ভোলায় কয়েক দফা সংঘাত ভাংচুরের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে মেয়র টি-২০ ক্রিকেট লীগ

অচিন্ত্য মজুমদার
Published : 8 Feb 2012, 03:20 AM
Updated : 8 Feb 2012, 03:20 AM

ভোলায় উত্তেজনা আর কয়েক দফা ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া , সংঘাত , চেয়ার ভাংচুর , বির্তকৃত অ্যাম্পেয়ারিং'র মধ্য দিয়ে ৭ ফেব্রয়ারী মঙ্গলবার শেষ হলো মেয়র টি-২০ প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লীগ। সংঘাতে আহত হয়েছে খেলোয়ারসহ কমপক্ষে ২০ জন। এ সময় অ্যাম্পেয়ারও লাঞ্ছিত হন। এ ফাইনাল ম্যাচকে ঘিরে পৌরবাসী দু'ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এলাকায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাাজ করছে। এদিকে চ্যাম্পিয়ন পুরস্কার নিয়ে শহরে আনন্দ মিছিল করে উকিলপাড়া একাদশ। অপর দিকে অ্যাম্পায়ারের বির্তকৃত সিদ্ধান্ত মেনে নিতে না পেরে ফলাফল প্রত্যাখান করেছে কালীবাড়ি রোড়ের রেনেসাঁ স্পোটিং ক্লাব কর্মকর্তারা। গতকাল রেনেসাঁ ও উকিল পাড়া'র মধ্যে সকাল থেকেই টান টান উত্তেজনা আর স্মরণকালের দর্শকের উপস্থিতিতে খেলা শুরু হয়।

রেনেসাঁ ক্লাবের কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন জানান, প্রথম থেকেই আ্যাম্পেয়ার উকিলপাড়া একাদশের কর্মকর্তাদের চাপে একের পর এক বির্তকৃত সিদ্ধান্ত দিতে থাকে। খেলার শেষ পর্যায়ে যখন রেনেসাঁর ৫ বলে ১০ রান প্রয়োজন তখন পরিস্কার একটি ৬ হাকান রেনেসাঁর লিটন। উকিলপাড়া একাদশের খেলোয়ার বাউন্ডারি সীমানার বাইরে স্টেডিয়ামের দেয়ালে পা ঠেকিয়ে ওই বল ক্যাচ নিলে উকিলপাড়ার খেলোয়ার ও সমর্থকরা অ্যাম্পোরের সিদ্ধান্ত না দিতেই স্ট্যাম্প তুলে ফেলে জয়ের আনন্দে মাঠে উল্লাশ করতে থাকে। ফলে রেনেসাঁ ক্লাব কর্মকর্তরা এর প্রতিবাদ জানাতে থাকলে সংঘাত শুরু হয়।

বাউন্ডারীর সীমানার দেয়ালে পা ঠেক দেয়ার বিষয়টি প্রত্যক্ষ করেছেন এমন ব্যাক্তিদের মধ্যে দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিনিধি জুন্নু রায়হান, দিগন্তটিভি প্রতিনিধি ইউনুছ শরীফও ক্ষোভ জানান ।

এসময় রেনেসাঁর সমর্থকরা চেয়ার ছুড়তে থাকে। এক পর্যায়ে এরা জুতা নিয়ে অ্যাম্পেয়ারের দিকে ধেয়ে আসে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পৌর মেয়র মনিরুজ্জামান নিজে ছুটে এলে তিনিও তোপের মুখে পড়েন। এসময় উকিলপাড়া একাদশের কর্মকর্তা মেয়রের ভাই রাজিব তার বাহিনী নিয়ে রেনেসাঁ সমর্থকদের ধাওয়া করতে থাকে। এক পর্যায়ে স্টেডিয়ামের বাইরে সংর্ঘষ ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ লাঠিচার্জ করতে থাকে। এসময় আহত হয় খেলোয়ারসহ ২০ /২৫ জন। অপর দিকে সকাল সাড়ে ৯টায় প্রথমে ব্যাট করতে নেমে উকিলপাড়া একাদশ ২০ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে মাত্র ৯৪ রান করে। দশম উইকেটে এমন শোচনীয় রান রেট দেখে উত্তেজিত হয়ে পড়ে উকিলপাড়ার সমর্থক ও কর্মকর্তারা। তারা অ্যাম্পেয়ার মোস্তফা কামালকে গালমন্দ করে হুমকি দিতে থাকে। এ পর্যায়ে এরা ক্রীড়া সংস্থার চেয়ারটেবিল ভাংচুর করতে থাকে। এ পরিস্থিতিতে কর্মকর্তরা খেলা বন্ধ করে দেয়। প্রায় এক ঘন্টার পর ফের খেলা শুরু হয় দুপুর পোনে ১টায়।

জেলা ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক ইয়ারুল আলম লিটন জানান, নির্মল পরিবেশে খেলা শেষ হওয়ার কথা ছিল । দীর্ঘ দিন পর এমন প্রাণবন্ত ক্রিকেট দেখতে মাঠে কয়েক হাজার দর্শকের উপস্থিতি ছিল। এমন পরিস্থিতি আশা করা যায়ি নি। শেষ উইকেটটি কট বি হ্যান্ড হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

অ্যাম্পেয়ার মোস্তফা কামালও একই কথা বলেন। এদিকে পুরস্কার বিতরণ কালে উপস্থিত ছিলেন না রেনেসা ক্লাবের খেলোয়ার ও কর্মকর্তরা। ট্রফি প্রদানের সময় বক্তব্য রাখেন লীগের উদ্বোধক জেলা পরিষদ প্রশাসক আব্দুল মমিন টুলু, জেলা প্রশাসক মোঃ মেসবাহুল ইসলাম, পৌর মেয়র মোঃ মনিরুজ্জামান, ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ড. আব্দুল হাকিম, ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক ইয়ারুল আলম লিটন, মেয়র টি-২০ লীগের আহ্বায়ক মিজানুর রহমান মাসুদ প্রমুখ। খেলায় ম্যান অব দ্যা সিরিজ হয়েছে রেনেসাঁর পিটার ও ম্যান অব দ্যা ম্যাচ হয়েছে উকিলপাড়ার জাকারিয়া। ফাইনাল খেলায় দু'দলের পক্ষেই ঢাকার বিভিন্ন ক্লাবের খেলোয়াররা অংশ নেয়। এদিকে পরে কালীবাড়ি মোড়ে অবস্থান নেয় রেনেসাঁ ক্লাবের সমর্থকরা। এরা ক্ষোভ জানাতে থাকে। পুলিশ বিকাল পর্যন্ত এদের ঘিরে রাখে।