাষ্ট্রে যখন খুব দায়িত্বশীল কোনো শাসক থাকেন না তখন হয়তো এগুলোকে দৃষ্টির বাইরে রেখে রাষ্ট্র ও সমাজ চলে। তাতে আরো বেশি ক্ষতি টেনে আনে ভবিষ্যতে। কিন্তু তা নিয়ে কারো কিছু করার থাকে না। শেখ হাসিনা রাষ্ট্র ও সমাজে স্থিতিশীলতা এনেছেন। স্বভাবতই তিনি তার দূরদৃষ্টি এদিকে দিচ্ছেন। আসলে ভবিষ্যতে নতুন অর্থনীতির একটি সমাজ ও পরিবর্তিত প্রকৃতিকে মোকাবিলা করে সুস্বাস্থ্যের ও সুনাগরিকের একটি রাষ্ট্র ও সমাজ গড়ে তুলতে হলে এগুলোকে চিহ্নিত করে, সমস্যা সমাধান করার পথ খুঁজে বের করা দরকার।

অন্য যে সমস্যার কথাটি বলেছেন শেখ হাসিনা তা রোহিঙ্গা সমস্যা। রোহিঙ্গা সমস্যাও মানুষসৃষ্ট সমস্যা। এটা সৃষ্টি করেছে মিয়ানমার সেনাবাহিনি। আর তার পেছনে রয়েছে কয়েকটি বিদেশী রাষ্ট্র। তারা তাদের প্রয়োজনে কয়েক লাখ লোককে শরণার্থী জীবন বেছে নিতে বাধ্য করেছে। এই পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে তারা গণহত্যার পথ বেছে নিয়েছিলো। বাংলাদেশ যদি তাদের জন্যে বর্ডার খুলে না দিতো তাহলে নির্মম গণহত্যার শিকার হতো আরো কয়েক লাখ মানুষ। বাংলাদেশ অসহায় মানুষের জীবন বাঁচাতে তাদের প্রবেশের পথ দেয় ও তাদের আশ্রয় এবং খাদ্য দিয়ে চলেছে। বাংলাদেশ সরকার কী আশা করেছিলো তা হয়তো আমাদের জানা নেই। তবে সরকারের যাবতীয় পদক্ষেপ বলে তারা চেয়েছিলো দ্রুত রোহিঙ্গারা নিজ দেশে ফিরে যাক। যা এখনও প্রধানমন্ত্রী প্রতিটি ফোরামে বলে চলেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যকেই সরকারের মূল উদ্দেশ্য হিসেবে ধরবো। কিন্তু সরকারের সে আশা পূরণ হচ্ছে না। এর সবথেকে বড় কারণ মিয়ানমারের সিভিল সরকারের এ বিষয়ে কোনোকিছু করার নেই। এখানে তাদের সেনাবাহিনি সকল ক্ষমতা ধরে রেখেছে। অন্যদিকে যেসব দেশের অর্থনৈতিক স্বার্থ জড়িত রোহিঙ্গাদের ওই অঞ্চলে অর্থাৎ যে সিটউয়ে বন্দর তৈরি হতে চলেছে তাকে ঘিরে তাদের আচরণে দ্বৈততা আছে। তাই স্বার্থের সঙ্গে জড়িত ওই দেশগুলো প্রকৃত অর্থে তাদের শতভাগ সহযোগিতা নিয়ে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসছে না। বরং তারা প্রয়োজনে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শিবিরে রোহিঙ্গা প্রতিপালনের জন্যে আরো বেশি সাহায্য দিতে রাজি। অন্যদিকে সারা পৃথিবীজুড়ে এখন শরণার্থী সমস্যা। এই মুহূর্তে তাই বাংলাদেশের এই শরণার্থীর প্রতি ফোকাস কম। বিশ্ব জনমত এর পক্ষে খুব কম কাজ করছে।

