যে ঋণ শোধ হবার নয়, তবুও…!

মোসাদ্দিক উজ্জ্বল
Published : 19 July 2011, 05:25 PM
Updated : 19 July 2011, 05:25 PM

এই শুভ মাহেন্দ্রক্ষণটির জন্য জাতিকে অপেক্ষা করতে হয়েছে দীর্ঘ ৪০ টি বছর। জাতি হিসাবে কতটা হতভাগা যে আমরা আজও তাদের কোন স্বীকৃতি দিতে পারিনি। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এক গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। সেই ইতিহাসের প্রতিটি পাতায় পাতায় প্রতিটি গল্পে মিশে আছে ঐ সব ভিনদেশী অকৃত্রিম বন্ধুদের নাম। এই দেশের ১৯৭১ এর মহান মুক্তে যুদ্ধে যেই সব ভিনদেশীরা মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অবদান রেখেছিলেন সেই সব বাংলাদেশী বন্ধুদের আগামী ২৫ শে জুলাই বঙ্গভবনে শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীকে সম্মাননা জানানোর মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে তাদের প্রতি আমাদের সেই শ্রদ্ধা আর ভালবাসা প্রকাশের এক কাংখিত প্রক্রিয়া। এটি করতে যদিও অনেক দেরি হয়ে গেছে। তার পরও জাতি হিসাবে সেই ঋণ কিছুটা হলেও আজ শোধ করা। হয়তোবা এই ঋণ শোধ হবার নয়।

শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী, যার নামটি আমাদের স্বাধীনতার সাথে অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িত। যার সহযোগিতা আর বাংলাদেশের প্রতি এক ধরনের অদ্ভুত ভালবাসায় ধন্য হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন আমাদের ৭ কোটি বাঙ্গালী। যার প্রত্যক্ষ সহযোগিতা ব্যতীত আমাদের মুক্তিযুদ্ধে বিজয় লাভ আরও কষ্টসাধ্য হয়ে যেত।

২৫শে মার্চ ১৯৭১ সাল। ঢাকা সহ সমগ্র বাংলাদেশের শুরু হয় পাকবাহিনীর তাণ্ডবলীলা। রাতের অন্ধকারে নিরীহ, নিরস্ত্র বাঙ্গালীর উপর অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র নিয়ে পাক হানাদার বাহিনী ঝাপিয়ে পড়ে এবং হাজার হাজার নারী, পুরুষ, ছাত্র, শিক্ষক,চিকিৎসক ও সাংবাদিকদের নির্বিচারে হত্যা করে। এদিনই রাত ১২ টার পর বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দেন এক ওয়ারলেস যোগে চট্টগ্রামে পৌছানো হয়। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষনা এবং হানাদার বাহিনীর হত্যাযজ্ঞের কথা জেনে বাংলার কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র-যুবক, নারী, শিক্ষক, শিল্পী, বুদ্ধিজীবী সহ সবাই বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে।

সেই ভয়াবহ বিভীষিকাময় অবস্থায় হাত থেকে বাঁচতে লাখ লাখ নারী পুরুষ পাশ্ববর্তী দেশ ভারতে আশ্রয় নেন। ভারতের তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ৯৮,৯৯,৩০৫ জন উদ্বাস্তুকে আশ্রয় দেন। তাদের থাকা খাওয়া চিকিৎসা সহ অন্যান্য সাহায্য করেণ। ভারতের পশ্চিম বঙ্গে শরণার্থীর সংখ্যা ছিল সবচে বেশি। পরম মমতায় ঠিক যেন এক মা তার সন্তানের মতন সেদিন বিপর্যস্ত শরণার্থীদের পাশে দাড়ালেন এবং দেশবাসীকে সহায়তা করার অনুরোধ করলেন।

শুধু আশ্রয় নয় তিনি সহজ সরল আর নিরস্ত্র বাঙালিকে সাহস যোগাতে লাগলেন।। ছাত্র, শিক্ষক, কৃষক, যুবক ও যুবতীদের গেরিলা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করলেন। ঘুরে দাঁড়ালো বাঙ্গালী। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রশিক্ষণ পেয়ে সেই সব বাঙ্গালী সশস্ত্র অবস্থায় বাংলাদেশে প্রবেশ করল। ঝাপিয়ে পড়লো দস্যু হায়না পাক বাহিনীদের উপর।

'৭১ এর ১৩ এপ্রিল ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বলেন,

পূর্ব বাংলা যা ঘটেছে, তাতে ভারত সরকার নীরব থাকবেনা

১৭ই মে পশ্চিম বঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী আসেন এবং রাজ্য সরকারকে আশ্বস্ত করেণ,

