আমি একজন সংসদ সদস্যের প্রতিবেশী (১ম পর্ব)

অনন্ত রহমান অনু
Published : 4 August 2011, 05:31 PM
Updated : 4 August 2011, 05:31 PM

মহান জাতীয় সংসদের একজন সদস্যের প্রতিবেশী হিসেবে আমি অবশ্যই গর্বিত । আমার পিতা-মাতা বা পিতামহ-মাতামহ কেহই কোনদিন সংসদ সদস্যের প্রতিবেশী ছিলেন না। বলা যায় আমার বংশের ১৪ কেন ২১ পুরুষের কাহারো সংসদ সদস্যের প্রতিবেশী হওয়ার অভিজ্ঞতা নেই ।সেদিক থেকে আমি ভাগ্যবান বললে ভুল হবে,আমি মহাজোটের একজন সংসদ সদস্যের প্রতিবেশী, তাই বলা যায় মহাভাগ্যবান। দক্ষিণ খুলনার উপকূলীয় এক অজ পাড়াগাঁয়ে আমার জন্ম,যেখানে অতীতে সংসদ সদস্যদের পায়ের ধুলি কম পড়েছে বিধায় পিতৃপুরুষের ঐতিহ্য বজায় রাখতে আমাদের ইউনিয়নে কোন পিচের রাস্তার দু:স্বপ্নও আমরা দেখতে পারিনি বা বৈদ্যুতিক আলোর ক্ষতিকারক দিকগুলো বিবেচনা করে আমরা এখনো কেরোসিনের বাতির ঐতিহ্য ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছি। বর্তমানে নিজের গ্রামের সংসদ সদস্য থাকায় প্রায়ই কারনে অকারণে তিনি গ্রামে আসেন,গ্রামের মানুষের খোজ খবর খুব বেশী একটা না নিলেও আমরা খুশি। কারন আমাদের ইহকালের জীবন ধন্য বলা যায় যে,আমাদের মত নগন্য লোকের ভোটে এই গ্রামের অন্তত একজন সংসদ সদস্য হয়েছেন।প্রজাস্বত্ব আইন পাসের অনেক বছর পরে আমার জন্ম তাই জমিদার শ্রেনীর লোকদের দেখার সৌভাগ্য আমার হয়নি । একমাত্র ইতিহাসে ছাড়া জমিদারদের সম্পর্কে কিছুই জানতে পারিনি কিন্ত আমার গ্রামেই সংসদ সদস্যের বাড়ী হওয়ায় একালের জমিদারদের দেখার বাস্তব অভিজ্ঞতা পাওয়ার একটা সুযোগ এই ক্ষুদ্র জীবনে পেলাম। আমার ইউনিয়নে রায় সাহেবদের বাড়ী আছে এমন কি প্রাক্তন জমিদার বংশের ধ্বংসাবশেষ এখনো আছে কিন্ত গর্ব করার মত কোন জমিদার বাড়ী নেই,আশাকরি আমার প্রতিবেশী সংসদ সদস্য একটি জমিদারী স্টাইলে বাড়ী তৈরি করে অন্তত ভবিষ্যতের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন তৈরি করে যাবেন। আমার প্রতিবেশী প্রায় আড়াই বছর হলো এম.পি হয়েছেন । আমাদের গ্রামটি এক সময় সুন্দরবনের অংশ ছিলো,সূফী সাধক আলমশাহ ফকির এ অঞ্চলে সুন্দরবন পরিস্কার করে জনবসতি স্থাপন করেছিলেন তাই আমাদের গ্রামের নাম "ফকিরাবাদ" কিন্ত আমাদের এলাকার মানুষের অনেকেরই মধ্যে সুন্দরবনের পশুর মত হিংসা রয়েছে,কাহারো ভালো দেখলে পচ্ছন্দ করেন না । সেসব লোকদের একটা বড় অংশ প্রায়ই মাননীয় সংসদ সদস্যের সমালোচনা করে বলেন, আড়াই বছরে ইউনিয়নে কোন বিশেষ কাজ হয়নি এবং বাকী আড়াই বছরে তেমন কাজ হবেনা। আমার মত সাধারণ প্রতিবেশীরা এসব সমালোচকদের কি উত্তর দেবো ? সমালোচকদের পঞ্চেন্দ্রিয় যদি ভালোভাবে কাজ করে তারা একটু চোখ বন্ধ করে চিন্তা করে দেখুন এম.