বিশ্বে সার্বজনীন ভাবে যুদ্ধাপরাধের একটি সংজ্ঞা গৃহীত হয়েছে। এই সংজ্ঞা অনুযায়ী War Crimes are violations of laws or Customs of war, including, murder, the ill-treatment or deportation of civilian residents of an occupied territory to slave labour camps “the murder and ill-treatment of Prisoners of War, the Killing of hostages the wanton destruction of cities, towns and villages and any destruction not justified by military or civilian necessity অর্থাৎ যুদ্ধরত জাতি ও রাষ্ট্র কর্তৃক যুদ্ধের আইন, বিধি বিধান ও রীতিনীতি লংঘন করাই হচ্ছে যুদ্ধাপরাধ। এর মধ্যে অধিকৃত ভূখন্ডের বাসিন্দাদের প্রতি নিষ্ঠুরতা প্রদর্শন কিংবা তাদেরকে দাস হিসেবে শ্রম শিবিরে যেতে বাধ্য করাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তদুপরি যুদ্ধবন্দিদের হত্যা অথবা তাদের সাথে নিষ্ঠুর আচরণ, জিম্মিদের হত্যা করা, শহর নগর ও গ্রাম ধ্বংস করা এবং সামরিক বা বেসামরিক প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও যে কোনও ধরনের ধ্বংসযজ্ঞ চালানোও যুদ্ধাপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়।
উপরোক্ত সংজ্ঞানুযায়ী এ পর্যন্ত বিভিন্ন দেশে রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান এবং খ্যাতনামা ব্যক্তিদের যুদ্ধাপরাধের দায়ে বিচারের সম্মুখীন করা হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন:
জার্মানীর এডমিরাল কার্ল ডনিজ, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানের প্রধানমন্ত্রী ও সশস্ত্র বাহিনী প্রধান যথাক্রমে হাইডেক তোজো এবং কুনিয়াকি কইজো সাবেক যুগোশ্লাভ প্রেসিডেন্ট শ্লোভেদান মিলোসেভিক, লাইবেরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট চার্লস জি টেলর, বসনিয়ার সাবেক সার্ব প্রেসিডেন্ট রাদোভান কারাজিক। এছাড়াও অপরাপর উল্লেখযোগ্য অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেনঃ জাপানী সেনা বাহিনীর দু’জন জেনারেল, সাদা ও আবাকি এবং ইওসিজিরো উমেজু জাপানের যুদ্ধমন্ত্রী শিশিরো ইটাগাকি জার্মান বিমান বাহিনী প্রধান হারমান গোরিং (Commander in chief of the Luftwaffe) আর্নষ্ট কেলটেনব্রুনার ও এডলফ আইকম্যান, এরা উভয়েই SS বাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ছিলেন। আরো রয়েছেন জেনারেল ম্ল্যডিক, বসনীয় মুসলমানদের মধ্যে গণহত্যা পরিচালনাসহ তার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের বহু অভিযোগ রয়েছে, ফিল্ড মার্শাল ওয়াইহেম কাইটেল, এডমিরাল জেনারেল এরিখ রাইডার, জাপানের প্রিভিসীলের লর্ডকীপার কইচি কিডো। কয়েকদিন আগেও ক্রোয়েশিয়ায় দুজন উচ্চপদস্ত সাবেক সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় দি হেগে আন্তর্জাতিক আদালতে বিচার শেষে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। তাদের নাম জেনারেল এন্টি গতোভিনা ও জেনারেল ম্লাদান মারকাচ।
এখানে একটি বিষয় লক্ষনীয় যাদেরকে এপর্যন্ত যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত এবং শাস্তিপ্রদান করা হয়েছে তাদের মধ্যে কেউই বেসামরিক লোক নন। অর্থাৎ এ পর্যন্ত যাদেরকে অভিযুক্ত করা হয়েছে তারা সবাই সামরিক লোক এবং যুদ্ধ পরিচালনাকারী কর্তৃপক্ষের উচ্চ পর্যায়ের লোক। যুদ্ধাপরাধের বিচারের সূচনা থেকে শুরু করে দুনিয়ার কোনও দেশে সংজ্ঞায়িত যুদ্ধরত পক্ষসমূহের অন্তর্ভুক্ত নয় এমন বেসামরিক কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে, এমন নজির নেই।
আরো একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো নুরেমবার্গে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে ১৯৪৫ সালে যুদ্ধাপরাধের যে ট্রায়াল শুরু হয় তার তদন্ত শুরু হয়েছিল ১৯৪২ সালে যুদ্ধকালীন সময়ে এবং যুদ্ধকালীন সময়ে যুদ্ধাপরাধ ও যুদ্ধাপরাধী চিহ্নিত হয়েছিল। তদন্তে তালিকাভুক্ত যেসব যুদ্ধাপরাধীদের তখন ধরা যায়নি বা ধরা পড়েনি তাদেরকে ৩০, ৪০ বছর পর যখনই ধরা পড়েছে তখনই তাদের বিচার এবং শাস্তি হয়েছে। অনুরূপভাবে সার্বিয়া, রুয়ান্ডায় যে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছে বা বিচার হচ্ছে তাদের যুদ্ধাপরাধ চিহ্নিত হয়েছে যুদ্ধ বা সংঘাতের সময়ই। ভিয়েতনামেও এটাই ঘটেছে। কোথাও কোনো জায়গাতে যুদ্ধ বা সংঘাতের ৩০, ৪০ বছর পর যুদ্ধাপরাধ ও যুদ্ধাপরাধী চিহ্নিত করার জন্য তদন্ত এবং সে অনুযায়ী বিচার অনুষ্ঠিত হয়নি। অর্থাৎ যুদ্ধাপরাধের তদন্ত যুদ্ধের পরপরই শেষ করা হয় এবং সে অনুযায়ী অপরাধীদের চিহ্নিত করা হয়। এরপর কোন অপরাধী যদি পালিয়ে থাকেন তাহলে যখনই ধরা পরবে তখনই বিচার হবে।
অনুরূপভাবে আমাদের দেশেও ১৯৭১ সালের যুদ্ধের পরপর যুদ্ধাপরাধী চিহ্নিত করার জন্য তদন্ত হয়। ১৯৭৩ সালের ১৭ এপ্রিলে যুদ্ধাপরাধীদের চিহ্নিত করা ও বিচার সংক্রান্ত সরকারের ঘোষণায় বলা হয়েছিল, “Investigations into the crimes committed by the Pakistan occupation forces and their auxiliaries are almost complete. Upon the evidence, it has been decided to try 195 persons of serious crimes, which include genocide, war crime, crimes against humanity, breaches of Article-3 of the Geneva Conventions, murder, rape and arson.” এ ঘোষণায় দেখা যাচ্ছে পাক সেনা’ ও তার ‘auxiliaries’ বা সহযোগী বাহিনীর মধ্য থেকে ১৯৫ জনকে যুদ্ধাপরাধী চিহ্নিত করা হয়েছিল। অর্থাৎ যুদ্ধের পরপর বঙ্গবন্ধু সরকার কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিঠি পাকিস্থান সেনাবাহিনীর ১৯৫ জন সদস্যেকে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করে তাদের বিচারের ঘোষণা দিয়েছিল। যাদেরকে পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু সরকার কর্তৃক পাক-ভারত-বাংলাদেশ ত্রিপক্ষীয় সমযোতা চুক্তির আওতায় পাকিস্থানে ফেরত পাঠিয়ে দিয়ে যুদ্ধাপরাধ ইস্যু ক্লোজ করা হয়েছিল।
পরবর্তী পর্ব- বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধ আইন ও দালাল আইন, কোনটা কাদের জন্য ছিল?