যে শরনার্থী বিষয়ে কেন্দ্র তাদের পাশে থাকবে

উল্লেখ্য বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে সাহায্য করার জন্য ভারতীয় সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব দেয়া হয় ৩০ এপ্রিল।

এই মহীয়সী নারী ৯ মে তাদের সেনা বাহিনীর হাতে মুক্তিযুদ্ধে যোগদানেচ্ছু বাংলাদেশের তরুণদের সশস্ত্র ট্রেনিং দানের দায়িত্ব অর্পণ করেন। পাকিস্তানীদের নির্মম, নিষ্ঠুর নারকীয় হত্যাযজ্ঞ বিশ্ববাসীর নিকট তুলে ধরা ও মুক্তিযুদ্ধে সমর্থন আদায়ের জন্য শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী ইউরোপ সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ বিশ্ব ভ্রমণ করেন। তিনি বিশ্ব নেতাদের বুঝাতে থাকেন এবং একটি স্বাধীন বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের জন্য সকলের নিকট সমর্থন কামনা করতে থাকেন। তার ব্যক্তিত্ব আর দুর্লভ কূটনৈতিক অদম্য দক্ষতায় বিশ্ব নেতৃবৃন্দ তার পক্ষে সমর্থন দিতে থাকেন।

এই দেশের মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীন বাংলাদেশ বেতার কেন্দ্র এক অবিস্মরণীয় ভুমিকা রাখতে থাকে। এম আর আক্তার মুকুলের সেই চরম পত্র, জাগরনের গান, সহ নানাবিধ নাটিকা ঐ স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র হতে প্রচারিত হোতো। আর এই সবে আমাদের সেই বীর সেনানীরা উৎসাহ, উদ্দীপনা পেতেন। তাই তো তারা অপারেশন জ্যাকপট এর মতন দুঃসাহসিক অপারেশনেও মৃত্যুকে হাতের মুঠোয় বন্দী করে পাক বাহিনীদের উপর ঝাপিয়ে পড়েছিলেন। সেই স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের জন্য একটি ট্রান্সমিটার বরাদ্ধ করেছিলেন শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী।

'৭১ এর মাঝামাঝি সময়ে বেলগ্রেডের রাজধানী বুদাপেস্টে বিশ্বশান্তি কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়। এ সন্মেলনে ভারতীয় প্রতিনিধিরা বাংলাদেশ বিষয়ে সর্বাত্মক সহযোগিতার কথা পুর্ণব্যক্ত করেণ। এক বার্তায় ইন্দিরা গান্ধী বলেন,

পূর্ববঙ্গের ঘটনায় ভারতের পক্ষে উদাসীন থাকা কঠিন এবং ইতোমধ্যে ২০ লাখ শরনার্থী ভারতে আশ্রয় নিয়েছে। এসব উদ্বাস্তু যাতে সম্মানের সঙ্গে দেশে ফিরতে পারে সেজন্য পাকিস্তানকে বাধ্য করতে হবে।

কিসিঞ্জার মুজিবের মুক্তির এবং সামরিক সাহায্য বন্ধের অক্ষমতা ব্যক্ত করলে ইন্দিরা গান্ধী জানান

ভারতের পক্ষে ও মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সাহায্য বৃদ্ধি করা ছাড়া গত্যন্তর নেই

১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর ইন্দিরা গান্ধীর কলকাতায় এক জনসভায় ভাষণদানকালে পাকিস্তানী বাহিনী ভারতের বিভিন্ন বিমান ঘাঁটিতেও আক্রমন করে। তিনি সেদিনই তাঁর মন্ত্রিসভার ভাষণে বলেন-

আমি এ মুহুর্তে আমাদের দেশের এবং জনগণের গুরুতর বিপদের সাথে আপনাদের উদ্দেশ্যে বলছি, কয়েক ঘন্টা আগে পাকিস্তান আমাদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু করেছে। পাকিস্তান বাহিনী হঠাৎ করে আমাদের এয়ার ফিল্ড, অমৃতসার, পাঠান কোর্ট, শ্রীনগর, অবন্তীপুর, উতরলেট এবং আগ্রায় আঘাত হেনেছে।

