বাজারে আসা নতুন ল্যাপটপ দোয়েল নিয়ে বিভিন্নজনের ভাবনা

মো: মুরশীদুল আরেফিন
Published : 14 Oct 2011, 09:34 AM
Updated : 14 Oct 2011, 09:34 AM

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী: দেশে বিদ্যুত থাকে না। আমি প্রত্যহ যখনই আমার পোলার লগে একটু ভয়েস চ্যাট বা ভিডিও চ্যাটের চেষ্টা কর তখনি বিদ্যুত যায়। এখন আমি এই ল্যাপটপ আসার পর আমার পোলার লগে শান্তিতে চ্যাটাইতে পারি। অনেক ধইন্যা দেই দোয়েলকে। যদি ডেল এর লোগো চুরি করার জন্য ডেল মামলা করে আমি এদের কৌশলগত সুবিধা দেব। কে বলে আমরা দেশকে ডিজিটাল করতে পারিনি। এই ল্যাপটপ তাদের থোঁতামুখ ভোতা করে দেয়ার জন্য যথেষ্ট। আমাদের দেশের এখন পোলাপাইন ফেসবুক আর ব্লগে সরকারের বিরুদ্ধাচারণ করে । এই ল্যাপটপ যারা ব্যবহার করবে তারা আর যাই করুক। আমার দেয়া ল্যাপটপ ব্যবহার করে আমার সাথে নিমকহারামি করতে পারবে না। এই ল্যাপটপে বাজারে আনা হাজার বছরের শ্রেষ্ট বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিল। আজ আমার ভাল লাগছে স্বাধীনতার চল্লিশ বছর পরে হলেও জাতির জনকের স্বপ্ন স্বার্থক করতে পেরেছি।

বিরোধীদলীয় নেত্রী: হায় হায় হায়। এইডা কুনো ল্যাটটপের জাতই না। এইটা ল্যাপটপের নামে এম পি ফোর প্লেয়ার ছাড়ছে বাজারে। আমার ভয় হয় কেউ আর বিউটি পার্লারে যাবেন না। হিডেন ক্যামেরায় ভিডিও কইরা এই এমপি ফোরে কইরা পোলাপাইন দেখবো। এই ল্যাপটপ নামের এমপি ফোর বাজারে আনা স্রেফ একটা ষড়যন্ত্র। দেশের জনগণকে বিভ্রান্ত করার ষড়যন্ত্র। পোলাপাইন আগে মোবাইলে ভিডিও ক্লিপস দেখতো তাতেই এই দুরাবস্থা। এখন কি হবে আল্লাহ মালুম।এই সরকার পতন ঘটানো সম্ভব হলে এই ফালতু এমপি ফোর ডাস্টবিনে ফেলবো। আমি মরহুম স্টিভ জবসের কাছ থেকে ল্যাপটপ আনাবো দেশে। আমাদের প্রয়াত রাষ্টনেতা শহীদ রাষ্টপতি জিয়াউর রহমান আশংকা করেছিলেন। এমুনটা হইতারে। তিনি জানতেন এরা এইরকম ল্যাপটপ নামের এমপিফোর বাজারজাত করে আমজনতাকে বিভ্রান্ত করবে।

[b]আমাদের এটর্নি জেনারেল:[/b] এই ল্যাপটপ বাজারজাত করণের পক্ষে যারা ছিলেন উনাদের বিজ্ঞানে নোবেল পুরষ্কার দেয়া হোক। আমি সবথেকে ভাল বলতে পারবো কে নোবেল পুরষ্কার পেতে পারে।

সাহারা খাতুন: এই ল্যাপটপ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিল। এটা আমাদের সরকার বাস্তবায়ন করেছে। এই ল্যাপটপ নিয়ে যদি পোলাপান একটা বাজে কথা বলে তাদের ডাণ্ডা মেরে ঠাণ্ডা করার জন্য আমি বিশেষ বাহিনী মোতায়েন করেছি।

