কিছু বাঙালির সৌদি ভক্তি, আসল বাস্তবতা

আরিফুল হক
Published : 9 Oct 2011, 02:23 PM
Updated : 9 Oct 2011, 02:23 PM

সম্প্রতি সৌদি আরবে আট বাংলাদেশীর শিরোচ্ছেদ হওয়ার ঘটনায় বাংলাদেশে বেশ বিতর্কের সৃর্ষ্টি হয়েছে। সৌদিপন্থী কিছু ব্লগার বলতে চাইছেন- আল্লাহর আইন বাস্তাবায়ন হয়েছে। যার জবাব আমি নীচে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। কিছু যুক্তি হয়ত সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। আর কিছু মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন আছে যারা মুসলিমদের কার্যক্রম দেখার জন্য ও সমালোচনার জন্যই মুখিয়ে থাকে। শুধু সৌদি আরবই নয় তাদের টার্গেট অন্য দেশের মুসলিম নামক বিশ্বের সংখ্যালঘুরা। অথচ পশ্চিমাদের নানা অমানবিক কাজে এদের চুপ থাকতে দেখা যায়।

দেখা যাক, সৌদীবাসীদের আল্লাহভীতির নমূনা।

সৌদিতে কোন ভাইয়ের কাছে তার বোন নিরাপদ নয়। মা বাবা বা বোনটি ভয়ে থাকে ক্ষুধার্ত ভাইটি বোনকে যে কোন সময় ধর্ষণ করতে পারে। আশ্চর্য্য ধরনের বহুমুখী লম্পট ওরা। যার বয়স ৭৫ বছর এবং ধনী, তার বউয়ের সংখ্যা ৫ থেকে ১০টা। আর যার বয়স ৪০ এর নীচে তাদের কোন বউ নেই যদি তাদের বাপ বেচে থাকে। কারণ নগদ টাকা না থাকলে ঐ দেশে বিয়ে করা যায় না। আর যতদিন বাপ বেচে থাকে ততদিন ছেলে বাপের কোন টাকা পয়সা পায় না; অর্থাৎ পিতার সম্পত্তির উত্তরাধিকার হতে পারে না। ফলে বউ না থাকায় যৌন তৃপ্তি পেতে তারা আশ্রয় নেয় বিভিন্ন অনৈতিক কাজে। তাদের প্রথম টার্গেট থাকে তাদের বাসায় কাজ করা অভিবাসী নারীকর্মীরা। চাকরি বাঁচাতে বা অন্য যে কোন কারণেই হোক এসব নারী শ্রমিকরা বাধ্য হয় তাদের কাছে নিজেদেরকে সমর্পণ করতে। তা না হলে জীবনও হারাতে হয় এসব মেয়েদের। তাদের এই লালসার শিকার হয় অনেক সময় ছেলেরাও। বিশেষ করে কম বয়সী পাকিস্তানিরা প্রায়ই এরকম পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়। সৃষ্টিশীল কোন কাজ না থাকায় এসব দেশের পুরুষরা সবচেয়ে বেশি মনোযোগ দেয় যৌনতায়।

এখানকার মেয়েরাও থাকে অনিশ্চয়তার মধ্যে। ধন দৌলতের মধ্যে বেড়ে উঠলেও তারা এখনও মধ্যযুগীয় শাষনব্যবস্থা থেকে মুক্তি পায়নি। লেখাপড়াসহ অন্যান্য সৃজনশীল কাজেরও সুযোগ কম। তাদের একমাত্র নিয়তি হচ্ছে কোন ধনী আমির বা ব্যবসায়ীর চতুর্থ, পঞ্চম বা ১০ম স্ত্রী হিসেবে অসুখী জীবন যাপন করা। এসব মেয়েদের চিন্ত চেতনা যেমন বড় হয় না। তেমনি প্রতিশোধস্পৃহা বশতই হোক বা অন্য যে কোন কারণেই হোক তারা বিভিন্ন অনৈতিক কাজে জড়িত। স্বামীর বয়স বেশি হওয়ায় বা স্বামীর কাছ থেকে কম সময় পাওয়ায় নিজেদের চাহিদা মেটাতে গিয়ে তারা পারিবারিক মুল্যবোধের প্রতি অশ্রদ্ধাশীল হয়ে ওঠে। আশ্রয় নেয় অবৈধ যৌনচর্যা বৃত্তিতে। আর এ কাজের জন্য বেছে নেয় সেদেশে কাজ করতে যাওয়া বিভিন্ন বিদেশী ছেলেদের। বাংলাদেশী অনেক ছেলেদের কাছে এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে।

