নারী মাত্রই সে কোন না কোন "পুরুষের মা বোন অথবা কন্যা"। সমাজে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠিত হোক, এতে কোন পুরুষের আপত্তি থাকতে পারেনা।একজন নারী কোন না কোন ভাবে অধিকার বঞ্চিত হচ্ছে যা অনস্বীকার্য এবং এর সমাধান হওয়াটাও অপরিহার্য। প্রকৃত অর্থে, এ দেশের নারী পুরষের চেয়ে বেশী ধর্ম পরায়ন। নারীর সম অধিকার তাদের কাম্য হলেও, পবিত্র কোরঅনের বিধান বহির্ভূত কোন অধিকার তারা চায় না। আজ যারা নারীর সম অধিকার নিয়ে আন্দোলন করছেন তাদেরকে অবশ্যই এটা অনুধাবন করতে হবে| কারো মনগড়া সিদ্ধান্ত কখনই ধর্মের উপর চাপিযে দেওয়া যাবেনা। সমস্যার সমাধান পবিত্র কোরআনের বিধান অনুযায়ী হতে হবে| পরিতাপের বিষয়, আজ যারা নারীর আধিকার নিযে আন্দোলন করছেন,তাদের অনেকেই শিল্প,সাহিত্য,দর্শন, পদার্থবিদ্যা, সাংবাদিকতা ইত্যাদিতে পাণ্ডিত্য অর্জন করলেও সম্ভবত তারা পবিত্র কোরআনের সঠিক অর্থ অনুধাবন করতে চেষ্টা করেন না। একই ভাবে ধর্মীয় আলেমগণও কোরআন ও হাদীস ছাড়া আন্যান্য শিক্ষায় শিক্ষিত নন। সমাজে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে এখানেই মূল সমস্যা।
পবিত্র কোরআনে সুস্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে: "নারীর উপর পুরুষের যে অধিকার, পুরুষের উপর নারীরও তেমন অধিকার"। কাজেই একজন পুরুষ নারীর চেয়ে দ্বিগুন সম্পত্তির অধিকারী হবে(সূরা-৪:১১), যা জন্ম সূত্রে নারী ও পুরুষকে ছোট বড় বিবেচনায় এই সম্পত্তি বন্টনের অংশ নির্ধারিত হযেছে এমন ভাবার অবকাশ নেই। সমাজে একজন নারীর নিরাপদ, নির্বিঘ্ন ও সম্মানজনক স্থান নির্ধারনের লক্ষ্যে এ বন্টন ব্যবস্থা বিবেচনায় নিতে হবে এবং অন্যান্য আইন কানুনের সুবিধাদিও একসাথে বিচার করতে হবে। উলেখিত বিধি অনুযায়ী দ্বিগুণ সম্পত্তি প্রাপ্তির কারণে পুরুষ নারীর উপরে আইনগতভাবে বেশী অধিকার পেয়ে যায় এমনটি ভাবারও কোন সুযোগ নেই। এ কথা সত্য যে, মুসলমান নারী ও পুরুষদের মাঝে সম্পত্তি বন্টনকে কেন্দ্র করে, নারীদের অধিকার নিয়ে প্রায়শই একটি প্রশ্ন উচ্চারিত হয়ে থাকে, যা পশ্চিমা জগতের সৃষ্ট ধ্যান ধারনা। সুপরিকল্পিতভাবে ইসলাম ধর্মকে হেয় প্রতিপন্ন করা সহ মুসলমান নারী-পুরুষদের মাঝে বিভেদ সৃষ্টি করার ইহা একটি অপচেষ্টা মাত্র। পবিত্র কোরআনে শুধু নারীর অধিকার নয়. নারীর মর্যদার প্রতিও যথেষ্ট গুরুত্ত্ব দেওয়া হয়েছে।পবিত্র কোরআন বলছে:"প্রত্যেক নারী ও পুরুষ শ্রমের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করবে"। কাজেই ধর্মীয় দৃষ্টিকোন থেকে কর্মক্ষেত্রেও নারীর অধিকার অবশ্যই মর্যদাপূর্ণ হতে হবে| আজকাল নারীদের অধিকারের কথা বলা হলেও তাদের মর্যদা নিয়ে কেউ ভাবেন না। একজন নারীকে মাঠে-ঘাটে কোন মর্যদাহীন কাজে লাগানো কিংবা চাকরানী বানিয়ে অনৈতিক কাজে বিদেশে ঠেলে দেওয়া কোন ভাবেই নারীর অধিকার নিশ্চিত করেনা। আজ যারা নারীর অধিকার নিযে আন্দোলন করছেন তাদের কে অবশ্যই অনুধাবন করতে হবে যে, এই আন্দোলনের সাথে দেশের সাধারন নারীদের কোন সম্পৃক্ততা নেই।এই আন্দোলন নারীর আধিকার প্রতিষ্ঠার চেয়ে বেশী মাত্রায রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত। নারী ও পুরুষের মাঝে বিদ্বেষ সৃষ্টি করে আথবা ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত হেনে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। নারীদের মাঝে শিক্ষার প্রসার; তাদের জন্য মর্যদাফূর্ণ কর্ম সংস্থানের ব্যবস্থা এবং সর্বোপরি সার্বিক দৃষ্টি ভঙ্গি পরিবর্তনের মাধ্যমেই নারী্ আধিকার প্রতিষ্ঠা সম্ভব। প্রতিটি দুঃস্থ পরিবারের কমপক্ষে একজন নারীকে মর্যদাপূর্ণ কাজের জন্য কর্মক্ষম করে গড়ে তোলার ব্যবস্থা গ্রহণই হতে পারে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রাথমিক পদক্ষেপ। এরশাদ সাহেবের আমলের পথকলির ধাঁচে গঠিত কোন প্রকল্পের মাধ্যমে নারীদের জন্য মর্যদাপূর্ণ কাজের ব্যবস্থা করা সম্ভব।