ইতিহাস অর্থ অতীত নহে

মেহেদী আরিফ
Published : 15 Feb 2012, 04:24 PM
Updated : 18 Sept 2021, 03:54 PM

আমরা অনেকেই মনে করি, ইতিহাস মাত্রই অতীতের কাহিনী। আসলে ইতিহাস মানে নিছক অতীতের কাহিনী নয়। বরং অতীত যেভাবে বর্তমানে এসে হাজিরা দেয় সেটাই ইতিহাস। তাই বলা যায়- History is never the past. It is the past so far as it is remembered from the present. বেনেদেত্তো ক্রোচে নামক ইতালিয়ান দার্শনিক বলেন, "All history is contemporary history". অর্থাৎ সকল ইতিহাসই সমসাময়িক ইতিহাস। কারণ ইতিহাস সর্বদাই অতীতের আলোয় বর্তমান আর ভবিষ্যতকে আলোকিত করে। বর্তমানের সাথে অতীতকে প্রাসঙ্গিক করে তোলাটাই ইতিহাসের উদ্দেশ্য। ইতিহাসের কাজ সত্যকে নগ্নভাবে উপস্থাপন করা।

বিখ্যাত ব্রিটিশ অর্থনীতিবিদ জন মেইনার্ড কেইন্স বলেন, "In the long run we are all dead." আমরা সকলেই ইতিহাসের সন্তান এবং একদিন আমরা সকলেই মারা যাব। তবে মানুষ ইতিহাসে স্থান করে নেওয়ার মাধ্যমে স্মরণীয় হয়ে থাকতে পারে। যদিও খুব কম মানুষের পক্ষেই তা সম্ভব হয়। মনীষী কার্ল মার্ক্স 'দর্শন কি' এই প্রশ্নের উত্তরে একদা বলেছিলেন, 'দর্শনের ইতিহাসই হল দর্শন।' বলা যায় ইতিহাসের বাইরে কোনো কিছুই নেই। আমাদের প্রতিপার্শ্বের সব কিছুরই একটা ইতিহাস আছে। ধরুন আপনি যে কক্ষে বসে এই লেখাটি পড়ছেন সেই কক্ষের সকল জিনিসপত্রেরই উদ্ভব ও বিকাশের একটা ইতিহাস রয়েছে। জগতের সকল কিছুই ইতিহাসের আওতায় পড়ে। ইতিহাসকে ফাঁকি দিয়ে কেউ পালাতে পারে না। যার যতটুকু প্রাপ্য, ইতিহাস তাকে ততটুকুই প্রদান করে। সাময়িকভাবে কোনো ইতিহাসকে বিকৃত করা গেলেও প্রকৃত সত্য একদিন না একদিন ইতিহাসে জায়গা করে নেয়। এটাই সত্যের কাছে ইতিহাসের ঋণ ।

এখন প্রশ্ন উঠতে পারে, ইতিহাসের বিষয়বস্তু কী? খুব সহজভাবে বলতে গেলে ইতিহাসের বিষয়বস্তু হলো মানুষ। একটু খেয়াল করলে দেখা যাবে, মানুষ শব্দটি গঠিত হয়েছে 'মন' ও 'ঊষ' শব্দযোগে। অর্থাৎ মানুষ শব্দের অর্থ "যার মধ্যে মনের ঊষ (উদয়) ঘটেছে।" মানুষের সবচেয়ে বড় গুণ হল মানবিকতা। তবে 'মানবিকতা' প্রত্যয়টি অনেকটা বায়বীয়। একটু সহজ করে বলা যাক। যদি কেউ প্রশ্ন করে, মানুষের সাথে অন্য প্রাণীর পার্থক্য কোথায়? তখন দ্বিধাহীনভাবে বলা যায় মানুষের 'ভাষা' আর তার 'সৃষ্টিশীলতা'র কথা। মানুষ তার মনের বাসনা বা ভাব প্রকাশের জন্য ভাষা ব্যবহার করতে পারে, যা অন্য প্রাণীর সাধ্যের বাইরে! আর মানুষের সৃষ্টিশীলতার একত্ববাদ প্রশ্নে অনেকেই হয়তো প্রশ্ন তুলে বলতে পারে, "তাহলে বাবুই পাখি যে বাসা বানায় তা কি সৃষ্টিশীল কোনো কাজ নয়?" না, অবশ্যই নয়। কারণ বাবুই পাখি আজকে যেভাবে বাসা বানায় আজ থেকে এক হাজার বছর পূর্বেও একই ভাবে বাসা বানাতো। কাজটি পুনরাবৃত্তিমূলক। অনেকটা কম্পিউটারের মতো। পক্ষান্তরে একসময় মানুষ ছিল যাযাবর, তাদের থাকার কোনো ঘর ছিল না। তারপর মানুষ কুঁড়েঘর তৈরি করেছে। এভাবে কালের বিবর্তনে এখন মানুষ তৈরি করছে আকাশচুম্বী সুরম্য অট্টালিকা। এমনকি মহাশূন্যের স্পেস স্টেশনেও মানুষ আবাসন গড়ে তুলছে। একটু লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, বিভিন্ন পশু যেমন- বাঘ, ভালুক সৃষ্টির শুরু থেকে কাঁচা মাংস খেত, আজও তারা কাঁচা মাংসই খায়। কিন্তু যে মানুষ একসময় কাঁচা মাংস খেত, তারা এখন খায় বারবিকিউ, চিকেন কারি, বিফ সিজলিং অথবা মাটন রেজালাসহ আরো কত কি! এখানেই মানুষের সাথে অন্য প্রাণীর পার্থক্য।