এর পাশাপাশি আবার রোহিঙ্গা শিবিরে বিভিন্ন দেশের যে এনজিওগুলো কাজ করছে তারা নানানভাবে এই সমস্যাটি জিইয়ে রাখতে চাচ্ছে। তাদের সকল কর্মকাণ্ড লক্ষ্য করলে এটাই দেখা যাবে। অন্যদিকে আরো কিছু দেশ আছে যারা এই রোহিঙ্গা সমস্যাকে টিকিয়ে রেখে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রগতি থামিয়ে দিতে চায়। এর সঙ্গে সঙ্গে আবার পাকিস্তানের মত কিছু দেশ রোহিঙ্গা শিবিরে সন্ত্রাসীদের মদদ দিচ্ছে। তারা এখানে একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ গড়ে তুলে সারা বিশ্বে সন্ত্রাসী রফতানি করতে চায়। রোহিঙ্গা শিবিরে সন্ত্রাসী তৈরি করার দুটি উপাদানই আছে। এক, এখানে আগে থেকে জঙ্গী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলো এমন একটি স্রোতের রেখা আছে। দুই, শরণার্থীদের বড় পরিচয়টি তাদের ধর্মীয় পরিচয়, দেশগত পরিচয় নয়। তাই এখানে খুব সহজে সন্ত্রাসী তৈরির ফ্যাক্টরি স্থাপন করতে পারছে দেশীয় সস্ত্রাসী গ্রুপ ও তাদের বিদেশী মদদদাতারা।

প্রধানমন্ত্রী ন্যাম সম্মেলনে উল্লেখ করেছেন, এই রোহিঙ্গারা শুধু বাংলাদেশের জন্য সমস্যা নয় গোটা পৃথিবীর জন্য সমস্যা। রোহিঙ্গা শিবির ঘুরে ও এ বিষয়ে দিনের পর দিন তথ্য সংগ্রহ করে সেগুলো বিশ্লেষণ করে এই সিদ্ধান্তে আসা যায়, বাংলাদেশের রোহিঙ্গারা যেভাবে শিবিরে বেড়ে উঠছে তাতে গোটা পৃথিবীতে সমস্যার কারণ হবে তারা। শুধু এই নয়, রোহিঙ্গা শিবির ঘুরে এবং উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলা ঘুরে স্পষ্ট বোঝা যায় যে ওই এলাকার সামাজিক ভারসাম্য ও দীর্ঘদিনের কালচার নষ্ট হতে চলেছে। রোহিঙ্গা শরণার্থীরা শুধু প্রাকৃতিক পরিবেশ নষ্ট করছে না, তারা সামাজিক পরিবেশও নষ্ট করছে। সেখানে শুধু অস্থিরতা আনছে না, তারা একটি আলাদা কালচার সেখানে চালু করতে চলেছে সেটা সাধারণত কোনো সুস্থির সমাজের কালচার নয়। তাছাড়া এরা বাংলাদেশের দুটি উপজেলাসহ দেশের প্রধান পর্যটনভূমি কক্সবাজারের পরিবেশও নষ্ট করছে।

রোহিঙ্গাদের শিবিরে রেখে এ সমস্যার কোনো সমাধান সম্ভব নয়। সমাধান তখনই হবে যখন রোহিঙ্গারা ফিরে যাবে। কারণ, ওই এলাকায় শুধু জনসংখ্যার ডেমোগ্রাফিতে পরিবর্তন আসেনি, সেখানে সমাজের নানা দিক পরিবর্তন হতে চলেছে একটি শিবির জীবনের নানা ধরনের খারাপ উপসর্গ নিয়ে। এমতাবস্থায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ছাড়া এ সমস্যার যেমন কোনো সমাধান নেই তেমনি বাংলাদেশও পাচ্ছে না সমস্যামুক্ত হতে। আর যতই এই রোহিঙ্গা ও তাদের বিদেশী প্রভুরা এই শিবিরে গেড়ে বসবে ততই অস্তিত্বের সংকটে পড়বে বাংলাদেশের দু'টি উপজেলা। এই সংকট বাংলাদেশের আরো বেশি ভুখণ্ডব্যাপী বিস্তৃত হতে পারে। এ সব মিলে রেহিঙ্গা সমস্যা এখন রাষ্ট্রের দুটি মূল সমস্যার একটি। আর এই দুটি সমস্যার কোনোটাই সমাধান করার শতভাগ ক্ষমতা বাংলাদেশের হাতে নেই। এটাও সমস্যা সমাধানে আরেকটি বাধা। তাই বলা যেতে পারে দক্ষিণ এশিয়া শুধু নয়, এশিয়ার ভেতর সবথেকে ভালো করছে যে দেশটির অর্থনীতি তার ওপর জগদ্দল পাথরের মত চেপে বসে আছে এই দুটি মানুষসৃষ্ট সমস্যা- যা থেকে মুক্তি পাবার সবটুকু পথ এখনো অধরা।