
ছবিটি শেরে বাংলা জনাব ফজলুল হকের ১৯৫৪ সালের ঈদ দিবসের, তিনি তখন পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল, ঢাকাতে বাসভবনে অতিথিদের প্রত্যাশাতে বসে আছেন! লক্ষ্য করুন কি নিতান্ত সাধারন তার নিজের পোষাক ও ঘরের আসবাব!এই ছবি দেখে এখনকার রাজনীতিবিদরা কি লজ্জা পাবেন? না বোধ হয়, কারন ওই বস্তুটি এদের বেশীর ভাগেরই নেই!
ছবিটি বিশ্ববিখ্যাত “লাইফ” ম্যাগাজিনের আর্কাইভে সংরক্ষিত রয়েছে!
আমি এমনিতেই আউলা মুনিষ, গতকাল থেকেই একটা অতি দুঃসংবাদ আমারে আরো আওলাইয়া দিছে, সেটা হল আবারও বিদ্যুতের দাম অসম্ভব হারে বাড়ছে, খুচরা বিদ্যুতের দাম আবারও ৫৭% বৃদ্ধি পাচ্ছে! সর্বশেষ এই বছরেরই গত ২৯ মার্চ বিদ্যুতের পাইকারি ও খুচরা দাম যথাক্রমে প্রতি ইউনিটে গড়ে ২৮ পয়সা এবং ৩০ পয়সা বাড়ানো হয়েছিল, যা ১ মার্চ থেকে কার্যকর হয়েছিল। এ নিয়ে চলতি বছরেই দুই দফায় পাইকারি ও খুচরা দাম বাড়ানো হয়েছে, আরও একবার এখন বাড়াচ্ছে অতি নির্লজ্ব তস্করেরা!নির্লজ্ব এই সরকারী সিদ্ধান্ত আওয়ামী লীগের দলীয় সিদ্ধান্ত হলে বুঝতে হবে, আওয়ামী লীগের অতীতের সেই গণবান্ধব নীতির আর কিছুই অবশিষ্ট নেই, আওয়ামী লীগ পলিসি পরিনত হয়েছে কুইক রেন্টালের দালালে আর সেই ক্ষমতার সর্বেসর্বা জনাব তৌফিক ইলাহী চৌধুরী!এই ভদ্রলোক এবং লাফা লাফি ঝাঁপা ঝাঁপি সাথে অতিকথন দোষে দুষ্ট ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চার মতো আচরনের (ষ্টক এক্সচেঞ্জ সম্পর্কে বক্তব্য উল্লেখ্য!) অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত দুজনেই কিন্তু বার্ধক্য জনিত কারনে “সেনাইল ডিজেনেরেশন” এর রোগী, এদের মস্তিষ্ক এবং অন্যান্য সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেম পূরোপুরি কর্মক্ষম নয়!
এদের সামনে রেখে টাকা কামিয়ে যাচ্ছে “কিচেন কেবিনেটের” সদস্যরা! কুইক রেন্টাল বিদ্যুত কেন্দ্রগুলোর মাসিক ভর্তুকি মোটে দরিদ্র জনগনের পকেট কাটা মোটে ৪৩৫ কোটি টাকা (বাংলাদেশের ৮১% লোক ইউএনডিপির হিসেবে দরিদ্র, তাদের দৈনিক আয় ২ ডলারের নীচে!) ! এই কুইক রেন্টালগুলো কাদের তা জানলেই ষ্পষ্ট হবে যে এই হায়েনারা কি ভাবে জোট বদ্ধ!
দেশ কি এদের বাপের সম্পত্তি?
আই এম এফ আর বিশ্ব ব্যাংকের পোষা বিদুষক হিসেবে বাজেটে যা সর্বনাশ করার তা অর্থমন্ত্রী করেছেন, এখন নানা তথাকথিত (অ)গণ-শুনানী কমিশনের নাম দিয়ে “তাল গাছটি আমার” ফর্মূলাতে বিদ্যুত নিয়ে মাদারীর খেল দেখাচ্ছে বর্তমান সরকার!