আইরিন সুলতানা বলেছেনঃ
আপনি ঠিকঠাক আছেন তো পুষ্পিতা?
আপনার পোস্টের বোল্ড করা অংশগুলো পড়লে এই পোস্টের উদ্দেশ্য পরিস্কার হয়।
চতুর্থ জেনেভা কনভেনশনের ১৪৭ অনুচ্ছেদে যুদ্ধাপরাধকে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে যে, ”ইচ্ছাকৃত হত্যা, অত্যাচার অথবা অমানবিক আচরণ যেমন ইচ্ছাকৃত ভাবে শারীরিক আঘাত, আইনবিরোধী ভাবে কাউকে বন্দী করা অথবা জোরপূর্বক কোন ব্যক্তিকে নিষ্ঠুর কাজে নিয়োজিত করা অথবা ইচ্ছাকৃতভাবে মানবাধিকার লংঘন করা, … কোন রকম কারণ দর্শানো ছাড়াই এবং অবৈধভাবে কারো সম্পদের বৃহৎ ক্ষতি সাধন অথবা অপব্যবহার করা ”
যুদ্ধাপরাধের সংজ্ঞায় অনেক সময়ই লেখা হয়, including but not limited to, কারণ বিভৎসতা, অত্যাচর, অবমাননার ধরনধারণকে কিছু নির্দিষ্ট ক্যাটেগরিতে ফেলে সংজ্ঞায়িত করা সম্ভব নয়।
বিশ্বের আর কোথাও ৩০-৪০ বছর পর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়নি , এমন অংশকে বোল্ড করে আপনি কোন ইঙ্গিত দিতে চাচ্ছেন আসলে?
অথবা বেসামরিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ অভিযোগ নেই, এমন প্রসংগকে হাইলাইট করেও বা আপনি কী বলতে চান?
পুস্পিতা বলেছেনঃ
যে অংশ গুলোকে বোল্ড করেছি তা দিয়ে আপনি কি বুঝেছেন? খুব সহজ ভাষায় দেয়া হয়েছে। পরবর্তী পোষ্টে আরো বিস্তারিত আসবে।
বাসন্ত বিষুব বলেছেনঃ
গোলাম আযম, নিজামী আর মুজাহিদের মত নরঘাতকদের পক্ষাবলম্বনে আপনার বিগত কয়েকটি লেখা পড়ে বঙ্কিমচন্দ্রের একটি বাক্য মনে পড়ে গেল। ব্যাঘ্রাচার্য বৃহল্লাঙ্গুল রসরচনায় তিনি লিখেছেন, “আমাদিগের ভরসা আছে যে, মনুষ্য-পশুও কাল প্রভাবে লাঙ্গুলাদিবিশিষ্ট্য হইয়া ক্রমে বানর হইয়া উঠিবে।”
আজ এই জাতির বড় দুর্ভাগ্য, যেখানে ঘাতকেরা, জাতিবিদ্বেষীরা, তাদের সমর্থকেরা লজ্জায়, ভয়ে মুখ লুকিয়ে থাকবে সেখানে আজ তার উল্টো সবাক হয়ে উঠেছে।
পুস্পিতা বলেছেনঃ
এখনো তো গোলাম আযম-নিজামীর নামই নেয়া হয়নি। এর মধ্যেই পক্ষাবলম্বন আবিস্কার করে ফেললেন? আরো তথ্য যখন আসবে, নিজের ঘরের ভিতরের, আত্মীয়স্বজনের, বেয়াই সহ দলের ভিতর-বাইরে হাজার হাজার যুদ্ধাপরাধীর নাম যখন পাবেন তখন মনে হয় মাথা খারাপ হয়ে যাবে!!!
ব্লগপোষক বলেছেনঃ
প্রিয় ব্লগার পুস্পিতা,
ব্লগ টিম লক্ষ্য করেছে, আপনি এই পোস্টে ব্লগারদের মন্তব্য করার সুবিধাটি বারবার বন্ধ রাখছেন।
এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সংক্রান্ত পোস্টে আলোচনার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে জাতিগত স্বার্থে। তাই মতামত প্রকাশ করে ব্লগারদের অংশগ্রহণের পথ বন্ধ করে দেয়ার বিষয়টি অগ্রহণযোগ্য বলেই ব্লগ টিম মনে করে। এই মনোভাবের সাথে ব্লগাররাও সম্পূর্ণরূপে একমত হবেন, তাতে কোন দ্বিধা নেই।
ব্লগ টিম তাই এই পোস্টে ব্লগারদের মন্তব্য করার সুযোগ উন্মুক্ত করে দিয়েছে।
আপনাকে অনুরোধ করা যাচ্ছে, পুনরায় মন্তব্য করার সুযোগ স্থগিত না করার জন্য।
ধন্যবাদ।
পুস্পিতা বলেছেনঃ
এটা অনেক সংক্ষেপে লিখেছি। পরবর্তী পর্বে বিস্তারিত আসবে বিধায় এ পর্বে মন্তব্য গ্রহণ না করতে চেয়েছিলাম। ধন্যবাদ।
আইরিন সুলতানা বলেছেনঃ
পুষ্পিতা, একটু ঝেড়ে কাশলে ভাল হয়। আমার প্রশ্ন বুঝতে অসুবিধা হলে আমি এগেইন আবার রিপিট করছি,
বিশ্বের আর কোথাও ৩০-৪০ বছর পর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়নি , এমন অংশকে বোল্ড করে আপনি কোন ইঙ্গিত দিতে চাচ্ছেন আসলে?
অথবা বেসামরিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ অভিযোগ নেই, এমন প্রসংগকে হাইলাইট করেও বা আপনি কী বলতে চান?
