আইনের শাসনে সবার জন্য ন্যায়বিচার

এম এম খালেকুজ্জামানএম এম খালেকুজ্জামান
Published : 14 May 2011, 05:57 PM
Updated : 4 May 2014, 12:15 PM

ওয়াশিংটনভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা দ্য ওয়ার্ল্ড জাস্টিস প্রজেক্টের চতুর্থ প্রতিবেদনে বলা হয় দেওয়ানি বিচার ব্যবস্থায় কিছুটা অগ্রগতি হলেও আইনের শাসনের অন্যান্য সূচকে বাংলাদেশ পিছিয়ে গেছে। নিউইয়র্কের সিটি ইউনিভার্সিটি অব নিউইয়র্ক গ্রাজুয়েট সেন্টারে সপ্তাহ কয়েক আগে প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়, দেওয়ানি বিচার ব্যবস্থার সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান নিরানব্বই দেশের মধ্যে বিরানব্বইতম, যা দুই বছর আগে ছিল একেবারে তলানিতে।

প্রতিবেদন থেকে আরও জানা যায়, দেওয়ানি আদালতের বিচারপ্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে নরওয়ে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র উনিশতম, যুক্তরাজ্য এগারোতম, নেদারল্যান্ডস দ্বিতীয়, জার্মানি তৃতীয় এবং সিঙ্গাপুর রয়েছে চতুর্থ নম্বরে।

মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং পুলিশের নির্যাতনকে বাংলাদেশে একটি প্রধান সমস্যা হিসেবে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে নাগরিকের নিরাপত্তা এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় বাংলাদেশ আগের বছরের চেয়ে ভালো করেছে। আইন-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য উন্নতির কারণ হিসেবে অপরাধের হার কমার কথা বলা হয়েছে। তবে ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বে সহিংসতার ঘটনাকে উদ্বেগজনক হিসেবে দেখছে সংস্থাটি।

জরিপ পরিচালনায় সহায়তাকারী বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের বিল গেটস তাঁর শুভেচ্ছা বক্তব্যে বলেন, "আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় উন্নতি সাধন করতে চাইলে, বিষয়টি কোন পর্যায়ে রয়েছে তা পরিমাপ করতে হবে। ওয়ার্ল্ড জাস্টিস এ কাজটি করছে। এর মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী সুধীজনে কথাবার্তা হবে এবং এর ফলে সংশ্লিষ্টরা সজাগ হবেন। আর এভাবেই বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তের জনজীবনে উন্নয়ন ঘটবে বলে আশা করছি।"

এই আশার সলতে আলো ছড়াতে পারে আইনের শাসন দিয়ে। আইন স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করার ক্ষমতা রাখে না। আইন ব্যবহৃত হয় এর প্রণেতা ও রক্ষাকর্তাদের সচেতন ইচ্ছা-অনিচ্ছার দ্বারা। আইফোন-স্যামসাং-এর পেটেন্ট অধিকার নিয়ে বিরোধ থেকে শুরু করে বাংলাদেশ-ভারত সমুদ্রসীমানা সংক্রান্ত বিরোধ, উইকিলিকসের জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের যুক্তরাজ্য থেকে সুইডেন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রত্যার্পণ– সব পক্ষই আইনের সহায়তা নিয়ে একটি জিনিসই প্রত্যাশা করে– ন্যায়বিচার।

একালের তাত্ত্বিকগণ মনে করেন, আইন শুধুমাত্র মানবাধিকার ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার কাজেই ব্যবহার করা উচিত। আইন নাগরিকদের মধ্যে কোনো বৈষম্য করে না, আইনের চোখে সবাই সমান। সমাজ-রাষ্ট্রের সুব্যবস্থাপনা ও শান্তি-শৃঙ্খলার প্রয়োজনে নাগরিকদের আইন মেনে চলতে হয়। আইনানুগ ব্যবস্থাপনা সাধারণ্যে এমন ধারণার জন্ম দেয়, যে আইনের শাসন হচ্ছে সমাজ তথা রাষ্ট্রে সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধির উৎস। উল্টোদিকে, এর অভাব হচ্ছে সব সংকটের মূল।