সংসদকে পাশ কাটিয়ে এই ধরনের পুকুরচুরির অধিকার কারো নেই, এদের হাতে নাকাল ক্ষয়িষ্ণু মধ্যবিত্ত, যারা চিরকাল আওয়ামী লীগকে শক্তি যুগিয়ে এসেছে এবং এদেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে যারা যে কোন সফল আন্দোলনের প্রানশক্তি, তাদেরই আজ রুখে দাঁড়ানোর শেষ সময় কিন্তু অতিক্রান্ত হয়ে যাচ্ছে! রুখে দাঁড়ান রাজপথে, ব্লগে, মিডিয়াতে!বিরোধী দল কিন্তু তাদের ক্ষমতায় যাওয়ার ধান্দা নিয়ে ব্যাস্ত, তাই এ ব্যাপারে তারা কথা কখনও বললেও স্নিগ্ধ করে বলে, তাই এদের দিয়েও বিশ্বাস নেই, মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ!
হ্যাঁ, তৃতীয় শক্তিকেই আহবান করছি, আসুন, আপনারা তো আর মঙ্গলগ্রহ থেকে আসেন নি, এদেশেরই সন্তান!তৃতীয় গন-প্লাটফর্ম থেকে তীব্র আঘাত করে ধংস করুন চলমান রাজনীতিকে! জনাব তৌফিক ইলাহী আর মুহিত সাহেবদের মতো মানুষদের দ্রুত বাধ্যতামূলকভাবে রাষ্ট্রীয় খরচে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠান! দেশ বাঁচান!
আমি আউলা মুনিষ, তাও আমার ভান্ডার থেকে আপনাদের সবার জন্যে একটি ছবি পোষ্ট করলাম, ছবিটি শেরে বাংলা জনাব ফজলুল হকের ১৯৫৪ সালের ঈদ দিবসের, তিনি তখন পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল, ঢাকাতে বাসভবনে অতিথিদের প্রত্যাশাতে বসে আছেন!এই ছবি দেখে এখনকার রাজনীতিবিদরা কি লজ্জা পাবেন? না বোধ হয়, কারন ওই বস্তুটি এদের বেশীর ভাগেরই নেই!
নীলকন্ঠ বলেছেনঃ
ছবি এবং বিষয়বস্তু দিয়ে যে থীম তৈরী করেছেন তাতে মনে হচ্ছে আমি ও যদি আউলা মুনিষ হতে পারতাম!
আমার মনে হয় অফিস আদালতে বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রি র ছবির সাথে এই ছবিটাও রাখার ব্যবস্থা করলে খারাপ হতো না।
প্রকৌশলী আশরাফ বলেছেনঃ
দেশটাতো সত্যিই তাদের বাপের দেশ। আমরা কে এত কথা বলার? দেশের ব্যাংক থেকে এত্ত এত্ত লোন নিচ্ছে, আর ওদিকে বাপের নামে মনুমেন্ট বানাচ্ছে (উদাহরন: ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক), বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন করে বাপের নামে নামকরন উৎসব চলছে (উদাহরন: বিমানবন্দর, ভাসানী নভোথিয়েটার)……আরো কত কি! প্রতিটা নাম পরিবর্তনের কারনে যে জনগনের কত কোটি কোটি টাকা অপচয় করছে তার জবাবদিহি কে করবে? আমরা ট্যাক্স দেই কি তাদের বাপের নাম ফাটানোর জন্য? নিজেদের ছেলেমেয়েরা থাকে বিদেশে, বোন-বেরাদররা থাকে বিদেশে, আর তাদের রাজনীতি নামক ব্যাবসাটা করে বাংলাদেশে। এতকিছুর পরেও জনগনের বোধোদয় হচ্ছেনা….
