৩০ টাকা থেকে ২০০০ টাকার বেশ্যা বনাম ১৬ কোটি পাবলিক বেশ্যা: সবারই একই পরিণতি

সত্য সন্ধানী আমি
Published : 2 April 2011, 05:48 PM
Updated : 2 April 2011, 05:48 PM

সম্পর্কভেদে একজন নারী কখনো কারো মা কখনো কারো বোন কখনো কারো ভাবী কখনো কারো প্রেমিকা কখনো কারো বধু ইত্যাদি ইত্যাদি।আরো সহজ ভাষায় বলতে গেলে সম্পর্কভেদে নারীর সাথে একেকজনের একেকরকম সম্পর্ক।মায়ের প্রসংগ আসলে আমরা শ্রদ্ধায় অবনত হয়,ভাবী প্রসংগ আসলে আমরা রসিক হয়,প্রেমিকা প্রসংগ আসলে আগ্রহী হয় কিন্তু বেশ্যা শব্দটি শুনলেই আমরা মুখ বাকাঁয় ছিঃছিঃ করি।কোন মেয়ে যদি অন্যায় কিছু করে তখন তাকে বেশ্যা বলে গালি দিয়ে নিজের রাগ মেটায়।আমার আজকের লেখাটার বেশ কিছু অংশ বেশ্যাদের নিয়েই।এবং এতে বেশ্যাদের জীবন চিত্রের কিছু বাস্তবতা ফুটে উঠেছে।তাই সংগত কারণে এমন কিছু শব্দ থাকবে যেটা অনেকের কাছে অপ্রত্যাশিত।আপনার যদি সত্য স্বীকার করার মানসিকতা না থাকে তাহলে আপনি আর এই পোস্ট পড়বেননা।যতটুকু পড়েছেন সেজন্য আপনার যে সময়ের অপচয় হয়েছে আমি সেজন্য আন্তরিক ভাবে ক্ষমাপ্রার্থী।আর যারা পড়বেন কমেন্ট করবেন তাদের কাছে অনুরুধ সুশীলপনা এই পোস্টের বাইরে রাখবেন।

একজন নারী বেশ্যা কেন হয়?একটা সময় এই প্রশ্নটির উওর দেওয়া সহজ ছিল।সহজ উওর ছিল,অভাব নামক নির্মম বাস্তবতা একজন নারীকে বেশ্যা হতে বাধ্য করে।কিন্তু সময়ের সাথে সাথে এই পেশায়ও পরিবর্তন এসেছে।এখন অভাবের তাড়নায় যেমন বেশ্যা হয় তেমনি বিলাসী জীবনের চাহিদা মেটাতেও অনেক নারী বেশ্যা হয়;প্রেমে ব্যর্থ হয়ে যেমন অনেকে বেশ্যা হয় তেমনি রাজনৈতিক পরিস্থিতি,রাজনৈতিক নেতাদের লালসার কারণেও অনেকে ধীরে ধীরে বেশ্যা হয়ে যায়।কে কি ভাবে বেশ্যা হয় এসব নিয়ে লিখতে গেলে অনেক লিখতে হবে ।সংক্ষেপে এতটুকু বলা যায়,দেশটা আমরা যতটা পঁচে গেছে মনে করি তার চাইতে বেশী পঁচে গেছে।রাজনীতি,অর্থনৈতিক পরিস্থিতি,মানুষের লোভ,চরম পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা,পারিবারিক বন্ধন থেকে দূরে সরে যাওয়া,নৈতিক শিক্ষার অভাব প্রকট হওয়া সব মিলিয়ে সব ফ্যামিলি থেকেই এখন বেশ্যা আসছে।

বেশ্যার বাজারে এখন নিম্নবিত্ত থেকে উচ্চবিত্ত সবারই আনাগোনা আছে।তবে একবাক্যে এটা স্বীকার করতে হবে যে বিলাসী জীবনের বিলাসী মানসিকতার কারণে বেশ্যার বাজারে যাদের উপস্থিতি তারা ছাড়া বাকীরা এই পথে আসতে বাধ্য হয়েছে।তারা শখের বশে বেশ্যা হয়নি।যে সমাজ যে দেশের ব্যর্থতার কারণে তারা সমাজের সবচাইতে ঘৃণিত পেশায় তাঁরা পদে পদে আতংকিত,প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করছে খদ্দেরের সাথে,দালালের সাথে,পুলিশের সাথে।

কি নাম তোমার?
-রুবি।আপনার নাম কি ?
আমার নাম রনি।আচ্ছা রুবি কি তোমার আসল নাম?আর তোমার বয়স কত?
-আপনার নাম যেমন রনি না আমার নামও তেমন রুবি না।১৭বছর।আমার দালালের সাথে কত কন্টাক হয়েছে ?
তোমার দালালের সাথে আমার কত কন্টাক হয়েছে দালাল যখন আসবে তখন বলব।
-ওকে যতক্ষন না দালাল আসছে ততক্ষন পর্যন্ত আপনার সাথে আমার কোন কথা নাই। এরপর মেয়েটি ফোন বের করে দালালকে ফোন করল।দালাল প্রায় ২০মিনিট পর এল।
দালাল- মামারে ভাল করে খুশি করবি।মামা কিন্তু ভাল মানুষ।অন্য সবার মত না।
রুবি-সব হারামীই প্রথমে ভাল সাজে।রাত যত গভীর হয় তত আসল রূপ বেরিয়ে আসে।