আইনের শাসন, এই ধারণার পেছনে যে অনুকল্পটি কাজ করে, তা হচ্ছে– আইন সর্বদা ন্যায়ানুগ এবং তার প্রয়োগপদ্ধতি কার্যকর, স্বচ্ছ, সমতাভিত্তিক এবং জনকল্যাণে নিবেদিত। কোনো কায়েমী উদ্দেশ্য সাধনের জন্য আইন প্রণীত হয়নি। রাষ্ট্রের নাগরিকের যাবতীয় অধিকারের সুরক্ষণ নিশ্চিত করাই আইনের মূল উদ্দেশ্য। আইন মেনে চলা সুনাগরিকের কর্তব্য।

অন্যদিকে আইন অমান্য করা একটি অপরাধ, যা সর্বতোভাবে নিন্দনীয় ও বর্জনীয়। সেদিক থেকে আইন মান্যকারী,আইনের প্রতি অনুগত নাগরিক দেশের সম্পদ; আইন ভঙ্গকারী এর দায়। আইনের শাসনের প্রতি নিরন্তর সমর্থন জানানো নাগরিকের জন্য অপরিহার্য রাষ্ট্রীয় ও নাগরিক কর্তব্য।

মানুষের অধিকারের স্বীকৃতি থাকতে হবে আইনে এবং সংবিধানে। সঙ্গে সঙ্গে এগুলো বলবত করারও আয়োজনও থাকা আবশ্যক। এ জন্য প্রয়োজন নিরপেক্ষ বিচারিক প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে আইনের যথার্থ প্রয়োগ নিশ্চিত করা যায়। আর বিচারিক আদালতের মাধ্যমে আইনের আশ্রয় নেওয়ার অধিকার ও ন্যায়বিচার পাওয়ার সুযোগ নিশ্চিত হওয়া আইনের শাসনের অপরিহার্য অঙ্গ।

আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য রাষ্ট্রের একটি আইনি কাঠামো থাকতে হবে। কাঠামোটি হতে হবে জনবান্ধব ও গণমুখী। তবে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার অন্যতম শর্ত আইনের নিরপেক্ষ ও নির্মোহ প্রয়োগ। আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণ আইনের শাসনের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ। যেমন, গত সরকারের আমলে রাজনৈতিক হয়রানির মামলার নামে শুধু দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা হাজার হাজার মামলা প্রত্যাহার করা হয়; অন্যদিকে বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মাত্র দুটি মামলা প্রত্যাহার করা হয়।

'কালচার অব ইমপিউনিটি' বা অন্যায় করে পার পেয়ে যাওয়ার সংস্কৃতি, সেই সঙ্গে আমাদের সমাজে সাধারণত বিরোধী দলের দমন আর সরকারি দলের পালন দেখেই আমরা অভ্যস্ত। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বাংলাদেশে একটি বড় বাধা হল আইন প্রণয়নকারীদের আইন অমান্য করার প্রবণতা।

'কুদরত-ই-ইলাহী পনির বনাম বাংলাদেশ' [৪৪ ডিএলআর (এডি)(১৯৯২)] এবং 'আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বনাম বাংলাদেশ' [১৬বিএলটি(এইচডি)(২০০৮)] মামলার রায় উপেক্ষা করে স্থানীয় সরকারে অযাচিতভাবে হস্তক্ষেপ করেন প্রায়ই। এছাড়া মিথ্যা হলফনামা দিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ, এ রকম নানা ধরনের আইন ভঙ্গকারী কাজে ব্যস্ত।

এমনকি বিশেষ মহলের ইচ্ছায় রাষ্ট্রপতির পদটিও বিতর্কিত করে ফেলা হয়েছে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান বলে– 'রাষ্ট্রপ্রধানরূপে রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের অন্য সব ব্যক্তির ঊর্ধ্বে স্থান লাভ করিবেন'। রাষ্ট্রে যত পদ আছে তার মধ্যে রাষ্ট্রপতির মর্যাদা সর্বোচ্চ। আমাদের সংবিধান তার ৪৯ অনুচ্ছেদে বলছে– 'কোনো আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষ প্রদত্ত যে কোনো দণ্ডের মার্জনা বিলম্বন ও বিরাম মঞ্জুর করিবার এবং যে কোনো দণ্ড মওকুফ, স্থগিত বা হ্রাস করিবার ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির থাকিবে।' এই ক্ষমতা রাষ্ট্রপতিকে দেওয়া হয়েছে রাষ্ট্রপতি প্রতিষ্ঠানটির মর্যাদা ও উচ্চতা বাড়াতে, ক্ষমতার ঘন ঘন অপপ্রয়োগ করতে নয়।

আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার আরেকটি উপাদান হল আইনের আশ্রয় নেওয়ার ও ন্যায়বিচার পাওয়ার পথ সুগম করা। আমাদের দেশে নিম্নবিত্ত মানুষ ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত। এর একটি বড় কারণ হল বিচারালয়ে দুর্নীতি, বিচারিক কাজের দীর্ঘসূত্রতা ও এর প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা।। উঁচুতলার বিত্তবানেরা বিভিন্ন ধরনের কারসাজির আশ্রয় নিয়ে বিত্তহীন মানুষদের ন্যায়বিচার প্রাপ্তির সুযোগ থেকে বঞ্চিত করেন। যা আইনের শাসন নয়, অপশাসন প্রতিষ্ঠিত করে।

সব বিপ্লব কিংবা স্বাধীনতা সংগ্রাম কোনো না কোনো দুঃশাসন কিংবা অন্যায্যতার বিপক্ষে সুশাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার মতাদর্শিক দ্বন্দ্ব। যা চূড়ান্ত পর্যায়ে অনেক সময় সশস্ত্রতায় রূপ লাভ করে, জগদ্দল স্থিতিস্থাপকতা হটিয়ে ন্যায় প্রতিষ্ঠার প্রয়াস পায়। এইসব বিপ্লব কিংবা স্বাধীনতা যুদ্ধগুলো যেহেতু কোনো 'আদর্শ' প্রতিষ্ঠার জন্যই সংগঠিত হয়, তাই তখনকার মানুষের প্রত্যাশাও থাকে কিছুটা 'ইউটোপিয়ান', না হলে আকাশস্পর্শী। দুঃশাসনের শৃঙ্খলমুক্ত হওয়ার পর পর নিকটবর্তী আদর্শ হয়ে ওঠে আমূল পরিবর্তনবাদ বা র‌্যাডিকালিজম যাতে প্রাগম্যাটিজম (প্রয়োগবাদ) অনুপস্থিত থাকে।

১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পর আমরাও এই বাংলায় কতক পরিবর্তনকামী আদর্শের পারস্পরিক প্রতিযোগিতা লক্ষ্য করি। নিজেরাই নিজেদের ভাগ্যনিয়ন্তা হয়ে ওঠার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে ১৯৭২ সালে যে সংবিধান আমরা প্রণয়ন করলাম তা আদতেই আদর্শস্থানীয় ছিল। মানবাধিকার মান্যতার মানদণ্ডে অতুলনীয়। আদর্শ মানবাধিকার বোধে চালিত হয়ে এতে রাখা হয়নি নিবর্তনমূলক আটকাদেশ এবং জরুরি অবস্থা ঘোষণার মতো স্বৈর স্বভাবের প্রত্যয়গুলো।

কিন্তু সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্তির ঘোর কাটতে না কাটতেই আদর্শের জায়গা দখল করে ব্যক্তিগত লাভালাভের স্থুল প্রতিযোগিতা। নদী যেমন তার স্বাভাবিক চলার ছন্দে প্রাকৃতিক অথবা কৃত্রিম বাধার মুখে তার স্বাভাবিক গতিপথ পরিবর্তন করে, সংবিধানও তার স্বাভাবিকতা ছেড়ে সংশোধনের ঘেরাটোপে পড়ে জরুরি অবস্থার প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করে তার বিধানও অন্তর্ভূক্ত করতে সময় নেয়নি খুব বেশি।

কোট অব আর্মস-এ জগদ্বিখ্যাত আইনজ্ঞ লর্ড ডেনিং Fiat Justitia ruat coelum অর্থাৎ 'আইনকে তার নিজস্ব পথে চলতে দাও' এই নীতিবাক্য লিখে যান বহু বছর আগে, যা এখনও আইন অঙ্গনের ব্যবহারশাস্ত্রবিদদের প্রায় প্রাতঃস্মরণীয় প্রত্যয়। তবে মিস্টার ডেনিং নিজে এর অনেক পরে সেনেকার 'ডায়ালগ' থেকে সুলুক সন্ধানে গিয়ে অবাক হন যে, এই কথিত নীতিবাক্যটি এক নির্মম বিনাশী অন্যায় তথা অবিচার প্রতিষ্ঠা করতে এই ধরনের ছদ্ম আদর্শের আবডাল!

