আন্দোলনে নাশকতা, সরকার ও আমরা

হাসান মামুনহাসান মামুন
Published : 30 June 2011, 04:37 PM
Updated : 15 Jan 2015, 12:36 PM

এ নিবন্ধ লেখার দিন রংপুরের মিঠাপুকুরে অবরোধ ভেঙে যাত্রীবাহী বাস চালানোর অপরাধে তাতে পেট্রল বোমা ছুড়ে শিশুসহ বেশ ক'জন যাত্রীকে হত্যা করা হয়েছে। আরও কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। বার্ন ইউনিটে এদের বেশিরভাগ সম্ভবত ধুঁকে ধুঁকে মরবে।

বিএনপির ডাকে টানা অবরোধ চলাকালে প্রতিদিনই এ ধরনের মৃত্যুর খবর আসছে। রয়েছে পুলিশের গুলিতে অবরোধকারীদের মৃত্যুর খবরও। তাদের ওপর স্বভাবতই বেড়েছে 'মামলা-হামলা'র ঘটনা। 'স্বভাবতই' বলছি এ জন্য যে, বিরোধী দলের আন্দোলন চলাকালে সব শাসনামলেই এমন ঘটনা বাড়ে।

অবরোধ বা হরতালে সড়ক-মহাসড়কে চালক, হেলপার ও যাত্রীর ওপর হামলাও বাড়ছে। পণ্যবাহী ট্রাক বা কাভার্ড ভ্যান পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনাও কম নেই। আইন-শৃঙ্খলা, এমনকি সীমান্তরক্ষা বাহিনী দিয়ে পণ্য চলাচল নির্বিঘ্ন করার চেষ্টা থাকলেও এরই মধ্যে চালানো হচ্ছে হামলা। এতে বিশেষত রফতানি পণ্য পরিবহন বিঘ্নিত হয়ে পড়লে আমরা মুশকিলে পড়ব।

এ মুহূর্তে মনটা খুব খারাপ হয়ে আছে মিঠাপুকুরে অন্যদের সঙ্গে একটি শিশু মর্মান্তিকভাবে নিহত হওয়ায়। যে 'নিরপেক্ষ নির্বাচন' হাসিলের জন্য এমনি ধারার আন্দোলন চলছে, সেটি জয়যুক্ত হলেও ওই শিশু তাতে ভোট দিতে যেত না। রাজনৈতিক বিভক্তির শিকার এ দেশে কোনো পক্ষেই ছিল না সে। পুড়ে মরার সময় সে তো বুঝতে পারেনি, কারা কোন উদ্দেশ্য সাধনে তাকে এভাবে হত্যা করছে।

অবরোধকারীরা অবশ্য বলবেন, এটা সরকারি দলের লোকদের কাজ। প্রশাসনের পরিপূর্ণ দলীয়করণের এ সময়টায় আবার সরাসরি দায়ী করা হচ্ছে 'এজেন্সি'কে। বলা হচ্ছে, আন্দোলনকারীদের ওপর দোষ চাপাতে সরকারই ঘটাচ্ছে এসব। এ ধরনের বক্তব্য দেশের একাংশ যে বিশ্বাস করে না, তা কিন্তু নয়। এখানেও বিভক্তি। একাংশ বিশ্বাস করে; অন্য অংশ ধরে নেয়– অবরোধকারীরাই ঘটিয়েছে।

মাঝখানে থাকা লোকজন কী মনে করে, তাতে কার কী যায় আসে? এদের কেউ গোনে না। নির্বাচন এলে এরা যে ভোট বর্জন করে, তাও নয়। নইলে এত ভোট পড়বে কেন এদেশে? নির্বাচনের ভেতর দিয়ে উল্লেখ করার মতো কিছু না পেলেও ভোটাধিকার প্রয়োগে আমাদের কার্পণ্য নেই। এ নিয়ে গর্বও করা হয়। যাহোক, মিঠাপুকুরে পুড়ে মরা শিশুটি এসবের মধ্যে ছিল না।

কিছুদিন আগে রাজধানীর শাহজাহানপুরে গভীর নলকূপে পড়ে গিয়ে মারা যাওয়া একটি শিশুকে নিয়ে আমরা সবাই গভীরভাবে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছিলাম। মিঠাপুকুরে নিহত শিশুটি নিয়ে তেমন কিছু ঘটবে বলে মনে হয় না। কারণ এ নিয়ে দু'পক্ষ বাদানুবাদে লিপ্ত হবে এবং জাতি হয়ে পড়বে বিভক্ত। সরকার পক্ষ এটা ব্যবহারের চেষ্টা চালাবে। বিরোধী পক্ষ এঁটে না উঠলে এমনটিও বলবে– আন্দোলনে এসব ঘটেই থাকে। বলবে, আপনারা করেননি?