পুস্পিতা বলেছেনঃ
প্রশ্ন আমি বুঝেছি। এত সহজ করে লিখেছি তাতে আপনার প্রশ্নের উত্তর লিখাতেই পাওয়ার কথা।
যুদ্ধ কি বেসামরিক লোকেরা করে না সামরিক লোকেরা করে? এপর্যন্ত যাদেরকে সারা দুনিয়াতে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে তাদের ব্যাপারে কতটুকু জানেন? তারা সামরিক ছিল না বেসামরিক? যুদ্ধাপরাধের বিচার এ পর্যন্ত যেখানে যেখানে হয়েছে সেখানে কখন তদন্ত হয়েছে তা কি জানেন? বাংলাদেশে ১৯৭১ সালের পরপর তদন্ত হয়েছিল তা কি জানেন? সেই তদন্তে যে ১৯৫ জনকে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল তাদের নাম জানেন? তারা কারা ছিল? সামরিক বাহিনীর সদস্য না সাধারণ লোকজন ছিল? বাংলাদেশে যে দুটো আইন করা হয়েছিল তা কি জানেন? সে দুটো আইন কি? কেন দুই রকম আইন করা হয়েছিল? কাদের জন্য করা হয়েছিল? এই প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেন।
এরপর ২য় পর্বে আরো অনেক তথ্য আসবে তাতো বলেছি।
বাসন্ত বিষুব বলেছেনঃ
আপনার জবাবে স্পষ্ট হয়েছে, গোলাম আযম, নিজামী, মুজাহীদের মত জনস্বীকৃত, ইতিহাসস্বীকৃত, ঘৃণিত ঘাতকদের পক্ষ নিতে গিয়ে আপনি অন্য দলে যুদ্ধাপরাধী বা ঘাতক আছে তা তুলে ধরারা চেষ্টা করেছেন। আপনি প্রকারন্তরে বুঝাতে চাইছেন, যেহেতু আ. লীগে যুদ্ধাপরাধী আছে তাই তাদের বাদ দিয়ে গোলাম আযমদের বিচার করা যাবে না। আপনি দেশের বাইরের কিছু প্রসংগ টেনে দেখাতে চেয়েছেন, এত বছর পর আপনার আদর্শিক নেতাদের বিচার করা ঔচিত্যের পরেনা।
মনে রাখবেন, একজন অপরাধীর বিচার করতে নজিরের প্রয়োজন হয়না। ভিনদেশে অপরাধীর বিচার কিমতে হয়েছে তা বিবেচনা করারো প্রয়োজন হয়না। আমাদের রাষ্ট্র, আমাদের আইন যে মতে সীদ্ধান্ত নেবে সেমতেই তাদের বিচার হবে। প্রয়োজনে যুদ্ধাপরাধের সংজ্ঞা নতুন করে নির্ধারিত হবে। প্রয়োজনে নতুন নজির স্থাপিত হবে। কিন্তু তবুয় এই ঘাতকদের জাতি ক্ষমা করবেনা। জাতি ক্ষমা করবেনা সেই সব কুলাঙ্গারদের যারা নির্লজ্জেরমত এই ঘাতকদের সমর্থন করে, অজুহাত দেখিয়ে পক্ষাবলম্বন করে।
আপনার আরো মনে রাখা উচিত, এই সব ধিকৃত ঘাতকদের বিচার শুধুমাত্র আ. লীগের এজেন্ডা নয়, একচ্ছত্র অধিকার নয়। তাদের বিচারের দাবি জনতার, সময়ের এবং জাতিহিতৈষী প্রজন্মের। আ. লীগ কোন কারণে যদি বিচার করতে ব্যর্থ হয় তবে বিচারের করার দায়িত্ব বিএনপির উপরো বর্তাবে। যদি বিএনপি ব্যর্থ হয় তবে তাদের বিচারের দায়িত্ব মহাকালের উপর তথা আগামী প্রজন্মের উপর বর্তাবে। এই দায় থেকে কারো রেহাই নেই। আপনি নিশ্চয় জানেন ধর্মের কল বাতাসেয় নড়ে। অপরাধীর বিচার হবেই, হতে পারে আজ, কিংবা আগামীকাল কিংবা তারোপরে।
আপনার এটায় মনে রাখা উচিত, যারা গোলাম আযম, নিজামীর মত ঘাতকদের প্রকাশ্যে সমর্থন করে তারা মূলত এই স্বাধীনজাতির স্বাধীনতার সাথে প্রতারণা এবং মস্করা করে। সুতারাং তারা অপরাধী। তারা ঘৃণিত।
পুস্পিতা বলেছেনঃ
আমি তো এখনো সমর্থন-অসমর্থন কোন কিছুই করিনি। আপনি আগ বাড়িয়ে বলা শুরু করলেন কেন? কেমন জানি লাগছে। আগে তো পুরোটা পড়বেন।
আবেগ আর আইন এক নয়। আমি বলছি আইন নিয়ে কথা। আর আপনি বলা শুরু করলেন কিছু গৎবাঁধা কথা। যুদ্ধাপরাধীর বিচার আমি চাই বলেই তো আইন ও ইতিহাস নিয়ে কথা শুরু করলাম। আমি তো এখনো কারো পক্ষে-বিপক্ষে কিছু বলিনি।
আপনি বলেছেন, “মনে রাখবেন, একজন অপরাধীর বিচার করতে নজিরের প্রয়োজন হয়না। ভিনদেশে অপরাধীর বিচার কিমতে হয়েছে তা বিবেচনা করারো প্রয়োজন হয়না। আমাদের রাষ্ট্র, আমাদের আইন যে মতে সীদ্ধান্ত নেবে সেমতেই তাদের বিচার হবে। প্রয়োজনে যুদ্ধাপরাধের সংজ্ঞা নতুন করে নির্ধারিত হবে। প্রয়োজনে নতুন নজির স্থাপিত হবে।” আইনের বেলায় এধরনের আবেগী কথা কি চলে? আপনি মনে হয় একটি জিনিস খেয়াল করেন নি, বর্তমান সরকার বিচার করতে চাচ্ছে যে আইনে সে আইনের নাম, International Crimes Tribunal Act. তাই এ আইনে কারো বিচার করতে গেলে আন্তর্জাতিক নিয়ম-কানুন-আইন-ইতিহাস মেনে চলতে হয়। হয় বলেই সরকার আমেরিকার যুদ্ধাপরাধ বিষয়ক বিশেষ দূতকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল আমাদের আইনটি পর্যালোচনা করার জন্য। তিনি কয়েকটি চিঠি অলরেডি পাঠিয়ে দিয়েছেন। সেগুলোও পরবর্তী পর্বে আসবে। আন্তর্জাতিক বার এসোসিয়েশন রিকমেন্ডেশন দিয়েছে। কারণ ওই একটি এটি International Crimes Tribunal Act. হ্যাঁ, যদি সরকার অন্য আইনে করতে চায় তাহলে অন্য কেউ কথা বলবে না। সে রকম একটি আইনও ছিল তার নাম দালাল আইন। তাই আবেগ নয়, আইন নিয়ে কথা বলছি আপনি সে হিসেবে মন্তব্য করুনম অথবা পুরোটি পড়ার জন্য অপেক্ষা করুন। আমরা সবাই যুদ্ধাপরাধের বিচার চাই। তা তো এই আইন নিয়ে আগ্রহী।
