রাজধানী ঢাকাতে গুম রহস্য

মুহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন
Published : 11 Dec 2011, 05:54 AM
Updated : 11 Dec 2011, 05:54 AM

৮ ডিসেম্বর মুন্সীগঞ্জের ধলেশ্বরী নদী থেকে পুলিশ দুটি গলিত লাশ উদ্ধার করে। এর একটি লাশ ইসমাইল হোসেনের বলে তাঁর স্বজনেরা বাসায় নিয়ে যান। অন্য লাশটি এখনও শনাক্ত করা যায়নি। এছাড়াও ২ ডিসেম্বর সাভারে মহাসড়কের পাশ থেকে পৃথকভাবে দুটি গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তাঁদের একজন রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক মাহামুদুল হক খান। আরেকজনের পরিচয় মেলেনি। এছাড়াও রাজধানীর পুরানা পল্টন লাইনে বাসার নিচ থেকে ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক নেতা কে এম শামীম আকতারকে গত ২৯ সেপ্টেম্বর সকালে মুখে স্কচটেপ মেরে মাইক্রোবাসে ধরে নিয়ে যায় অজ্ঞাত পরিচয়ের কিছু ব্যক্তি । এরপর তিনি আর ফিরে আসেননি ।

আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নাকের ডগায় একের পর এক মানুষকে তুলে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে হয় লাশ ফেলে রাখা হচ্ছে অথবা চিরতরে গুম করে ফেলা হচ্ছে । এমনটা হয়েছিল -১৯৭১রে পাকহানাদার বাহিনী রাজাকার আল সামসদের সঙ্গে মিলে এদেশকে মেধা শুণ্য করতে বুদ্ধিজীবি থেকে শুরু করে যাকে ইচ্ছে তাকে তুলে নিয়ে হত্যা করে লাশ ফেলে রাখত । একবার ধরে নিয়ে যাওয়া খুব কম ব্যক্তিই ফিরে আসতে পেরেছিলেন ।

কিন্তু এখন তো আমারা একটি স্বাধীন দেশে বাস করি । তাহলে এখন কেন ঘটছে এরকম ঘটনা ? রাজনৈতিক মতাদর্শের প্রাথক্য থাকতেই পারে – তাই বলে তো এমন গুম করার রাজনীতি এদেশে কখনওই ছিল না। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই RAB কিংবা পুলিশের এর পরিচয়ে প্রকাশ্যে তুলে নিয় যাওয়া হলেও পরে তাদের আর খুজে পাওয়া যাচ্ছে না ।

আইন শৃঙ্খলা বাহিনীয়ও এর কোন দায় নিচ্ছে না । একটি স্বাধীন এরকম ঘটনা মোটেই কাম্য নয় । মানবাধিকার কমিশনসহ বিভিন্ন ব্যক্তিসহ পুরো দেশ বাসি বিষয়টি নিয়ে উদ্যেগের মধ্যে থাকলেও সরকারের নিরব ভূমিকা বিষয়টিকে আরো ঘোলাটে করে তুলেছে । আইন শৃঙ্খলা বাহিনীয়ওসহ সরকারের এই নীরব থাকার সুযোগকে কাছে লাগিয়ে গুম করে হত্যার ঘটনা আরো বেড়ে গেছে । শুধু মাত্র এ বছরই ঢাকা ও আশপাশের এলাকা থেকে ২২ জনের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা ঘটেছে । এবং বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তদের আইন শৃঙ্খলা বাহিনীয় পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে । ২২জনের মধ্যে ১০জনের লাশ পাওয়া গেলেও বাকিরা সবাই এখনও নিখোজ রয়েছেন ।

সরকার ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কিছুতেই এর দায় এড়িয়ে যেত পারে না । কেননা সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা দেওয়া উভয়ের নৈতিক দ্বায়িত্ব । এখনই যদি এই গুম রহস্যের সমাধান করা না হয় তাহলে ভবিষ্যতে আরো অনেক ভয়ন্কর সব ঘটনা দেশবাসীর সামনে অপেক্ষা করছে বলে মনে হচ্ছে ।