'আপনারা'ও আন্দোলনে নাশকতার আশ্রয় নিয়েছিল, সন্দেহ নেই। তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে কম জ্বালাও-পোড়াও হয়নি। এসবের ভেতর দিয়ে দাবি আদায়ে সক্ষম হয়েছিল আন্দোলনকারীরা। তাতে জ্বালাও-পোড়াওটা জায়েজ হয়ে যায়নি। তবে এ সত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যে, এভাবে আন্দোলন করে সফল হওয়া যায়। পরবর্তী নির্বাচনে জেতাও নিশ্চিত হয় তাতে।

বিএনপি সে তালেই আছে। তার সঙ্গে রয়েছে জামায়াতে ইসলামী। এরাই নাকি বেশি নাশকতা করছে বিএনপির ডাকা কর্মসূচিতে। গত বছরের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন প্রতিহত করাটা বিএনপির জন্য বেশি দরকারি ছিল। কিন্তু প্রতিহতকরণে বেশি তৎপর ছিল জামায়াত। এর মধ্য দিয়ে এরা দলের 'মানবতাবিরোধী অপরাধী' নেতাদের বাঁচাতে চেয়েছিল।

বিএনপি রাষ্ট্রক্ষমতায় এসে গেলে জামায়াতের ওই নেতাদের সুবিধা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকেও বলা হচ্ছে এটা। এমনটিও বলা হচ্ছে, যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষার জন্যই বিএনপি অবরোধ-হরতাল করছে। দলটির দাবিতে যেটুকু ন্যায্যতা রয়েছে, তা নাকচের কৌশল হিসেবেই এমনটি বলা হচ্ছে কিনা কে জানে। জামায়াত থেকে বিএনপিকে যথাসম্ভব দূরে রাখতেও বলা হচ্ছে এটা। তাতে কাজ হচ্ছে না। জামায়াত-বিএনপি কাছাকাছি চলে আসছে।

শুরুতে অবরোধ জোরালো না হলেও সেটি হচ্ছে দিনকে দিন। সরকার বলেছিল, রাজধানীতে জনসভা করতে দিলে নাশকতা হতে পারে বা হবে। এরই অংশ হিসেবে বিএনপি নেত্রীকে অবরুদ্ধ করা হল তার কার্যালয়ে। দলটির নয়াপল্টনের কার্যালয়ও তালাবদ্ধ করা হল। ওখানে অবস্থানরত এক নেতাকে নিয়ে ভর্তি করা হল হাসপাতালে। এসব কাণ্ড করে নাশকতা কিন্তু বন্ধ করা গেল না; তা বরং ছড়িয়ে পড়ল দেশের নানা স্থানে।

সবখানে নাশকতা না হলেও যেখানে হচ্ছে, তাতে বোঝা যায়– যে কোনো মূল্যে তারা সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টিতে ব্যগ্র। বিএনপি নেত্রী সম্প্রতি সাত দফা প্রস্তাব বা দাবি পেশ করেছিলেন। সরকারের বৈধতা এক রকম স্বীকার করে নিয়েই তিনি মধ্যবর্তী নির্বাচন প্রশ্নে সংলাপের দাবি জানান। ৫ জানুয়ারি একটি বড় জনসভা অনুষ্ঠানে উদ্যোগী হন খালেদা জিয়া। সরকার দৃশ্যতই তা করতে দেয়নি।

খালেদা জিয়াকে রীতিমতো অবরুদ্ধ করেছে সরকার। আর এর জবাব যেভাবে দেওয়ার, সেভাবেই দিচ্ছে বিএনপি। কখনও কখনও মনে হয়, এর জন্য তারা প্রস্তুত হয়েই ছিল। শুরুতে অবশ্য মনে হচ্ছিল, বিএনপিকে অপ্রস্তুত অবস্থায় রেখেই আন্দোলনে ঠেলে দিয়েছে সরকার। তাদের তৎপরতা আরেক দফা ব্যর্থতায় পর্যবসিত করতেই হয়তো এ কৌশল।

ইজতেমার জন্যও বিএনপি অবরোধে ছাড় দেয়নি, এটা অনেককে বিস্মিত করেছে। ইজতেমা চলাকালেও নাশকতা হয়েছে কোথাও কোথাও। ভাগ্য ভালো যে, এতে অংশগ্রহণকারীদের ওপর কিছু হয়নি। আন্দোলনে নাশকতা এত জোর পাচ্ছে যে, তেমন কিছু ঘটে গেলেও অবাক হওয়া যেত না। রেললাইন উপড়ে ফেলার মতো ঘটনা ঘটছে নতুন করে। ট্রেন ধীরে চালিয়ে এ পরিস্থিতি মোকাবেলা করছে রেলওয়ে।

