প্রতিশোধ নিলেন তোফায়েল

মো:সালেহীন
Published : 14 Sept 2012, 10:36 AM
Updated : 14 Sept 2012, 10:36 AM

বাংলাদেশর যে কয়জন প্রবীণ রাজনীতিবিদ আছেন তাদের মধ্যে তোফায়েল সাহেব একজন।তৎকালিন যে কয়জন নেতা শেখ মুজিবরের সাথে তাদের রাজনৈতিক জীবন পরিচালনা করতে পেরেছেন তাদের মধ্যে তোফায়েল অন্যতম।তিনিই শেখ মুজিবরকে বঙ্গবন্ধু উপাধি প্রদান করেন।

তোফায়েল আহমেদের জন্ম ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দের ২২ অক্টোবর ভোলার কোড়ালিয়া গ্রামে। পিতা মৌলভী আজহার আলী, মা ফাতেমা বেগম। ১৯৬০ সালে ভোলা সরকারি হাই স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন। বরিশাল ব্রজমোহন কলেজ থেকে ১৯৬২ সালে আইএসসি পাস করেন। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মৃত্তিকা বিজ্ঞানে এমএসসি। ১৯৬৪ সালে দনিয়াস্থ আলহাজ মফিজুল হক তালুকদারের জ্যেষ্ঠ কন্যা আনোয়ারা বেগমের সঙ্গে তিনি পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হন।

১৯৬৬-৬৭ মেয়াদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইকবাল হলের (বর্তমানে সার্জেন্ট জহুরুল হক হল) নির্বাচিত সহ-সভাপতি (ভিপি) ছিলেন। ১৯৬৮-৬৯-এ গণজাগরণ ও ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন তিনি ডাকসুর ভিপি হিসেবে সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে জাতীয় পরিষদের নির্বাচনে অংশ নিয়ে জয় লাভ করেন। ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে মুক্তিযুদ্ধে তিনি মুজিব বাহিনীর অঞ্চল ভিত্তিক দায়িত্বপ্রাপ্ত চার প্রধানের একজন ছিলেন।

১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ তারিখে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পরবর্তীতে ১৪ জানুয়ারী ১৯৭২ তারিখে প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায় বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক সচিবের দায়িত্ব লাভ করেন।

তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসাবে ১৯৭৩, ১৯৮৬, ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০৮ খ্রিস্টাব্দের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয় লাভ করেন। ১৯৯৬ সালের ২৩ জুন তিনি শেখ হাসিনা সরকারের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রীর দায়িত্ব প্রাপ্ত হন। তিনি দীর্ঘদিন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

তোফায়েল সাহেবের রয়েছে একটি বর্নাঢ্য রাজনৈতিক জীবন।কিন্তু সেই তোফায়েল সাহেবের আজ একি দশা?তিনি কেনো আওয়ামী লীগের মধ্যে এত উপেক্ষিত?এর কারন বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক সংস্পর্শে থাকা তোফায়েল ২০০৭ সালে জরুরি অবস্থা জারির পর দলে সংস্কারের দাবি তুলে কর্মী-সমর্থকদের সমালোচনার মুখে পড়ে যান ।তিনি ছিলেন তৎকালিন সংস্কারকারীদের মধ্যে অন্যতম।

আর তাই ২০০৭ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে তোফায়েলের ঠাই হলো না কোনো জায়গায়।সে হতে থাকলো দলের মধ্যে সবচেয়ে উপেক্ষিত ব্যক্তি।একজন প্রবীণ নেতা হয়েও সে দলের কোনো ক্ষেত্রেই কোনো ভুমিকা পালন করতে পারছেন না ।

শেখ হাসিনা ২০০৭ সালে ক্ষমতায় আসর পর এই নিয়ে চারবার মন্ত্রিসভা পরিবর্ধন করেন।তিনি প্রথমে নুতন দের দিয়ে মন্ত্রিসভা গঠন করে দেশ পরিচালনা করেন। কিন্তু শেখ হাসিনা শেষ পর্যন্ত আর তাদের দিয়ে দেশ চালাতে পারছেন না।তাই তিনি শেষ পর্যায়ে এসে পুরাতনদের কে মন্ত্রিসভায় নিয়ে আসেন। তাদের মধ্যে তোফায়েল আহমেদ কেও নিয়ে আসার জন্য শেখ হাসিনা তৎপর হলেন।

কিন্তু যে তোফায়েল এতদিন দলের মধ্যে থেকে সবচেয়ে উপেক্ষিত ছিলেন তার কি কোনো মান অভিমান নেই।আর তাই যখন শেখ হাসিনা মন্ত্রিসভায় শপথ নেবার জন্য তোফায়েল সাহেবকে ডাকলেন । তিনি বুঝিয়ে দিলেন শেখ হাসিনাকে ,তোমরা এতদিন আমাকে উপেক্ষা করেছো আজ আমার সময় এসেছে তোমাদের উপর আমার প্রতিশোধ নেবার আমি কি বসে থাকতে পারি???

ধন্যবাদ তোফায়েল সাহেব এত সুন্দর একটি সিদ্ধান্ত নেবার জন্য।

***
জীবনী তথ্যসূত্র: ইউকিপিডিয়া