স্বাধীন দেশ এ স্বাধীন ভাবে স্বাধীনতার সম্ভ্রমহানী

সৈয়দ আদনান
Published : 23 May 2012, 11:13 AM
Updated : 23 May 2012, 11:13 AM

পূর্বপুরুষদের নিয়ে আমরা গর্বিত আবার লজ্জিতও বটে।, কারন তারা ছিলেন যোদ্ধা আবার কেউ বা রাজাকার। যারা আমাদের স্বাধীনতা দিয়েছেন তাদের আমরা শ্রদ্ধা করি মনে প্রাণে, কেননা তারা আমাদের জন্য নিজেদের জীবন বাজী রেখেছিলেন। আর রাজাকারদের কথা ……… নাই বা বললাম।

পূর্বপুরুষদের দেয়া এ স্বাধীনতা পেয়ে আমরা মহা খুশি, মেতে আছি নিজেদের আখের গোছানোর নৃত্যে।আজ আমাদের ভাবনা কেবল নিজে এবং নিজ পরিবার কে নিয়েই। সত্যিই আমরা নিজেদের নিয়ে মহাব্যস্ত তাই আশপাশের কে কি করছে তাতে কোন ভ্রূক্ষেপ নেই আমাদের। যে যে ভাবে পাচ্ছি লুটে খাচ্ছি দেশটাকে। সফলতার পরিমাপ নৈতিকতার সাথে না হয়ে হচ্ছে অর্থের সাথে! স্বাধীন দেশ এ স্বাধীন ভাবে স্বাধীনতার সম্ভ্রমহানী এখন অতি সাধারন ব্যাপার। আর এটা আমরা করে যাচ্ছি গর্বের সাথেই।

কিন্তু কখনো কি আমরা ভেবে দেখেছি যে আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য কি করছি? কি রেখে যাচ্ছি তাদের জন্য?

আমরা রেখে যাচ্ছি এমন একটা দেশ যেখানে – মেধার চেয়ে মামার প্রয়োজন বেশি,শিক্ষাঙ্গনে সহপাঠী সহপাঠীকে খুন করছে, লাঞ্ছিত হচ্ছে ছাত্রের কাছে শিক্ষক।যেখানে নিজ দেশের এক সামরিক বাহিনী নির্মম ভাবে হত্যা করছে আর এক বাহিনির চৌকসদের,গনতন্ত্র এর দোহাই দিয়ে একজন রজনৈতিক ব্যাক্তির জন্য হরতাল এর নামে পুরিয়ে মারা হচ্ছে নিরীহ বাস চালক কে, যেখানে একজন নোবেল বিজয়ীর পারদর্শিতা নিয়ে ওঠে প্রশ্ন, জনগনকে বলা হয় ফটকাবাজ! যেখানে দেশের স্বার্থের চেয়ে বেশী প্রাধান্য পায় ব্যক্তিস্বার্থ, সোহেল তাজ এর মত প্রতিভাবান রাজনীতিবিদ অকালে 'সঙগত' কারনে রাজনীতি থেকে সরে যায়, যেখানে মুক্তিযোদ্ধারা ইট ভাঙ্গে আর এম পি রা শিতল কক্ষে জীবন-যাপন করে,যে দেশের নেতৃস্থানীয় পরিবারের ছেলেরা নেতৃত্ব এর নামে টাকা চুরি করে পাচার করে বিদেশে,সাংবাদিক হত্যার বিচারে অপারগতা জানায় স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী।যেখানে মানুষ না খেয়ে থাকলেও এলিসিয়ান কুকুর ঠিকই খাবার পায়।

এসব পেয়ে আমাদের উত্তরসূরিরা নিশ্চয়ই আমাদের নিয়ে গর্ববোধ করবে না, বিধায় তারা আমাদের গালি দিবে কাপুরুষ, ভীতু, উন্মাদ, আত্মকেন্দ্রিক, লোভী এ সব বলে। তাতেই বা আমাদের কী? আমরা নির্লজ্জ, প্রানে তো মরব না!! বলুক না আমাদের রাজাকারদের চেয়ে নিকৃষ্ট তাতেই বা কি? জীবনকে তো উপভোগ করছি।

ছাত্ররা নাকি দেশের ভবিষ্যৎ ! সেই আমরাই (ছাত্ররা) ক্ষমতার লোভ আর অর্থের লালসায় অন্ধ হয়ে নিজেদের বিক্রি করছি দিনের পর দিন। আমাদের নৈতিকতার এতটাই অবক্ষয় হয়েছে যে ভাল মন্দের পার্থক্যটাও আমরা এখন বুঝিনা। ঠিক যেন কুকুর এর মত মুনিব এর আদেশ মনাই আমাদের এক মাত্র কাজ।

আর আমরা সব কিছু দেখার পরও না দেখার ভান করে বসে বসে ভাবছি এ সব এ আমার কি? আমি তো আছি বেশ, কেনো শুধু শুধু নিজেকে এসব এ জরানো? ধিক্কার জানাই তাদের এই জীবন কে যারা প্রতিবাদ এর ক্ষমতা রখে না। কেউ কেউ আবার বিজ্ঞদের মত বলি পরিবর্তন দরকার, বদলানো দরকার আমাদের।

কিন্তু আমরা এটা বুঝতে চাই না যে এই পরিবর্তন এবং দিন বদলানোর দায়িত্ব এখন আমাদের কাঁধেই। আমরা যারা তরুন, আমাদেরকেই এখন হতে হবে প্রতিবাদ মুখর। আমাদের উচিত যেখানেই অন্যায় দেখা সেখানেই প্রতিবাদ করা, হোক না সেটা ছোট কিংবা বড়। শুরু টা আমাদেরকেই করতে হবে আর সময় এটাই।

আমদের দেশ এখন অসুস্থ, দেশের চিকিৎসার দায়িত্ব নিতে হবে আমাদেরই,ঠিক যেমন করে দায়িত্ব নেই আমাদের মা অসুস্থ হলে।