আউলা মুনিষ বলেছেনঃ
@প্রকৌশলী আশরাফ, বঙ্গবন্ধুর নামে নামকরন আর এই পোষ্টে “বাপ-দাদার সম্পত্তি” এই দুইটি কথা এক নয়, এটা নিশ্চয়ই আপনি বোঝেন! এই পোষ্টে মূল বক্তব্য হচ্ছে বিদ্যুত খাতে খেয়াল খুশী মতো লুঠপাটের আর বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদ, নামকরন প্রসঙ্গে আলাদা পোষ্টে আলোচনা হতে পারে নিশ্চয়ই! কিন্তু এখানে মূল প্রতিপাদ্য হিসেবে “নামকরন” প্রসঙ্গ নিয়ে বিতর্ক হলে পোষ্টটির আসল উদ্যেশ্য অর্থাৎ বিদ্যুত খাতে খেয়াল খুশী মতো লুঠপাটের আর বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদের বিষয়টি নিশ্চিতভাবেই তলিয়ে যাবে!
ধন্যবাদ, ভাল থাকবেন!
জাহেদ-উর-রহমান বলেছেনঃ
আউলা মুনিষ,
আপনি প্রশ্ন করেছেন, দেশ কি এদের বাপের সম্পত্তি?। হ্যাঁ এই দেশ একজনের বাপের আর আরেকজনের স্বামীর সম্পত্তি। তবে অন্যসব সম্পত্তি ভোগ করার সাথে এটার একটা পার্থক্য আছে – এদেরটা টানা ভোগ করে যাওয়া যায় না – ৫ বছর পর পর করতে হয়।
তবে আমি নিজে আসলে মনে করি না এই দেশকে তাঁদের বাপের সম্পত্তিও মনে করে। বাপের সম্পত্তি মানুষ রয়ে সয়ে খায়, দীর্ঘমেয়াদে খাওয়ার জন্য। কিন্তু একবার ক্ষমতায় আসলে ৫ বছর এঁদের এই দেশকে খুবলে খাওয়া দেখলে স্রেফ ধর্ষণের কথা মনে পড়ে যায়।
চমৎকার লিখেছেন। অনেক শুভকামণা আপনার জন্য।
কাজী মুরাদ বলেছেনঃ
ভাই মুনিষ আপনার লেখাটা পড়ে মাথাটা সত্যিই আউলা হলো সেই সাথে দারুন এক আফসোস।ভুলেই গিয়েছিলাম এদেশে শের ই বাংলা, সুহরাওয়ারদি, মাওলানা ভাসানী, শেখ মুজিবুর রহমান এদের মত বড় মাপের রাজনৈতিক নেতাদের জন্ম হয়েছিলো!!
এরপর একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়ার ক্ষনিক আগমন, সেও অনেকদিন গত।
তারপর থেকে আমরা শুধু দেখেছি বাংলা মায়ের কি নিদারুন অপমান(জাহেদ ভাইয়ের মন্তব্য)।
আশ্চর্য লাগে কি ভাবে গোটা জাতী এই বেজন্মা রাজনীতিকদের সিমাহীন লুটপাট চোখের সামনে দেখেও নিরব?আরও আশ্চর্য হই যখন কিছু সংখক দলবাজ এখনও এই নষ্ট রাজনীতির উলঙ্গ সাপোর্টার হিসেবে নিজেকে জাহির করে গর্ব বোধ করে।
যে জাতী ৫২ আর ৭১ এ গোটা বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছিলো “জ্বলে পুড়ে ছারখার তবু মাথা নোয়াবার নয়” সে জাতী কি ভাবে এত বোধ শূন্য হয়ে গেলো?
জিনিয়া বলেছেনঃ
আউলা, তোমাকে অনেক ধন্যবাদ সুন্দর এই পোস্ট এর জন্য। আর ছবিটা তো অসাধারণ, জাতির বিবেকের প্রতিচ্ছবি। দেশটাকে যখন এই দুই দলের গংরা খুবলে খুবলে খায়..খুব কষ্ট হয়। কষ্ট হয় কিছু না করতে পারার জন্য।
আমার জন্য তোমার ভালোবাসা আমাকে মুগ্ধ করেছে। আমি আবার ফিরে এসেছি তোমাদের মাঝে..আমার বিডি পরিবারে। ভাল থেকো। অনেক শুভকামনা।