দালাল কিছু বলতে গেলে বাধাঁ দিয়ে বললাম,কি বোঝাতে চাইলে?
রুবি-একদম সোজা।দালালের সামনে বলবে উল্টাপাল্টা কিছু করবেনা কিন্তু দালাল চলে গেলে সামনে পেছনে সব যায়গায় সেক্স করে।মুখে নিতে বলে।
দালাল ধমকে উঠে,উনি আমার মেহমান।অন্য সবার মত না।উনাকে কে পাঠিয়েছে জানিস?যে পাঠিয়েছে সে চাইলে তোর মত বেশ্যারে দুই মিনিটে সাগরে গায়েব করে দিতে পারে।উনার যদি কোন সমস্যা হয় তাহলে তোর এই এলাকা হারাম।

রুবি-আচ্ছা ঠিকাছে।কিন্তু টাকা কত?আমার রেট ২০০০ জানেতো?

দালাল-মামা ২৫০০টাকা দিছে।এই নে তোর ২০০০ আমার ৫০০।মামাকে খুশি করলে টাকার চিন্তা করা লাগবে না।

সংলাপ আকারে এতক্ষন যা পড়লেন খদ্দের (?)ছিলাম আমি।যে কয়েকটি বিষয় নিয়ে আমার বেশ আগ্রহ সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নারীরা কেন পরকীয়া করে? কেন নারীরা বেশ্যা হয়? তাই এক বন্ধুর সহায়তায় কক্সবাজারের একটি হোটেলে এই আয়োজন।দালাল চলে যাওয়ার পর মেয়েটির সাথে ১ঘন্টার মত কথা হয়।১ঘন্টা পর যখন মেয়েটিকে চলে যেতে বললাম মেয়েটি বলল,আপনি কি চান আমাকে ওরা মারুক।এখন যদি আমি চলে যায় তাহলে ভাববে আপনাকে আমি খুশি করতে পারিনি তাই আপনি আমাকে পাঠিয়ে দিয়েছেন। পরে দালালকে কল দিয়ে বললাম মামা,আমার জরুরী কাজ আসায় বাইরে যেতে হচ্ছে মেয়েটাকে পাঠিয়ে দিলাম।

রুবির একদম সোজা সাপ্টা স্বীকারোক্তি দালালের সামনে বলবে উল্টাপাল্টা কিছু করবেনা কিন্তু দালাল চলে গেলে সামনে পেছনে সব যায়গায় সেক্স করে।মুখে নিতে বলে তে বোঝা যায় কেমন করে বেশ্যাগিরি করছে ওরা।চন্দ্রিমা উদ্যানের ৩০টাকার বেশ্যা (১কেজি চালের দাম কত?) আর আবাসিক হোটেলের ২০০০টাকার বেশ্যা সবারই একই পরিণতি। সারা বাংলাদেশে বেশ্যার সংখ্যা কত?আমি জানিনা।তবে এটা জানি দুটি প্রধান রাজনৈতিক দলের কাছে বাংলাদেশের ১৬কোটি মানুষও বেশ্যাদের মত।ভোটের আগে এদের চা,বিস্কুট,লুঙ্গি,শাড়ি,রাতের আধাঁরে হাতে কয়েকশ টাকা গুজে দিয়ে ৫টি বছর কিনে নেওয়া যায়।এই ৫টি বছর কয়েকশ দেশপ্রেমিক নেতা নিয়ে বিচার ব্যবস্থাও বিচারকদেরও কেনা যায়।প্রকাশ্যে দিবালোকের খুনীর আসামীর মৃত্যদন্ডের শাস্তি যাবজ্জীবন করা যায় এরপর বিবেকের মেরুদন্ডহীন একজন রাষ্ট্রপতিকে দিয়ে যাবজ্জীবন কারাদন্ডও মাফ করে দেওয়া যায়।ফেলানীর মৃত্যতে ভারত যেখানে দুঃখ প্রকাশ করে সেখানে আমাদের রাষ্ট্রপতি ভারতের আগ্রাসন বিরোধী প্রতিবাদ করতে গিয়ে যাদের হামলায় আবদুর রাজ্জাককে প্রাণ দিতে হয় তাদের ক্ষমা করে।

৩০ টাকা থেকে ২০০০ টাকার বেশ্যাদের কথায় আমাদের মুখ বাকাঁ হয়ে যায় মুখে থুতু আসে কিন্তু আমরা যে যুগ যুগ ধরে রাজনীতিবিদদের বেশ্যা হয়ে আছি তার কি?আরাম আয়েসে থাকা আরবরা কল্লা হারানোর ভয়ে রাস্তায় নেমে আসতে পারে আর আমরা গনতান্ত্রিক দেশে থেকেও পারিনা ।কিন্তু ঠিকই আরবের রাজা-বাদশাহদের কথা দিয়ে ধর্ষন করতে পারি।আরব দেশগুলোতে মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা নাই ঠিক কিন্তু চুরি করলে ,খুন করলে,ধর্ষন করলে বিচার আছে।আমাদের কথা বলার স্বাধীনতা আছে?কিন্তু আমরা কি পেরেছি হাসিনা খালেদাদের আচঁল থেকে বেরিয়ে আসতে? খুনীকে ক্ষমা করার অপরাধে দলমত নির্বিশেষে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে রাষ্ট্রপতির অফিস ঘেরাও করতে?