মাহবুবুল হানিফ: আমি জানতাম এই ল্যাপটপ বাজারে আসলেই বিরোধীদল কেচাল করবে। ওদের আসলে মৃদু ধাক্কা না দিলে সোজা থাকেনা। এই ল্যাপটপ বাজারে আসার পর কেউ কিছু করলে আমি সরাসরি আমাদের এসি বিপ্লব ক্রান্তিকে ডেকে মৃদু ধাক্কা দেয়াবো।

মির্যা ফখরুল: এই ল্যাপটপে বাজারে আসছে আসুক। আমাদের কিইবা বলার আছে। দেশের বুক চিরে করিডোর গেলো ট্রানজিট দিল। পানি পাইলাম না কিছুই হয় নাই। আমার বাবা বয়স হইছে। এখন যদি আমারেও ফারুকের মতো মৃদু ধাক্কা দেয় আমি এই দুনিয়ার আর বাচুম না।

নিযামী: এই ল্যাপটপ মানুষের ঘরে ঘরে গেলে অশ্লীল ভারতীয় সিনেমায় দেশ সয়লাব হয়ে যাবে। এতে দেশের যুব সমাজ ধ্বংসের মুখে পড়বে। আমাদের ক্ষমতা থাকলে এই ল্যাপটপ বাজাতে আসতে দিতাম না। জঘন্য এই প্রবৃত্তি রুখে দেয়া উচিত ছিল। দেশের জনগণ যদি আমাদের কথা শুনেন আমি আপনাদের অনুরোধ করবো এই ল্যাপটপ বর্জন করুন।

বিশ্ববেহায়া এরশাদ: ধুর এইডা কুনো ল্যাপটপ হইলো। আগে আমি লাস ভেগাসের সব এইচ ডি, আর ব্লুরে ফরমেটের জিনিস দেইখ্যা দীর্ঘ সময় পার করে নিদ্রা যাইতাম। আমার বুজানের আনা এই ল্যাপটপে ওই হাই কোয়ালিটির ভিডিও সাপোর্ট করেনা। আমি এখন কি করুম। এই বুইড়া কালে একটু লীলাখেলা একটু শান্তিতে থাকুম সেই জো নাই। ওই বিদিশা আমারে ছাইড়া যাওনের পর এই ল্যাপটপ আর ভিডিও ক্লিপস গুলাই আমার ভরসা। আমি আমার বুজানের কাছ থেকে এই রকম কাজ আশা করিনি।

আন্দালিব রহমান পার্থ: আমরা পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখেছি। এই ল্যাপটপ মানুষের চোখের জন্য ক্ষতিকর। এইল্যাপটপ থেকে অতিবেগুনী রশ্মি বের হয়। আমাদের দেশের নতুন প্রজম্নের দৃষ্টিশক্তি নষ্ট করতেই এটা সরকারের একটা অপপ্রয়াস। এই অপ্রয়াস রোধে সোচ্চার হইতে হবে সবাইকে। এই সরকারের দেশের রাস্তগুলো খুবলে খেয়েছে। জনগণের জীবনের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করেছে। এবার দেশের যুব সমাজের চোখ নষ্ট করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।


সাকিব আল হাসান:
আমার মন ভাল নাই। আমার অধিনায়কত্ব গেছে। এই ফালতু কথা বলার আর জায়গা পাননা। যান দুরে গিয়া মরেন।


নায়ক লিপিস্টিক সাবিক খান :
নাহ এটাতে কি আসবে যাবে। আমি এখন খুব ব্যস্ত আছি। এই ঈদের আমার তিনটা ছবি মুক্তি পাবে। আমার বিশ্বাস দর্শক এখন হলে গিয়ে ছবি দেখে। আপনাদের আমন্ত্রণ রইলো আমার ছবি দেখার। ছবি দেখে জানাবেন। আমার ফেসবুক স্ট্যাটাসে কমেন্ট দিবেন। প্রতিকমেন্টে ৫০ টাকা ফ্লেক্সিলোড পাবেন। যান পরে কথা হবে। ওই তোরা আমার লিপিস্টিক দে। ওই পোলার লগে কথা কইয়া ঠুট একটু কম লাল মনে হয়। ইয়াহহহ হুউইউউউ । ডিম ঢিসুমমমমমমম

