কম করে ৫০টি ইভটিজিং করে আমি ৫০টি কিশোরীর লাশের মিছিল দেখতে চাই ;আমি শ’খানেক খুন করার আগে মরতে চাইনা

সত্য সন্ধানী আমি
Published : 25 April 2011, 05:28 AM
Updated : 25 April 2011, 05:28 AM

নিম্ম মধ্যবিত্ত পরিবারে আমার জম্ম।দুই ভাই এক বোন।যোগ্যতা থাকা সত্বেও ঘুষের সাথে মানিয়ে নিতে পারেননি বাবা।এক সময় সহজ সরল বাবা ৮৬ সালের দিকে ফার্মেসি দেয় ।যখন যে বাকী চাইত তাকে দিয়ে দিত।ফলাফল বছর খানেকের মধ্যে শেষ হয়ে যায় ফার্মেসি। বাবা চলে যায় কুয়েতে।মোটামুটি সচ্ছলতা আসে সংসারে ।ইরাক কুয়েত যখন যুদ্ধ আগে বাবা ছুটিতে দেশে ছিলেন।যেদিন রিটার্ন টিকেট কনফার্ম করতে যাবেন সেদিন যুদ্ধ শুরু হয়।চরম অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে আমাদের সংসার।আমাদের যতটুকু ক্ষেতের জমি ছিল সব জ্যাঠা দেখাশুনা করত।আমার বাবার চাইতেও সহজ সরল জ্যাঠার সংসার আমাদের জমিগুলোর চাষের উপর নির্ভরশীল ছিল।তাই সেই জমির ফলনের আশাও বাদ।এমন সময়ে মেজ মামা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিল।প্রতিমাসে ২ হাজার টাকা করে দিত।সেই দুই হাজার টাকা দিয়ে আমাদের সংসার চলত।আমার বয়স তখন ৯।আগে সব সময় জেদ করতাম এটা ওটা ছাড়া খাবো না। কিন্তু ঐ বয়সেই বুঝতে পারলাম সংসারে অভাবের কথা।কখনোই জেদ করতাম না এটা খাবনা ঐটা খাবো না।আম্মু আমাকে খাইয়ে দিতে দিতে চোখ মুছত।সেই বয়সেও বুঝতাম ছোট ছেলেটির এমন পরিবর্তনে মায়ের চোখে আনন্দের জল আর ছেলেটিকে ভাল খাওয়াতে না পারার কষ্টের জল একাকার হয়ে আছে।এভাবে চলল অনেকগুলো মাস।

একসময় আবার বাবা প্রবাসী হলেন।এরই মধ্যে বোনটা বড় হতে লাগল।আফু যথেষ্ট সুন্দরী ।গরীবের সুন্দরী বউ সবার ভাবী আর গরীবের সুন্দরী মেয়ে সবার তালতো বোন (বেয়াইন)।সুন্দর হওয়াটা আমাদের সমাজে পাপ।স্কুল যেতে স্কুল থেকে ফিরতে বখাটেদের উৎপাত শুরু হল।কি আর করা,ক্লাস এইটে থাকতেই বোনটার বিয়ে দিতে হল।এরপরও বোনটা দমে যায়নি।এসএসসি,এইচএসসি পর্যন্ত শেষ করেছে।বোনটা নিজে পড়া শোনার স্বপ্ন শেষ হয়েছে তাই দুটি মেয়েকে নিয়ে বোনের স্বপ্নের শেষ নেই।ভাগিনী এবার এসএসসি দিয়েছে।প্রায় স্কুলে যেতে বখাটেদের উৎপাত সহ্য করে।ছোট ভাগিনীটা মাত্র ক্লাস ফাইভে পরে।একদম পুতুলের মত দেখতে।ক্লাস ফোর থেকেই বখাটের উৎপাতের শিকার।ঘরের সবাই ওকে নিয়ে এতটাই চিন্তিত যে আমি প্রায় শংকায় ভুগি যে যে আফু আব্বু আম্মুকে অল্প বয়সে বিয়ে দেওয়ার জন্য প্রায় বকাঝকা করত সেই আফু কোনদিন বখাটেদের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে নিজের মেয়েটিকেই ক্লাস এইটের আগেই বিয়ে দিয়ে দেই।কিংবা কোনদিন আমাকে আমার ভাগিনীর লাশ পত্রিকার পাতায় দেখতে হয়।ছবির নিচে ক্যাপশন থাকবে ইভটিজিংয়ের যন্ত্রনায় আত্মহত্যা করলো ক্লাস ফাইভ/সিক্স/সেভেনের ছাত্রী মিম। যেভাবে এসেছে আজকের দৈনিকে মেধাবী দোলার লাশের খবর এসেছে সেভাবেই হয়ত আসবে আমার ভাগিনীর খবর।

পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে যৌন হয়রানির শিকার ৮ম শ্রেণীর মেধাবী ছাত্রী দোলা খাতুন আত্মহত্যা করেছে। বেনাপোল মরিয়ম মেমোরিয়াল বালিকা বিদ্যালয়ের দোলা খাতুন প্রথম সাময়িক পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে নাজির হোসেন তাকে কটূক্তি করে।মেয়েটি বাড়ি ফিরে পরিবারকে উত্ত্যক্তের বিষয়টি অবহিত করে। নাজিরের মা এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মেয়েটিকে হুমকি দেয় এবং গালাগাল করে। শেষপর্যন্ত ঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় কিশোরী মেয়েটি।-সূত্র আমার দেশ

কয়েকদিন আগে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার ধানদিয়া ইউনিয়নের কৃষ্ণনগর গ্রামের দিনমজুর বাদল আর সারতীর মেয়ে আন্না বিশ্বাসও একই রকম ঘটনায় আত্মহত্যা করে।-সূত্র প্রথম আলো ।

না শুধু দোলা আন্না নয় দিনাজপুরের বিরল উপজেলার কিশোরী শাবনূরও আত্মহত্যা করেছিল।প্রতিটি ঘটনায় একই রকম।বখাটেদের অত্যাচার অতঃপর বিচার চাইতে গেলে পরিবারের সদস্যদের উপর নির্যাতন এবং অত্যাচার এবং নির্যাতন সইতে না পেরে কিশোরী মেয়েগুলো আত্মহত্যা করছে একই কায়দায়।
সারা দেশে গতকালের কিছু চিত্রঃ

মনোহরদী (নরসিংদী) : নরসিংদীর মনোহরদীতে সহকারী প্রধান শিক্ষক শরিফুল ইসলাম ইসমাঈল দশম শ্রেণীর ছাত্রী ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করেছেন।
দক্ষিণ চট্টগ্রাম : লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি এলডিপির অঙ্গসংগঠন গণতান্ত্রিক ওলামা দলের উত্তর সাতকানিয়ার সভাপতি মাদ্রাসার ৪র্থ শ্রেণীর ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করেছে।
শ্রীনগর (মুন্সীগঞ্জ) : প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে বখাটেরা এক স্কুলছাত্রীর বাড়িতে হামলা করেছে।
বরিশাল অফিস :পরীক্ষা শেষে ফেরার পথে হাবিবা নামের এক ছাত্রীকে তারেক ও তার সহযোগীরা হাবিবাকে টেনে-হিঁচড়ে টেম্পো থেকে নামায় এবং শ্লীলতাহানি করে।

চবি প্রতিনিধি : ভাড়া নিয়ে পরিবহন শ্রমিক ও এলাকাবাসীর সঙ্গে সংঘর্ষে ৫ ছাত্র এবং যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করায় ছাত্রলীগ কর্মীদের হাতে এক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। জেলা ভিত্তিক খবরগুলোর সূত্র আমার দেশ

***

আমিনী আর সরকারের কয়েকদিনের যৌথ নাটকে অনেক কিছুই আড়াল হয়ে গেছে মাগনায় দাদাদের এই দেশের অবকাঠামো ব্যবহার;গ্রামীন ব্যাংক নাটক;শেয়ার কেলেংকারি; শেয়ার কেলেংকারি ইস্যু।

