কী অবাক কাণ্ড! বিরোধী দল ফের সংসদে যাবে না বলে ফের ঠিক করে ফেলল! এদ্দিন পর সংসদে যাওয়ার মতলব নিয়ে তাদের বিরোধীরা যা বলে চলেছিল তাকেই সত্য বলে সন্দেহ করা আমার মত বেকুবের পক্ষেও এখন পানির মত। টাকা-কড়ির মূল্য আছে – তা না হয় বুঝলাম। কিন্তু তার সাথে পাশ-মতলব হিসেবে সংসদ 'গরম' করে তোলার মধ্যে কী মাজেজা ছিল তা তো বুঝলাম না! চলো চলো ঢাকা চলো বলে ঢাকা তো গেলাম। গিয়ে ভদ্র ভাষার বক্তৃতা শুনে কানে শান্তিও পেলাম। আরও শোনা গেল, 'অতীত থেকে শিক্ষা নেব' এমন মহৎজনোচিত মহৎ আশ্বাস। আমরা যখন দিক খুইয়ে পথে পথে ঘুরছি তখন তোমাদের বিশ্বাসের ঝিলিক দেখে মনে হয়েছিল, তোমরা শেষে দিকের সন্ধান পেয়ে গেলে বুঝি!
কিন্তু ওমা! সংসদে গিয়ে কই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবীতে সরকারকে কষে বেঁধে ফেলবা বলে এক বুক আশা নিয়ে গরম গরম কথা হজম করার পরও যখন দুরুদুরু বুকে দড়িদড়া দেখব বলে বসেছিলাম, তখনই দেখি বর্জনের শেলে বুক এফোর-ওফোর। এই যদি ছিল তব মনে তবে জনগণের তরে গরম কথার ঠাকুরাণীর মতো না হয়ে কড়িমোহমুক্ত সন্ন্যাসীর মত হলে ক্ষতি কী হতো? যে কালে কড়ির আকালে অর্থমন্ত্রীর নাভিশ্বাস উঠেছে সেকালে খরচাটা কম হলে আর যাই হোক দুর্মুখের কামচোরের কড়িভক্তির খোটা থেকে গা তো রক্ষা হতো।
ইস! দেখি উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপিয়ে কী বাহারি যুক্তি! বালখিল্যতা বলে কথা আছে জানি। কিন্তু তার এমন খাপে-খাপ উদাহরণ নবযুগের আসন্ন আবির্ভাবের সম্ভাব্য কালে এভাবে দেখতে হবে তা তো জানতাম না। নবযুগ আসন্নপ্রায় – এ শুভসংবাদ সম্প্রচারে আমাদের কোন এক নবাগত বন্ধুর (জনাব আমীন কাদীর) ধুন্ধুমার ভ্যারেণ্ডার মাতমে মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে আমিসহ আমরা সবাই যখন তার মুখে ফুল-চন্দন দিয়েই চলেছিলাম তখনই ভগ্নপদ যুক্তির সাক্ষাৎ পদাঘাতে আমারা ধূলিধূসর অবস্থায় অকস্মাৎ কুপোকাৎ।