ভোগান্তিতে ফেলবেন না প্লিজ

আহমদ আল হুসাইন
Published : 12 Sept 2015, 07:54 PM
Updated : 12 Sept 2015, 07:54 PM

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির চেয়ারম্যান শেখ কবির হোসেন সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন যে শিক্ষার্থীদের ভ্যাট দিতে হবে না । গত বৃহস্পতিবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডও (এনবিআর) ঘোষণা দিয়েছে যে এই ভ্যাট শিক্ষার্থীদের দিতে হবে না, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকেই দিতে হবে। ভ্যাট বিরোধীদের এক পক্ষ বলছে, তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবে। আর অপর পক্ষ আন্দোলন প্রত্যাহার করার ঘোষণা দিয়েছে। এনবিআর ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির এমন স্পষ্ট ঘোষণার পরে ভ্যাট প্রত্যাহারের আন্দোলন এখন যৌক্তিকতা হারিয়েছে ।

 দেশ তো ভালই চলছে । দেশে এখন লাগাতার হরতাল, অবরোধ নেই। নেই পেট্রোল বোমার আতঙ্ক। ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিনে পোড়া মাংশের দুর্গন্ধ বাতাসে মিশে গেছে । পেট্রোল বোমায় দগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া স্বজন হারানোর ব্যথাও এখন ম্রিয়মান । দুর্বৃত্তদের পাশবিক নির্যাতন থেকে মুক্তি পেয়েছি। শান্তির মিছিলে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে । আমরা ভালোই আছি। দেশ ভালোই চলছে ।

সত্যি ই কি তাই ? আমরা ভাল আছি ? বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি। গ্যাসের দাম বৃদ্ধি। বেড়েছে গণপরিবহণের ভাড়াও। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিটিতে রাজধানী বাসির জীবন এমনিতেই নাভিশ্বাস। আর নগর জুড়ে ভোগান্তির নিত্য সঙ্গি তীব্র যানজট তো আছেই। তার উপরে ভ্যাট বিরোধী আন্দোলনকারি শিক্ষার্থীদের আজকের রাস্তা অবরোধ কর্মসূচি চিন্তায় কপালে ভাঁজ ফেলতে শুরু করেছে। সব মিলিয়ে ঢাকা বাসি এখন মানসিক এক মৌন নির্যাতনের শিকার ।

অধিকার আদায়ের আন্দোলনে কোন বাধা নেই। তবে অন্যের ক্ষতি করে কিংবা অন্যের অধিকার হরণ করে নিজের অধিকার আদায় করার অধিকারও কারো নেই।

রাস্তা অবরোধ করে রাখলে তীব্র যানজটে সড়ক যখন স্থবির হয়ে পড়ে খেটে খাওয়া মানুষগুলোর জীবিকার চাকাও তখন থেমে যায়। রিক্সা চালক, লেগুনা ও বাসের কন্ট্রাক্টররা ঘাম মুছতে মুছতে কেবল পকেটের টাকা বারবার গুনে হিসাব মিলাতে থাকেন যে মালিকের পাওনা দিয়ে আমার পকেটে কিছু থাকবে তো ! ভ্যাটের দায়িত্ব যখন বিশ্ববিদ্যালয় নিয়েছে তখন কেন অন্যকে অসহনীয় ভোগান্তিতে ফেলবেন ? ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কে আটকে থেকে যাত্রী ও পথচারীদের ভোগান্তি চরমে ওঠে এমন আন্দোলন অন্যায় । গতদিন বহু মানুষকে ভরদুপুরের কড়া তাপদাহ উপেক্ষা করে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে হয়েছে পায়ে হেঁটে ই।


 
অসুস্থ রোগী থেকে শুরু করে স্কুল কলেজ ও অফিস ফেরা মানুষদের সারাদিনের ক্লান্তিতে কষ্ট, বিরক্তি আর ভোগান্তির জল ঢালবেন না ।

ভোগান্তি সৃষ্টির রিমোট আপনাদের হাতে ই। সুশৃঙ্খল ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করুণ। মানব বন্ধন থেকে শুরু করে স্মারক লিপি প্রদান। বিক্ষোভ মিছিল। ঘেরাও কর্মসূচি। প্রয়োজনে এনবিআর, অর্থমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী র সাথে দেখা করে আলোচনায় বসুন। গণসাক্ষর সংগ্রহ করুণ। আন্দোলন করার প্রয়োজনীয়তা থাকলে শান্তিপূর্ণ ভাবে আন্দোলন করুণ । অন্যদের ভোগান্তিতে ফেলবেন না প্লিজ ।

আহমদ আল হুসাইন

শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।