এ লজ্জা জাতি কোথায় রাখবে?

আবদুর রহমান নাঈম
Published : 18 March 2017, 03:14 AM
Updated : 18 March 2017, 03:14 AM

জাতির সূর্য সন্তান মুক্তিযোদ্ধারা যদি দিনমজুর, রিক্সাচালক, ভিক্ষুক হয়ে দিনযাপন করে তবে স্বাধীনতার মূল্য কি? ৭১-এ যখন মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল তখন স্বাধীন সার্বভৌম দেশে ভালো থাকার স্বপ্নই দেখেছিল। বর্তমান সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের বেতন-ভাতাবৃদ্ধি সহ কল্যানমূলক অনেক পদক্ষেপ নিয়েছেন যা সত্যিই প্রশংসনীয়। কিন্তু সে পদক্ষেপের আওতায় কি আছে জাতির সকল সূর্যসন্তানরা?

স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদদের পরিবারের জন্য কি করা হয়েছে? যদি কিছু করা হয় তবে বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের ছেলে কেন দিনমজুর? কোটা পদ্ধতি ছাড়া হয়তো কিছুই নেই। বর্তমানে যে সকল মুক্তিযোদ্ধারা বেঁচে আছেন তারা সবাই বৃদ্ধ প্রায়, 'শ্রমের বিনিমনে খাদ্য' এটা হয়তো এখন তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। যে সকল মুক্তিযোদ্ধারা ভাতা পাচ্ছেন তাঁরা হয়তো স্বাচ্ছন্দে দিনযাপন করতে পারছেন কিন্তু যারা বিভিন্ন কারণে মুক্তিযোদ্ধা তালিকা হতে বাদ পরেছেন তারা? এদেশে রাজাকারের নাম মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় উঠে কিন্তু সঠিক মুক্তিযোদ্ধার নামও বাদ পরে।

মুক্তিযোদ্ধা মুরাদ আলী একজন ভিক্ষুক, যে হাতে অস্ত্র ধরে দেশকে স্বাধীন করেছিলেন সে হাত আজ অন্যের কাছে সাহায্য প্রার্থী! ভাষা সৈনিক ও মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জলিল ভুঁইয়ার মৃত্যুর পর টাকার জন্য মরদেহ হাসপাতালে আটকে রাখা হয়। এ লজ্জা নিশ্চয় কারো নয়। ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসার অবহেলায় মারা যায় মুক্তিযোদ্ধা কফিল উদ্দীন। মুক্তিযোদ্ধা মেঘনাথ বর্মন জীবিকার প্রয়োজনে হোটেলে শ্রমিকের কাজ করে। সাতক্ষীরার আব্দুল গাফফার মুক্তিযোদ্ধা হয়েও মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পান নি। চিকিৎসার অভাবে মরতে বসেছেন লক্ষীপুরের মুক্তিযোদ্ধা মোঃ মহিউদ্দীন মীর। সারাজীবন অবহেলায় জর্জরিত জীবন শেষে মৃত্যের পর রাষ্ট্রীয় মর্যাদা পেয়ে কি লাভ?