জয় বখতিয়ার… জিন্দাবাদ বখতিয়ার!

আব্দুল হান্নান
Published : 17 June 2015, 08:18 PM
Updated : 17 June 2015, 08:18 PM

ইখতিয়ার উদ্দিন মুহম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজি ১২০৫-০৬ সালে তৎকালীন বঙ্গের শাসক রাজা লক্ষণ সেনকে পরাজিত করে বাংলায় মুসলিম শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করেন। বাল্য জীবনের ধাপে ধাপে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে আকারে খাটো, লম্বা হাত এবং কুৎসিত চেহারার অধিকারী হওয়া সত্বেও নিজের কর্মশক্তি ও সাহসিকতার উপর ভর করে বাংলা, বিহার জয় করেন। পার্সিয়ান ভাষায় বখতিয়ার শব্দের অর্থ লাকি, মানে ভাগ্যবান। বখতিয়ার খিলজির বাংলা বিজয়ে ভাগ্যও তার সহায়তা করেছিল।

বীরযোদ্ধা বখতিয়ার খিলজি হতে আজ বাংলাদেশের নতুন বখতিয়ার খানের আবির্ভার হয়েছ। নব্য বখতিয়ারদের দ্বারা গত ১৩ এপ্রিল রাতে রাজধানীর ইস্কাটনে নিজ গাড়ি হতে গুলি করে দুই শ্রমজীবিকে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে। এইসব বখতিয়ারদের আবার টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, মাদকসেবা, গুণ্ডামি করার অভ্যাস। সন্ত্রাসী বন্ধুদের সাথে আড্ডা ও মাদক গ্রহন এদের জীবনকে করেছে উশৃঙ্খল। এদের কাছে আজ আমাদের সমাজ জিম্মী। কারন এই সব মাদকসেবী ও সন্ত্রাসীদের আছে রাজনৈতিক ছত্রছায়া্।বর্তমানে নাকি মাদকসেবীদের সমর্থন ছাড়া নির্বাচনেও জেতা যায় না। ভোটের সময় এরাই হলো কর্মী ও এজেন্ট। সব প্রার্থীদের কাছ হতে মদ, গাজা, ইয়াবা, ফেনসিডিলের পয়সা নিয়ে প্রার্থীদের নির্বাচনী মাঠ গরম করে। ভোটের আগের রাতে মাঠ থাকে এদের দখলে। সবচেয়ে মজার ব্যাপার, মাদকসেবীদের আছে একতা আর সংখ্যায় কিন্তু এরা কম না। কোন ঘটনা ঘটলে মাদক সেবীরা এক হয়ে যায়। নির্বাচনে জেতার পর জয়ী ব্যক্তিও আর তাদের কিছু বলতে পারে না। স্বেচ্ছা বা অনিচ্ছায় পৃষ্টপোষকতা করে যায়। এভাবেই মাদকসেবীরা সংখ্যায় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। অর্থমন্ত্রীর ভাষায় ধুমপান এখন যেমন বিনোদন তেমনি মাদক গ্রহনও বিনোদনে রূপ নিয়েছে। গর্বের সাথে বলে আমি এখন গাজা, ইয়াবা খাই। কোন লজ্জা নাই, শরম নাই। মাদক বিনোদনে আমরা বুম হয়ে আছি। মাদকের দাপটে যানজটে মেজাজ হারিয়ে হত্যা করছি সাধারন মানুষকে। সাধারন মানুষ, তারা মরবে আর এরা বলবে আমি কিছুই করিনি। এই একটু মাতাল ছিলাম তো তাই তখন কি হয়েছে বলতে পারব না। আর আমার পিস্তল তো লাইসেন্স করা। রাষ্ট্রই তো আমাকে এই পিস্তল দিয়েছে। এটা তো আর আঙ্গুল চোষার জন্য দেয় নি। তাছাড়া আমিতো এমপির ছেলে, আমার কিচ্ছু হবে না। অযথা পুলিশ হয়রানি করছে। চারিদিকে বখতিয়ারদের জয় জয়কার।লম্বা হাতওলা বীরদের সামনে কে যাবে মরতে। বরং একশত হাত দূর হতে সালাম সালাম বলে জীবন বাঁচিয়ে চলাই ফরয।

জয় বখতিয়ার…..জিন্দাবাদ বখতিয়ার…..।