প্রখ্যাত গ্রীক দার্শনিক এরিস্টটল মানুষকে "zoon politikon" (political animal) বলে আখ্যায়িত করেছেন। ঐ সময় political শব্দটি রাজনৈতিক অর্থে নয় বরং যুক্তিশীল বা চিন্তাশীল অর্থে প্রকাশ পেত। অর্থাৎ বলা যায়, মানুষ মাত্রই যুক্তিশীল / (Every man is a logical/thoughtful animal) এই যুক্তিশীলতা বা চিন্তাশীলতায় মানুষকে অন্যান্য প্রাণীর থেকে পৃথক করে তুলেছে। মানুষ নামক এই প্রাণীর কিছু বিশেষ কার্যক্রমই ইতিহাসের বিষয়বস্তু হয়ে ওঠে। মানুষের আরেকটি বিশেষ ক্ষমতা রয়েছে। এই ক্ষমতার নাম 'অভিযোজন ক্ষমতা'। পৃথিবীর অনেক প্রাণী বিলুপ্ত হইলেও, এই অভিযোজন ক্ষমতার বলে মানুষ এখনো বীরদর্পে পৃথিবী বুকে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় তার বিখ্যাত 'বিলাসী' নামক ছোটগল্পে বলেছিলেন, "অতিকায় হস্তী লোপ পাইয়াছে কিন্তু ক্ষুদ্র তেলাপোকা টিকিয়া রইয়াছে।" ঠিক সেরকমভাবে বলা যায় টিকিয়া থাকার জন্য জীবের আকার-আকৃতি কোনো বিষয় নয়। পৃথিবীর অনেক বড় বড় জীব যেমনঃ ডাইনোসর বিলুপ্ত হয়ে গেলেও মানুষের মতো ছোট প্রাণী সমগ্র পৃথিবী রাজ করছে তার মেধা, সৃষ্টিশীলতা আর বুদ্ধির বলে।

এবার আসা যাক ইতিহাসের সময়কালের প্রশ্নে। 'সময়' বড়ই আশ্চর্য এক প্রপঞ্চ। সময়কে কেউই অতিক্রম করতে পারে না। সময়কে ফাঁকি দিতে চাইলে নিজেরই ফাঁকিতে পড়তে হয়। সময়কে থামিয়ে রাখা যায় না, ধরা যায় না, যায় না ছোঁয়া। আমরা সময়কে মোটাদাগে তিন ভাগে ভাগ করতে পারি– অতীত, বর্তমান আর ভবিষ্যৎ। এই ত্রিকালের মধ্যে ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আমরা কেউই নিশ্চিত করে কিছুই বলতে পারি না। ভবিষ্যৎ সর্বদাই অনিশ্চিত, অজানা। আর বর্তমান! তার তো কোনো অস্তিত্বই নাই। মুহূর্তের মধ্যেই তা অতীতে পরিণত হয়। থাকল শুধু অতীত। এই অতীত কালই একমাত্র ধ্রুব, সমৃদ্ধ, ঘটনাবহুল ও অপরিবর্তনীয়। প্রত্যেক মানুষের জীবনে অতীতের শিক্ষা অনেক গুরুত্ব বহন করে। অতীতের শিক্ষাই আমাদের ভবিষ্যতে চলার পথে পাথেয়। অতীত অভিজ্ঞতা আমাদের করে অভিজ্ঞ, করে সমৃদ্ধ আর দেয় সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা। আর ইতিহাস কাজ করে এই অতীতকে নিয়ে। প্রকৃত ইতিহাস পাঠে আমরা হয়ে উঠতে পারি ত্রিকালজ্ঞ। এখানেই ইতিহাস পাঠের সার্থকতা।