নায়েকা আপু বিশ্বাস : অ্যাই তোরা কে কোথায় আছিস এটাকে বের করেদে। মেকাপের খবরনাই। পার্লালের খবর নাই আমার কাছে জিগায় কিনা ল্যাপটপের খবর। ওই বেটা আমি কি বিল গেটস না স্টিভ জবস এর বান্ধবী। মোরে এটা জিগাও কিলাই।

বালাম: আআআআআআআ। আমি বুজিনা । একাকী মন আজ নীরবে। এই ল্যাপটপ দেখে বিরক্তিতে। যান ভাগেননননননননননননননননননন। বুঝলাম কথা রিমিক্স হচ্ছে।

ফুয়াদ: হায় হায় হু্‌ই। হোলায় ইয়ে কিতা কতা কয়। ইয়ে কাহা সে আয়া কাহা যাতা হ্যায়। ডোন্ট মাইণ্ড । আইম ডাই ইন।। নো নো নো্। নেভার। ডোন্ট ডিস্টার্ব মি।

মমতাজ :
ল্যাপটপ আইছে এতো ভালা কথা। আমার পঞ্চম বিবাহ আমি সরাসরি অনলাইনে সম্প্রচার করতে আগ্রহী।


হুমায়ুন আহমেদ:
আমি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে খুব ভয়ের মধ্যে ছিলাম। কিন্তু আমি সুস্থ হয়ে উঠছি ধীরে ধীরে। আগে ছেলে মেয়েরা আমার প্রেমের উপন্যাস পড়ে মনে মনে প্রেম করতে পারতো তাদের স্বপ্নলোকে। এই ল্যাপটপ সারাবিশ্ব সকল মতের, সকল বয়সের নারী পুরুষের মনে কথা খুলে বলার সুযোগ করে দিল।


জাফর ইক বাল :
আমি সরকারের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। এই ল্যপটপে বাজারে আসার মাধ্যমে মানুষের সুযোগ সুবিধা বেড়েছে। এই একই ভাবে দেশের উপজাতিদের আদিবাসী স্বীকৃতি দেয়া হোক। আর সেই সাথে এতদিন ওদের হয়ে কথা বলার দক্ষিণা হিসেবে আমাকে আদিবাসী বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিশেষ উপদেষ্টা করে একটা বিলাসবহুল ফ্লাট আর একটা পাজেরো জীপ দেয়া হোক । তেলটা যেন সরকার থেকে দেয়া হয়। আমি কিনতে পারমু না। :a


একজন পুলিশ:
সব্বোনাশ আগে পোলাপাইনগো কিছু হইলেই ধুমাইয়া সাপ মারা করতাম। সেইটা মোবাইলে ভিডিও কইরা আমাদের মান ইজ্জত লিংক সহ ব্লগাইয়া দিত। হায় হায় এখন কি হইতো । এই ল্যাপটপ যদি সকল পোলাপাইনের হাতে যায় আমাগো ইজ্জত তো প্রশান্ত মহাসাগরের নিচে চইলা যাইবো।

একজন পিকেটার :
হেহেহে :D। এতদিন ভাংছি গাড়ির কাঁচ। অহম ল্যাপটপ ভাংমু। কি মজা। ছোট্ট জিনিস। পিডাইয়া ভাংতে কষ্ট কম হবে। মাগার একই পেমেন্ট।


বি: দ্র: এটা ব্লগার হিসেবে আমার জীবনের প্রথম পোস্ট। দীর্ঘদিন ধরে ব্লগ পড়ি আর ভাষা আয়ত্ব করি। এই ভাষা আয়ত্ব করতে আরো সময়লাগবে। যদি ভুলবশত কোন লেখা আসে তার জন্য দু:খিত।