বাথ বিশ্ববিদ্যালয়
ইংল্যান্ডের বাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানীরা একটি নতুন গবেষণায় দেখিয়েছেন যে, নারীরা সোশ্যাল নেটওয়ার্কিংয়ে পুরুষদের চেয়ে বেশী আসক্ত হয়ে পড়ছে। তারাও দেখেছেন যে, ফেসবুক ও টুইটারের মত সাইটগুলোতে নারীদের প্রাধান্য অনেক বেশী। একটি অনুশীলনের মাধ্যমে ছয়টি ভিন্ন ভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের প্রায় ৫০০ ছাত্র-ছাত্রীর ওয়েব ক্রিয়াকলাপের তালিকা তৈরি করে এই ফল পাওয়া যায়। অনুশীলনটি ১০ বছর আগের অনুরূপ অনুশীলনের পুনরাবৃত্তি মাত্র। বিশ্ববিদ্যালয়টির মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপকরা দেখতে পান যে, ফেইসবুকের মত সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটগুলোর উন্মেষকাল থেকে নারী ও পুরুষের ইন্টারনেট ব্যবহারের ধরণে ফারাকটা বেড়েই চলেছে এবং পার্থক্যগুলো খুবই স্পষ্টতর হয়ে উঠছে।
ড. রিচার্ড জয়নার, যিনি Gender, Internet Experience, Internet Identification and Internet Anxiety: A ten year follow up নামক গবেষণা পত্রটির প্রধান লেখক, এর মতে গবেষণার ফল এটাই নির্দেশ করছে যে, ব্যাপক সমাজে ও ইন্টারনেট ব্যবহারে নারী-পুরুষের মধ্যে পার্থক্য দূরীভূত হওয়ার বদলে তা ক্রমেই বেড়ে যাচ্ছে। আগের বারের গবেষণায় যোগাযোগের জন্য ইন্টারনেট ব্যবহারে লিঙ্গভিত্তিক ফারাকটি ছিল না, কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটগুলো ছেলেদের চেয়ে মেয়েরাই বেশী ব্যবহার করছে। তিনি আরও বলেন যে, ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে এই ফারাকটি সমাজের বিস্তৃত ক্ষেত্রে ফারাকেরই প্রতিফলন। তবে বস্তুনিষ্ঠ ও সঠিক ফলাফলের জন্য তিনি এ নিয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন আছে বলে মনে করেন। (১)
পিউ রিসার্চ সেন্টার
অন্যদিকে ওয়াশিংটনের পিউ রিসার্চ সেন্টারের গবেষণাতেও একই ধরণের ফলাফল দেখা যায়। তাদের মতে সোশ্যাল নেটওয়ার্কের ব্যবহারকারীদের মধ্যে ৫৮ শতাংশই নারী। ২০০৮ থেকে ২০১০-এর মধ্যে ফেসবুক ও টুইটারের মত নেটওয়ার্কে সদস্য সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে ৮৫০ মিলিয়নে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু এ সময়ের মধ্যে পুরুষ সদস্যদের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে ৩ শতাংশ কমেছে। পুরুষদেরকে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিঙয়ে আগ্রহী করে তোলার জন্য কি করা যায় বা কি করা দরকার তা নিয়েও সাইগুলোও বিশেষভাবে ভাবছে।
কেইথ হ্যাম্পটন রুটজারস বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর এবং এই গবেষণা পত্রের প্রধান লেখক। তিনি ক্রিশ্চিয়ান সাইন্স মনিটরকে বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন পুরুষেরা সোশ্যাল মেডিয়াকে প্রকাশের বাহন হিসেবে গ্রহণ করতে অন্তরগতভাবেই কম আগ্রহী বা প্রবণ। তিনি আরও বলেন, নারীরা ঐতিহাসিকভাবেই সম্পর্ক নির্মাণ ও সংরক্ষণের কাজটি করে এসেছে। (২)
ইনফরমেশন ইজ বিউটিফুল
ব্রায়ান সলিসের গবেষণা মতে, মেয়েরা সোশ্যাল নেটওয়ার্কিংয়ে ছেলেদের চেয়ে বেশী আকৃষ্ট হচ্ছে ও এরকম সব সাইটে তাদের কর্ম তৎপরতাই বেশী। অক্টোবর ২০০৯ এ সলিস দেখতে পান যে, একমাত্র ডিগ'য়েই ছেলেদের প্রাধান্য থাকলেও (৬৪%) অন্যসব সাইট যেমন ফ্রেন্ডফিড (৫৫%), ফ্লিকার (৫৫%), ফেসবুক (৫৭%), টুইটার (৫৭%), মাইস্পেস (৬৪%), ট্যাগড (৬৪%) এর মত সাইটগুলো রীতিমত নারীরাজ্য হয়ে উঠেছে। তবে লিংকডিন বা ইউটিউবের মত সাইটগুলোত ছেলে ও মেয়েদের সমান দখলে।
সলিসের এই গবেষণার ফল 'ইনফরমেশন ইজ বিউটিফুল' থেকে নেয়া হয়েছে। তবে এই সাইটটি অন্য সূত্র থেকে তথ্য নিয়ে ২০১২-এর মে মাসে অবস্থার সমসাময়িক চিত্র তুলে ধরে। এতে ছেলে ও মেয়েদের প্রাধান্যের ক্ষেত্রে সামান্য রদবদল হলেও ফেসবুক (৫৮%), টুইটার (৬২%), মাইস্পেস (৬২%), ট্যাগড (৬৬%), পিনটারেস্ট (৭২%) এর মত জনপ্রিয় সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটগুলোতে মেয়েদের প্রাধান্য বেড়েই চলেছে। ফেইসবুকে মেয়ে ভিসিটরের সংখ্যা ছেলেদের চেয়ে প্রতিমাসে ১৫৫ মিলিয়ন এবং টুইটারে ৪০ মিলিয়ন বেশী। সমস্ত সাইটের উপাত্ত হিসেবে এনে দেখানও হয়েছে যে, মাসিক মেয়ে ভিসিটরের সংখ্যা ছেলে ভিসিটরের চেয়ে ৯০ মিলিয়ন বেশী। (৩)
*******
(১) তথ্যসূত্র:
Women 'more attracted to social networking sites'
By Emma Barnett, Digital Media Editor
1:11PM BST 25 Jun 2012
The Daily Telegraph
(২) তথ্যসূত্র:
Is social media 'too female'? Women make up 58 per cent of all users as networking sites push to attract more me
By Christine Show
23:02 GMT 1 April 2012
Mail Online
(৩) তথ্যসূত্র:
Why women dominate social networking
By Chris Matyszczyk
October 4, 2009 12:27 PM PDT
CNET News
Chicks Rule?
Information Is Beautiful