সেই জাগরণ এই মঞ্চ

যাহিন চৌধুরী
Published : 16 June 2015, 05:52 PM
Updated : 16 June 2015, 05:52 PM

মুজাহিদের আপিলের রায়ের পর চট্টগ্রামের 'তারুণ্য স্কোয়াড' এর মিছিল। মিছিলটি নগরীর চেরাগী পাহাড় মোড় হতে শুরু হয়ে জামালখান প্রেসক্লাব ঘুরে পুনরায় চেরাগী পাহাড় মোড়ে এসে শেষ হয়।

উল্লেখ্য, যুদ্ধাপরাধের রায় নিয়ে চট্টগ্রামের আজ সর্বপ্রথম মিছিল ছিল এটি। পরে বেলা বারোটার দিকে গণজাগরণ মঞ্চ (চট্টগ্র্রাম) সমাবেশ নিয়ে জড়ো হয় এবং ২য় মিছিলটি করে। এটি বিদিত যে, "তারুণ্য স্কোয়াড" গণজাগরণ মঞ্চেরই (চট্টগ্রাম) একটি অংগ সংগঠন, এবং ফেব্রুয়ারী ২০১৩ থেকেই এ ক্ষুদ্র অংগ সংগঠনটি যুদ্ধাপরাধ ও কেন্দ্রীয় গণজাগরণ মঞ্চের কার্যক্রমে তৎপর রয়েছে।

তবু যে বিষয়টি আমাদের খেদোদগার করে তা হল, বহু সাধের এবং স্বপ্নের গণজাগরণ মঞ্চ(চট্টগ্রাম) তার কর্মতৎপরতা কমিয়ে আনতে আনতে এমন অবস্থায় নিয়ে এসেছেন যে, আজকাল আর সেলিব্রেটি রাজাকারের রায় না হলে সে ব্যাপারে কোন কর্মসূচী পরিচালনা করতে তাঁরা আগ্রহ দেখান না…! এরশাদের মন্ত্রীসভার প্রাক্তন মন্ত্রী থেকে শুরু করে অব্যাবহিত পূর্বে ঘোষিত কিশোরগঞ্জের দুই রাজাকারের রায়ে চট্টগ্রাম গণজাগরণের সাড়াশাব্দ পাওয়া যায়না।

অথচ ৫ই ফেব্রুয়ারি শাহবাগে যে অভূতপূর্ব উত্তপ্ত শিখাটি জ্বলে উঠেছিল, সে শিখা তলিকাভূক্ত, জীবিত প্রতিটি রাজাকারকে পুড়িয়ে দেবার শপথ ঘোষণা করেছিল; যার ধারাবহিকতায় চট্টগ্রাম গণজাগরণের যাত্রা শুরু হয়। ৭ই ফেব্রুয়ারি হতে আজ পর্যন্ত কর্ণফুলীর বহু জল গড়ালেও মঞ্চের উচিত তার আপন বৈশিষ্ট্য ধরে রাখা। মঞ্চের ইত্যকার সকল অংগ সংগঠন গুলো সহ আরো জোর আন্দোলন জারি রাখা।

কারণ যুদ্ধাপরাধী এবং তাদের নীরব-সরব সমর্থকেরা বসে নেই! তারা প্রতিনিয়ত তাদের কাজগুলো অত্যন্ত যত্ন ও চাতুর্যের সাথে করে যাচ্ছে। কারণে অকারণে বিজ্ঞ ট্রাইব্যুনালকে অবমাননা, দেশে-বিদেশে বিভিন্ন সংগঠন ও গণমাধ্যমকে ব্যাবহার করে তাদের পক্ষে লবিং; আর সেই সাথে ইতিহাস বিকৃতি তো আছেই। যে কোন ছুতায় বা আউট অফ নাথিং মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে তাদের মনগড়া বয়ান তারা দিয়েই যাচ্ছে সোস্যাল মিডিয়া, প্রিন্ট মিডিয়া, সবখানেই!

সুতরাং আমাদের লড়াইটা ঠিক যেখানে শুরু হয়েছিল -"রাজাকরের ফাঁসি চাই", অতটুকুতে সীমাবদ্ধ রাখবার আর সুযোগ নেই। আমাদের এখন লড়তে হবে তাদের সমানে সমানে! এমন পরিপ্রেক্ষিতে মঞ্চের আলসেসি, মিডিয়াসর্বস্বতা, দ্বিধাবিভক্তি; এসকল বিষয় খুব ভয়ংকর ও হতাশাজনক হবে- বর্তমান ও ভবিষ্যৎ উভয়েরই জন্য।

মনে রাখতে হবে, এই শাহবাগ, প্রেসক্লাব আসলে সেই জায়গা যা সব ছাপিয়ে নয় থেকে নব্বুই, নিম্নবিত্ত থেকে উচ্চবিত্ত, ছাত্র থেকে কেরানি সকলকে একত্রে টেনে বের করে এনেছিল- একই রাজপথে, একই চিৎকারে…