সাংসদদের জন্য সভ্য আচরণবিধি জারি করা হউক

নুরুন্নাহার শিরীন
Published : 20 March 2012, 02:12 AM
Updated : 20 March 2012, 02:12 AM

যে কোনও দেশেই পার্লামেন্ট-হাউস তথা সংসদ-ভবন পবিত্র ভবনের প্রতীক। যেখানে জনগণের ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা শপথ গ্রহণ করেই জনস্বার্থ সম্পর্কিত নিজ-নিজ এলাকার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট দাবী-দাওয়া উত্থাপন করেন সংসদীয় রীতিনীতির নিয়ম পালন করে।

অথচ আমাদের বিরোধী দলের সাংসদগণ বিগত তিন বছরের মধ্যে হাতে গোনা যে ক'দিন সংসদে গেছেন কোমর বেঁধে ঝগড়া-কটুক্তি-অশ্রাব্য-অসভ্য আচরণের নমুনা প্রদর্শনেই যেন গেছেন ! সম্প্রতি গেছেন পদ বাঁচানোর তাগিদে ! এবঙ জনস্বার্থের বিষয় তো দূরের কথা জাতীয় পবিত্র ভবন এর সমস্ত পবিত্রতা দূষিত করেছেন তাদের নারী সাংসদ কর্তৃক। তাদের খিস্তি-খেউড় আর মারদাঙ্গার দৃশ্য দেখে তারা বিন্দুমাত্র লজ্জিত না হলেও আমরা যারা টিভিতে দেখেছি লজ্জায় অধোবদন হয়েছি। বহির্বিশ্বে এমন করে পুরো বাংলাদেশ এর জাতীয় ভাবমূর্তি নষ্ট করার অধিকার কি তাদের আছে ? এতটা নির্লজ্জ সাংসদ কি জনগণের ক্ষমা পাবারও অধিকার রাখে আর ? জনসাধারণ কত না আশা-ভালোবাসা-স্বপ্ন পূরণের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করে। ভাবে যে সাংসদ হয়ে তারা জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার কথা বলবে জাতীয় সংসদে। আর তারা কি না হাতাহাতি-চুলোচুলির মহড়া দিচ্ছে জাতীয় সংসদের আসনধারী হয়ে ! এমন অভব্য আচরণ কি কোনও সভ্য দেশের সাংসদকে মানায় ! আজ নেত্রীদ্বয়েরও বোধদয় কাম্য। অবিলম্বে এইসব অসভ্য-নির্লজ্জ সাংসদদের দল থেকে বহিষ্কার করা জরুরী কর্তব্য বলেই মনে করি। যদিও জানি, আমাদের মতোন সামান্য লিখিয়ের মনে করায় তাঁদের কিছুই আসে-যায়না !

কিন্তু আজও এদেশের মানুষ বাংলাদেশ ও স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের ইতিহাস-ঐতিহ্য নিয়ে গর্ব করতে ভালোবাসে। নতুন শিশুকে শোনাতে চায় বাংলাদেশ নামের রাষ্ট্রটির আত্মত্যগী-রক্তক্ষরা ঐতিহাসিক বিজয়ের গাথা। আজকের শিশুরা যাতে জাতীয় অহঙ্কারের কথা জেনে তা শ্রদ্ধাভরে লালন করতে শেখে। পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ রেখে চলতে শেখে। কিন্তু এই যে জনপ্রতিনিধিরাই জাতিগত ঐতিহ্য ভুলুন্ঠিত করছে তার শাস্তি কি তাদের প্রাপ্য নয় ? তারা কি জবাবদিহিতার মুখোমুখি হবেনা ?

আজ আমার আবেদন এই যে , সাংসদদের জন্য সংসদ ভবনের পবিত্রতা নষ্ট হয় এমন যে কোনও আচরণের দায়ে তাদের শাস্তির বিধান জরুরীভাবে জারি করা হউক। এ বিষয়ে জরুরীভাবেই আইন জারি হউক। যাতে প্রত্যেক সাংসদ জাতীয় সংসদীয় আচরণ মানতে বাধ্য থাকে। নচেৎ আইন ভঙ্গের দায়ে তাকে শাস্তি পেতেই হবে এমন একটি আইন প্রয়োজনে নতুন করে প্রয়োগের জন্য যা-যা করণীয় তা করা হউক।

সরকার ও আইন মন্ত্রণালয় এর জরুরী পদক্ষেপ কাম্য আজ বাংলাদেশের জাতীয় ভাবমূর্তি রক্ষার স্বার্থে।
সবশেষে আমার ফেসবুক বন্ধুর ( ছড়াকার-সাংবাদিক ব্রত রায় ) এর এ বিষয়ক একটি ছড়া সংযুক্ত করছি যা যথার্থেই ব্যাঙ্গধর্মী বিবেকের কড়ানাড়ার মতো। যদিও ব্রত রায় এর ইংরেজীতে পার্লামেন্ট বানানটি ভুল, তবুও শেয়ার করলাম সময়োচিত একটি চমতকার ব্যাঙ্গধর্মী ছড়া বলেই। আশাকরি পাঠকরাও এনজয় করবেন।