আরবীয়দের যৌনাগ্রহ যে বেশি তা আমরা না বুঝলেও পাশ্চত্যরা কিন্তু ঠিকই বোঝে। আর এ্ই সুযোগ সবচেয়ে বেশি করে কাজে লাগাতে পেরেছে যুক্তরাষ্ট্র। শুধু সৌদি আরব থেকেই যুক্তরাষ্ট্র তার মোট তেলের ৫০ শতাংশ সংগ্রহ করে। আর এজন্য সবচেয়ে যে অস্ত্রটি তারা ব্যবহার করেছে তা হচ্ছে নারী। সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যে এত বেশি নারী মার্কিন সেনা বা কর্মকর্তা রয়েছে যা সারা বিশ্বেও তারা মোতায়েন করেনি। যুক্তরাষ্ট্র ঠিকই এসব কথিত মুসলমানদের দুর্বলতা টের পেয়েছে; আর প্রয়োগ করেছে আসল টনিক। যার কারণেই বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের যত চামচা আছে তার মধ্যে সৌদি আরব অন্যতম। ১৯৯০ সালে ইরাক ইরান যুদ্ধ থামাতে কোন উদ্যোগ নেয়নি অন্যতম বৃহত্তম এ মুসলিম দেশটি। ২০০০ সালে ন্যাটো যখন ইরাক দখল করার জন্য ঐ এলাকার আকাশ পথ ব্যবহার করতে চাইল, সৌদি আরব সাথে সাথে রাজী হয়। ইরানসহ আরো কয়েকটি দেশ তাতে ভেটো দিয়েছিল। সর্বশেষ, ইসরাইল যখন লেবাননের হিজবুল্লাহদের উপর আক্রমণ করে তখনও শোনা যায় ইসরাঈলকে সহায়তা করেছিল এই ল্যুচ্চারা।

যেসব ব্লগাররা সৌদী আরবকে বন্ধু বা বড়বাবা ভেবে থাকেন, আপনাদের বলি। আপনাদের কি ঐ দেশে যাওয়ার অভিজ্ঞতা আছে? থাকলে আপনি একমত হবেন। আর যদি না থাকে তাহলে শুনুন, আপনি যাই হোন না কেন, তা বড় ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার বা এই জাতীয় যাই হোন না কেন। ঐদেশে আপনি যদি নাগরিকত্ব পান কখনও আপনি হবেন-তৃতীয় শ্রেনীর। আর যদি কোন পশ্চিমা নাগরিকত্ত্বের আবেদন করে তাহলে সে পাবে প্রথম শ্রনীর নাগরিকত্ব। কে মুসলিম, কে কী, এসব তারা চিন্তা করে না। তাদের মূল আগ্রহ হচ্ছে যৌনতা, প্রগলভতা, চামচাবৃত্তি।

আরও অনেক নমুনা আছে সৌদিবাসীদের। যেমন, তৃতীয় বিশ্ব থেকে ছোট বাচ্চাদেরকে নিয়ে যেয়ে উটের পিঠে বসিয়ে প্রতিযোগিতায় নামাতো। উটের পিঠে বাচ্চারা যত কান্না করত উট তত দ্রুত দৌড়াত। আল্লাহর আইন বাস্তবায়নের আরও উদাহরণ আছে যার সবগুলো আমি জানি না। বোধ হয় ঐসব বাঙ্গালী ভাল জানবেন, যারা মনে করে তারাই একমাত্র উত্তম জাতি, আর অন্যরা সব বাতিল। যারা দেশের মা বোনদের গণিমতের মাল মনে করে বিদেশের হাতে তুলে দেয়, উচ্ছিষ্টের লোভে। যাদের কাছে মানবতার চেয়ে বায়বীয় কিছু দর্শন বেশি গুরুত্বের।