এটাকে আন্দোলন না বলে অন্য কিছু বলা হলে কাউকে দোষ দেওয়া যাবে না। এও বলা যাবে না, এটা একেবারে নতুন কিছু। অতীতেও এসব হয়েছে; তবে এত মাত্রাযুক্ত ছিল না। ৫ জানুয়ারির আগে অনেক বেশি নাশকতা হয়েছিল আন্দোলনে। নির্দিষ্ট কিছু অঞ্চলকে বলা যায় 'মুক্তাঞ্চল' বানিয়ে ফেলে বিএনপি-জামায়াত কিংবা জামায়াত-বিএনপি। প্রশাসনকে পরে নির্দয়ভাবেই সেসব স্থানে যেয়ে হাজির হতে হয়।

প্রশাসন এখন আরও বেশি করে সরকারের নিয়ন্ত্রণে। যে কোনো ধরনের আন্দোলন দমনে একে আরও কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে পারবে সরকার। সেটি করা হবে, সন্দেহ নেই। অব্যাহত অবরোধে সরকারকে কাবু করতে না পারলে বিএনপি-জামায়াতকে আরও 'হামলা-মামলা' মোকাবেলা করতে হবে। আর সরকার তাতে আরও বেশ কিছুটা সময় টিকে থাকার শক্তি অর্জন করবে।

৫ জানুয়ারি কিছু শর্তসাপেক্ষে বিএনপিকে একটা জনসভা করতে দিলে কী এমন হত, তা বুঝে আসছে না এখনও। কিছুদিন চালাকি করে ঠেকিয়ে রেখে শেষ মুহূর্তে সভার অনুমতি দেওয়া হলে দলটি লোক জোগাড় করতে পারত কম। আর বেশি লোক হলেই বা কী? গত এক বছরে দেশের নানা স্থানে বড় জনসভা কি করেনি বিএনপি? সেগুলোয় জ্বালাময়ী বক্তব্য কি কম দিয়েছেন খালেদা জিয়া?

মনে হয় না– লোকজন নিয়ে হেফাজতে ইসলামের মতো তিনি রাস্তায় বসে যেতেন। এত সহজে মধ্যবর্তী নির্বাচন আদায় করা যাবে বলে নিশ্চয়ই মনে করেন না বেগম জিয়া। দলকে বড় রকম দমন-পীড়নের মুখে ফেলতেও বোধহয় চাইবেন না তিনি। তার দলটি যে অত সংগঠিত নয়, সেটা তিনি জানেন। জানেন, জামায়াতের অবস্থাও আগের মতো নেই। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও নেই বিএনপির সমর্থনে। বাংলাদেশের গণতন্ত্র প্রশ্নে তারাও বিভক্ত।

এখানে 'নির্বাচিত' অবস্থায় যে সরকার রয়েছে, তার সঙ্গে কাজ করতে এদের কারও সমস্যা হওয়ার কথা নয়। নির্ভেজাল স্বৈরতান্ত্রিক সরকারের সঙ্গেও তারা কাজ করেন। ব্যবসা করেন চুটিয়ে। সমস্যাটা উত্থিত হচ্ছে আসলে দেশের ভেতর থেকে। একটা মানসম্মত নির্বাচন হয়নি বলে সরকারের ভেতরেও অস্বস্তি রয়েছে। জনগণও অপমানিত বোধ করছে ভেবে যে, ভোটটাও ঠিকমতো দিতে পারলাম না! গণতান্ত্রিক অধিকার বলে তো আছে ওই নির্বাচনটুকু। দুটি শাসক দলের কপাল ভালো যে, সিংহভাগ মানুষ পাঁচ বছর পরপর একটা 'সুষ্ঠু নির্বাচন' পেয়েই সন্তুষ্ট, সেটি অর্থবহ কোনো পরিবর্তন আনতে না পারলেও। ঠিক এ কারণে নির্বাচনটি তাদের কাছে আবার গুরুত্বপূর্ণ।

আর বিএনপি সমর্থকরা তো মনেই করে, ঠিকঠাক নির্বাচন হলে বিএনপি ক্ষমতায় এসে যেত। বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থকরা তাহলে অনেক ভালো থাকতেন এখন। তারা তো সেই ওয়ান-ইলেভেন থেকেই রাষ্ট্রক্ষমতার বাইরে। বেশিদিন ক্ষমতার বাইরে থাকার অভ্যাস নেই বলেও এদের মধ্যে অস্থিরতা বেশি। তাদের কর্মীরাও যে নাশকতা করছে, এতে প্রকাশ পাচ্ছে সেটাই। আর জামায়াতে কাজ করছে হতাশা। এটাও নাশকতার দিকে বেশি করে ঠেলে দিচ্ছে তাদের।