পি. হওয়ার পর আমাদের এলাকার টি.আর.,জি.আর,কাবিখা,কাবিটার কত না কাজ করা হয়েছে। প্রায় প্রতি ঘরে ঘরে ভি.জি.ডি,ভিজি.এফ কার্ড পৌছে গেছে এমন কি যার দরকার নাই তাকেও এধরনের কার্ড দিয়ে মাননীয় সংসদ সদস্য মহানুভবতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। ২০০৯ সালের প্রলয়ঙ্কারী আইলার আঘাতে দক্ষিণের উপজেলাটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারনে সংসদ সদস্য মহোদয়কে ঐদিকে একটু বেশী নজর দিতে না হলে হয়তো আমাদের ইউনিয়নের সকল মানুষ এমনকি শিশুদের জন্যও কোন কার্ডের ব্যবস্থা হয়ে যেত। সমালোচকদের স্মরন করিয়ে দিতে চাই যে আইলার পর আমাদের ইউনিয়নে একটি ঘর না ভাঙ্গলেও অনেক পরিবারকে ঘর ভাঙ্গার ৩,০০০ টাকা করে দেয়া হয়েছে। সংসদ সদস্যের কল্যাণে ঘোষখালী নদীর পূর্ব মাথায় কর্ম সৃজনের অর্থে একটি আয়মূখী মৎস্য প্রকল্প করে গ্রামের অনেক বেকারের কর্মসৃজন করেছেন যা এ এলাকায় ইতিহাস হয়ে থাকবে। কি আর উন্নয়ন করা দরকার । আসলে যারা উন্নয়নের কথা বলে ওদের ঈমান নাই,ওরা আমাদের ইউনিয়নকে প্যারিস,জুরিখ বা টোকিওর মত বানাতে চায় কিন্ত ওরা জানেনা যে আমরা সাধারণ ভোটাররা আমাদের এলাকাকে বাঙলার ঐতিহ্যবাহী একটি গ্রাম হিসেবে ধরে রাখতে চাই। তা নাহলে সরকার যেভাবে দেশটাকে ডিজিটাল করতে চাচ্ছে তাতে এই সরকার আর এক টার্ম সরকার গঠন করলে আমাদের উত্তরসূরিদের গ্রাম শব্দটির সাথে পরিচিত হতে জাতীয় জাদুঘরে যেতে হবে। সরকার সারাদেশ কে জাপান বা সুইজারল্যান্ড বানাক কিন্ত আমরা আমাদের হাজার বছরের ঐতিহ্য ধরে রাখতে চাই ,বাঙলার গ্রাম হয়ে থাকতে চাই। তাতে যে আমাদের উত্তরসূরিদের কত লাভ হবে তা কি সমালোচকেরা জানে ? বরং সারা পৃথিবী পাল্টালেও আমরা পাল্টাতে চাই না । কারন হাজার বছর পরে গ্রাম হিসেবে টিকে থাকতে পারলে আমাদের এখানে পর্যটকরা আসবে সত্যিকারে গ্রাম দেখতে,তখন আমাদের এলাকার অর্থনীতিতে পর্যটন শিল্প একটা বিশেষ ভুমিকা রাখবে এসব কথাই বিবেচনা করে এবং আমাদের সংখ্যাগরিষ্ট মানুষদের মনের কথা বিবেচনা করেই সংসদ সদস্য মহোদয় যথাযথ কাজ করছেন বলে আমরা বিশ্বাস করি তবে ঐ সব বিপদগামী সমালোচকদের কারনে শেষ পর্যন্ত এম.পি. মহোদয় শান্তায় জিয়া খাল পাড়ে ও পাতড়াবুনিয়াতে কাচা রাস্তায় পিচ করার ব্যবস্থা করেছেন।

