আমার নদী বুড়িগঙ্গা আজ মৃত্যুপথের যাত্রী

মুহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন
Published : 22 Sept 2014, 08:31 AM
Updated : 22 Sept 2014, 08:31 AM

মানুষের অত্যাচারে আজ জীবনের শেষ সময় এসে দাঁড়িয়ে আছে আমার প্রিয় নদী বুড়িগঙ্গা । তবুও কমছে না মানুষের অত্যাচার । একটু একটু করে প্রতিদিন মরে যাচ্ছে নদীটি। কিছু লোভী মানুষের লালসার কাছে অসহায় আমার এ নদী।

ট্যানারি শিল্পের নামে গড়ে উঠা ট্যানারিগুলো এই নদীটির মৃত্যুর মূল কারণ। সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে সরকারের উদাসীনতা। কোনো সরকারই কোনো ব্যবস্থা নেয় না। শুধু টেবিল আর কাগজ-কলমে হুমকি-ধমকি।  ট্যানারিগুলো সরিয়ে নেওয়া কথা থাকলেও ট্যানারি মালিকেরা তা পাত্তা দিচ্ছে না।

এছাড়া আছে নদী দখল আর বালি উত্তোলনকারীদের অত্যাচার । এতো অত্যাচারে কি নদী বাঁচে?  আমরা দেখছি-বুঝছি কিন্তু কিছু করতে পারছি না।

বিভিন্ন জরিপে দেখা গেছে, বুড়িগঙ্গা দূষণের ৬০ শতাংশ হচ্ছে শিল্পবর্জ্য থেকে। ৩০ শতাংশ হচ্ছে ওয়াসা ও সিটি করপোরেশনসহ সরকারি প্রতিষ্ঠানের ডাম্পিং থেকে। আর মাত্র ১০ শতাংশ দায়ী হচ্ছে জনসাধারণ। অর্থাৎ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সরকারই ৯০ শতাংশ দূষণের জন্য দায়ী। এবং এই দূষণ পুরোপুরিই হচ্ছে রাসায়নিক দূষণ।

আর দখলের সঙ্গে জড়িতরা কার ভাই, কার ভাগনে, কার আত্মীয় তার তালিকা বাপা'র কাছে আছে। সরকার চাইলে সে তালিকা একদিনে তৈরি করা সম্ভব। একমাত্র সরকারই পারে এই দখল ও দূষণ থেকে বুড়িগঙ্গাকে উদ্ধার করতে ।

কিন্তু সরকার নিজেই দ্বিমুখী নীতি গ্রহণ করছে। একদিকে নদী দখলমুক্ত করার কথা বলছেন, অন্যদিকে দখল করা জমির উপর নির্মিত প্রতিষ্ঠান উদ্বোধন করা হচ্ছে। এ বিষয়ে টাস্কফোর্স করা হলেও কিন্তু ওই টাস্কফোর্সের পরামর্শ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না। আসলে স্থানীয় প্রশাসন নদী দখলমুক্ত করার বিষয়ে আন্তরিক নয়। তারা টাস্কফোর্সের পরামর্শ শুনছে না। টাস্কফোর্স শুধু টেবিলে আছে, মাঠে নেই। টাস্কফোর্সের কোনো সিদ্ধান্তই নদী উদ্ধারে কাজে আসছে না।