তবে ইতিহাস অতীতকে নিয়ে কাজ করলেও বর্তমান দ্বারা সর্বদা প্রভাবিত। এই বক্তব্যের উদাহরণ আমি আমার নিজের জীবন থেকেই নিয়েছি। আমার হাই স্কুল জীবন ছিল ২০০২-০৬ সাল। এই সময় কতিপয় দল বাংলাদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিল। তাই আমি আমার পুরো স্কুল জীবনে পাঠ্যপুস্তকে পড়েছি স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান! আমার শিশু মন ঐসময় অকপটে এই তথ্য অন্তরে প্রথিত করেও নিয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে যখন বালেগ হয়ে উঠলাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস শাস্ত্র পাঠ করার সুযোগ হলো। তখন সময় বদলিয়েছে। বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় তখন অন্য দল। পাঠ্যপুস্তকে তখন স্বাধীনতার ঘোষকের নাম জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। মনে দ্বন্দ্ব দেখা দিল। শুরু করলাম নিজস্ব অনুসন্ধান। জানার চেষ্টা করলাম স্বাধীনতার প্রকৃত ঘোষক কে? জানলাম প্রকৃত সত্য। ১৯৭১ সনে আরো ৮/১০ জন সাধারণ আর্মি অফিসারের মতো জিয়াউর রহমানও ছিলেন পাকিস্তান আর্মির একজন মেজর। ওই সময় পর্যন্ত জিয়াউর রহমানের কোনো প্রকার রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ছিল না। আর পক্ষান্তরে বঙ্গবন্ধু ছিলেন বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা। বাঙালি জাতির রাজনৈতিক অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তার ৫৫ বছরের ক্ষণজন্মা জীবনের ৪ হাজার ৬৮২ দিনই কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে কাটিয়েছেন। তাই বলা যায়, স্বাধীনতার ঘোষণা প্রদানের কোনো বৈধতা, যোগ্যতা বা অধিকার সে সময় জিয়াউর রহমানের ছিল না। তিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণার পাঠক মাত্র। তিনি কীভাবে পাঠক হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করলেন তারও একটি কাহিনী আছে। সেকথা অন্যত্র হবে। জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন ১৯৭১ সালের ২৭শ মার্চ। আমাদের স্বাধীনতা দিবস ২৬শ মার্চ। জিয়াউর রহমান নিজে যখন রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিলেন তিনিও তখন ২৭ মার্চ নয় বরং ২৬ মার্চই স্বাধীনতা দিবস পালন করেছেন। অর্থাৎ জিয়াউর রহমান নিজেও তার জীবদ্দশায় কখনোই নিজেকে স্বাধীনতার ঘোষক বলে দাবি করেননি। আর এই তথ্যটিই যথেষ্ট বোঝার জন্য যে, জিয়াউর রহমান নয় বরং ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে ওয়্যারলেসের মাধ্যমে প্রেরিত বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণাই প্রথম ও প্রকৃত স্বাধীনতার ঘোষণা। অথচ দেখুন কীভাবে বর্তমান প্রেক্ষাপট অতীতকে বদলে দিয়েছিল। তাই ইতিহাস পাঠ করার সময় আমাদের অনেক কিছু খেয়াল রাখতে হবে। যেমন, ইতিহাসটি কে লিখছে, কারা লিখছে, কখন লেখা হচ্ছে, কীভাবে লেখা হচ্ছে? এসকল নিয়ামক ইতিহাসের ওপর প্রত্যক্ষ প্রভাব ফেলে।