সমালোচকদের সঠিক একটা জবাব এম.পি সাহেব দিতে পেরেছেন কাচা রাস্তায় পিচ বসিয়ে। এবার সমালোচকেরা বুঝুক ঠেলা। দেখা যাক ক-বছর পিচ থাকে ? আমাদের এই কাদা মাটির দেশে পিচের কি কোন দরকার ছিলো ? গোধুলী লগ্ন শব্দটা আমরা ব্যবহার করবো কিভাবে পিচ হলে ? এম.পি মহোদয় বিষয়টা বেঝেন, কারন উনি তো আমাদের ভোটেই জনপ্রতিনিধি হয়েছিলেন। সংসদ সদস্য হওয়ার পর উনি নিজের বন্ধুকে(যিনি জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি) আমাদের স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি তৈরি করাতে আমাদের এলাকায় এস.এস.সি. পরীক্ষার কেন্দ্র হয়েছে। ইস এই কেন্দ্রটা যদি আরও ৩০ বছর আগে হতো তা হলে কি আমাদের কষ্ট করে কাপলমুনি যেয়ে পরীক্ষা দিতে হতো ? আর ১০০ বছর আগে হলে তো আমার মায়ের নানীটাও ম্যাট্রিক পাশ করতে পারতো।

অনেক সমালোচক প্রায়ই বলেন সংসদ সদস্যের মেয়ে,জামাই,বেয়াই,ভাগ্নে, ভাইপোদের কথা।বলেন এক ভাইপো নাকি গরুর কসাই থেকে লাখপতি,কসাই এর কাজ ছেড়ে দেয়ায় এলাকায় জীবিত বা অর্ধজীবিত গরুর মাংস সংকট দেখা দিয়েছে ? মোটর সাইকেল চালক জামাই নাকি কয়েক লাখ টাকার মালিক,মেয়ে-জামাই-আত্বীয় স্বজনরা নাকি আঙ্গুর ফুলে কলা গাছ; আমরা সাধারণ মানুষ অত কিছু জানিনা তবে যদি সেরকম কিছু হয় তাতে দোষ কি ? টাকা পয়সা হলো হাতের ময়লা আজ আছে কাল নাই। আমরা অনেকে জানি এম.পি.সাহেব অত্যান্ত দরিদ্র পরিবারের সন্তান। মাত্র ৯ মাস বয়সে উনি পিতাকে হারিয়েছিলেন।আমার মা-চাচীদের কাছে শুনেছি ছোটবেলায় উনি আমাদের বাড়ীতে একবেলা খাওয়ার জন্য আমাদের কোলে নিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছেন। কথাটা মনে হওয়াতে আমি বেশ শিহরিত হই যে,ছোটবেলায় একজন ভবিষ্যৎ এম.পির কোলে উঠার সোভাগ্য আমার হয়েছিলো ,আবার লজ্জাও লাগে যে,ছোটবেলায় এম.পি.মহোদয়ের কোলে বসে কত বার প্রাকৃতিক কাজ সেরেছি । কিন্ত কি করবো ? আমি তো তখন অনেক ছোট ছিলাম,ওসব বুঝতাম না। দারিদ্রতা কি, কাহাকে বলে ,কত প্রকার তা উনি আমাদের চেয়ে অনেক বেশি জানেন, তাই এম.পি হওয়ার সুবাদে যদি কিছু অর্থের মালিক হন অসুবিধা কোথায় ? এই সেদিন অর্থাৎ ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে উনার এ্যাকাউন্টে মাত্র ৬৪৩ টাকা ছিলো বলে উনার নমিনেশন পেপারের সাথে এফিডেভিটে উনি উল্লেখ করেছেন। কত লজ্জার বিষয় দেখুন, একজন এম.পি.প্রার্থী অথচ মাত্র ৬৪৩ টাকা একাউন্টে। আমার এলাকার একজন ভ্যান চালকের অ্যাকাউন্টে অত অল্প টাকা থাকে না। অতএব এম.পি. হওয়ার সুবাদে যদি কিছু টাকা যদি উনি সঞ্চয় করতে পারেন তাতে দোষ কিসের ? উনি তো আমাদের মত সাধারণ মানূষ না । আমরা ১৭ কোটি জনগণের সংখ্যাতে পড়ি আর উনি হলেন সারা দেশের ৩০০ জনের মধ্যে একজন।