সেনেকার ডায়ালগের উল্লেখ থেকে জানা যায়, তৎকালীন এক বিচারক যার নাম পিসো, তিনি এক সৈনিকের মৃত্যদণ্ডের আদেশ দেন। অভিযোগ গেইয়াস নামে একজনকে হত্যা। এই কথিত মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর করতে বিচারক পিসো হুকুমপালনকারী একজন সেন্টুরিয়ানকে হুকুম দেন। কিন্তু যখন সেন্টুরিয়ন হুকুম তামিল করতে যান, তখনই কথিত হত্যাকাণ্ডের শিকার গেইয়াস হঠাৎ উপস্থিত হয়।

এ খবর পিসোকে জানানো হলে তিনি তিনজনেরই মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন। সৈনিকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হল, কারণ সে আগেই দণ্ডিত! সেন্টুরিয়নের মৃত্যুদণ্ডের কারণ সে বিচারকের দণ্ডাজ্ঞা পালনে ব্যর্থ হয়েছে! আর গেইয়াসকে মরতে হয়, কারণ তার জন্য পূর্বোক্ত নিরপরাধ দুজন লোকের মৃত্যু ঘটে!

পিসো এই পৌনঃপুনিক মৃত্যুদণ্ডাদেশের কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন Fiat Justitia ruat coelum বা 'আইনকে তার পথে চলতে দাও, এতে স্বর্গের পতন হলে হোক' এই আপ্তবাক্যকে।

[দ্য ফ্যামিলি স্টোরি (১৯৪) পৃষ্ঠা- ১৭২]

উল্লিখিত বিচারকের পথনির্দেশ মেনে একালের বিচারকেরা যদি আইনকে 'তার পথে চলতে দেওয়ার নীতি গ্রহণ করে' বিচারকাজ প্রতিপালন করেন, তাতে আইন প্রতিষ্ঠা হয়তো পাবে, কিন্তু ন্যায়বিচার কি প্রতিষ্ঠা পাবে?

আর্য-অনার্য, রাজা-রাজা, কিংবা রাজা ও প্রজার দ্বন্দ্ব একটি সর্বকালীন বিরোধের বিষয় হিসেবে আমরা জানি। এইসব দ্বন্দ্ব-সংঘাতের মাঝখানে দাঁড়িয়ে আইনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত ন্যায়বিচার চেতনা একটি সমন্বয় সাধনকারী শক্তি হিসেবে ভূমিকা পালন করে। তবে আইনকে ন্যায়বিচার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে গেলে কেবল বিচার বিভাগই নয়, রাষ্ট্রের অন্য দুটো অত্যাবশ্যক অঙ্গ, আইন ও নির্বাহী বিভাগের যুগল সহায়তা না থাকলে চলবে না। কারণ রাষ্ট্রযন্ত্রের বিচার বিভাগ হচ্ছে নূন্যতম শক্তিধারণকারী অঙ্গ।

ওয়ারেন বার্জার গত শতকের আশির দশকে আমেরিকার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি থাকাকালে ন্যায়সাধনের পদ্ধতির কথা বলতে গিয়ে বলেন, সম্ভাব্য ন্যূনতম ব্যয়ে, সম্ভাব্য ন্যূনতম সময়ে এবং বিবদমান পক্ষগুলোর ওপর ন্যূনতম চাপ প্রয়োগ করে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করাই হবে বিচার বিভাগের কাজ।

এর আগে ১২১৫ সালের ম্যাগনাকার্টায় উল্লেখ আছে, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার সবচেয়ে বড় প্রণোদনা To no one shall we sell justice, to no one shall we deny or delay it, অর্থাৎ বিচার কারও কাছে বিক্রির জন্য যেমন নয়, তেমন বিচার বিলম্বিত করা যাবে না অথবা বিচার থেকে কাউকে বঞ্চিত করা যাবে না।

এখানে লক্ষণীয়, বাংলাদেশের মতো ক্ষুদ্র একটি দেশে প্রায়ই অর্থ ও বিত্তশালীদের পক্ষে বিচারের রায় যাওয়ার অভিযোগ ওঠে। বিচারবঞ্চিত হয়ে অনেকেই প্রশ্ন তোলেন রায় কেনাবেচার। 'বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদে' এমন বাণী বহুকাল ধরেই জনশ্রুতির মতো চলে আসছে।

তখন চোখবাঁধা প্রতীকটি বুঝি সাধারণ অনেক মানুষের কাছে নেহায়েত একটি প্রতীক বলেই প্রতীয়মান হয়!

এম এম খালেকুজ্জামান: আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট