আজ সকাল থেকেই শহরটা কেন যেন অচেনা লাগছিল। তপ্ত রোদ, অসহ্য গরম, ধুলো মাখা বাতাসের হঠাৎ হঠাৎ ঝাপটা সব আজ পাল্টে গেছে। পোস্টার, ব্যানার শহরটাকে কেমন একটা অন্য রূপ এনে দিয়েছে। চার পাশে সবাই আজ নাগরিক। যে নাগরিক না সেও আজ নিজেকে নাগরিক সাজে সাজিয়ে নিয়েছে। মরিয়া হয়ে উঠেছে নিজেকে নাগরিক রূপে উপস্থাপন করাজ জন্য। আজ শহরের বায়ুমন্ডলে নাগরিকদের নিঃশ্বাসের গন্ধ। চেনা পথ আজ অচেনা সব পায়ের শব্দে কেমন যেন থমকে আছে। সকাল থেকে আকাশে মেঘ থাকলেও বৃষ্টিপাতের উপর নিষেধাজ্ঞা জাড়ি করা হয়েছে। তবে কি আজো তার স্বপ্নকে শহরের আনাচে কানাচে ফেরী করে বিক্রি করছে কিছু সুযোগ সন্ধানী নাগরিক। তার স্বপ্নগুলো একটি বাক্সে বন্দি করে রঙিন মোড়কে সাজানো হয়েছে ফেরী করার জন্য। ফেরীওয়ালাদের হাতে এমন করে তার স্বপ্ন গুলো বিক্রি করে দেবে তারই সহকর্মীরা। তা কিন্তু তিনি স্বপ্নেও ভাবেনি। সে তার স্বপ্ন গুলো দিয়ে একটা রাজ্য সাজিয়েছিল। যে রাজ্যে ছিলনা কোন সংঘাত, কোন হানাহানি, ছিল শুধু শান্তি আর ভাত্রিত্বের হাতছানি। আজ নাগরিকদের ছোঁয়ায় তার সে রাজ্য খন্ড খন্ড। এসব দেখে নিজেকে মনে হচ্ছিল একজন জঘন্য মানব। যেন প্রতিবাদের ভাষা হারিয়ে অচেনা এক পথে হেটে চলেছি। নিজেকে আর এখন এই শহরের নাগরিক মনে হচ্ছে না। সুনাগরিকের কোন গুনাবলিই আজ আমার মাঝে বিরাজ করছে না। যারা নিজেকে জোর করে নাগরিক দাবি করে এখন তারাই নাগরিক। আসলে নাগরিক মানে কি? যে স্বপ্ন ফেরী করতে পারে সে নাগরিক, যে মিথ্যা ফেরী করতে পারে সে নাগরিক, যে গাছ বেড়ে ওঠার আগে কেটে ফেলতে পারে সে নাগরিক, যে অন্যের কাঁধে পা রেখে উপড়ে উঠতে পারে সে নাগরিক। আমরা কি তাদের মত নাগরিক হতে পারবো ? আমরা কি তাদের মত দুর্বল মানুষের কাঁধে পা রেখে উপরে উঠতে পারবো?