আসলেই ওদের গলায় ঘন্টা পড়াবে কে? কার এত্ত বড় সাহস! বৈধ সার্টিফিকেট নিয়ে মাঠে নেমেছে। এমনিতেই ভেজাল ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে খুব বেশি কিছু করা যাচ্ছে না, তার উপর ওনাদেরকে সরকার দলীয় এবং আমলা শাসিত ডিসিসি'র পক্ষ থেকে আম বিক্রির জন্য ঢাকার বিভিন্ন স্থান ভাড়া দেওয়া হয়েছে। আর কি কারো কোন অজোড়-আপত্তি থাকার কথা……………….!!!
ডিসিসির উল্লেখিত অনুমোদনের পর, অন্য ব্যবসায়ীরা বলছেন অনেকেই তো অনুমতি নিয়ে আম বিক্রি করছে তাদের গুলো কি ধরণের ভালো? তারা কি হলফ করে বলতে পারবে যে,তাদের গুলো কেমিক্যাল মুক্ত? তাহলে আমরাও বলছিনা আমাদেরটা কেমিক্যাল মুক্ত। তবে আমরা হাতে পাওয়ার পর আর নতুন ভাবে মিশ্রিত করিনি …..!!
ফলের রাজা আম। স্বাস্থ্যের জন্য বিশেষ উপকারী ও সু-স্বাদু। সেই আম এখন যেন এক ভয়াবহ আত্মঘাতী ও হুমকি হয়ে দাড়িয়েছে। পোকা-মাকড় পর্যন্ত এর আশেপাশে যেতে ভয় পাচ্ছে। এবারের আম বাজারে পোকা-মাকড় বা মাছির ভোঁ-ভোঁ গান গাওয়া শোনা যাচ্ছে না। কারণ কি ? কারণ, একটাই উচ্চ মাত্রার কেমিক্যালের স্প্রে-মিশ্রণ।
মানুষ তো নয়, দানব নামের অসাধু ব্যবসায়ী ও উৎপাদনকারীরা কেমিক্যাল হাতে নিয়ে ফলের ভরা মৌসুমে যেন কোমর বেধেঁ নেমেছে। বর্তমানে যে সব আম বাজারে বিক্রি হচ্ছে তার ৯৫ ভাগই কেমিক্যাল যুক্ত এবং স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। মধু চললেও কেমিক্যাল মুক্ত ফল-ফলাদি পাওয়া দুঃষ্কর ব্যাপার। সরকারের বিভিন্ন সংস্থা একদিকে যেমন ভেজাল বিরোধী অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে অন্যদিকে তেমন পাল্লা দিয়ে চলছে উচ্চ মাত্রার কেমিক্যাল মেশানোর প্রতিযোগিতা। আমের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সাত পরস্ত কেমিক্যাল দেওয়ার প্রবণতা শুরু হয়েছে।
মুকুল কে রক্ষা করার জন্য প্রথমবার।
মুকুল থেকে আঙ্গুরের মতো বের হওয়ার সময় দ্বিতীয় বার।
আম পরিপূর্ণ হওয়ার আগে তৃতীয় বার।
গাছ থেকে নামানোর আগে চতুর্থ বার।
গাছ থেকে নামানোর পরে পঞ্চম বার।
বাজারে নেওয়ার সময় ছষ্ঠ বার।
বাজারে বিক্রির পর ট্রাকে লোড দেওয়ার পর সপ্তম বার।
আজ থেকে দশ বছর আগেও কোন কেমিক্যাল দেওয়া হতো না কিন্তু এবছর অসাধু ব্যবসায়ীরা 'দশে মিল করি কাজ হারি-জিতি নাহি লাজ' এমন ভাবে জোট বেধেঁ উচ্চমাত্রার কেমিক্যাল মিশ্রত করছে।এক্ষেত্রে ছোট-বড় জেল জরিমনা-শাস্তির পর জরিমানার টাকা তা 'ওসুল' করার জন্য মাত্রা আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে। এভাবেই তারা না কি এন্যালগ সিস্টেম কে ডিজিটালে রূপান্তর করেছে।
দলে দলে যোগ দিচ্ছে, আমরাও বদলে যাচ্ছি। বদলে যাচ্ছে আমাদের ডাইজেস্টিব সিস্টেমসহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ তখনই শুরু রোগবালাইয়ের ।আম পাকাতে, সুন্দর রাখতে ও পচনরোধ করতে বিষাক্ত কেমিক্যাল মেশানো হচ্ছে। বৃহত্তর রাজশাহীর খাঁটি আম বলে বিক্রি করা হচ্ছে তার নিরানব্বই ভাগই উচ্চ মাত্রার কেমিক্যাল যুক্ত। আম একটি পচনশীল ফল তাই ৬/৭ মাস তার সৌন্দয্য ও যৌবন ধরে রাখতেই এমন অপকর্ম করা হচ্ছে।
আম, দিনাজপুরের লিচু, পেঁপে, কলার খাওয়ার পরক্ষণেই পেটে একটা কামড়। তারপর অধোরার মতো শুরু হলো …………থামে না!!!
আসুন আমরা শপথ করি যতদিন বিষমুক্ত ফল না পাবো ততদিন কেনা ও খাওয়া থেকে বিরত থাকবো। আর সরকারকে এসব ক্ষতি কারক কেমিক্যালের যথেচ্ছা ব্যবহারের প্রতি কঠোর হওয়া এবং জনসচেতনতা গড়ে তোলার ব্যবস্থা করার আহবান জানাচ্ছি।।