কুমারখালীতে মজিদ সানার ঘের বন্ধ করার আন্দোলন করে আমাদের এলাকার কতিপয় উচ্ছৃংখল তরুন আমাদের ইউনিয়নের অনেক ক্ষতি করেছেন। এম.পি মহোদয় মজিদ সানাকে কথা দিয়েও কথা রাখতে পারেননি। আমাদের এলাকার মধ্যমনির সম্মান হানি হওয়াতে পক্ষান্তরে যে আমাদেরই সম্মান হানি হয়েছে তা ঐ উচ্ছৃংখলেরা যদি জানতো তবে ঘের বন্ধ করতো না। আমাদের পাশের সোলাদানা ইউনিয়নে এক ইঞ্চি জমি খালি নাই,সবই বাগদা চিংড়ির ঘের। লোনা পানির ভিতর থেকে রুপালী সোনা বের করে এনে ওদের ইউনিয়নের মানুষ কত স্বচ্ছল। একটা কাচা মাটির ঘর নেই। কত বাবুল সরদার বা মান্নান গাজী তৈরি হয়েছে তার হিসাব নেই। কুমখালী সহ আমাদের ইউনিয়নের অধিকাংশ ঘের উঠে যাওয়ায় অন্তত হাজার খানেক লোক বেকার হয়ে পড়েছে। তথাকথিত পরিবেশ-প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র সংরক্ষণের নামে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের হাত থেকে আমার ইউনিয়নকে বঞ্চিত করা হলো। আগে আমাদের বাগদা চিংড়ি অন্যদের মত লন্ডন,প্যারিস,ব্রাসেলস,রোম সহ উন্নত দেশগুলোতে যেত আর এখন ঔষধ বানাতেও বাগদা চিংড়ি পাওয়া যায়না। মাননীয় এম.পি. মহোদয়,উনার সমাজসেবী স্ত্রী,পুত্র,মেয়ে-জামাই এখনও আমাদের এলাকার লোনা পানির ঘের করার পরিকল্পনা মাথা থেকে মুছে ফেলেন নি। এটা কি মাথা থেকে মুছে ফেলা যায় ? এর সাথে এলাকার উন্নয়ন জড়িত,বেকার সমস্যার সমাধান জড়িত আরও কত কিছু। ঘের না হলে জমির উর্বরতা বেড়ে গেলে এলাকার সার ও কীটনাশক ঔষধের দোকান গুলো বন্ধ হয়ে আরও বেকার বাড়বে তা কি সমালোচকেরা জানে ? শুনেছি উচ্ছৃংখল তরুণদের নেতা সহ অনেকে গত ইউ.পি.নির্বাচনের সময় এম.পি. সাহেবের কাছে সকল ভুলের মাফ চেয়ে পায়ের ধুলা নিয়ে এসেছেন। কাজটা তারা ভালো করেছেন। আশাকরি সমালোচক ও কুমখালী-গড়ইখালীর উচ্ছৃংখল তরুণরা বিষয়টা অনুধাবন করে আগামী চিংড়ি মৌসুমীর আগেই মজিদ সানা সহ সকল ঘের পুনরায় চালুর ব্যবস্থা করবেন। আমার ধারনা সকলে সহযোগিতা করলে আমাদের সমগ্র ইউনিয়নটা ঘের করে বাগদা চিংড়ি খাত থেকে আমরা বছরে কোটি কোটি টাকা আয় করতে পারি। আসুন না সবাই মিলে এম.পি. সাহেবের হাতকে শক্তিশালী করি।