প্রস্তাবিত যে নারী নীতিমালা নিয়ে হরতাল,ভাঙচুর,কিংবা সরকারের সফল নাটকের পুতুল ২০টাকার হুজুরদের উপর পুলিশ হায়েনার মত ঝাপিঁয়ে পড়েছিল তাও থেমে গেছে। প্রতিদিন গড়ে ১০জনের বেশী খুন হচ্ছে;ইভটিজিংয়ের শিকার হচ্ছে নারীরা;যৌতুকের কারণে আত্মহত্যার স্বীকার হচ্ছে মেয়েরা।বিগত যে কোন সময়ের চাইতে সন্ত্রাস,খুন ধর্ষন,গুম,নারী নির্যাতন অতীতের যে কোন সময়ের চাইতে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে কিন্তু আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ২দিন আগে বলেছেন অতীতের যে কোন সময়ের চাইতে দেশের আইন শৃঙ্খলা ভাল।দেশের মানুষ অনেক শান্তিতে আছে ।প্রায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে সুর মেলায় সরকারী মন্ত্রী এমপি থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রী,আওয়ামী পা চাঠা বুদ্ধিজীবি,সুশীল সমাজের কর্তাবাবুরা।দেশের পরিস্থিতি যদি অতীতের যে কোন সময়ের চাইতে ভাল হত তাহলে আগের তুলনায় খুন,ধর্ষন,হত্যা,রাহাজানী,ছিনতাই,ইভটিজিংয়ের শিকার হয়ে কিশোরীরা কেন আত্মহত্যা করছে?কেন দোলা,আন্না বিশ্বাস,শাবনূররা যৌবনবতী হওয়ার আগেই যৌন হয়রানিতে আত্মহত্যা করছে?কেন আমার ১০ বছরের ভাগিনীকে স্কুলে পাঠিয়ে আমার বোনকে সারাদিন অস্থির থাকতে হয়?কেন আমার বন্ধুকে শেয়ার ব্যবসায় সব হারিয়ে ৫০টাকার গাঁজা দিয়ে সারারাত গাঁজার নেশায় বুদ হয়ে থাকতে হয়?

দুধের শিশু যতক্ষণ না কাধেঁ মা ততক্ষণ সাধরণত বুকের দুধ দেয়না ।তাহলে প্রধানমন্ত্রী থেকে মন্ত্রী এমপি,তথাকথিত নারীবাদীদের পরিবারে সদস্যরা যতক্ষণ পর্যন্ত আক্রান্ত হবেননা ততক্ষণ পর্যন্ত এসব সমস্যার সমাধান শুধু মুখে মুখেই করে যাবে সরকার?পরিস্থিতি বিবেচনায় কোন সন্দেহ নেই ওরা যতক্ষন না আক্রান্ত হবে ততক্ষন পর্যন্ত ওদের ঘুম ভাংবেনা।তাই আমি প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সেসব মন্ত্রী এমপিদের কিশোরী মেয়ে কিংবা নাতনীদের ইভটিজিং করতে চাই;আমিনী গংদেরও কিশোরী মেয়ে কিংবা নাতনিদেরও ইভটিজিং করতে চাই ;হিজড়া বিরোধী দলের নেতা-নেত্রীদের কিশোরী মেয়ে কিংবা নাতনীকেও ইভটিজিং করতে চাই যারা নিজেদের স্বার্থেই আন্দোলন করে ক্ষমতার লোভেই শুধু জনগনকে ব্যবহার করে ।এবং সবাইকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করার মত ইভটিজিং করতে চাই।আমি তাদের বোঝাতে চাই শাবনূর,দোলা,আন্না বিশ্বাসের মায়েদের যন্ত্রনা;আমার ক্লাস ফাইভ পড়ুয়া ভাগিনীর জন্য আমার বোনের অস্থিরতা।

আমি তাদের খুন করতে চাই যাদের প্রশ্রয়ে দেশের কলেজ ভাসির্টিতে ছাত্রলীগ কুকুরের খামারে পরিণত হয়ে নিজেদের মধ্যে কামড়া-কামড়ি করতে গিয়ে সাধরণ ছাত্রদের লাশ ফেলছে।আমি তাদের খুন করতে চাই যাদের কারণে লিমন পা হারিয়েছে।

আমি সেসব হায়েনাদেরও খুন করতে চাই যারা অবুঝ দুটি শিশুর উপর খাবার চুরির অভিযোগে হায়েনার মত ঝাঁপিয়ে পড়েছিল।আমি সেই শকুনকেও খুন করতে চাই যে শকুন ভারতের আগ্রাসন বিরোধী মিছিলে গিয়ে এদেশীয় ভারতের দালালদের হাতে খুন হয়েছিল সেসব খুনী দালালদের ক্ষমাকারী শকুনকে।

আমি ইভটিজিং করার,খুন করার সুযোগ চাই।আমাকে কেউ সুযোগ করে দিবেন?

না হয় প্রকাশ্য ইভটিজিং এবং খুন করার ঘোষনা দেওয়ায় আমার ফাঁসি হওয়ার ব্যবস্থা করে দিবেন কেউ?কসম আমার সৃষ্টিকর্তার আমি হাসতে হাসতে ফাঁসিতে ঝুলতে রাজী আছি।আর কোন দোলা,আন্না,শাবনূরের লাশ দেখার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা আমার নেই।