আ-কার লাগিয়ে দিলেই কোনো কোনো বাংলা শব্দ জেন্ডারে ফেমিনিন হয়। যেমন: সরল থেকে সরলা, অপরূপ থেকে অপরূপা। তাই বলে খোপের স্ত্রীলিঙ্গ কিন্তু খোপা নয়। শব্দার্থ বিচারে বেমিলটা যতই হোক, মজার বিষয় হচ্ছে, খোপের সাথে পুরুষের মস্তিষ্কের ও খোপার সাথে নারীর মস্তিষ্কের গড়নের নাকি বেজায় মিল আছে।
খোপ শব্দটা কানে এলেই মুরগির খোপ, কইতরের খোপ থেকে শুরু করে মৌমাছিদের চাক শুদ্ধ সব মনে পড়ে যায়। মৌমাছিরা হেক্সাগোনাল খোপ করে করে ঘর তৈরি করে আর তাতে জমা করে মধু। তাদের সমাজে পুরুষেরা সব শ্রমিক বলেই হয়তো তারা মগজ গুণে—বা দোষে, যাই বলেন—খোপ তৈরি করে। শ্রমিকরা যদি নারী হতো তবে মধু জমানোর আধার হিসেবে, কে জানে, হয়তো তারা চুলের বেণী ও কুণ্ডলায়িতবেণী খোপার মতো করে কিছু তৈরি করতো।
সে যাই হোক, কাজের কথা হচ্ছে, পুরুষ মানুষের মস্তিষ্ক কতকগুলো খোপের সমাহার। অন্যদিকে, নারী মানুষের মস্তিষ্ক খোপার মতো কুণ্ডলায়িত একটা সমগ্র। পুরুষের খোপগুলো ছন্নছাড়া ড্যাম কেয়ারে একটা অন্যগুলোকে তেমন আমলে নেয় না। আর নারীর খোপাটির যেকোনো অংশ বাকী অংশের সাথে জড়িয়ে থাকে যত্নশীলা আবেগের সম্পর্কে।
রিলেশন যেন নারীর মস্তিষ্কে বুনে রাখা হয়েছে বেণী-কবরীর আদলে; তাই যত্নশীলতাই কেবল নয়, মাল্টিটাস্কিংও তার স্বাভাবিক দক্ষতা। আর পুরুষের মস্তিষ্কে খোদাই হয়ে আছে ইন্ডিপেন্ডেন্স, বাক্স আকারে; এর আরেক ফল হয়েছে এই যে, সে অন্য-সর্ব-ভোলা গভীর মনোযোগে সিঙ্গলটাস্কিংয়েই পারদর্শী। বেচারা পুরুষ! সব কিছুকে নিজের মতো করে গড়ার তালে সে কম্পিউটারকে সিঙ্গলটাস্কিং করেই শুরু করেছিল। পরে সেটাকে মাল্টিটাস্কিং করে তুললেও নিজে রয়ে গেল সিঙ্গেলটাস্কিং হয়েই।
খোপা নিয়ে কবির মাতামাতির মাঝেও আপনি পুরুষ মনের দোলচাল ধরে ফেলতে পারবেন। অধরা প্রিয়ার মন ভজানোর নিমিত্ত পুরুষের মুখে যতই, ‘দেব খোঁপায় তারার ফুল’ গীতের ফুলঝুড়ি থাকুক না কেন, নিজের খোপ-খোপ মস্তিষ্কাংশের খোপবদ্ধ চিন্তার ফলশ্রুতিতে আসমানের তারা দূরে থাক, জমিনের দু’খানা ফুলের আশাও খুব একটা থাকে না। স্বপ্নে বিভোরা ধরা প্রিয়াকে পলকেই শুনতে হয়, খোপার বাঁধনে ফেঁসে যাওয়া পুরুষ মনের নতুন গীত, ‘আলগা কর গো খোঁপার বাঁধন, দিল ওহি মেরা ফাস গ্যায়ি।’
ইদানিং নিয়োজিত দপ্তরের জনৈকা বিলেতী কর্মকর্ত্রীকে যখন নারীর ‘রিলেশন এন্ড কেয়ার’ ও পুরুষের ‘রিলেশন এন্ড প্রফিট’ তত্ত্ব দুটো বুঝানোর চেষ্টা করছিলাম, বলছিলাম দেয়ার ইজ এ সিগনিফিকেন্ট ডিফারেন্স বিটুইন মাসকুলিন সাইকোলজি এন্ড ফেমিনিন সাইকোলজি, নারী দিতেই যেন বেশী পছন্দ করে আর পুরুষ যেন পছন্দ করে সব তাতে শুধু নিতেই—তখন তিনি বেশ আগ্রহের সাথে ইউটিউব থেকে একটা ভিডিও খুঁজে বের করে কম্পিউটারটা এগিয়ে দিয়ে দেখতে অনুরোধ করলেন।
ভিডিওটি নিচে সেঁটে দিলাম। মোটে দু’ঘন্টার ভিডিও, কিন্তু ফজিলতে তার মূল্য সারা জীবনের সমান হলে হতেও পারে। পুরো বিষয়টা আমার কাছে নতুন। তথ্যের যথার্থতা নিয়ে আমার জ্ঞান নেই। তবে ভিডিওটি খুবই মজার। তাই শেয়ার করার লোভ সামলানো গেল না।
কাজী শহীদ শওকত বলেছেনঃ
অসাধারণ পোস্ট। একদমই নতুন বিষয়। পড়তেও খুব সুস্বাদু। জঙ্গি জঙ্গি পড়তে পড়তে বিস্বাদে অন্তর কালা হয়ে হয়ে যাচ্ছিলো। আপনি নতুন স্বাদের আঞ্জামটা দিলেন–তাও এবার ঈদের ঠিক আগে। ডিডিওটা দেখা হয়নি এখনো; আছি গ্রামে– স্পিড বড়োই কম নেটের। কিন্তু যে লোভ দেখালেন, লোভ সামলে স্পিডের অপেক্ষায় থাকাও মুশকিল।
অনেক ধন্যবাদ, ভাই।
মোনেম অপু বলেছেনঃ
তোমাকে অনেক ধন্যবাদ, কাজী।
জুলফিকার জুবায়ের বলেছেনঃ
গতকাল হিরো আলমের এন্টি-জেন্ডারকে ‘হিরোইন আলমী’ বলে উল্লেখ করেছি।
– আমি কি ভুল করে ফেললাম! ‘হিরোইন আলমা’ কি বেশি সঠিক ছিল!
আমি ফার্স্ট হতে চেয়েছিলাম, কিন্তু আশাহত হয়ে দেখলাম শওকত ভাই ইতিমধ্যেই প্রথম স্থান দখল করে বসে আছেন। মনের কষ্টটা ভুলেছি ঈদভাবাপন্ন পোস্টটি পড়ে।
কয়েক দিন আগে প্রস্তুতিমূলক ঈদ মোবারক জানিয়েছিলাম। কাল ঈদ, আজ চূড়ান্ত ঈদ মোবারক জানানোর সময় হয়েছে।
মোনেম ভাই, আপনাকে সহ সবাইকে আন্তরিক ☾ ঈদ মোবারক ☽!
মোনেম অপু বলেছেনঃ
আপনাকেও ঈদের শুভেচ্ছা, জুবায়ের।
নিতাই বাবু বলেছেনঃ
যখন একটা পুরুষের খোপ বেড়ে যায়, তখন তাঁর সামনে সুন্দর স্ত্রীর লম্বা কেশের খোপাও ভালো লাগেনা ৷ অসাধারণ চিন্তার পোষ্টখানা দিলেন মহাগুরু আপনি ৷ সত্যিকার অসাধারণ ৷ ধন্যবাদ মহাগুরু, ঈদের শুভেচ্ছা রইল ৷ ভালো থাকবেন আশা করি ৷
মোনেম অপু বলেছেনঃ
নিতাই ভাই, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। ঈদের শুভেচ্ছা আপনার জন্যও।
সুকান্ত কুমার সাহা বলেছেনঃ
পোষ্টটা তাকিয়ে দেখার মত! 😛
জুলফিকার জুবায়ের বলেছেনঃ
সুকান্ত দা
ঈদ মোবারক জানবেন! আপনার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী(!) বাংগাল ভাইয়ের খবর কি? তাকে সর্বশেষ দেখা গেছে ৫ই মে।
গুরু
শিষ্য যদি না পড়ে মন্তব্য করে তবে সেই অপরাধের শাস্তি কি!?
সুকান্ত কুমার সাহা বলেছেনঃ
ঈদ শুভেচ্ছা আপনাকেও! এক প্লেট সেমাই-লাচ্চার অনুরোধ পাঠিয়েছি। দেখবেন!
বাংগাল আমেরিকার নিরাপদ হাউজে বসে সেমাই খাচ্ছেন! তাই এদিকে আপাতত না তাকালেও চলবে! 😛
মোনেম অপু বলেছেনঃ
উল্টো করে বলেন, জুবায়ের: সুকান্ত যদি পড়ে মন্তব্য করে তবে সেই সদকর্মের পুরস্কার কী?
মোনেম অপু বলেছেনঃ
ধন্যবাদ, সুকান্ত।
আবুল কাশেম বলেছেনঃ
দারুণ তথ্যমূলক পোস্ট!!
পোস্টটি পড়ে মনে পড়ে গেল▬ সুকান্ত ভট্টাচার্য’র একটি ছড়া! 😀 😀
মেয়েদের পবদীতে গোলমাল ভারী,
অনেকের নামে তাই দেখি বাড়াবাড়ি;
‘আ’কার অন্ত দিয়ে মহিলা করার
চেষ্টা হাসির। তাই ভূমিকা ছড়ার।
‘গুপ্ত’ ‘গুপ্তা’ হয় মেয়েদের নামে,
দেখেছি অনেক চিঠি, পোস্টকার্ড, খামে।
সে নিয়মে যদি আজ ‘ঘোষ’ হয় ‘ঘোষা’
তা হলে অনেক মেয়ে করবেই গোসা,
‘পালিত’ ‘পালিতা’ হলে ‘পাল’ হবে ‘পালা’
নির্ঘাত বাড়বেই মেয়েদের জ্বালা;
‘মল্লিক’ ‘মল্লিকা’ হলে ‘দাস’ হলে ‘দাসা’
শোনাবে পদবীগুলো অতিশয় খাসা;
‘কর’ যদি ‘করা’ হয়, ‘ধর’ হয় ‘ধরা’
মেয়েরা দেখবে এই পৃথিবীটা- ‘‘সরা’’।
‘নাগ’ যদি ‘নাগা’ হয় ‘সেন’ হয় ‘সেনা’
বড়ই কঠিন হবে মেয়েদের চেনা।। 😛
মোনেম অপু বলেছেনঃ
মন্তব্য ও মজার একটা কবিতা পড়ার সুযোগের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, আবুল কাশেম ভাই। কতদিন যে কবিতা পড়া হয়নি!