পানি শুকিয়ে তলা শক্ত হলে পরে আমরা বলি, এ নদী মরে গেছে। বুড়িগঙ্গার পানি শুকোয়নি। শুকোয়নি যখন, মাটিও নরম রয়েই গিয়েছে। কিন্তু তাই বলে বেঁচে আছে কি? বুড়িগঙ্গা নামে বুড়ি হলেও একসময় ছিল মৎসগর্ভা। ছিল একধরণের ডলফিনও। পাড়ের লোকেরা তাকে শুশুক বলেই ডাকতো। শুশুক তো দূরের কথা, আজ মাছেরও অস্তিত্ব নেই। বুড়ি আজ বুড়ি হয়েছে। সন্তানের অনাদরের চোটে পানি হয়েছে বিবর্ণ বিষাক্ত। গা থেকে বেরুচ্ছে যন্ত্রণাকর গন্ধ। ছবির নদীটি কিন্তু বুড়িগঙ্গার নয়। এ হচ্ছে শীতলক্ষ্যা।
এককালে কবির কত যন্ত্রণাই না ছিল! দেখতে পারেননি একটি ধানের শীষে একটি শিশির বিন্দু। সেকালে কবির কত আনন্দও না ছিল! স্বচক্ষে দেখেছেন, আকাশে হেলান দিয়ে পাহাড় ঘুমায় ওই। একালে যন্ত্রণা পাইনে সরাসরি। দেখা হয় না কোনোকিছুই ঈশ্বরের দেয়া চোখে সরাসরি। দেখতে পাই, দুঃখ পাই—সে শুধু মানবের তৈরি ক্যামেরার দূতিয়ালিতে। এভাবেই দেখতে হয়, মেঘকে বালিশ করে ডাবগাছও যে আকাশে হেলান দিতে জানে।
.