কেহ কেহ শান্তা লঞ্চঘাটে পল্টনের কথা বলেন এবং এম.পি.মহোদয়ের সমালোচনা করেন। আমরা বলি ভিন্ন কথা। আমাদের বাপ দাদারা তো অতীতে পল্টন ছাড়াই লঞ্চে উঠতেন, কৈ তাদের তো কোন অসুবিধা হতো না। আমরা কাদা মাটির দেশের মানুষ-একটু কাদা-পানি ঠেলে লঞ্চে উঠলে বিশেষ কি যায় আসে ? বরং লঞ্চে উটার সময়ে বিনা পয়সায় দেশী সিনেমার নায়িকাদের রানের সাইজটা দেখার সৌভাগ্য তরুণরা পাচ্ছে।

সম্প্রতি আরও কিছু উচ্ছৃংখল তরুন আমাদের ইউনিয়নের গাংরোখী (শালুক খালী) খালটা উন্মুক্তের দাবী জানাচ্ছে। কিন্ত আমি বুঝিনা এব্যাপারে এম.পি. সাহেব কি করতে পারেন ? সরকারী জলমহল সরকার বিক্রয় করেছে এতে এম.পি. সাহেবের করার কি আছে ? খাল টা কি উনার পৈত্রিক সম্পত্তি যে উনি উন্মুক্ত করবেন ? বরং খালটা টেন্ডারে কিনে আমাদের গ্রামের কোন না কোন পরিবার সৎ ভাবে জীবন চালাচ্ছে আর পাশাপাশি আমাদের রাজপুত্র অর্থাৎ এম.পি সাহেবের একমাত্র পূত্র খালের দক্ষিন অংশে কিছু রুপালী সোনা চাষ করার চেষ্টা করছেন। বেশ কদিন ধরে ঘোষখালীনদী নিয়েও কথা উঠছে। মহামান্য সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে একটি মামলা(যার মামলা নং: ৬৮৭০/০৭) দীর্ঘদিন ঝুলন্ত অবস্থায় থাকায় সরকার ঘোষখালী নদীটি টেন্ডার দিতে পারছে না বিধায় মাননীয় সংসদ সদস্য নদীটিতে অলিখিতভাবে কিছু লোককে মাছ চাষ করতে বলেছেন। এতে অন্যায়ের কি আছে ? সরকারী সম্পত্তি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকার চেয়ে এলাকার ২০০ মানুষ ব্যবহার করে যদি ২/১ বছর অর্থ আয় করে তাতে আমাদের এলাকারই তো লাভ। হযতো এম.পি. মহোদয়ের ভাইপোরা একটু বেশী ভাগ পাবে তাতে অসুবিধাটা কোথায় ? অর্ধ-জীবিত,অসুস্থ্য বা রোগা গরু জবাই করে তো ভালো মাংস বলে বিক্রি করছে না বা চুরি ডাকাতি করছে না। এসব সমালোচকদের কারনে এম.পি.মহোদয়কে মাঝে মাঝে লোক সমাজে নীচ হতে হয় এটা আমাদের জন্য খুবই লজ্জাজনক। কিছু বিপথগামী যুবকের কারনে আমাদের প্রাণপ্রিয় এম.পি.মহোদয়কে মাঝে মাঝে বিভ্রান্তিকর অবস্থায় পড়তে হয়।

সম্প্রতি গড়ইখালী-বগুড়ারচকের কিছু বিপথগামী যুবক ২টি ভূয়া মসজিদ ও অপর ৩টি প্রকল্পে টি.আর. প্রকল্পের গম বরাদ্দ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে এমন কি বগুড়ার চকে একট প্রতিবাদ জনসভাও করেছে,সে জনসভায় এম.পি সাহেবের সারাজীবনের শত্র বক্তব্য দিয়েছেন। কিন্ত এসবের কি দরকার ছিলো ? ভুল করে বরাদ্দ টা ২টা ভূয়া মসজিদে চলে গেছে। উনি কি জানতেন যে,ঐ নামে কোন মসজিদ নাই। হয়তো দলীয় নেতাকর্মীদের অনুরোধে বরাদ্দটা দিয়েছিলেন কিন্ত ঐ প্রকল্প থেকে কোন অর্থ এম.