এমনিতেই সাধারনত বিআরটিসি'র বাসে আমার তেমন ভ্রমন করা হয় না। বলতে গেলে সময় এবং সুযোগ দু'টোই দায়ী এর জন্য। কারন, অধিকাংশ সময়ের জন্য আমার যাতায়াতের রুট হলো কুমি্ল্লা-ঢাকা-কুমিল্লা। দেড় থেকে দু'ঘ্ন্টার স্ব্ল্প দুরত্বের যাতায়াত। আর স্থানীয় পরিবহন কো্ম্পানির বাস বিশেষ করে তিসা এবং এশিয়া লাইন কুমি্ল্লা-ঢাকা-কুমিল্লা রুটের যাত্রীদের জন্য যথেস্ট বলে মনে করি।
কর্মক্ষেত্র ঢাকায় হওয়াতে কয়েকবার মতিঝিল-আবদুল্লাহপুর রুটে বিআরটিসি'র এসি বাসে যাতায়াতের সুযোগ হয়েছিল যদিও তেমন সুখকর ছিল না। অন্যান্য টাউন সার্ভিস বাসের মত দাড়িয়ে লোক নেয়াটা আমার কাছে খুবই বিরক্তিকর লাগে।
কয়েকদিন আগে খুব সকালে কুমিল্লা থেকে ঢাকা রওয়ানা হলাম। ক্যান্টনমেন্ট বাসস্টেন্ড পৌছে দেখি বিআরটিসি'র Daewoo এসি বাস দাড়ানো। সাত-পাচ কিছু না ভেবে বাসে উঠে মাঝাখানের এক সিটে বসলাম। ঠিক সকাল ৭ টায় বাস ক্যান্টনমেন্ট ছাড়লো। বাইরে শীত, আবার বাসের ভেতরেও এসি'র ঠান্ডা; সব যাত্রীই কেমন যেন মুডে! হঠাৎ দাউদকান্দি টোল প্লাজার কাছে এসেই গাড়ী থেমে গেল। কিছুক্ষণ পর ড্রাইভার নিরাশ হলেন; জানা গেল গাড়ীর ইঞ্জিন নস্ট হয়ে গেছে!
অধিকাংশ যাত্রী ঢাকায় পৌছে অফিস করবেন। যাত্রীদের চোখে-মুখে হতাশার ছাপ সুস্পস্ট হয়ে উঠেছে। গাড়ীর সুপারভাইজর এদিক-সেদিক ঘোরাঘুরি করছিল; সবার টেনশন কিভাবে যথাসময়ে ঢাকা পৌছুবেন। সুপারভাইজর জানালেন কুমিল্লা বিআরটিসি ডেপোতেও বাসের সংকট!
শেষমেষ আধঘন্টা পর বিআরটিসি'র এসি বাসের সুপারভাইজর যাত্রীদের জন্য ঢাকা-দাউদকান্দি-ঢাকা রুটের একটি মিনিবাস ঠিক করলেন। নিরুপায় হয়ে সবার মত আমিও উঠলাম। কেউ বসে আবার কেউবা দাড়িয়ে। বাসের ভেতরের যে অবস্থা…জানালার কাঁচ ভাংগা, ছেড়া সিট, বিড়ির তামাক পোড়া গন্ধ… মাঝে মাঝে কপালের নাম নাকি গোপালও হয়! ভাড়া দিলাম এসি বাসের আর অর্ধেক পথ আসতে হলো লক্কর-ঝক্কর বাসে!
এই হলো বাংলাদেশের সরকারী পরিবহন সংস্থা বিআরটিসি'র এসি বাসের জনসেবার নমুনা !!!