আদি কাল থেকেই মানুষ মহৎ জীবনের নানা চিত্রকল্প তৈরি করে চলেছে, এবং প্রতিটি আদর্শ জীবনের জন্য নীতিও নির্ধারণ করা হচ্ছে।
একটি মডেল হল সন্ন্যাস। সন্ন্যাসী বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মত ও সামাজিক পরিমণ্ডলে অনেকটাই নিষ্ক্রিয়। তিনি কারও দুঃখ বা যন্ত্রণার কারণ হন না, আবার সকলের সাথে শক্ত বন্ধনে আবদ্ধ হন না। তিনি দুঃখের জগতে আরও দুঃখের উৎস না হয়ে দুঃখশূণ্যভাবে আনন্দচিত্তে জীবন পার করে দেন। তিনি কারও সাথে নিজে শত্রুতা করেন না, আবার শত্রুর আচরণে বিচলিতও হন না এবং একই সাথে শত্রু থেকে দূরে থাকতেই পছন্দ করেন।
আর একটি মহৎ জীবনের আদর্শ খুঁজে পাওয়া যায় যিশুর শিক্ষার মধ্যে। সন্ন্যাস জীবনের বিপরীতে এটিকে আমরা বলতে পারি প্রেমের জীবন। এখানে পাওয়া যায় অত্যাচারীর সাথে সক্রিয় সম্পর্কে আবদ্ধ হবার তাগিদ। শত্রুকে ভালবাস, এক গালে চড় দিলে আরেক গাল পেতে দাও, জামাটি কেড়ে নিতে আসলে কোটটিও দিয়ে দাও, বোঝা এক মাইল বয়ে নিতে বাধ্য করলে তা দুই মাইল নিয়ে দাও – এ রকম শক্তিমান সব শিক্ষা। কিন্তু এর ভবিষ্যৎ কী? চিরকালই কি আমরা কেবল অত্যাচারীদের দ্বারা দলিত হয়ে আরও দলনের দিকে নিজেদের ঠেলে দিতে থাকব? অত্যাচারীরা রাজত্ব করবে আর মহৎ মানুষেরা শুধুই সয়ে যাবে! অনাগত সকল কালের জন্যই?
সংসার দুঃখের আগাছার উর্বর জমিন, কাজেই অত্যাচারীদের কাছে জগত সমর্পণ করে সন্ন্যাসী হলাম। ক্ষমতা অত্যাচারের উৎস ও বীরেরা অত্যাচারের অবতার, কাজেই সে পথে না গিয়ে বরং সমতালে অত্যাচার বরণ করে গেলাম! মহৎ জীবনের আর কি কোনো চিত্রকল্প নেই? যে জীবনে সন্ন্যাস, প্রেম একাকার ভাবে মিশে থেকেও আত্মরক্ষার বা ন্যায় বিচারের পথ দেখাতে পারে? নাকি এখানেই সব শেষ?
……………….
পরের অংশগুলো
সুবর্ণ বিধির তৃতীয় রূপ – অংশ ২
সুবর্ণ বিধির তৃতীয় রূপ – অংশ ৩
সুবর্ণ বিধির তৃতীয় রূপ – অংশ ৪
সুবর্ণ বিধির তৃতীয় রূপ – শেষ অংশ
আগের ব্লগ
ধর্ম ও সুবর্ণ বিধি