আজ হোক আর কাল, ইতিহাস সকলকে তার নায্য প্রাপ্য প্রদান করবেই। ইতিহাস কখনো সময়ের আহবান প্রত্যাখ্যান করতে পারে না। সঠিক সময়ে হলে, প্রকৃত ইতিহাস আত্মপ্রকাশ করে। ইতিহাস সর্বদা সত্যকে নগ্নভাবে উন্মোচিত করে। আর সত্যের ন্যায় সুন্দর কি-ই বা হতে পারে। ইতিহাস থেকে আমাদের প্রত্যেকের শিক্ষা নিতে হবে। কারণ যতবার ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটে, তা আগেরবারের চেয়ে আমাদের জন্য অধিক ক্ষতি বয়ে আনে। এই জন্যে ইংরেজ দার্শনিক ও লেখক George Santayana বলেছেন, 'Those who do not learn from history are doomed to repeat it.' যে জাতি তার নিজের ইতিহাস ভুলে যায় সে জাতি কখনও বড় হতে পারে না। এক গৌরবময় ও রক্তাক্ত মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। এই গৌরব পৃথিবীর গুটিকয়েক দেশের রয়েছে। আর সমগ্র বিশ্বে শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ স্বাধীনতার ঘোষণা প্রদান করে সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন করেছে। এটি আমাদের জন্য অনেক গর্ব করার মতো বিষয়। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ আমাদের প্রকৃত ইতিহাস জানে না। জানলেও সেসবের অধিকাংশই বিকৃত, অর্ধসত্য কিংবা অসত্য। কোনো জাতি যদি তার প্রকৃত ইতিহাস না জানে তাহলে সে জাতির 'জাতি গঠন' (National Integration) প্রক্রিয়া সঠিকভাবে হয় না। এজন্যই আমাদের দেশে প্রায়শই রাজনৈতিক অস্থিরতা, সেনাশাসন ও অনৈক্য দেখা দেয়।

স্বাধীনতা প্রাপ্তির পর দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র ভারত ছাড়া সকল দেশই কম-বেশি সেনাশাসনের অধীনে এসেছে। কারণ একমাত্র ভারতই মোটামুটিভাবে তাদের 'জাতি গঠন' প্রক্রিয়া সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে পেরেছিল। সঠিক ও প্রকৃত ইতিহাস জানে না বলেই, স্বাধীনতার ৪৮ বছর পরেও এদেশের কিছু মানুষ স্বাধীনতা বিরোধীদের ভোট দেয়। যার ফলে স্বাধীনতা বিরোধীদের গাড়িতে বাংলাদেশের পতাকা উড়তে দেখা গিয়েছিল। জাতির পিতার খুনিদের রাষ্ট্রীয়ভাবে দেয়া হয়েছিল দায়মুক্তি। খুনিদের বড় বড় সরকারি চাকুরি দিয়ে করা হয়েছিল পুরস্কৃত। কিন্তু তাদের এসব কুকর্ম দীর্ঘদিন নতুন প্রজন্মের কাছে ছিল অজানা। প্রকৃত ইতিহাস দীর্ঘদিন ধামাচাপা দিয়ে রাখা হয়েছিল। এই ব্যর্থতা আমাদের ঘাড়েই এসে বর্তায়। কারণ আমরা সঠিক ইতিহাস প্রণয়ন করতে পারিনি, প্রচার করতে পারিনি। যুবসমাজের নিকট স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস পৌঁছাতে পারিনি। প্রকৃতি শূন্যতা পছন্দ করে না। তাই সত্যের জায়গায় সত্য না রাখতে পারলে, সেখানে মিথ্যা প্রবেশ করে। আর এভাবে ইতিহাস বিকৃত হয়। শুধু রোগের লক্ষণের চিকিৎসা করলে রোগ সারে না, রোগের কারণের চিকিৎসা করতে হয়। তাই স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রকৃত ইতিহাস সবার নিকট পৌঁছাতে হবে। তবেই এদেশের জনগণ বুঝতে পারবে কারা আমাদের স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী আর কারা এদেশকে নিঃস্বার্থভাবে ভালবাসে। আর এভাবেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী একটা প্রজন্ম গড়ে তোলা সম্ভব বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস। শুধু মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস সকলের কাছে পৌঁছে দেয়ার মাধ্যমেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী একটি ঐক্যবদ্ধ জাতি গড়ে তোলা সম্ভব।

আমরা ১৯৭১ সনে রাজনৈতিকভাবে স্বাধীন হলেও ১৯৭৫ এর বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের পর বারবার আমাদের স্বাধীনতা বেহাত হয়েছে, হয়েছে ভূলন্ঠিত। জাতির পিতা তার ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে যে 'মুক্তি সংগ্রামের' ডাক দিয়েছিলেন তা আজও চলমান। আমাদের সামগ্রিক মুক্তি আজও মেলেনি। আমরা রাজনৈতিক স্বাধীনতা পেলেও বাংলাদেশের সকল জনগণের অর্থনৈতিক, সামাজিক, ধর্মীয় এমনকি সাংস্কৃতিক মুক্তি এখনো আসেনি। সকল বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের "সোনার বাংলাদেশ" যেদিন আমরা গড়তে সক্ষম হব, সেদিনই আমাদের ইতিহাসের মুখোমুখি দাঁড়ানোর সৎসাহস অর্জিত হবে। আর সেদিনই আমরা পরিশোধ করতে পারব ইতিহাসের ঋণ।