লিটন বলেছেনঃ
বাসন্ত বিষুবঃ বলতে পারেন যদি যুদ্ধে আপনি হারেন তাহলে আপনি কি হবেন? ৪০ বছর পার হবার পর এখন তথাকথিত যুদ্ধাপরাধের বিচার করার অর্থ আমরা বুঝি।
আইরিন সুলতানা বলেছেনঃ
বঙ্গবন্ধু জামাত-ই-ইসলামির নেতা গোলাম আযমের নাগরিকত্ব বাতিল করেন । গোলাম আযমকে পাকিস্তানে আশ্রয় নিতে হয়েছিল । অন্যান্য শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীদের মধ্যে মতিউর রহমান নিজামী এবং আলী আহসান মুজাহিদ হয় কারাগারে বিচারের আওতাধীন ছিল নয়তো পাকিস্তানের আশ্রয়ে ছিল।
শেখ মুজিবের হত্যার পর শাসক জিয়া গোলাম আযমের নাগরিকত্ব পুনর্বহাল করেন; এমনকি তিনি গোলাম আযমকে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনেন। সেই সাথে মুক্তি দেন সকল রাজাকারদের এবং অন্যান্য অপরাধে অভিযুক্ত অপরাধীদের । এমনকি সংবিধানের পরিমার্জনা করে তাদের জন্য রাজনীতির পথ উন্মুক্ত করেন ।
এই বিষয় নিয়েও আপনার বক্তব্য পাবো তো???
পুস্পিতা বলেছেনঃ
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আপনাকে আগের উত্তরে ১২ টি প্রশ্ন করেছিলাম। তার একটিরও উত্তর না দিয়ে উল্টো নতুন আরো কয়েকটি বিষয় নিয়ে এসেছেন। আগের প্রশ্ন গুলোর উত্তর কি জানা আছে? বিষয় ভিত্তিক কথা বলাই উত্তম।
ওহ হ্যাঁ, বঙ্গবন্ধু শুধু গোলাম আযমের নয় মোট ৩৯ জন রাজনৈতিক নেতার নাগরিকত্ব বাতিল করেছিল। আপনি তাদের সবাইকে চিনেন? সবার নাম জানেন? গোলাম আযমের নাগরিকত্ব জিয়া নয়, বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত দিয়েছিল। সেই আদালতের প্রিসাইডিং জজ ছিল বিচারপতি হাবিবুর রহমান শেলী। তাকে কি ছিনেন? গোলাম আযমের মামলায় যারা আপীলেড ডিভিশনে ছিল তারা সবাই পরবর্তীতে দেশের প্রধান বিচারপতি হয়েছিলেন। তারা কি গোলাম আযমের বন্ধু না আত্মীয় নাকি যে তাকে নাগরিকত্ব এমনিতেই দিয়ে দিয়েছিল? সেই রায়ের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছিল বঙ্গবন্ধু কর্তৃক গোলাম আযমের নাগরিকত্ব বাতিল অবৈধ ছিল।
নিজামী-মুজাহিদ কখনো কারাগারে ছিলনা। তাদের বিরুদ্ধে গত ৩৮ বছরে ১৯৭১ সাল নিয়ে একটা জিডিও হয়নি। আর আমি তো এখনো তাদের নিয়ে কোন কথা বলিনি। কেন তাদের ব্যাপারে বলা শুরু করলেন? বলছি আইন ও ইতিহাস নিয়ে। তাই ধারাবাহিক ভাবে পড়ে যান তারপর মন্তব্য করুন। লিখলাম একটি বিষয় নিয়ে, আর বলা শুরু করলেন অন্য বিষয় নিয়ে।
আর আমার আগে প্রশ্ন গুলোর উত্তর জানা থাকলে দিবেন দয়া করে। নতুবা সামনের পর্বগুলো পড়েন তারপর পুরো বিষয়টি পরিস্কার হবে।
জনিকা বলেছেনঃ
আমি অতশত বুঝিনা।
একজন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের মেয়ে হিসাবে বলব, স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন যখন সারা পূর্ব পাকিস্তান এক হয়েছিল, সেখানে যে বদমাইসগুলো বিপক্ষে থেকে নিজেদের ভাই-বোনদের উপর চরম অত্যাচার করেছে, তারা সামরিক হোক কি বেসামরিক! আমি দেখবনা। আমার ক্ষমতা থাকলে, তাদের গায়ের চামড়া তুলে, লবণ মাখিয়ে(যতটুকু কষ্টদায়ক সম্ভব….) সেভাবেই মৃত্যু দিতাম।
আর হ্যাঁ এটা সত্য, ঐসব জানোয়াররা সব দলেই বিদ্যমান। কিন্ত যারা লিডার তাদের বিচার আগেই হোক।
পুস্পিতা বলেছেনঃ
এটার সাথে একমত। যারা অপরাধী তাদের বিচার হোক। অপরাধের বিচার নিয়ে কারো দ্বিমত নেই। প্রকৃত অপরাধী যেই হোক, তার বিচার হোক, সে দাবী ও আশা সবার। কিন্তু বিচারকে যেন কোন ভাবেই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নির্মূলের হাতিয়ার করা না হয়-সেটাও জনগণের দাবী।
ডাকপিয়ন বলেছেনঃ
মুমিনের বিচার কখনো কাফের করতে পারে না। গোলাম আজমদের এখন যারা লটকাবে, নিশ্চয় আল্লাহ একদিন তাদেরকেও লটকাবে। আসেন আল্লাহর উপর বিশ্বাস আস্থা ভরসা রাখি। এসব (..মডারেটেড…) লেখালেখি বাদ দিয়ে নামাজ পড়ে আমাদের প্রাণপ্রিয় নেতাদের জন্য দোয়া করি।
হাসিনা যা করতেছে, তা আল্লাহর হুকুমেই করতেছে। আল্লাহ মাঝে মাঝে মুমিনদের পরীক্ষা নিয়ে থাকেন। এখন নিজামী সাঈদীদের পরীক্ষা চলতেছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিপক্ষে যাওয়া মানে আল্লাহর হুকুমের বিপক্ষে যাওয়া। এটা শিরকের শামিল।
আমরা শিরক করা থেকে বিরত থেকে ইসলামের খেদমতে মনোযোগী হই (আমিন)।
নাহুয়াল মিথ বলেছেনঃ
অতীব ষুন্দর পোষ্ট। আপনার বেতন প্রতি সপ্তাহে বাড়ুক। 😆
আচ্ছা খালাম্মা মুক্তিযুদ্ধ কী?
পুস্পিতা বলেছেনঃ
বিষয় ভিত্তিক মন্তব্য করা উচিত। এটা সম্ভব না হলে শুধু পড়ে যাওয়াই ভাল। ব্লগে যারা আসে তাদের অন্ততঃ এই সেন্স থাকা প্রয়োজন। একজনের মত সবার পছন্দ ও ভাল লাগবে তা সম্ভব নয়, সেটা আমি আশাও করিনা। কিন্তু তাই বলে আজেবাজে মন্তব্য করাও কারো কাছে আশা করিনা। লিখাতে ভূল থাকলে দেখিয়ে দিতে হবে, পাল্টা তথ্য উপস্থাপন করতে হবে, যুক্তি দিতে হবে। এর মাধ্যমে পারস্পরিক মত বিনিময় সম্ভব ও সবাই সেটা আশা করে। এসব করা সম্ভব না হলে আমার লিখাতে আপনার মন্তব্য করার প্রয়োজন নেই। মন্তব্য করবেন বিষয় ভিত্তিক, ব্যাক্তিগত ভাবে আক্রমণ করে নয়।
জে জিয়া বলেছেনঃ
আমি ধন্যবাদ দিই – এই সময়ের সাহসী লেখা লেখার জন্য ! যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হোক সেটা আমি চাই। কিন্ত বাংলাদেশে এখন যে বিচার হচ্ছে তা এক দলকে টাগেট নিয়ে রাজনৈতিক বিচার ! যা মাধ্যমে একটি দলকে ধংস করা হবে। যা একটি স্বাধীন দেশের জন্য গনতন্ত্র্য হুমকীর সম্মখীন!
পুস্পিতা বলেছেনঃ
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
mohammad joinal বলেছেনঃ
Ami puspita somporke jante cai. sonkhepe.
তানজীব বলেছেনঃ
>>আইরিন সুলতানাঃ এই ব্লগে দেখলাম আপনি সেরা ব্লগার। আশা করি সেরাদের মতই মন্তব্য করবেন।আপনার একটি মন্তব্যে দেখলাম আপনি বলেছেন “বঙ্গবন্ধুর হত্যার শাসক জিয়া” এ দিয়ে আপনি কি বুঝাতে চেয়েছেন। এটা কতিপয় আওয়ামী নেতার বক্তব্য হয়ে গেল না?
পুস্পিতাঃ অনেক তথ্য প্রমান সমৃদ্ধ লেখা। পড়ে ভাল লাগল। তবে যুদ্ধাপরাধীর বিচার না দেশে হচ্ছে মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচার(সরকার সহ অনেকে বলে)।
পুস্পিতা বলেছেনঃ
মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
তাহসিন আহমদ বলেছেনঃ
বিশ্লেষনী লেখার জন্য পুষ্পিতা কে ধন্যবাদ জানাই।
পুস্পিতা বলেছেনঃ
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ। পরবর্তী পর্ব পড়ার অনুরোধ রইল।
আইরিন সুলতানা বলেছেনঃ
ওহ হো! তাহলে আপনি বলতে চাচ্ছেন ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ ছিল সামরিক যুদ্ধ?
বাংলার কৃষক-ছাত্র-শিক্ষক-কিশোর-তরুণ-যুবা যারা ঘর ছেড়েছিল একাত্তরে তারা তাহলে যুদ্ধ করেনি???
পুস্পিতা বলেছেনঃ
যুদ্ধ সংক্রান্ত রীতিনীতি বুঝে প্রশ্নটা করেছেন? দ্বিতীয় পর্বটি পড়েন, অনেক কিছু পরিস্কার হবে।
আইরিন সুলতানা বলেছেনঃ
মন্তব্য করার সময় ‘সেরা ব্লগার’ মনোবৃত্তি নিয়ে ব্লগিং করাটা আমার কাছে ব্যক্তিত্বহীনতার পরিচায়ক। তাই ও পথে যেতে আমার তীব্র আপত্তি।
যা হোক, কথাটা ছিল “…শেখ মুজিবের হত্যার পর শাসক জিয়া গোলাম আযমের নাগরিকত্ব পুনর্বহাল করেন…”
অর্থ হলো বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হওয়ার এবং জিয়ার ক্ষমতায়নের পর ।
তবে আপনি যেহেতু প্রসংগটা টেনে ধরেছেন, তাতে বোঝা যাচ্ছে আপনি কী ভাবছেন। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে জিয়ার জড়িত থাকার বিষয়টি। তাই আপনি প্রতিবাদে এগিয়ে এসেছেন চটজলদি।
বিষয়টা এরকম হলে, এটাও একটা সত্য ইতিহাস, যে জিয়াউর রহমান আগোগাড়াই এই হত্যাকণ্ডের পরিকল্পনার কথা জানতেন।
আইরিন সুলতানা বলেছেনঃ
আপনি নিজেকে বেশ তালেবর মনে করছেন দেখা যাচ্ছে!
অবশ্যই আদালত থেকে রায় দেয়া হয়েছিল। এবং এই কেস উত্থাপিত হয়েছিল জিয়া সরকারের আমলে। জিয়া সরকারের আমল থেকেই এইসব ধর্মব্যবসায়ীরা রাজনীতিতে গেঁড়ে বসার সুযোগ পায়।
গোলাম আযমের মামলাটি হাই কোর্টে বিভক্ত রায়ের কবলে পড়ে। দু’জন বিচারপতির একজন পক্ষে রায় দেন, একজন বিপক্ষে, ফলে তৃতীয় বিচারক আনওয়ারুল হক চৌধুরীর আবির্ভাব এবং রায় যায় পক্ষে। এরপর মামলা আসে সুপ্রীম কোর্টে । এখানে বিচারক প্যানেলে হাবিবুর রহমান সহ মোট ৪ জন ছিলেন।
এই রায় বিচারপতি হাবিবুর রহমান শেলী’র বিশাল ব্যক্তিত্বপূর্ণ গ্রহণযোগ্যতায় কালো দাগ হিসেবে বিবেচিত হয়।
পুস্পিতা বলেছেনঃ
একটু জেনে বললে ভাল। কারণ এখানে সবাই মন্তব্য পড়ে ও দেখে। গোলাম আযমকে গ্রেফতার করা হয় ১৯৯২ সালে খালেদা জিয়ার আমলে। তখনই গোলাম আযম আটকাদেশের বিরুদ্ধে রিট করে এবং মামলাটি শুরু হয়। জিয়ার আমলে কোন মামলা উত্থাপিত হয়নি। আরেকটু জেনে বলুন।
আর হাবিবুর রহমানের রায় আপনার মন মতো হয়নি বলেই কি সেটাকে উনার জীবনের কালো দাগ বলছেন?!! ভয়াবহ ব্যাপার তো দেখি!! নিজের পক্ষে না গেলে ফেরেশতাও খারাপ হয়ে যায়?!!
এটাতো দেখা যাচ্ছে সেক্টর কমান্ডার মেজর জলিলকে আওয়ামী লীগের রাজাকার বলার মতো হয়ে গেল!! মেজর জলিল আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল বলে তাকে রাজাকার হিসেবে অভিহিত করেছিল আওয়ামী লীগ। আর জিয়াকে করছেই!! এখন হাবিবুর রহমান কেন আইনের পক্ষে অবস্থান নিলো, তখন তিনিও আপনাদের কাছে খারাপ!!!
আর গোলাম আযম-গোলাম আযম শুরু করলেন কেন? দুইটি পর্ব লিখেছি, এখনও তো আমি তাদের কারো নামই নেইনি। বিষয় ভিত্তিক কথা বলুন, নতুবা শুধু পড়ে যান।
আইরিন সুলতানা বলেছেনঃ
আপনি যুদ্ধাপরাধী চেনাচ্ছেন আমাদের, সেখানে আমি খুব স্পষ্টভাবে একজন চিহ্নিত শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীর নাম স্পষ্ট করে নিলাম – গোলাম আযম। এটা একদম প্রাসংগিকভাবেই এসেছে।
আপনি বলতে চাইছেন, গোলাম আযমের নাম আনাটা বিষয় ভিত্তিক নয়? তাহলে কি আপনি গোলাম আযমকে যুদ্ধাপরাধী বলতে চান না?
পুস্পিতা বলেছেনঃ
এই প্রশ্নের জবাব আমার দ্বিতীয় পোষ্টে আছে। সেটা পড়ে বলুন ও জানুন কারা ছিল যুদ্ধাপরাধী। এসব আমি আর আপনি বলার জিনিস নয়। আইন বলবে কে যুদ্ধাপরাধী। সেই আইনের বিস্তারিত দেয়া আছে দ্বিতীয় পোষ্টে।
আইরিন সুলতানা বলেছেনঃ
যাক, প্রসংগ টেনে ধরায় ভালো হলো। জিয়া এবং গোলাম আযমের অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক আরেকটু খোলাসা করার সুযোগ পেলাম এই সুযোগে।
১৯৭৩ সালের ১৮ই এপ্রিল সরকারী এক আদেশে আরো ৩৮ জন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের সাথে গোলাম আযমমের নাগরিকত্ব বাতিল করা হয়। বঙ্গবন্ধু সরকার ক্ষমতায় তখন।
জিয়ারউর রহমান ক্ষমতায় আসার পর গোলাম আযম পাকিস্তানি পাসপোর্ট নিয়ে সাময়িক ভাবে বাংলাদেশে আসেন এবং কোন ভিসা ছাড়াই ১৯৭৮-১৯৯৪ পর্যন্ত বসবাসে সক্ষম হন।
পুস্পিতা বলেছেনঃ
হ্যাঁ, এটা তো কোন গোপন বিষয় নয়। গোলাম আযম অনেকবার নাগরিকত্ব পূণর্বহালের আবেদন করেন। এরপর গোলাম আযমের মায়ের আবেদনের পর তৎকালীন সরকার গোলাম আযমকে ভিসা দেয়া দেশে আসার জন্য। এসবই তো আদালতে বলা হয়েছিল। কোন ভিসা ছাড়া যখন ছিল তখন জিয়ার পরের সরকার বা তার পরের সরকার কোন বের করে দেয়নি কেন? কারণ বের করা সম্ভব ছিল না। সবাই জানতো বঙ্গবন্ধু কর্তৃক তার নাগরিকত্ব বাতিল অবৈধ ছিল। আর সেই অবৈধতা আদালতে প্রমাণিত হয়েছিল।
ওহ হ্যাঁ, ১৯৯১ সালে শেখ হাসিনা তার দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী বিচারপতি বদরুল হায়দার চৌধুরীকে গোলাম আযমের বাসায় দোয়া ও ভোটের জন্য পাঠিয়েছিল। তখনও কিন্তু গোলাম আযম নাগরিকত্ব ফিরে পাননি।
আরা আমি আবারো বলছি, বিষয় ভিত্তিক কথা বলুন। যখন তাদের নাম বলব তখন তাদের ব্যাপারে বিস্তারিত বলব এবং আপনার অনেক প্রশ্নের জবাব পেয়ে যাবেন।
আইরিন সুলতানা বলেছেনঃ
কোন কথাটা আপনার বিষয়ভুক্ত পুষ্পিতা?
আপনি তো কৌশলে বিভিন্ন প্রশ্ন এড়িয়ে যাচ্ছেন। ২য় পর্ব দেখাচ্ছেন…একবার এই পর্ব সংক্ষেপে আছে তা বলছেন। এখানে কোন প্রসংগই অপ্রাসংঙ্গিক নয়। কারণ এগুলো একটা আরেকটার সাথে জড়িত।
আপনি বস্তুত যুদ্ধাপরাধী বলতে মিলিটারী এবং পরিশেষ পাকিস্তানিদের বুঝিয়ে বর্তমানে রাজাকারদের বিচার প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে কথা বলতে চাচ্ছেন।
একই সাথে আপনার এই বক্তব্যের অর্থ কী?
পুস্পিতা বলেছেনঃ
অবশ্যই, যুদ্ধাপরাধ এক জিনিস, আর কোলাবরেটরদের বিচার আরেক জিনিস। দুইটা সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়। সেটা আমার দ্বিতীয় পোষ্টে দেয়া আছে বিস্তারিত। যুদ্ধাপরাধ ও কোলাবরেটর আইন দুইটা ভিন্ন জিনিস, ভিন্ন মানুষের জন্য। এই বিষয়টি বুঝেছেন কিনা? কারণ ওই দুটি আইন যারা প্রনয়ণ করেছিলেন, তা্রাই দুই ধরনের অপরাধীর জন্য দুই রকম আইন করেছিলেন।
আর বেসামরিক কোন লোককে যে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে কখনোই চিহ্নিত করা হয়নি তাতো আমার এই পোষ্টেই উদাহরণ সহ দেয়া আছে।
আরো বিস্তারিত বলেছি, দ্বিতীয় পোষ্টে। আন্তর্জাতিক এই বিষয়টি জানতেন বলেই বঙ্গবন্ধু সরকার সচেতন ভাবেই দুই রকমের আইন প্রণয়ন করেছিলেন। আমাদের দেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল আইন ১৯৭৩ ও ১৯৭২ সালের দালাল আইনের ব্যাপারে দ্বিতীয় পোষ্টে ইতিহাস সহ বলেছি। সেটা পড়ে কি বুঝেছেন? স্বাধীনতার বিরোধীতা ও যুদ্ধাপরাধ যে এক নয় তা জেনেই তো বঙ্গবন্ধুই দুই রকম আইন করেছিলেন। তা না হলে তো দুই রকম আইন করার কোন প্রয়োজনই ছিলনা। তাই দ্বিতীয় পোষ্টি মন দিয়ে পড়ুন এরপর বলুন।
আইরিন সুলতানা বলেছেনঃ
ওটাতে মায়ের অসুখের ছুঁতো তৈরী করা হয়। এটা সবাই জানে। গোলাম আযম মায়ের অসুখের বাহানায় তিন মাসের ভিসা নিয়ে আসেন এবং ফিরে তো যাননি, বরং রাজনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িত হন।
পুস্পিতা বলেছেনঃ
যদিও আমার এই পোষ্টের বিষয় গোলাম আযম ছিলনা। তারপরও আপনি একই বিষয়ে বারবার বলে যাচ্ছেন। বিষয় ভিত্তিক কথা বলুন। এসব প্রশ্ন যখন তাদের নাম আসবে তখন বলবেন। এই ধরনের ঠুনকো বিষয় নিয়ে আমি এ মূহুর্তে বলতে চাচ্ছিনা। কারণ পরবর্তীতে সবকিছুই আসবে।তাই এত ছোট খাট বিষয় নিয়ে আপাততঃ বলার ইচ্ছে নেই।
আইরিন সুলতানা বলেছেনঃ
আরে বাহ! বলিহারি! বলিহারি! আপনার পোস্ট পড়ে আপনার উদ্দেশ্য বুঝতে বেগ পেতে হয় না। তবে আপনি চতুর বটে। অনেকক্ষণ ধরে পিছলে যাচ্ছিলেন।
আপনার এই মন্তব্য খুব স্পষ্ট করে বলে দেয়, আপনি গোলাম আযম এবং বাকিসব চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষের লোক।
পুস্পিতা বলেছেনঃ
আমার এই পোষ্টে বলেছি যুদ্ধাপরাধের আন্তর্জাতিক সংজ্ঞা নিয়ে। আপনি এ বিষয় সম্পর্কে আরো কোন তথ্য থাকলে বলুন। বিষয় ভিত্তিক কথা বলুন। আমার পোষ্টের উদ্দেশ্য বুঝার জন্যই তো পোষ্ট লিখছি। এখানে তো কোন কিছু লুকিয়ে বলছিনা। তাই এখানে ধরার কিছুই নেই। সবকিছুই পরিস্কার। আর যে বিষয় নিয়ে বলতে চাচ্ছেন তা আরো অনেক পরের বিষয়। এখন পোষ্টের বিষয় নিয়ে কথা বলুন।
আইরিন সুলতানা বলেছেনঃ
আমি বুঝতে পারছি না আপনি এতো অধৈর্য হচ্ছেন কেন? আপনার প্রথম পোস্টের আলোচনাই তো শেষ হলো না….তাছাড়া আমি তো পুরো আপনাকেই পড়ে নিয়েছি এতোক্ষণে 🙂 ….খামোখা দ্বিতীয় পোস্ট পড়ার হ্যাসেল কেন তুলতে যাবো বলুন!
আমার সময় হলে নিশ্চয়ই আমি আপনার দ্বিতীয় পোস্টে ঢুঁ মারবো…নিজ আগ্রহেই। নিশ্চিত থাকুন।
পুস্পিতা বলেছেনঃ
আমার পোষ্টের বিষয় গোলাম আযম নয়। আপনি তো পোষ্টের বিষয় নিয়ে কোন কথা না বলে বারবার গোলাম আযম গোলাম আযম করে যাচ্ছেন। বিষয় ভিত্তিক কথা বলতে না চাইলে পোষ্টের বিষয়ের বাইরে মন্তব্য না করাই উত্তম। গোলাম আযম নিয়ে যখন কথা বলব তখন বলবেন তার ব্যাপারে। তাই পোষ্টে যদি মন্তব্য করতে হয় তাহলে বিষয় নিয়ে করা উচিত। নতুবা শুধু পড়ে যাওয়াই ভাল।
নাহুয়াল মিথ বলেছেনঃ
বহিরস্থ কোন বল প্রয়োগে বস্তুর সরণকে কাজ বলে। সারাদিন ঠেলেও সরণ না হলে তা কাজ নয়।
আর বিচার মানি তাল গাছ বেওয়া খালাম্মার।
জহিরুল ইসলাম তাহা বলেছেনঃ
আমি নতুন এসেছি,প্রথমেই তথ্যবহুল এবং বিশ্লেষনমুলক লেখার জন্য লেখককে ধন্যবাদ,আমি মন্তব্যগুলো পড়লাম,এখানে কিছু জনপ্রিয় ব্লগার/নাম দেখতে পেলাম,আমি আশা করছি সিনিয়র লেখক তথা ব্লগারদের কাছথেকে কিছু নিতে পারবো,শিখতে পারবো….
