পথশিশুদের মুখে হাসি ফোটাতে তরুণীর ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

আকিব মাহমুদ
Published : 7 April 2017, 03:02 AM
Updated : 7 April 2017, 03:02 AM

'মানুষ মানুষের জন্য জীবন জীবনের জন্য, একটু সহানূভূতি কি মানুষ পেতে পারে না। ও বন্ধু …"  কালজয়ী এই গান অনুপ্রেরণা দেয় মানুষের পাশে দাঁড়াবার, ভালোবাসবার। ব্যস্ত শহরের কোলাহলে যখন দম ফেলার যো নেই তখন কেউ না কেউ চিন্তা করে সমাজের অসহায় মানুষের কথা, অবহেলিত পথশিশুদের কথা। যারা আমাদের মতোই রক্ত মাংসে গড়া মানুষ অথচ বড় হচ্ছে অবহেলা আর অবজ্ঞার শেষ সীমায় পৌঁছে। ব্যস্ত শহরের যান্ত্রিকতায় আবদ্ধ আমজনতার ওসব ভাবার সুযোগ খুব একটা হয়ে ওঠেনা কখনো। কখনো যদি কোন পথশিশু এসে ভিক্ষার থালা বাড়িয়ে হাত পাতে, পকেট থেকে তখন হয়ত দুটাকা কিংবা পাঁচ টাকার কয়েন বেড়িয়ে আসে। তবে সাহায্যের চেয়ে অবজ্ঞা আর অবহেলা করাটা আমাদের অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে। কখনো কখনো তাদের গায়ে হাত তুলতেও দ্বিধাবোধ হয়না। কিন্তু সমাজে এমন মানুষও আছে যারা অবহেলিতদের কথা চিন্তা করে, তাদের মুখে এক টুকরো হাসি ফোটানোর স্বপ্ন দেখে।

সেই স্বপ্ন দেখা থেকেই পথশিশুদের মুখে হাসি ফোটাতে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছেন বরিশাল সরকারি বি.এম কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মনিয়া সুলতানা। কেবলমাত্র ভালবাসার জায়গা থেকে শহরের আনাচে-কানাচে ঘুরে ঘুরে নিজ উদ্যোগে প্রতি সপ্তাহে পথশিশুদের জন্য খাবার বিলি করেন। পথশিশুদের কাছে জানতে চান, ওদের কি পছন্দ কি খেতে চায় ওরা। শহরের কোন এক মাঠে সবুজ ঘাসে শিশুদের নিয়ে আড্ডায় মেতে ওঠেন তিনি, রূপকথার গল্প শোনান, ওদের বেঁচে থাকার করুণ গল্প শোনেন আর অনুপ্রাণিত হন ওদের নিয়ে কিছু করার। সম্প্রতি তিনি তার জন্মদিন উদযাপন করেছেন শুধুমাত্র পথশিশুদের সঙ্গে নিয়েই। নগরীর মুক্তিযোদ্ধা পার্কে পথশিশুদের কেক খাইয়ে জন্মদিনের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিয়েছেন। বর্তমান সময়ে যা সত্যিই বিরল দৃষ্টান্ত।

মনিয়া সুলতানার সাথে আলাপকালে তিনি জানান, আর পাঁচটা সাধারণ শিশুদের মতোই এদের বেড়ে ওঠার কথা ছিল, কিন্তু নিয়তির নির্মম পরিহাসে আজ এরা পথশিশু, কিন্তু এরাও তো মানুষ, সমাজে কেন এরা অবহেলিত থাকবে? আমি হয়তো এদের জন্য খুব বেশি কিছু করত পারবো না, তবে আমার সাধ্যমত ওদের করুণ মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টা করছি। সমাজের বিত্তবান মানুষরা যদি এগিয়ে আসেন পথশিশুদের পাশে দাঁড়ান তবে এরাও একদিন হয়ে উঠবে দেশের সূর্য্য সন্তান।