যানজট নিরসনের অভিনব প্রক্রিয়া

শামিম
Published : 26 July 2011, 02:23 AM
Updated : 26 July 2011, 02:23 AM

মানুষ বেঁচে থাকার জন্য বিভিন্ন জায়গায় পাড়ি জমায়। দেশ বিদেশ যেখানে যাওয়ার প্রয়োজন অনুভব করে সেখানেই চলে যায় মানুষ। তেমনি ভাবেই জীবনের মহান তাগিদে দেশের মানুষ আজ ঢাকামুখী। এমন কোন জেলা নেই যেই জেলার মানুষ প্রতিনিয়ত ঢাকায় আসছে না। তাছাড়া ঢাকাকে সকল ব্যাবসা-বাণিজ্য ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কেন্দ্র করা হয়েছে। আর তাই মানুষ ঢাকামুখি না হয়ে পারছে না।

প্রতিনিয়ত ঢাকায় মানুষ প্রবেশের সাথে সাথে ঢাকায় প্রবেশ করছে যানবাহন। আর তাই সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। তবে ঢাকায় যানজটের সবচেয়ে বড় অন্তরায় হল প্রাইভেট কার।এ প্রাইভেট কার এত পরিমাণে বৃদ্ধি পাচ্ছে যে বলার অবকাশ রাখে না। সাধারণ মানুষ এখন যান্ত্রিক হয়ে গেছে।অফিসের সময় যদি নয় ঘন্টা হয় যানজটের কারনে চাকুরিজীবীদের সেখানে লেগে যায় আরও চার থেকে পাঁচ ঘন্টা বেশি। শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় সঠিক সময়ে পৌঁছতে পারেনা, রোগী পৌঁছাতে পারেনা হাসপাতালে, চাকুরিজীবীরা পৌঁছতে পারেনা অফিসে।এর নাম ঢাকা শহর। মানুষের জীবন আজ দুর্বিসহ হয়ে পড়ছে। কিন্তু দঃখের বিষয় সরকার এ বিষয়ে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না।

সরকার যেহেতু কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না, তাই এ যানজট সমাধানের কিছু উপায় বের হতে পারে। যা হয়ত কারও নিকট হাস্যকর হতে পারে।

ঢাকা শহরে যতগুলো প্রাইভেট কার আছে প্রত্যেকটি কার শুধু সপ্তাহে নির্দিষ্ট দিনে বের হতে পারবে। হতে পারে প্রত্যেক গাড়ির নম্বরের শেষের ডিজিট যেগুলোর জোড় (0,2,4,6,8) সেগুলো বের হবে সপ্তাহের নির্দিষ্ট তিনদিন। আর শেষের ডিজিট যেগুলোর বিজোড় (1,3,5,7,9) সেগুলো বের হবে সপ্তাহের বাকি তিনদিন। নিয়মটা সরকার চালু করতে পারে নির্দিষ্ট কিছু দিনের জন্য। ব্যাপারটা হয়ত হাস্যকর। কিন্তু একটি বইয়ে দেখেছিলাম আমেরিকার কোন এক রাষ্ট্রে সীমিত সময়ের জন্য এটা চালু করা হয়েছিল। এক্ষেত্রে কিছু সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। যেমন যেসব ব্যক্তিরা প্রতিদিন অফিসে যান নিজস্ব গাড়িতে, তারা হয়ত গাড়ি নিয়ে বের হতে পারবেন না। সেই দিন তো তাদের অফিসে যেতেই হবে। তারা হয়ত অনেকেই ঢাকা শহরের বাসগুলো যাতায়াতের জন্য ব্যবহার করতে পারবেন না। এজন্য তাদের জন্য সরকার উন্নত মানের বাস সার্ভিস চালু করতে পারে, যেগুলো শুধু তারাই ব্যবহার করতে পারবে। আমার মনে হয় এটা করা হলে যানজট একেবারে কমে যাবে।

তাছাড়া সরকার প্রত্যেকটি বড় রাস্তার মোড়ে মিনি ফ্লাইওভার তৈরী করতে পারে যা শুধু গাড়ি পারাপারের জন্য ব্যবহার হবে। এটাও মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে চালু আছে।
সবকিছুর মধ্যেও সবচেয়ে বড় কথা হল সচেতন হতে হবে আমাকে, আপনাকে। আর সরকার বিভিন্ন অকাজে ব্যবহৃত অর্থের কিছু অংশ যদি ঢাকা শহরের যানজট নিরসনে ব্যয় করত তবে ঢাকা শহরের মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতো। সর্বোপরি যানজট নিবারন হওয়ার কামনা করি।