পুস্পিতা বলেছেনঃ
সবাই যদি বিষয় ভিত্তিক মন্তব্য করে তাহলে ব্লগ থেকেও আমরা অনেক কিছু শিখতে পারি। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় বিষয় ভিত্তিক কথা না বলে ব্যাক্তিগত ভাবে আক্রমণ করে মন্তব্য করা হয়। এক্ষেত্রে সিনিয়র যারা তারা নিজেদেরকে উদাহরণ হিসেবে পেশ করতে পারে। আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।
Rafiq বলেছেনঃ
পুষ্পিতা আপাকে অনেক ধন্যবাদ আপনার তথ্যবহুল লেখার জন্য,
আসলে এর আগে কয়েকটি মন্তব্যে আমি স্পষ্ট এবং দ্যার্থহীন ভাষায় বলেছি এবং এখনো বলছি, বর্তমান সরকার যে যুদ্ধাপরাধীর বিচারের সাজ সরঞ্জাম শুরূ করেছেন, নিঃসন্দেহে তা প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য।
আওয়ামীলীগ পূরনো রাজনৈতিক দলগুলোর একটি আর এ কারনেই এ দলটিতে তুলনামূলক ভাবে দূর্নীতি বেশী।
পক্ষান্তরে জামায়াতী ইসলামীও পূরনো রাজনৈতিক দলগুলোর একটি এবং মুক্তিযূদ্ধের সময় স্বাধীনতার বিরোধিতা করার ফলে দেশের অধিকাংশ মানুষ তাদেরকে পছন্দ করেননা এমনকি ব্যাক্তিগত ভাবে আমিওনা।
কিন্তু বাস্তবতা হলো ১৯৯০ সালের আগ পর্যন্তও আমাদের দেশের মানুষকে যেভাবে বুঝানো এখন তা করা যায়না। এর কারণ হচ্ছে এদেশের মানুষ এখন অনেক শিক্ষিত ও সচেতন। বিশেষ করে দূর্নীতির ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন। যার ফল গত নির্বাচনে বিএনপিকে দেশের মানুষের প্রত্যাখ্যান । ( যদিও নির্বাচন নিয়ে সচেতন মহলের মাঝে যথেষ্ট সন্দেহ আছে, )।
যেখানে আওয়ামীলীগ ও বিএনপির অধিকাংশ উপরের সারির নেতাসহ দূর্নীতি গ্রস্থ পক্ষান্তরে জামায়াতী ইসলাম ও এর অংগ সংগঠনগুলির অধিকাংশ নেতা কর্মীরা অধিকতর মেধাবী, সৎ, যোগ্য, ও দূর্নীতি মুক্ত।যার ফলে সুশীল সমাজ তথা সত্যিকারার্থে যারা দূর্নীতির বিরূদ্ধে কথা বলে তারা প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে আওয়ামীলীগ তথা দূর্নীতিমনাদের বিরোধী। আর সমমনা হিসাবে জামায়াত বরাবরি বিএনপির নিকটতম বন্ধু। আর জামায়াতের অংগ সংগঠন “শিবির” যেভাবে তাদের মেধা, সততা, শ্রম দ্বারা সামনে এগোচ্ছে ( যা ছাএলীগের কর্মীরা করেনা , কারন বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই তারা নিজেদের আখের অথবা কুকর্মে ব্যস্ত থাকে ) যা আওয়ামীলীগের ক্ষমতায় যাওয়ার অন্তরায়।
যার ফলেই “যুদ্ধাপরাধী আইন” অথবা “মানবতাবিরোধী আইন” অথবা “বিশেষ আইন” অথবা “মনগড়া আইন” যেকোন আইনেই হোকনা কেন “যুদ্ধাপরাধীদের” নয় “জামায়াতীদের” বিচার করতেই হবে আর এটাই হচ্ছে আওয়ামীলীগের Main Mission Right Now.
পুস্পিতা বলেছেনঃ
পড়া ও মন্তব্য করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
shah abdul hannan বলেছেনঃ
Pushpita, I thank you for your fight for truth and justice and against false propaganda by India inspired think tanks , media people and politicians.
Do not get disturbed by bad comments of those who have been misled by propaganda.
The fact is that in 1971 two camps were fighting against each other, both sides committed crimes, not one side.
If trial has to take place it should be of all who killed people without trial , Bengalee freedom fighters or Rajakars or Biharees
Rigan বলেছেনঃ
Pushpita,
Bichar je koono shomoy hote pare.304/40 bochor por bichar seta kono mukhho bishoy na jehetu er bichar ba poripurno shomadhan age hoy nai.Ekhane kara convicted setai boro bishoy.Kon deshe shamorik lokder convicted kora hoyeche seta boro bishoy na borong amader deshe ki hoboro bishoy.Oporadh jara koreche tara oporadhi.Be-shamorik lok oporadh korte pare na emonta logical na.1971 a shamorik be-shamorik onek manush ei oporadh kormokander sathe jorito chilo tate kono sondeho nai.Oporadhi shamorik be-shamorik jei hok tader saja houa uchit.Already amra deri kore felechi.
সোনার ছেলে বলেছেনঃ
অনেক সুন্দর হইছে।
ssss বলেছেনঃ
এখানে একটি বিষয় লক্ষনীয় যাদেরকে এপর্যন্ত যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত এবং শাস্তিপ্রদান করা হয়েছে তাদের মধ্যে কেউই বেসামরিক লোক নন। অর্থাৎ এ পর্যন্ত যাদেরকে অভিযুক্ত করা হয়েছে তারা সবাই সামরিক লোক এবং যুদ্ধ পরিচালনাকারী কর্তৃপক্ষের উচ্চ পর্যায়ের লোক। যুদ্ধাপরাধের বিচারের সূচনা থেকে শুরু করে দুনিয়ার কোনও দেশে সংজ্ঞায়িত যুদ্ধরত পক্ষসমূহের অন্তর্ভুক্ত নয় এমন বেসামরিক কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে, এমন নজির নেই।
ssss বলেছেনঃ
এখানে একটি বিষয় লক্ষনীয় যাদেরকে এপর্যন্ত যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত এবং শাস্তিপ্রদান করা হয়েছে তাদের মধ্যে কেউই বেসামরিক লোক নন। অর্থাৎ এ পর্যন্ত যাদেরকে অভিযুক্ত করা হয়েছে তারা সবাই সামরিক লোক এবং যুদ্ধ পরিচালনাকারী কর্তৃপক্ষের উচ্চ পর্যায়ের লোক। যুদ্ধাপরাধের বিচারের সূচনা থেকে শুরু করে দুনিয়ার কোনও দেশে সংজ্ঞায়িত যুদ্ধরত পক্ষসমূহের অন্তর্ভুক্ত নয় এমন বেসামরিক কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে, এমন নজির নেই।
কিন্তু আইনে তো এমনটি বলা হয়নি যে এই আইন শুধুমাত্র সামরিক লোকদের জন্য!!!!! তার মানে এই আইনের অপরাধের মধ্যে পড়ে এমন সবাইকেই এই আইনে বিচার করা সম্ভব তা সে বেসামরিক লোক হলেও। অর্থাৎ আপনি যে বারবার আইনে নেই, সংজ্ঞায় নেই বলে উল্লেখ করছেন তা ভিত্তিহীন। আপনার সবগুলো পোষ্ট দেখেই মন্তব্য করলাম তাই অন্য পোষ্ট দেখার কথা বলে এড়িয়ে যাবেন না। you are fruad