চা খাবো না, খুনি ধরুন: ব্লগার সমাবেশ

আবু সুফিয়ান_অনুসন্ধানী প্রতিবেদক
Published : 8 April 2012, 12:17 PM
Updated : 8 April 2012, 12:17 PM

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর 'চা খেয়ে' সাংবাদিক নেতারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি স্থগিত করলেও সাংবাদিক দম্পত্তি সাগর-রুনি'র খুনীদের সনাক্ত ও গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে বাংলা ভাষার ব্লগাররা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজূ ভাস্কর্যের সামনে এ কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে মামলার বাদি নওশের রোমান বলেন, সাংবাদিক নেতাদের এমন ভূমিকা 'রহস্যজনক'।

সাংবাদিক দম্পত্তি হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে বাংলা কমিউনিটির ব্লগারদের এটাই প্রথম প্রকাশ্য প্রতিবাদ কর্মসূচি।

'স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ৪৮ ঘন্টা হয় কয় ঘন্টায়,' 'সাংবাদিকদের নিরাপত্তা চাই' ইত্যাদি প্ল্যাকার্ড বহন করে সমাবেশে যোগ দেন 'বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম ব্লগ' এর ব্লগারগণ ও প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক ও ফটোসাংবাদিকরা।

মামলার বাদি নওশের বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এমন কি বললেন, যাতে সাংবাদিক নেতারা চা খেয়ে হাসিমুখে চলে আসলেন।

'নেতাদের যা জানানো হয়েছে, আমরাও তা জানতে চাই,' মন্তব্য করেন তিনি।

বক্তব্য রাখেন ব্লগার জাগো বাহে জাগো খ্যাত চঞ্চল, সোহেল মাহমুদ ও ফটো সাংবাদিক নাসিরুল ইসলাম

হত্যাকারীদের শিগগিরই গ্রেপ্তার করা হবে- শনিবার দুপুরে এক 'চায়ের দাওয়াতে' আন্দোলনরত সাংবাদিকদের নেতাদের এ আশ্বাস দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন।

এ প্রেক্ষিতে সাগর-রুনির হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি আগামী ৫ মে পর্যন্ত স্থগিত করেন সাংাবিদকরা।

ওই সময়ের মধ্যে সাংবাদিক দম্পতির খুনি গ্রেপ্তার না হলে, সব সাংবাদিক খুনের বিষয়ে তদন্ত এবং দায়িত্ব পালনের সময় সাংবাদিকদের নিরাপত্তার বিষয়ে নির্দেশ না দিলে পর দিন (৬ মে) সাংবাদিকরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে অবস্থান ধর্মঘট করবেন বলে শনিবার বিকালে বলেন ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের এক অংশের সভাপতি রুহুল আমীন গাজী।

পেশায় চিকিৎসক ব্লগার মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, কোন অগ্রগতি ছাড়া সাংবাদিক নেতাদের এভাবে পিছটান দেয়ায় সাধারণ মানুষ স্তম্ভিত।

ব্লগার আইরিন সুলতানা বলেন, 'খুনী সনাক্ত ও গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত ব্লগাররা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করবো। কোন চা এর দাওয়াতে আমরা চুপ হয়ে যাবো না,' মন্তব্য করেন তিনি।

পেশায় শিক্ষক ব্লগার জাহেদ-উর-রহমান বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পাশে সাংবাদিক নেতাদের 'হাসিমুখ' আর আন্দোলন থেকে সরে আসায় যথেষ্ট সন্দেহের উদ্রেক হয়েছে।

মাছরাঙা টেলিভিশনের সাগর সরওয়ার এবং তার স্ত্রী এটিএন বাংলার মেহেরুন রুনির মৃতদেহ গত ১১ ফেব্রুয়ারি ভোরে তাদের রাজধানীর বাসা থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।

ময়নাতদন্ত শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক জানান, গভীর ক্ষতের কারণে মেহেরুন রুনি আগে মারা যান। তার পর সাগর সরওয়ার।

হত্যাকাণ্ডের প্রায় ৩৬ ঘণ্টা পর রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় 'অজ্ঞাত পরিচয়' আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন নওশের আলম।

দেড় মাসেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত কাউকে সনাক্ত বা গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়নি পুলিশ।