এতদিন ধরে বাংলাদেশে যে যুদ্ধ চলে আসছিল,তা ভারতের বিরুদ্ধে পরিণত হয়েছে।

এর পরপরই ভারত ও বাংলাদেশ বাহিনী মিলিত ভাবে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করে এবং একে একে পাকবাহিনী বিভিন্ন রনাঙ্গণে পরাজিত হতে থাকে।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে বিশ্ববাসীর নিকট গ্রহণযোগ্য করে তুলতে সেই সাথে মুক্তিযুদ্ধকে ত্বরান্বিত করার জন্য ৬ ডিসেম্বর ইন্দিরা সরকার বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিক ভাবে স্বীকৃতি দান করেন। উল্লেখ্য মহান মুক্তিযুদ্ধে আমাদের ৩০ লক্ষ্ শহীদদের সঙ্গে বহু ভারতীয় সৈন্যও শহীদ হয়েছেন।

'তারা সবাই ঈশ্বরের সন্তান' শীর্ষক একটি লেখায় মাদার তেরেসা বাংলাদেশের লাখ লাখ শরণার্থীকে সেবাযত্ন করায় ইন্দিরা গান্ধীর এ কাজকে যীষু খ্রিষ্টের কাজের সাথে তুলনা করেছিলেন। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে আর এক মানব দরদি মহীয়সী নারী মাদার তেরেসার অবদান যেন আমরা কেউ না ভুলে জাই।

আজ ৪০ বছর পরে সরকার মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের জন্য বিদেশিদের স্বাধীনতা সম্মাননা, মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা ও মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা দিচ্ছে । বিদেশিদের দেওয়া এ তিনটির মধ্যে সর্বোচ্চ পাচ্ছেন জহরলাল নেহেরুর মেয়ে শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী।যার পক্ষে আগামী ২৫ জুলাই তার পূত্রবধূ সোনিয়া গান্ধী এই সম্মাননা স্মারক গ্রহন করবেন।

ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত ইন্দিরা গান্ধী ছাড়াও সম্মাননার তালিকায় আর যারা আছেন তারা হলেনঃ সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রধানমন্ত্রী আলেক্সি কসেগিন, যুগোস্লাভিয়ার প্রেসিডেন্ট জোসেফ টিটো, কিউবার সাবেক প্রেসিডেন্ট ফিদেল কাস্ত্রো, বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী হ্যারল্ড উইলসন, জার্মানির চ্যান্সেলর উইলি গ্রান্ট, ভারতের সাবেক সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল স্যাম মানেকশ, ভারতের সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় ফন্সন্টের সাবেক কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা, ভারতের নেতা জয় প্রকাশ নারায়ণ, মাদার তেরেসা, ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর উপদেষ্টা ডিপি ধর, পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায়, জ্যোতি বসু, ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সাবেক প্রধান রুস্তম জি, ফন্সান্সের সাহিত্যিক ও দার্শনিক আঁদ্রে মালরো, সাবেক মার্কিন সিনেটর অ্যাডওয়ার্ড কেনেডি, কংগ্রেসম্যান গালাগার, সিনেটর ফন্স্যাঙ্ক চার্চ, সিনেটর চার্লস পার্সি, মার্কিন গায়ক জর্জ হ্যারিসন, বব ডিলান।

এছাড়া রয়েছে ভারতের সেতারবাদক পণ্ডিত রবি শঙ্কর, সংগীতশিল্পী জোয়ান বায়েজ, মুক্তিযুদ্ধের সময় ঢাকায় মার্কিন কনসাল জেনারেল কূটনীতিক আর্চার কেন্ট ব্লাড, রিচার্ড টেলর, অস্ট্রেলিয়ার এ এস ওডারল্যান্ড (বীর প্রতীক), জাপানের তাকাশি হায়াকাওয়া, সুইডেনের এমপি লার্জ লিজন বর্গ, প্রফেসর রবার্ট রাইমস, পাকিস্তানের এয়ার মার্শাল আসগার খান, খান আবদুল ওয়ালি খান, কবি আহমদ সালিম, মানবাধিকার নেত্রী নাসিম আখতার, মানবাধিকার নেত্রী আসমা জাহাঙ্গীর, কবি ফয়েজ আহমেদ ফয়েজ, নেপালের প্রেসিডেন্ট ডা. রামবরণ যাদব।

