অচেনা যাত্রী ও কবি সুবীর সরকার

অমিতকুমার বিশ্বাস
Published : 15 August 2014, 03:48 PM
Updated : 15 August 2014, 03:48 PM

যুগ ই-বুকের দিকে ঝুঁকছে। হতে পারে একদিন বইপাড়ায় বই এর পরিবর্তে প্লাসিকের পাইপ, মোবাইল ফোন ইত্যাদি বিক্রি হচ্ছে। হতেই পারে । যদিও কিছু মুদ্রিত বইপত্র থাকবে, যেমন এখনও কিছু কালি কলম পাওয়া যায়। অনেকেই এটা মানিবেন না, এখনও মানেন না, তাতে কি আসে যায়! যা হবার তাতো হবেই। আমিও মুদ্রিত বই এর পক্ষে। পাশাপাশি খোশ গপ্প করার পক্ষে। কিন্তু সময় পালটাচ্ছে। আর তার সাথে নিজেকেও পালটাতে হচ্ছে। এই সব ভাবনা থেকেই 'অচেনা যাত্রী'- এর যাত্রা শুরু, যদিও তার আগে ছিল 'The Unknown Passenger' , একটি ইংরেজি ব্লগজিন, প্রায় প্রতিদিনই কিছু না কিছু লেখা আপডেট হতো, কিন্তু কাজটায় মন ভরল না, তাই এর বাংলা সংস্করণ 'অচেনা যাত্রী' খুললাম। নামটা আমার পছন্দ ছিল না, আমার পছন্দ ছিল 'তবু লালনমন'( এই নামে 'অচেনা যাত্রী' তে একটি লেখা প্রকাশিত হয় এখন) ।

প্রথম প্রথম লেখা পাওয়া খুব দুঃসাধ্য ছিল, তার উপর এটা ছিল অনলাইন, আর বাঙালিরা তখনও কৌলীন্য থেকে বের হতে পারেননি, কয়েকটি উদাহরণ ছাড়া। তবু দেবদূতের মতো সাহায্য পেয়ে গেলাম উত্তরবঙ্গের কবি সুবীর সরকারকে। উত্তরবঙ্গের মানুষদের প্রতি আমার একটু দুর্বলতা ছিল আগে থেকেই, ভালোলাগা বা ভালবাসার দুর্বলতা,একটা মিথ কাজ করে উত্তরবঙ্গের মানুষদের প্রতি, সে এপার হোক বা ওপার,জানি ভালো মন্দ সব জায়গাতেই আছে , তবু আমি যেন মিথের প্রতিও বেশ দুর্বল। যাইহোক শুরু হল পথচলা। এরমাঝে পঞ্চম সংখ্যা থেকে একটা ওয়েবসাইট বানানো হল -www.achenayatri.com ।

ওয়েবডিজাইনার তিনটি সংখ্যা করে আর করলেন না। যদিও তিন বছরের চুক্তি ছিল। আমি তখন ভীষণ অসুস্থ। এই অসুস্থতা প্রায় তিন মাস ধরে চলেছে। এর মধ্যে এই সব কাণ্ড। ভাবলাম 'অচেনা যাত্রী' বন্ধ করে দেবো। সুবীর দাকে জানালাম , আপনি দায়িত্ব নিন, আমি আর পারছি না, আমি হতাশ, ওয়েবসাইট শেষ , আমার স্বপ্নও শেষ, আমিও অসুস্থ, আর পারছি না। মনে হয় অসুস্থতা মনে ঢুকে পড়েছিল বেশি। যা হোক, সুবীর দা বললেন চালিয়ে যেতে, যেটুকু পারি। অষ্টম সংখ্যা থেকে ঘুরে দাঁড়ালো 'অচেনা যাত্রী'। তারপর তো….. !

দশম সংখ্যায় আমরা প্রথম 'অচেনা যাত্রী সাহিত্য সম্মাননা- ১৪২১' প্রদানের ঘোষণা করেছিলাম বাংলাদেশর বলিষ্ঠ কবি মাসুদার রহমানকে। এই সম্মান প্রদান করা হয়েছিল বাংলাদেশের সোনাপাড়ার কবিতাগ্রামে। সুন্দর একটা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল সেখানে। সব ব্যবস্থা করেছিলেন সেই সুবীর দা। এসব কারণ, তাছাড়া আরো অনেক কারণে সুবীর সরকার আমার কাছে ঈশ্বর বললেও কম বলা হবে। লোকে বলতে পারে তেল মারছি। যারা বলবে বা বলে থাকে তারা আসলে তেল মারা আর ভালোবাসা গুলিয়ে ফেলে, হিসি আর পিসিকে গুলিয়ে ফেলে যেমন! গা গুলানো এই সব লোকগুলোকে আমি রাক্ষসের মতোই ঘৃণা করি। করবোও। যেমন ভালোবাসি রাক্ষসের মতো মানুষ- পশুপাখি- গাছপালা- ধানক্ষেত- পাটক্ষেত- নদীনালা– হাওড়বাঁওড়- নীলকুঠি…..

(চলবে)