আন্দোলন 'জনসম্পৃক্ত' হবে কী– এতে দলের লোকদেরও ঠিকমতো নামাতে পারছেন না বেগম জিয়া। নেতাদের রাস্তায় নামতেই হবে, এমন নয়। কিন্তু তারা কি যূথবদ্ধভাবে আছেন খালেদা জিয়ার সঙ্গে? সরকার যে আচরণ করছে তার সঙ্গে, এর প্রতিবাদও কি তারা করতে পারছেন সক্রিয়ভাবে? দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব জাতীয় প্রেসক্লাবে আশ্রয় নিয়ে যেভাবে গ্রেপ্তার এড়াতে চাইলেন, তাতে একটু অবাক হতে হয়।

এর মধ্যে বড় ঘটনা হল সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও বেগম জিয়ার উপদেষ্টা রিয়াজ রহমান আক্রান্ত হওয়া। এ নিয়েও দু'রকম মত পাওয়া যাবে বা যাচ্ছে। পাল্টাপাল্টি হবে। এ ধরনের ঘটনায় পরিস্থিতি ঘোলাটে হবে আরও। এতে বিএনপি বা তার নেত্রী কোনো ফায়দা পাবেন কী? ফায়দা পেতে হলে দেশে-বিদেশে দৃষ্টি আকর্ষণ করে, এমন আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

রিয়াজ রহমানের গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় পশ্চিমা বিশ্ব বাংলাদেশের বিষয়ে সচকিত হয়েছে বটে। তবে তারা সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করবে না– দেশে তেমন পরিস্থিতি সৃষ্টি না হলে। বিএনপি কি 'তেমন পরিস্থিতি' সৃষ্টি করতে পারবে? এমনকি আরও নাশকতা করে? জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে চলার ব্যাপারেও কিন্তু দেশ-বিদেশের নানা মহলে আপত্তি রয়েছে।

সরকারের মুড দেখে বোঝা যাচ্ছে, নেহায়েত বাধ্য না হলে কোনো ধরনের সংলাপে তারা যাবেন না। তাই বাধ্য করার মতো আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে বিএনপিকে। দুর্বলভাবে নির্বাচিত সরকারটি দেশ চালাতে ব্যর্থ হলে সেটি করা সহজ হত বিএনপির পক্ষে। কিন্তু সরকার তো দেশ পরিচালনায় ব্যর্থ নয়। হয়তো খারাপভাবে চালাচ্ছে; কিন্তু সব ক্ষেত্রে নয়। ঠিকমতো নির্বাচিত সরকারও এভাবেই দেশ চালায়। তার মনে হয়তো একটা জোর থাকে, সেটা বর্তমান সরকারের নেই। এটা বোঝা যাচ্ছে তার আচরণে। কিন্তু সেটাই যথেষ্ট নয় তাকে মধ্যবর্তী নির্বাচনে বাধ্য করার ক্ষেত্রে। এ বিষয়ে ব্যাপক মানুষের উৎসাহ এবং একই সঙ্গে বিশ্বাস উৎপাদনের জন্যও সময় দিতে হবে না-কি? বিচ্ছিন্ন-বিক্ষিপ্ত আন্দোলন কি সে প্রক্রিয়াও ব্যাহত করছে না?

দলবাজির বাইরে থাকা মানুষের ভেতর থেকে বলতে চাই, শুধু একটা 'গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে' আমার উৎসাহ নেই। সেটা হয়তো বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের ক্ষমতায় ফিরে আসার পথ করে দেবে, কিন্তু তাতে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে না। সেটা ভিন্ন বিষয়। এর জন্য দরকার প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রগুলোয় সংস্কারের কর্মসূচি, যাতে কোনো পক্ষেরই কোনো রকম আগ্রহ নেই।

আগ্রহ কেবল কৌশলে পাওয়া রাষ্ট্রক্ষমতা ধরে রাখা আর যে কোনো মূল্যে ওটা ফিরে পাওয়া নিয়ে। এটাকে উভয় পক্ষই 'যুদ্ধ' বলে অভিহিত করে মাঝে মাঝে এবং অন্যদের ডেকে বলে– এ ক্ষেত্রে মধ্যপন্থী হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তা নেই কিনা জানি না, তবে অবোধ শিশুর জীবনও দেখছি এর মধ্যে অনিরাপদ।

অর্থনীতিও আক্রান্ত হচ্ছে অব্যাহত অবরোধে। কিন্তু কতদিন এটা চালিয়ে যেতে পারবেন বেগম জিয়া? যতদিন তাকে অবরুদ্ধ রাখা হবে, ততদিন?

সরকারকেও ভেবে দেখতে হবে, খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ রাখাটা তার প্রতি সমর্থন না হলেও সহানূভূতি বাড়াচ্ছে কিনা। সরকারের প্রতিও কি বাড়াচ্ছে না বিরূপ মনোভাব?

হাসান মামুন: সাংবাদিক, কলামিস্ট।