তালিকায় আরো আছেন, ভারতের গায়িকা লতা মুঙ্গেশকার, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, সলিল চৌধুরী, অভিনয় শিল্পী ওয়াহিদা রহমান, কবি কাইফি আজমি, শিল্পী মকবুল ফিদা হোসেন, পি এন হাসকার, বিপ্লবী পান্নালাল দাশগুপ্ত, টি এন কউল, ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী শচীন্দ্র লাল সিংহ, সাংবাদিক অনিল ভট্টাচার্য, দেবদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায়, গীতিকার গোবিন্দ হালদার, সংগীতশিল্পী ভূপেন হাজারিকা, লেখক দীপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, চলচ্চিত্র নির্মাতা ঋত্বিক ঘটক, প্রিন্স সদরুদ্দিন আগা খান, নেপালের সাবেক প্রধানমন্ত্রী গিরিজা প্রসাদ কৈরালা, শিল্পী গণেশ পাইন, বিকাশ ভট্টাচার্য, প্রকাশ কর্মকার, কানাডার প্রধানমন্ত্রী পিয়েরে ট্রুডো, শ্রীলংকার সাবেক প্রেসিডেন্ট শ্রীমাভো বন্দরনায়েকে, সাংবাদিক সায়মন ড্রিং, মার্ক টালি, বব ডিলান, প্রণব মুখার্জি, সাবেক সোভিয়েত নৌবাহিনীর এডমিরাল জুয়েনকো, জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব উথান্ট, উপেন তরফদার, প্রণবেশ সেন, অন্নদা শঙ্কর রায়।

সংগঠন হিসেবে সম্মাননার জন্য প্রস্তাবিত নামের তালিকায় বিশ্ব শান্তি পরিষদ, আন্তর্জাতিক রেডক্রস, জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশনার, মাদার তেরেসার সংগঠন মিশনারিজ অফ চ্যারিটিজ

মূলত ২০১০ সালের মার্চে গাইড লাইন চূড়ান্ত করতে বিদেশে বাংলাদেশ মিশন ও বাংলাদেশে বিশিষ্ট নাগরিকদের মাধ্যমে বিদেশি নাগরিক ও সংস্থার নাম তালিকাভুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। সেই সময় ৩৩ বিদেশী নাগরিক ও একটি সংগঠনকে সম্মাননা জানানোর প্রস্তাব মন্ত্রিসভা থেকে ফেরত পাঠানো হয় সংশ্লিষ্টদের কাছে।

এরপর আরো বড় পরিসরে সম্মাননা দিতে গঠিত হয় জাতীয় কমিটি। এ কমিটিকে দায়িত্ব দেয়া হয় সরকারের কাছে সম্মাননা দেয়া সহ সব ধরনের সুপারিশ করতে। এরই মধ্যে দফায় দফায় বৈঠক ও ব্যাপক আলোচনার মাধ্যমে কমিটি সম্মাননা দেয়ার গাইডলাইন প্রায় চূড়ান্ত করেছে।

সম্মাননাস্বরূপ স্বাধীনতা পদকের সমমানের স্বর্ণপদক তাদের দেয়া হবে। জীবিত নাগরিকদের দেয়া হবে সম্মানসূচক নাগরিকত্ব।ধাপে ধাপে প্রায় ৫০০ জনকে এই সম্মাননা জানানো হবে। তবে প্রথম ধাপে ৫২ জনকে সম্মাননা জানাতে চূড়ান্ত করেছে সরকার গঠিত বিশেষ কমিটি। এর মধ্যে যারা বাংলাদেশে আসতে পারবেন না সরকারের প্রতিনিধিরা সেইসব দেশে গিয়ে তাদের পদক ও নাগরিকত্ব দিয়ে আসবেন।

সরকার গঠিত বিশেষ কমিটি এইসব বিদেশী বন্ধুদের জন্য দেশের স্মৃতিস্তম্ভ বানানো প্রস্তাব করেছে। সে অনুযায়ী, ঢাকায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মুক্তিযুদ্ধে নিহত ভারতের সেনাদের স্মরণে, চট্টগ্রাম বন্দরে মাইন অপসারণ করতে গিয়ে নিহত তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের সেনাদের জন্য পৃথক স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ এবং ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত ইন্দিরা গান্ধীর নামে ঢাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কের নামকরণ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

আজ সত্যি ভাল লাগছে। বহুদিন যাবত বুকের গহীন কোনে লালন করা এক স্বপ্ন, আহা যদি ঐ সব বন্ধুদের জন্য কিছু একটা করা যেত? সেই স্বপ্ন আজ সত্যি হতে চলেছে। তবে তার জন্য অপেক্ষাও করতে হয়েছে ৩ যুগ এর ও বেশী সময়। তবুও সান্তনা এই ভেবে বড় দেরি হলেও আমাদের ঐ ভিনদেশী অকৃত্রিম বন্ধুদের সন্মান শ্রদ্ধা আর ভালবাসায় সিক্ত করতে পেরেছি আমরা। কারন আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে ওদের অবদানের কথা যে আমরা ভুলতে পারিনি, পারবোনা কোনদিন।