পি সাহেব নিয়েছেন তার প্রমান দিতে পারবে না। বিপথগামী প্রতিবাদকারীরা বিষয়টি নিয়ে সেলফোনে অন্তত একবার এম.পি. সাহেবের সাথে কথা বললে সাংবাদিক সম্মেলন বা জনসভা করতে যে পয়সাটা খরচ হয়েছে সেটা বেচে যেত। আর বাকী যে ৩টা প্রকল্পের কথা বলা হয়েছিলো তা তো ইট অভাবে করা যাচ্ছিল না। বাজারে ইটের সংকট ছিলো। হতে পারে টি.আর.প্রকল্পের নিয়ম অনুযায়ী ৫০ দিনের মধ্যে কাজ ৩টা করার কথা কিন্ত ইট না হলে কাজ করতে ২২৬ দিন লাগলেও অসুবিধা কোথায়। যে অল্প বরাদ্দ তাতে ঐসব প্রকল্পের কাজ ভালোভাবে করা যায় না। শুধু সমালোচনা কারীদের সমালোচনার জবাবে কাজ তিনটা করা হয়েছে। ঠেলা বুঝুক কয় মাস থাকে ? আর খেয়াঘাটের যাত্রী ছাউনির দরকারই নাই, তাই ছোট সাইজের ছাগলের ঘর তৈরি করা হয়েছে।

সম্প্রতি এলাকার ও বাহিরের কিছু দুষ্কৃতিকারীরা মিলে বিভিন্ন বিভ্রান্তিমূলক তথ্য সাংবাদিকদের পরিবেশন করে জাতীয় ও আঞ্চলিক পত্র-পত্রিকায় মাননীয় এম.পি.মহোদয়,স্ত্রী,পুত্র,কন্যা,জামাই,
ভাইপো ও ভাগ্নেদের বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। এম.পি.মহোদয় অত্যান্ত সাদামাঠা লোক,আমরা প্রতিবেশীরা যতটুকু জানি উনি কোনদিন কাহারো সাথে রাগান্বিত স্বরে কথাও বলেন না। বলা যায় উনার দ্বারা উপকার না পেলেও কেহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এমন কোন ব্যক্তিকে বাটি চালাক দিয়ে পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ। ছোটবেলা থেকে মাননীয় এম.পি.মহোদয় অত্যান্ত দ্রারিদ্রতার সাথে সংগ্রাম করে বড় হয়েছেন বিধায় বর্তমানে এম.পি.হওয়ার সুবাদে স্বচ্ছ ও সততার সাথে কিছু অর্থ হয়তো আয় করছেন সেটাই নিন্দুকদের চোখে পড়ছে। কিন্ত এটা তো অন্য কেহ এম.পি. হলেও একইভাবে আয় করতেন। তা না হলে কোটি কোটি টাকা খরচ করে কেন মানুষ এম.পি. হয় ? আমাদের এম.পি.সাহেবের তো নির্বাচনে বিশেষ কোন খরচ হয়নি বলা যায়, উনাকে ভালোবেসে সাধারণ মানুষ নির্বাচনে অর্থ সহযোগিতা করেছেন। শুনেছি নির্বাচনের আরও অনেক বছর আগ থেকে উনার দলীয় নেতা-কর্মী-সমর্থক,শুভাকাঙ্ক্ষী,আত্মীয়-স্বজনরা অর্থ সহযোগিতা করে আসছেন এমন কি উনার জামা-কাপড়-হাত খরচ,মোবাইল খরচ,চাল-ডাইল-তরিতরকারি,বাসভাড়া-লঞ্চভাড়া বা প্রো-পৌত্রের সুন্নতে খৎনার খরচ তারাই দিত। অনেকে অসৎ উদ্দেশ্যে উনাকে সাহায্য করতো এখন উনি এম.পি. হওয়ায় তারা স্বজনপ্রীতির সুযোগ নিয়ে অবৈধ অর্থ কামাতে না পেরে এম.পি. সাহেবের গালমন্দ করেন। আর এম.পি. চাচীর মত মহিলাই হয়না। কেহ কোন কাজ নিয়ে এম.পি চাচীর কাছে গেলে খালি হাতে ফিরেছে এমন নজির আছে বলে কেহ দাবী করতে পারবে না। চাচীর একটু অর্থের লোভ আছে এটা অস্বীকার করবো না । কিন্ত লোভ হবে না কেন ? ৭৫ পরবর্তী চাচী যে কষ্ট করেছেন – এখন অর্থ আয়ের সুযোগটা কোন বোকামিতে ছেড়ে দেবেন বলুন তো ? তাই বৈধ/ অবৈধ,কালো-সাদা,জামাত-বি.এন.পি,রাজাকার-জে.এম.বি কাহারোর কোন কাজ এম.পি.চাচী ফিরায়ে দেন না । এম.পি. সাহেবকে অনেকে হিন্দু বিদ্বেষী হিসেবে চিহ্নিত করেন কিন্ত উনি সেরকম নন বরং এম.পি. সাহেব ও এম.পি.চাচীর সবচেয়ে বড় গুন হলো উনারা দু'জন অত্যন্ত গণতান্ত্রিক মানসিকতার,অনেকটা অ্যামেরিকান মত। এম.পি. হওয়ার পর উনি প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলের দু-একজন সন্ত্রাসী বাদে সবার সাথে অত্যান্ত ভালো ব্যাবহার করেন। কোন স্কুল,কলেজে,সরকারী-বেসরকারী চাকুরির ব্যাপারে উনি জামাত-বি.এন.পি. বা জে.এম.বি. নেতা-কর্মীদের আওয়ামী লীগের কর্মীদের বেশী সুযোগ দেন, এমন কি স্কুল-মাদ্রাসা এম.পি.ভুক্তির জন্য উনার সময় প্রথম এম.পি.ও পেয়েছে জামাত নেতা পরিচালিত একটি মাদ্রাসা। এসব কারনে অনেক আওয়ামী লীগার এম.পি. সাহেবকে পচ্ছন্দ করেন না। কিন্ত এম.পি.সাহেব যে জাতীয় স্বার্থে একজন উদার ও নিরপেক্ষ ব্যক্তি হিসাবে কাজ করেন এটা কেহ বুঝতে চায় না । আমাদের এম.পি.মহোদয় যদি প্রধানমন্ত্রী হতে পারতেন তবে জাতীয় ঐক্যের সরকার গঠন করতে কোন ঝামেলা হতো না। আমার বিশ্বাস উনি সকল বিরোধী দলীয় লোকদের মন জয় করতে পারতেন। ইদানিং কিছু পত্র-পত্রিকা এম.পি.মহোদয়ের পুত্রের সম্পর্কে বাজে বাজে রিপোর্ট করছে। লিখছে উনার পূত্র (আমরা যাকে রাজপূত্র বলে আদর করে ডাকি) বিভিন্ন ঘের,জলমহাল,খাস খাল নাকি দখল করছে ? আমরা যতটুকু জানি আমাদের আদরের রাজপুত্র অত্যন্ত ভালো ছেলে,আগে এক চাচাতো ভাইয়ের কম্পিউটারের দোকানে মাত্র ৬ হাজার টাকার বেতনে চাকুরী করার কারনে অনেকটা কম্পিউটারের মত ভদ্র। উনি কেন ঘের,জলমহাল বা খাসখাল দখল করবেন ? এলাকার অনেক সন্ত্রাসী অবৈধভাবে কিছু ঘের.জলমহাল বা খাস খাল দখল করে রেখেছিল উনি সেগুলো নিজে উপস্থিত থেকে বা প্রশাসন দিয়ে দলীয় নেতা-কর্মী-আত্মীয়-স্বজনদের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছেন । আর রাজপুত্র হিসেবে একটু গাজা-ফেনসিডিল বা সূরা জাতীয় কিছু পান করলে দোষের কি আছে।